শামসুদদীন আবুল কালামের 'মৌসুম' গল্পটি রচিত হয়েছে তৎকালীন জমিদারদের অধীন জনজীবনকে কেন্দ্র করে। সে সময় জমিদারদের শোষণের বিরুদ্ধে একদল সমাজরূপান্তর ও স্বাধীনতাকামীদের প্রচেষ্টায় কৃষকরা আন্দোলন শুরু করে। গল্পে দেখা যায়, দীর্ঘ খরার পর বৃষ্টির আগমনে কৃষকরা ভালো ফসল পাওয়ার আনন্দে বিভোর হয়। কৃষকদের মনের এই আনন্দ জমিদারের পছন্দ হয় না। চাল মজুদ করে দাম বাড়িয়ে কৃষকদের বেকায়দায় ফেলে দেয় জমিদার।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশুনার পাঠ শেষ করতে করতেই আমার বোনের অনেক এয়স হয়ে যায়। তিন তিনবার তার বিয়ের সম্বন্ধ ভেঙ্গে যাবার পর কেমন যেন হতাশ হয়ে পড়ি। একদিন তাকে ডেকে বলি, সানজিদা, কাল বাসায় একটি নতুন বরপক্ষ তোকে দেখতে আসবে।' শুনে ওর চেহারা কঠিন হয়ে ওঠে, 'তুই শুধু শুধু ব্যস্ত হচ্ছিস তপন, প্রতিবন্ধীদের নিয়ে আমার যা কাজ তা জীবনভর শেষ হবার নয়।
চকচকে রোদ। সড়কের উত্তরে রাইফেল রেঞ্জের মধ্যে গামছা পরা এক কিশোর তিন চারটে গরু খেদিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তার মাথায় ছালা বোঝাই ঘাস। কাঁধে লাঙল- জোয়াল। সম্ভবত সে মাঠ থেকে বাড়ি ফিরছে। মুক্তি। মুক্তি।' একজন সৈনিক চিৎকার করে ওঠে।
'কাহা? কাঁহা ?— অপরেরা প্রশ্ন করে।
ডাহনা তরফ দেখো।'
কলিমুদ্দি দফাদার সবিনয়ে বলতে চায়, মুক্তি নেহি ক্যাপ্টেন সাব, উয়ো রাখাল হ্যায়, মেরা চেনাজানা হ্যায়।' 'চুপরাও সালে কাফের কা বাচ্চা কাফের। মুক্তি, আলবৎ মুক্তি।' বলেই সকলে একসঙ্গে গুলি ছোড়ে। এলাকা কেঁপে ওঠে। ধ্বনি প্রতিধ্বনিত হয়ে দূরে ছড়িয়ে পড়ে।
এবার ফিরাও মোরে' কবিতায় রবীন্দ্রনাথ তাঁর কবিসত্তাকে আহ্বান করেছিলেন দারিদ্রপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের শক্তির উদ্বোধন ঘটাবার জন্য। তিনি এতে বলেছেন, যারা দরিদ্র, তারা বংশ পরম্পরায় দারিদ্র্যের যাঁতাকলে পিষ্ট হচ্ছে। তাদের মুখের অম্ল কেউ কেড়ে নিলেও তারা থাকে মূক ও ভীতসন্ত্রস্ত প্রতিবাদ করা তো দূরের কথা, সবিনয়ে নালিশের ভাষাও যেনো এদের নেই। স্বয়ং বিধাতাও যেনো এদের প্রতি বিমুখ। কবি বলেছেন যে এদের মুখে দিতে হবে ভাষা
ফয়জুল্লাহপুর একটি গ্রামীণ শহর। ধান-সুপারির মওসুমে এখানকার সকলের হাতেই টাকা-পয়সা থাকে। হাট-বাজারে থাকে লোকের ভীড়। এসময়ে ভিক্ষুকের আগমনও বেড়ে যায়। একদল ভিখারী হামাগুড়ি দেয় আর সুর করে আন্না দে, আন্না দেয়' বলে বলে ভিক্ষা চায়। তাদের বিচিত্র সুরে ফয়জুল্লাহপুরের মানুষের মন গলে, কেউ টাকা বা আধুলী ফেলে যায় থালায়। ব্যাপারটা এখানকার স্থানীয় ভিক্ষুকদের সহ্য হয় না। তারা লাঠিসোঁটা নিয়ে এদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।
গফুর মিয়ার সংসার টিকিয়ে রেখেছে তার স্ত্রী মরিয়ম। বিশাল সংসারের সকল দায়িত্ব মরিয়মের গরুবাছুরের তত্ত্বতালাশ, ধান মাড়াই থেকে সিদ্ধ করা, মেহমান মুসাফির সবকিছুই একহাতে সামলান তিনি। অবশ্য এতে তার ক্লান্তি নেই। শুধু মাঝে মাঝে নিজেকে বড় একলা মনে হয়। গফুর মরিফমের মনের অবস্থা বোঝে। কারণ সে জানে, তাদের কোনো সন্তান নেই।