কাজী পরিবারের গৃহভৃত্য মারুফ অত্যন্ত মেধাবী ও সাহসী ছিলেন। কাজী সাহেবের মৃত্যুর পর তাঁর সন্তানেরা মানুষকে জনৈক দাস ব্যবসায়ীর নিকট বিক্রয় করেন। পশ্চিমাঞ্চলের অধিপতি দাস ব্যবসায়ীর নিকট হতে মারুফকে ক্রয় করেন এবং তাঁর মেধা ও সাহসিকতায় মুগ্ধ হয়ে তাঁকে সেনাপতি নিযুক্ত করেন । ইতোমধ্যে মারুফ পার্শ্ববর্তী পূর্বাশাল রাজ্য জয় করেন। আকস্মিকভাবে পশ্চিমাঞ্চল অধিপতির মৃত্যু হলে পরবর্তী শাসক মারুফকে দাসমুক্ত করে এবং বিজিত পূর্বাদলের স্বাধীন শাসক হিসেবে স্বীকৃতি দেন। সামান্য অবস্থা থেকে নিজ দক্ষতা, মেধা ও বুদ্ধিমত্তায় গৃহভৃত্য মারুফ পূর্বাঞ্চলে স্বাধীন শাসন ব্যবস্থার প্রবর্তন করেন।
শ্রীমাভো বন্দরনায়েক আধুনিক বিশ্বের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। তিনি ক্ষমতা গ্রহণ করার পর দেশ-বিদেশের কতিপয় অভিজাত শ্রেণির সমালোচনার মুখোমুখী হন। সমালোচকগুণ নারী বলে শ্রীমাভো বন্দরনায়েককে শাসনকার্যে অনুপযোগী, অদক্ষ বলে অভিহিত করেন। কিন্তু নিজ মেধাগুণে, তেজস্বিতা আর কর্মদক্ষতায় শ্রীমাভো দেশের সকল বিশৃঙ্খলা ও দুর্নীতি প্রতিহত করে সুশাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশের উন্নতি করেন।
স্বনামধন্য 'সেন্ট্রাল গার্মেন্টস চেয়ারম্যানের আকস্মিক মৃত্যুর পর তাঁর শ্বশুর মি. মাহিন চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। দায়িত্ব গ্রহণ করেই তিনি নানামুখী সমস্যার সম্মুখীন হন। সমস্যা মোকাবিলার জন্য তিনি 'কঠোরনীতি' গ্রহণ করেন। অবাধ্য ও দুর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তাদের তিনি বরখাস্ত করেন এবং চেয়ারম্যানের মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য নিজ অফিস কক্ষটি জমকালোভাবে সজ্জিত করেন। প্রশাসনিক শক্তি সম্পর্কে কর্মচারীদের মনে ভীতি সঞ্চার করতে চেয়ারম্যানের কক্ষে প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করেন। তিনি অফিসে সার্বক্ষণিক নজরদারিরও ব্যবস্থা করেন। ফলে সর্বক্ষেত্রে তাঁর কঠোর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়ে 'সেন্ট্রাল গার্মেন্টস' পুনরায় লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়।
প্রাথমিক জীবনে তৈমুর লং সিস্তান অভিযানকালে নির্বিঘ্নে রাজধানীতে প্রবেশ করেন। সিস্তান অধিপতি রাজধানী হেডে অন্যত্র আশ্রয় নেন। তৈমুর যখন নিশ্চিন্তে রাজধানীতে বিশ্রামরত তখন সিন্তানের সৈন্যরা চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে। এরপ অতর্কিত আক্রমণে তৈমুর লং পরাজিত হন এবং কোনোমতে প্রাণ নিয়ে পালিয়ে যান। এমনকি কিছুকালের জন্য তিনি রাজ্যহারা হন।
মি. কাইমউদ্দীন নূরগঞ্জ এলাকার জমিদার ছিলেন। তাঁর স্ত্রী জুলেখা বেগম যেমন অপরূপা সুন্দরী তেমনি ছিলেন বুদ্ধিমতী ও সুনিপুণা। অল্প সময়ের মধ্যেই জুলেখা বেগম জমিদার মি. কাইমউদ্দীনের প্রিয়পাত্রী হয়ে ওঠেন। ফলে আরামপ্রিয় জমিদারের ওপর তার স্ত্রী প্রভাব বিস্তার করে এবং পর্দার আড়ালে প্রকৃত ক্ষমতার অধিকারিণী হন।
ফরহান চৌধুরী একজন সমাজপতি। তিনি তার এলাকায় একটি সাহিত্য সমিতি প্রতিষ্ঠা করেন। নানা জায়গা থেকে তার সমিতিটিতে জ্ঞানী-গুণীজন আসতে থাকেন। তাদের নাতিদীর্ঘ আলোচনায় এলাকার বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় কুসংস্কার দূর হতে থাকে। নানা সমস্যার সমাধান হয়। এছাড়া শিক্ষা-সাহিত্যের ক্ষেত্রেও সমিতি কার্যকর ভূমিকা রাখতে থাকে। এর কল্যাণে পশ্চাৎপদ এলাকাটি ধীরে ধীরে সংস্কৃতিবান হয়ে ওঠে।
খনিজ সম্পদে ভরপুর আফ্রিকার একটি দেশ সুদান। এদেশের উত্তরাঞ্চলের আয়তন দক্ষিণাঞ্চলের চেয়ে অনেক বড় হলেও জনসংখ্যা তুলনামূলকভাবে অনেক কম। এছাড়া উত্তরাঞ্চলে নদী-নালা কম থাকার কারণে এখানকার ভূমি ছিল অনুর্বর এবং কোথাও কোথাও মরুময়। অন্যদিকে নদীবিধৌত দক্ষিণ সুদান ছিল উর্বর এবং খনিজ সম্পদগুলোও এ অঞ্চলে অবস্থিত ছিল। রাষ্ট্র ক্ষমতায় উত্তর সুদানের একচ্ছত্র আধিপত্য থাকায় দক্ষিণ সুদানকে অর্থনৈতিকভাবে বঞ্চিত করে উত্তর সুদান সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলে। এ অবস্থায় দক্ষিণ সুদান সশস্ত্র আন্দোলনের মাধ্যমে স্বাধীনতার ডাক দিলে জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় গণভোটের মাধ্যমে দক্ষিণ সুদান স্বাধীনতা ঘোষণা করে।
ইরাকি প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনা ফলপ্রসূ না হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরাকি জনমতকে অগ্রাহ্য করে ইরাক দখলের পরিকল্পনা করে। প্রেসিডেন্ট বুশের নির্দেশে রাতের অন্ধকারে মার্কিন বাহিনী বাগদাদের নিরীহ জনগণের ওপর নির্বিচারে বোমা বর্ষণ করে এবং গণহত্যা চালায়। আমেরিকানরা এই অপারেশনের নাম দেয় 'অপারেশন ডেজার্ট স্টর্ম'। দীর্ঘদিনের যুদ্ধে ইরাক আজ বিধ্বস্ত ও বিপর্যস্ত। সাদ্দাম হোসেন পরবর্তী সরকারগুলো মূলত পরাধীন এবং বৃহৎশক্তির আজ্ঞাবহ মাত্র । জাতি হিসেবে ইরাক আজ নেতৃত্বহীন ও গভীর সংকটে পতিত এক জনপদ।