জনাব আশিক একটি খ্যাতনামা গার্মেন্টস কোম্পানির নতুন একটি ইউনিটের ব্যবস্থাপক নিযুক্ত হয়েছেন। তিনি প্রথমে তার প্রতিষ্ঠানে যে সকল কাজ রয়েছে তা চিহ্নিত করে কাজের প্রকৃতি অনুসারে সেগুলোকে কতগুলো প্রধান ভাগে ভাগ করেন এবং বিভিন্ন বিভাগ-উপবিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর যেখানে যে দক্ষতার জনশক্তি প্রয়োজন তা নিয়োগ দিয়ে তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য বুঝিয়ে দেন। শুধু তাই নয় তিনি অন্যান্য উপকরণাদিও যথাস্থানে স্থাপন করেন। এতে তার ইউনিট অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালিত হচ্ছে।
ডায়মন্ড এন্টারপ্রাইজের কর্ণধার মিঃ হাসিব গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিজে নেন এবং অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের সিদ্ধান্ত গ্রহণ ক্ষমতা পর্যায়ক্রমে ব্যবস্থাপনার নিচের স্তরে প্রদান করেন। আবার প্রতিষ্ঠানের সকল স্তরের কর্মীদের কার্য সম্পাদনে যাতে কোনো সমস্যা না হয় সে জন্য তিনি বিভিন্ন বিভাগ ও উপবিভাগের মধ্যে এবং একে অন্যের সাথে যোগসূত্র স্থাপনে সহায়তা করেন। ফলে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন সহজ হয়।
পুরাতন ঢাকার জনাব করিম ও জনাব সামাদের পাশাপাশি বাই-সাইকেলের শোরুম। তারা উভয়ে নগদ মূল্যে ও এক দামে সাইকেল বিক্রি করতেন। বর্তমানে করোনা মহামারির কারণে তাদের সাইকেল বিক্রি ব্যাপকভাবে হ্রাস পায়। এই বিশেষ পরিস্থিতি মোকাবেলায় জনাব করিম তার বিক্রয় পরিকল্পনায় পরিবর্তন আনেন। অতঃপর তিনি নগদ মূল্যের পাশাপাশি কিস্তিতেও সাইকেল বিক্রি শুরু করেন। তাছাড়া তিনি অনলাইনেও সাইকেল সরবরাহের ব্যবস্থা করেন। ফলে তার বিক্রি আগের চেয়ে ভাল। অন্যদিকে জনাব সামাদ এ ধরনের কোনো উদ্যোগ নেননি। ফলে তার বিক্রিও অনেক কম।
জনাব রাইয়ান একটি রপ্তানিমুখী গার্মেন্টস শিল্প প্রতিষ্ঠানের মুখ্য নির্বাহী। তার প্রতিষ্ঠানে প্রতিটি বড় বিভাগে প্রধান নির্বাহীকে সহযোগিতা করার জন্য বিশেষজ্ঞ কর্মী কর্মরত রয়েছেন। তিনি লক্ষ্য করলেন যে, প্রায়শই বিশেষজ্ঞগণ প্রধান নির্বাহী কর্তৃক উপেক্ষিত হন এবং তাদেরকে কোনো দায়িত্ব দেয়া হয় না। তাই তিনি উৎপাদন ও বিক্রয় বিভাগের কাজগুলোকে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে বিশেষজ্ঞদের নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছন। এতে তিনি আগের চেয়ে ভাল ফল পাচ্ছেন ।
জনাব শাহীন একটি নতুন বৃহদায়তন গার্মেন্টস কারখানা গড়ার লক্ষ্যে সংগঠন কাঠামো তৈরি করছেন। তিনি এমনভাবে সংগঠন কাঠামো সাজাচ্ছেন যাতে প্রত্যেকটি কর্মী একটি নির্দিষ্ট কাজে পারদর্শী হয়ে উঠে। তিনি একজন নির্বাহীর অধীনে কর্মীর সংখ্যা যথাযথভাবে নির্ধারণ করেছেন যাতে তার তদারকি করতে কোনো অসুবিধা না হয়। তাছাড়া একজন কর্মীকে যাতে একাধিক নির্বাহী আদেশ না দেন সেটিও তিনি নিশ্চিত করেছেন ।
জনাব জামিল চৌধুরী একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীর মানবসম্পদ ব্যবস্থাপক। তার প্রতিষ্ঠানে কোনো পদ শূন্য হলে তিনি শুধুমাত্র স্বাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তর হতেই উক্ত পদ পূরণ করেন। এতে তার কর্মী পেতে খুব একটা ঝামেলা পোহাতে হয় না। কিন্তু দেখা যায় এতে অনেক অযোগ্য কর্মীও নিয়োগ পেয়ে যাচ্ছে। সমস্যা সমাধানে তিনি শূন্য পদ পূরণে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে কর্মী নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেন। ফলে আগের চেয়ে তিনি যোগ্য ও দক্ষ কর্মী পাচ্ছেন।
জনাব আরিফ মিলিনিয়াম প্যাকেজিং ইন্ডাস্ট্রিজ নামক একটি কার্টন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় ব্যবস্থাপক। তিনি তার প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় বৃদ্ধির জন্য সর্বদা কর্মীদের বকাঝকা করেন, তাদের সাথে কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণে আলোচনা করেন না এবং তার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে ঘোষণা করেন। কিন্তু তিনি লক্ষ্য করলেন তার প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় দিন দিন বাড়লেও কর্মীদের প্রতিষ্ঠান ছেড়ে চলে যাবার প্রবণতা বেশি। অপরদিকে জনাব কামরুজ্জামান এস, জে কোম্পানি লিঃ নামে অন্য একটি কার্টন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় ব্যবস্থাপক। তিনি সর্বদা কর্মীদের সাতে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখেন, যে কোনো বিষয়ের সিদ্ধান্ত তাদের সাথে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করেন। ফলে তার প্রতিষ্ঠানের সুনাম উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে।
জনাব সৈকত একটি স্বনামধন্য সাবান শিল্পের বিক্রয় ব্যবস্থাপক। তিনি তার বিভাগের মাসিক বিক্রয় টার্গেট ১ লক্ষ একক নির্ধারণ করেন এবং সে অনুযায়ী বিক্রয় কর্মীদের নির্দেশনা দেন। নির্দিষ্ট সময় শেষে দেখা গেল ৩০ হাজার একক কম বিক্রয় হয়েছে। কাঙ্ক্ষিত বিক্রয় অর্জনের জন্য তিনি কর্মীদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সুপারভাইজারদের অন্য বিভাগে বদলি করেন এবং উক্ত পদে দক্ষ সুপারভাইজার নিয়োগ করেন ।
আশা টেক্সটাইলের কর্ণধার মিসেস ফারহানা রহমান সবসময় ইতিবাচক মানুষ। যে কোনো পরিস্থিতিতেই তিনি নিজের উপর আস্থা রাখেন এবং যুক্তিপূর্ণভাবে সব কাজ পরিচালনা করেন। তিনি অধস্তনদের সাথে ভাল আচরণ করেন। তার প্রতিষ্ঠানের জটিল ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে তিনি সংশ্লিষ্ট সবার সাথে আলাপ আলোচনা ও পরামর্শের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন । ফলে তার প্রতিষ্ঠানের সাফল্যও অনেক ।