অটোমান সুলতান অরখান জেনিসারি বাহিনী গঠন করে বিভিন্ন রাজ্যে অভিযান পরিচালনা করে অর্থ-সম্পদ লুণ্ঠন করে। নিজ এলাকার উন্নয়ন ও সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেন। সম্প্রতি একটি দ্বীপের সুসজ্জিত ও সুরক্ষিত উপাসনালয়ের মূল্যবান অর্থ- সম্পদের সন্ধান পেয়ে অরখান সেটি আক্রমণ ও লুণ্ঠন করেন। স্থানীয় অধিবাসীরা প্রাণপণ চেষ্টা করেও উপাসনালয়টিকে লুণ্ঠনের হাত থেকে রক্ষা করতে পারেননি।
প্রশাসনে অভিজ্ঞ অবসরপ্রাপ্ত কমকর্তা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হয়ে দেখলেন, সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য যে আমলা শ্রেণি তৈরি করা হয়েছিল তারাই এখন প্রশাসন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। তারা উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে অশোভন আচরণ ও বিশৃঙ্খলা তৈরি সিন্ডিকেটভিত্তিক অফিসিয়াল কার্যাদি পরিচালনা করত। এমতাবস্থায় মেয়র প্রশাসনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য সিন্ডিকেটদের কঠোরভাবে দমন-বদলি, দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা, সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ কিছু অত্যাবশ্যকীয় বিধি-নিষেধ আরোপ করেন। ফলে সিটি কর্পোরেশনের সুশাসন ও সুনাম পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয় ।
জমিদার আবুল হাসান মৃত্যুর পূর্বে তার বিদূষী ও বুদ্ধিমতী কন্যা হাসনা বানুকে তার বিশাল জমিদারির উত্তরাধিকারী মনোনীত করেন। আপনজনদের নানামুখী বিরোধিতার সম্মুখীন হয়ে তাকে জমিদারি হারাতে হয়েছিল। কিন্তু শত্রুদের হাতে তার ভাইয়ের মৃত্যুর পর পুনরায় তিনি জমিদারি ফিরে পান। সকল যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও নারীসুলভ দুর্বলতার কারণে তিনি নানা ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে কাঙ্ক্ষিত সফলতার পরিচয় দিতে পারেননি।
সরাইল উপজেলার চেয়ারম্যান পদে সামাদ পরিবার ঐতিহ্যগতভাবে নির্বাচিত হয়ে আসছে। কদম আলী পরিবার ভাগ্যান্বেষণে সরাইলে এসে বসতি স্থাপন করে। কদম আলীর সহজ-সরল জীবনযাপন, সাহসিকতা, নীতি নৈতিকতা, সত্যবাদিতা, বিচক্ষণতা ও চারিত্রিক মাধুর্য উপজেলাবাসীর নজর কাড়তে সক্ষম হয়। সরাইল উপজেলার চেয়ারম্যান নির্বাচনে কদম আলী বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন। তিনি উপজেলার অভাবনীয় উন্নয়ন করেন। উপজেলার আইন-শৃঙ্খলা, সুশাসন, জননিরাপত্তা, বিচার ও সালিশ ব্যবস্থার উন্নয়ন, রাস্তাঘাট নির্মাণ, রাজস্ব আদায়সহ সকল ক্ষেত্রে অসামান্য উন্নয়ন করেন, যা ইতোপূর্বে অন্য কোনো চেয়ারম্যানই করতে পারেননি। কিন্তু তার মৃত্যুর পর আবার উপজেলা চেয়ারম্যানের পদটি সামাদ পরিবারের হাতে চলে যায়।
সর্বধর্ম মতবাদের প্রবক্তা শ্রী আনন্দ স্বামী। তিনি অষ্টাদশ শতাব্দীতে ত্রিপুরা জেলার সরাইল পরগনার কালিকচ্ছ গ্রামে এক কৌলিন জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। জমিদারের দায়িত্ব পালনকালে প্রজাদের ধর্মভিত্তিক বিভাজন ও আন্তঃধর্মবিবাদ তাঁকে চিন্তামগ্ন করে তোলে। ধর্ম নিয়ে হত্যা, হানাহানি, রক্তপাত নিরসন ও শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি ইসলাম, সনাতন ও খ্রিস্টধর্মের সমন্বয়ে সর্বধর্ম মতবাদ প্রবর্তন করতে সক্রিয় হন। তার এ সর্বধর্ম মতবাদে প্রকৃত মানবতার আহ্বান থাকলেও ধর্মভীর মানুষের দৃষ্টি তিনি আকর্ষণ করতে পারেননি। তবে এর মাধ্যমে তিনি সকল শ্রেণির মানুষের আস্থা অর্জন করতে পেরেছিলেন।
বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে জার্মানির পশ্চিমাঞলের জনগণের চেয়ে পূর্বাঞ্চলের জনগণ অনুন্নত ও অবহেলিত ছিল । পশ্চিমাঞ্চলের শাসকগোষ্ঠীর বৈরী মনোভাব আর পূর্বাঞ্চলের জনগণের কল্যাণ ও উন্নয়নের উদ্দেশ্যে পূর্ব জার্মানি ও পশ্চিম জার্মানি নামে দুটি পৃথক রাষ্ট্র জন্ম লাভ করে। এ বিভক্তির ফলে উভয় দেশের জনগণের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। জনগণের একটি অংশ এ বিভক্তির বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। অবশেষে প্রবল আন্দোলনের মুখে দুই জার্মানিকে পুনরায় একত্রীকরণ করা হয়।
রফিক ও শফিক দুই ভাই। বাবার মৃত্যুর পর তাঁর প্রতিষ্ঠিত ইস্টার্ন গার্মেন্টসের মালিকানা নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। দ্বন্দ্বের এক পর্যায়ে তারা সিদ্ধান্ত নেয় যে, বড় ভাই রফিক গার্মেন্টস পরিচালনার দায়িত্ব পালন করবেন এবং ছোট ভাই শফিক সংসার দেখাশোনা করবেন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বড় ভাই গার্মেন্টস পরিচালনা এবং ছোট ভাই সংসার দেখাশোনার দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। কিন্তু গার্মেন্টসের আয় থেকে ছোট ভাইকে সংসার পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ প্রদান না করায় উভয়ের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। দুই ভাইয়ের দ্বন্দ্বের কারণে বাবার প্রতিষ্ঠিত গার্মেন্টসটি ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়।
আলভী গার্মেন্টসের কর্ণধার কাদের চৌধুরী তার অধীন কর্মচারীদের নিয়োগবিধি মোতাবেক প্রাপ্য মজুরি, বোনাস, স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ ইত্যাদি সুবিধা প্রদানে দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত করে আসছিল। এতে বিক্ষুদ্ধ কর্মচারীরা একত্রিত হয়ে দাবি আদায়ে শ্রমিক সংঘ গড়ে তোলে এবং বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করে। আন্দোলনের চাপে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের দাবি মেনে নেয়া হলেও পরবর্তীতে বিভিন্ন অজুহাত ও কৌশলে মালিক তাদের ঐক্য ভেঙেও দেয় এবং কঠোর নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে একচ্ছত্র কর্তৃত্ব স্থাপন করে।
সীমাহীন বৈষম্য, অত্যাচার ও নিপীড়নের কারণে ভিয়েতনামের দুই অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বিশাল অসমতা তৈরি হয়। এর ফলে গত শতাব্দীর মাঝামাঝিতে ভিয়েতনামের দুই অংশের মধ্যে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শুরু হয়। যুদ্ধের এক পর্যায়ে দক্ষিণ ভিয়েতনামের একজন সামরিক কর্মকর্তার নির্দেশে উত্তর ভিয়েতনামের একটি অংশে মানবতাবিরোধী ঘৃণ্য ও বর্বর হত্যাকাণ্ড চালানো হয়। এতে বহু নিরাপরাধ ও নিরস্ত্র নারী-পুরুষ এবং শিশুদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডটি তাদেরকে বিশ্ববাসীর ঘৃণার পাত্রে পরিণত করে। অবশেষে একটি চুক্তির মাধ্যমে এ যুদ্ধের অবসান হয়।