পটেনশিওমিটার, মিটার ব্রিজ ও পোস্টঅফিস বক্স

একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - পদার্থবিদ্যা - পদার্থবিজ্ঞান – ২য় পত্র | NCTB BOOK

পটেনশিওমিটার (Potentiometer)

যে যন্ত্রের সাহায্যে বিভব পতন পদ্ধতিতে বিভব পার্থক্য ও তড়িচ্চালক শক্তি পরিমাপ করা হয় তাকে পটেনশিওমিটার বলে।

যন্ত্রের বর্ণনা এই যন্ত্রে সাধারণত 10 মিটার লম্বা একটি তার কাঠের ফ্রেমের উপর একটি মিটার স্কেলের গা বরাবর আটকানো থাকে। এই তারটিকে প্রতিটি 1 মিটার দীর্ঘ এরূপ 10টি ভাগে ভাগ করে শ্রেণি সংযোগে যুক্ত করা হয় এবং এগুলোকে পর পর সংযুক্ত করে A ও B বিন্দুর মধ্যে যুক্ত করা হয় [চিত্র ৩.২৩]। এমন পদার্থের তার নেয়া হয় যার রোধের উষ্ণতা সহগ খুব কম। সাধারণত ম্যাঙ্গানিন বা কনস্ট্যানটানের তার নেয়া হয়। একটি পিতলের তৈরি তিন পায়া জকি তারগুলোর দৈর্ঘ্য বরাবর বামে বা ডানে চলাচল করতে পারে এবং চলাচল করার সময়

চিত্র :৩.২৩

পটেনশিওমিটারের সাহায্যে দুটি কোষের তড়িচ্চালক শক্তির তুলনা।

তত্ত্ব : 

  ধরা যাক, পটেনশিওমিটারের তারের প্রতি সেন্টিমিটারের দৈর্ঘ্যের রোধ σ Ω এবং এর ভিতর দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ চলছে I অ্যাম্পিয়ার। এখন E1, তড়িচ্চালক শক্তির কোষ বর্তনীতে সংযুক্ত করলে যদি পটেনশিওমিটারের তারের l দৈর্ঘ্যে গ্যালভানোমিটারে শূন্য বিক্ষেপ পাওয়া যায় তাহলে,

E1 = l1 cm তারের প্রান্তীয় বিভব পার্থক্য

  = l x l1 cm তারের রোধ = 

একইভাবে E2 তড়িচ্চালক শক্তির কোষের জন্য যদি l2 দৈর্ঘ্যে শূন্য বিক্ষেপ পাওয়া যায় তাহলে,

E2=l l2

যন্ত্রপাতি ও অন্যান্য দ্রব্যাদি :  

  পটেনশিওমিটার, ব্যাটারি, রিয়োস্ট্যাট, দুটি কোষ যাদের তড়িচ্চালক শক্তি তুলনা করতে হবে, দ্বিমুখী চাবি, প্লাগচাবি, জকি, গ্যালভানোমিটার, সংযোগকারী তার, শিরিষ কাগজ। কাজের ধারা :

১. ৩.২৪ চিত্রানুযায়ী A ও B বিন্দুর মধ্যে একটি ব্যাটারি E (যার তড়িচ্চালক শক্তি পরীক্ষণীয় কোষদ্বয়ের প্রত্যেকটির তড়িচ্চালক শক্তির চেয়ে বেশি), চাবি, K রিয়োস্ট্যাট Rh শ্রেণি সমবায়ে সাজানো হয়। ব্যাটারি E-এর ধনাত্মক পাত A-বিন্দুর সাথে যুক্ত থাকে। যে কোষদ্বয়ের তড়িচ্চালক শক্তি E1 ও E2 এর তুলনা করতে হবে তাদের ধনাত্মক পাতদ্বয়কেও A বিন্দুর সাথে এবং ঋণাত্মক পাতদ্বয়কে একটি দ্বিমুখী চাবি K K2 এর মাধ্যমে একটি গ্যালভানোমিটার ও রোধ বাক্সের মধ্য দিয়ে জকিতে যুক্ত করা হয় । [ লক্ষণীয় সবগুলো ব্যাটারি ও কোষের ধনাত্মক পাত A বিন্দুতে সংযুক্ত। ]

চিত্র :৩.২৪

২. রোধ বাক্সে বেশ বড় মানের রোধ নেয়া হয় যাতে গ্যালভানোমিটারের মধ্যে বেশি মাত্রায় তড়িৎ প্রবাহিত না হয়। এখন K চাবি বন্ধ করে পটেনশিওমিটারের তারের মধ্যে তড়িৎপ্রবাহ চালনা করা হয়।

 

মিটার ব্রিজ

যে যন্ত্রে এক মিটার লম্বা সুষম প্রস্থচ্ছেদের একটি তারকে কাজে লাগিয়ে হুইটস্টোন ব্রিজের নীতি ব্যবহার করে কোনো অজানা রোধ নির্ণয় করা হয় তাকে মিটার ব্রিজ বলে।

  মিটার ব্রিজ হুইটস্টোন ব্রিজের একটি ব্যবহারিক রূপ। মিটার ব্রিজের সাহায্যে কোনো পরিবাহীর রোধ নির্ণয় করা যায়। এবং তা থেকে পরিবাহীর উপাদানের আপেক্ষিক রোধ নির্ণয় করা যায়।

তত্ত্ব : 

কোনো নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় একক দৈর্ঘ্যের ও একক প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফলের কোনো পরিবাহীর রোধকে ঐ তাপমাত্রায় ঐ পরিবাহীর উপাদানের আপেক্ষিক রোধ বলে। রোধের সূত্র থেকে আমরা জানি পরিবাহীর রোধ P হলে,

ρ=pπr2L.. (1)

এখানে, 

p = তারের উপাদানের আপেক্ষিক রোধ

P = তারের রোধ

L = তারের দৈর্ঘ্য

r = তারের ব্যাসার্ধ

π = 3.14, ধ্রুবসংখ্যা ।

তারের দৈর্ঘ্য মিটারে, প্রস্থচ্ছেদের ক্ষেত্রফল বর্গমিটারে এবং রোধ ও 'ম-এ পরিমাপ করলে আপেক্ষিক রোধের একক হবে ও'ম -মিটার।

যন্ত্রের বর্ণনা : 

এই যন্ত্রে একটি কাঠের ফ্রেমের উপর তিনখানা নগণ্য রোধের তামার বা পিতলের পাত a, b ও c বসানো থাকে। এতে a ও b-এর মধ্যে একটি ফাঁক বা শূন্যস্থান এবং b ও c-এর মধ্যে একটি ফাঁক থাকে। ৫ ও পাতের যথাক্রমে A ও C বিন্দুর সাথে এক মিটার লম্বা সুষম প্রস্থচ্ছেদের ম্যাঙ্গানিনের রোধ তার টানা দেওয়া থাকে [চিত্র ৩.১৯]। এই তারের পাশে বা নিচে একটি মিটার স্কেল বসানো থাকে যার সাহায্যে এই তারের যে কোনো অংশের দৈর্ঘ্য নির্ণয় করা যায়। এই তারের দৈর্ঘ্য ঠিক এক মিটার হওয়ায় এই যন্ত্রের নাম মিটার ব্রিজ হয়েছে।

চিত্র :৩.১৯

এর একটি পা (L) সব সময় পিতলের পাত R, R-কে স্পর্শ করে থাকে। এই পাতের সাথে যুক্ত সংযোজক জ্বর সাথে গ্যালভানোমিটারকে সংযুক্ত করা হয়। জকির মাঝ বরাবর একটি চাবির সাথে আরেকটি পা থাকে, চাবি টেপা হলে এই পা তার স্পর্শ করে। চাবিকে সামনে পেছনে সরিয়ে যে কোনো তারের সাথে এই পাকে স্পর্শ করানো যায়।

পরীক্ষা :

 ২. পরীক্ষা শুরু করার আগে প্রথমে দেখে নিতে হবে বর্তনী সংযোগ ঠিক আছে কিনা। এজন্য প্রথমে রোধ বাক্স থেকে যে কোনো মানের ধরা যাক, 1Ω মানের প্লাগ তুলে নেয়া হয়। এতে বর্তনীতে জানা রোধের মান হবে এক ওম। এবার চাবি K বন্ধ করে তড়িৎপ্রবাহ চালনা করা হয়। এখন গ্যালভানোমিটারের কাঁটার সাথে সংযুক্ত জকিটিকে মিটার ব্রিজের তারের এক প্রান্তে স্পর্শ করানো হয়। ফলে গ্যালভানোমিটারের বিক্ষেপ দেখা যাবে। এখন জকিটিকে মিটার ব্রিজের তারের অপর প্রান্তে স্পর্শ করানো হয়। যদি গ্যালভানোমিটারের কাঁটার বিক্ষেপ বিপরীত দিকে হয় তাহলে বুঝতে হবে বর্তনীটি ঠিকভাবে সংযোজিত হয়েছে। যদি কাঁটার বিক্ষেপ একই দিকে দেখা যায় তাহলে বুঝতে হবে বর্তনী সংযোগে ত্রুটি আছে এবং ভালোভাবে পরীক্ষা করে সংযোগ ঠিক করে নিতে হবে।

৩. রোধ বাক্স থেকে যে অংকের রোধের প্লাগ তোলা হবে বর্তনীতে তত ও'ম হবে জানা রোধ, Q । এখন জকিটিকে মিটার ব্রিজের তারের এক প্রান্তে স্পর্শ করানো হয়। গ্যালভানোমিটারের কাঁটার বিক্ষেপ লক্ষ করে জকিটিকে তারের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তের দিকে তারের ওপর বার বার স্পর্শ করিয়ে এমন এক বিন্দুতে আনা হয় যেখানে গ্যালভানোমিটারে কোনো বিক্ষেপ থাকবে না। জকির এই অবস্থানকে নিস্পন্দ বিন্দু বলে। ব্রিজ তারের বাম প্রান্ত থেকে এই বিন্দুর দূরত্ব সংযুক্ত মিটার স্কেলের সাহায্যে দেখে নেয়া হয় । এই দূরত্ব ।

৪. রোধ বাক্স থেকে জানা রোধ অর্থাৎ Q-এর মান পরিবর্তন করে ।-এর পাঠ নেয়া এবং (2) নং সমীকরণের সাহায্যে অজানা রোধ P নির্ণয় করা হয়।

৫. ডান ফাঁকে অজানা রোধ এবং বাম ফাঁকে রোধ বাক্স স্থাপন করা হয়। 

৬. উপরিউক্ত প্রক্রিয়ায় l নির্ণয় করে ( 3 ) সমীকরণের সাহায্যে অজানা রোধ P নির্ণয় করা হয়। সবগুলো P-এর গড় হবে পরীক্ষণীয় তারের রোধ । 

৭. মিটার স্কেলের সাহায্যে পরীক্ষণীয় তারের দৈর্ঘ্য এবং ক্রুগজের সাহায্যে এর ব্যাসার্ধ মেপে নেয় হয় ।

৯. পরীক্ষালব্ধ উপাত্ত ছকে বসিয়ে (1) সমীকরণের সাহায্যে তারের উপাদানের আপেক্ষিক রোধ নির্ণয় করা হয় ।

পর্যবেক্ষণ ও সন্নিবেশন :

১. পরীক্ষণীয় তারের দৈর্ঘ্য, L = ... cm

২. স্কু গজের পিচ = mm..

৩. ক্রুগজের বৃত্তাকার স্কেলের মোট ভাগ সংখ্যা =

হিসাব : ρ=pπr2L

ফলাফল : 

প্রদত্ত তারের উপাদানের আপেক্ষিক রোধ, p = ...........2m সতর্কতা :

১. সংযোগ তারের প্রান্ত এবং সংযোগ স্ক্রু শিরিষ কাগজ দিয়ে ভালো করে পরিষ্কার করে নেয়া হয়। 

২. নিস্পন্দ বিন্দু নির্ণয়ের আগে গ্যালভানোমিটার কাঁটার বিপরীত বিক্ষেপ দেখে নেয়া হয়।

৩. তাড়িতচৌম্বকীয় আবেশ পরিহারের জন্য আগে কোষ বর্তনী বন্ধ করে পরে জকিটি ব্রিজ তারে স্পর্শ করানো হয়।

৪. রোধ বাক্সের প্লাগগুলো শক্ত করে লাগানো হয় ।

৫. সমান চাপে জকিটি তারে স্পর্শ করানো হয়।

৬. নিষ্পদ বিন্দু সতর্কতার সাথে লক্ষ করা হয়।

৭. অতিরিক্ত প্রবাহের জন্য গ্যালভানোমিটার যাতে নষ্ট না হয় সে জন্য শান্ট ব্যবহার করা যেতে পারে।

পোস্ট অফিস বক্স (Post Office Box )

যে রোধ বাক্সের রোধগুলোকে হুইটস্টোন ব্রিজের তিনটি বাহু হিসেবে বিবেচনা করে এর সাহায্যে হুইটস্টোন ব্রিজের নীতি ব্যবহার করে কোন অজানা রোধ নির্ণয় করা যায়, তাকে পোস্ট অফিস বক্স বলে। পোস্ট অফিস বক্স হুইটস্টোন ব্রিজের আরেকটি ব্যবহারিক রূপ। পূর্বে পোস্ট অফিসের লোকজন টেলিগ্রাম, টেলিফোন লাইনের তারের রোধ নির্ণয়ের জন্য এই যন্ত্র ব্যবহার করতেন বলে একে পোস্ট অফিস বক্স বলা হয়।

চিত্র : ৩.২০

যন্ত্রের বর্ণনা : 

  পোস্ট অফিস বক্স একটি বিশেষ ধরনের রোধ বাক্স। ৩২০ চিত্রে এই যন্ত্রের একটি নক্শা দেখানো হলো। ৩.২২ চিত্রে যন্ত্রের মূল বিষয়গুলো সহজ করে দেখানো হয়েছে। এই বাক্সে তিন লাইনে রোধ সাজানো থাকে। এই রোধগুলো তিনটি অংশে বিভক্ত থাকে । যন্ত্রের প্রথম লাইন AC দুটি অংশ AB ও BC-তে বিভক্ত। প্রতিটি অংশে 10, 100 ও 1000 ও মের তিনটি করে রোধ কুণ্ডলী থাকে। এই অংশ দুটি হুইটস্টোন ব্রিজের প্রথম ও দ্বিতীয় বাহুর অর্থাৎ P ও Q রোধের কাজ করে এবং এদের বলা হয় অনুপাত বাহু। তৃতীয় অংশ যন্ত্রের দ্বিতীয় ও তৃতীয় লাইন মিলে A থেকে D পর্যন্ত বিস্তৃত এবং এটি হুইটস্টোন ব্রিজের তৃতীয় বাহুর অর্থাৎ R রোধের কাজ করে, এতে সাধারণত 1 থেকে 5000 ও'মের বিভিন্ন রোধ কুণ্ডলী শ্রেণি সমন্বয়ে যুক্ত থাকে। যে কোন কুণ্ডলীর প্লাগ তুললে ঐ রোধ বর্তনীর অন্তর্ভুক্ত হয়। এভাবে 11110 ও'ম পর্যন্ত অন্তর্ভুক্ত করা যায়। প্রকৃতপক্ষে এই বাহুর রোধ নিয়ন্ত্রণ করেই ভারসাম্য অবস্থার সৃষ্টি করা হয়।

পোস্ট অফিস বক্সের সাহায্যে অজানা রোধ নির্ণয়।

তত্ত্ব : 

পরিবাহীর যে ধর্মের জন্য এর মধ্য দিয়ে তড়িৎপ্রবাহ বাধাপ্রাপ্ত হয় তাকে রোধ বলে। হুইটস্টোন ব্রিজের চারটি বাহুর যে কোনো তিনটি বাহুর রোধ জানা থাকলে চতুর্থ বাহুর রোধ নির্ণয় করা যায় ।

হুইটস্টোন ব্রিজের নীতির ওপর ভিত্তি করে পোস্ট অফিস বাক্স তৈরি করা হয়েছে। পোস্ট অফিস বাক্সের অনুপাত বাহুদ্বয় P ও Q যথাক্রমে হুইটস্টোন ব্রিজের প্রথম ও দ্বিতীয় বাহু (চিত্র ৩.২১)। বাক্সের R বাহু হুইটস্টোন ব্রিজের তৃতীয় বাহু। যে পরিবাহীর রোধ নির্ণয় করতে হবে সেটি C ও D এর মধ্যে সংযুক্ত করা হয় এবং এটি হুইটস্টোন ব্রিজের চতুর্থ বাহু S গঠন করে। এখন P, Q এবং R বাহুর রোধের মান যদি এমন করা হয় যেন গ্যালভানোমিটারের মধ্য দিয়ে কোনো তড়িৎ প্রবাহ না চলে তাহলে হুইটস্টোন ব্রিজের নীতি থেকে আমরা জানি,

PQ=RS এখানে S = অজানা রোধ

:- S=QP×R...  (1)

P, Q ও R-এর মান জেনে অজানা রোধ S নির্ণয় করা হয়।

যন্ত্রপাতি ও প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি : পোস্ট অফিস বক্স, ব্যাটারি, গ্যালভানোমিটার, সংযোগকারী তার, পরীক্ষণীয় রোধ, শিরিষ কাগজ ইত্যাদি।

চিত্র : ৩.২১

কাজের ধারা :

১. যে পরিবাহীর রোধ S নির্ণয় করতে হবে তাকে এই যন্ত্রের C ও D বিন্দুর মধ্যে সংযুক্ত করা হয় (চিত্র ৩.২২)। একটি টেপা চাবি (যা পোস্ট অফিস বাক্সের সাথে লাগানো থাকে) K-এর মাধ্যমে A ও C বিন্দুর মধ্যে ব্যাটারি E এবং অপর টেপা চাবি K2 এর মাধ্যমে B ও D বিন্দুর মধ্যে গ্যালভানোমিটারে যুক্ত করা হয়।

২. পরীক্ষা শুরু করার আগে প্রথমে দেখে নিতে হবে বর্তনী সংযোগ ঠিক আছে কিনা। এজন্য P ও Q অনুপাত বাহুদ্বয়ের প্রত্যেকটি থেকে 10 Ω প্লাগ তোলা হয়। R-বাহু থেকে কোন প্লাগ তোলা হয় না অর্থাৎ R বাহুর রোধ শূন্য। এখন আগে ব্যাটারি বর্তনীর চাবি K এবং পরে গ্যালভানোমিটার বর্তনীর চাবি K2 চাপা হয়।

এতে গ্যালভানোমিটারে বিক্ষেপ দেখা যাবে। এখন K1 ও K2 চাবি ছেড়ে দিয়ে R-বাহু থেকে "INF" (অসীম) চিহ্নিত প্লাগটি তুলে প্রথমে K1 ও পরে K2 চাপলে যদি গ্যালভানোমিটারে বিপরীত দিকে বিক্ষেপ দেখা যায় তাহলে বুঝতে হবে বর্তনী সংযোগ ঠিক আছে। আর যদি একই দিকে বিক্ষেপ দেখা যায় তাহলে বুঝতে হবে সংযোগে ত্রুটি আছে এবং সতর্কতার সাথে ত্রুটি সংশোধন করতে হবে।

৩. এখন অজানা রোধ S নির্ণয়ের জন্য অনুপাত বাহুদ্বয়ের প্রত্যেকটি থেকে 10Ω   প্লাগ ভোলা অবস্থায় প্রথমে K1 ও পরে K2 চেপে ধরে R বাহু থেকে ক্রমাগত পর্যায়ক্রমে নিম্নমান ও উচ্চমানের রোধের প্লাগ তোলা হয় এবং গ্যালভানোমিটারে বিক্ষেপ লক্ষ করা হয়। RΩ  বাহুর রোধ এমনভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয় যেন R 12 এবং (R+ 1) Ω মানের রোধে গ্যালভানোমিটারে বিপরীত বিক্ষেপ পাওয়া যায়। এই অবস্থানে অজানা রোধের মান হবে R ও (R+ 1 ) এর মধ্যে।

চিত্র :৩.২২

৪. কাজের ধারা (৩)-এ গ্যালভানোমিটারে শূন্য বিক্ষেপ না পাওয়া গেলে P বাহুতে 100Ω এবং Q বাহুতে 10Ω প্লাগ তোলা হয়। এই অবস্থায় R গ্যালভানোমিটারে 'শূন্য বিক্ষেপ' পাওয়ার জন্য R-এর মান পরিবর্তন করা হয়। R বাহুতে R Ω রোধের জন্য গ্যালভানোমিটারে শূন্য বিক্ষেপ' পাওয়া গেলে অজানা রোধ S=R10Ω । [P Q = 100 : 10 রোধ নিয়ে 0.1 Ω পর্যন্ত রোধ সঠিকভাবে নির্ণয় করা যায় 0.1 Ω ভগ্নাংশ সঠিকভাবে নির্ণয় করতে হলে অনুপাত বাহুর রোধের মান পরিবর্তন করতে হবে। ]

৫. কাজের ধারা (৪)-এ গ্যালভানোমিটারে শূন্য বিক্ষেপ' না পাওয়া গেলে P বাহুতে 1000 Ω এবং 2 বাহুতে 10 Ω  প্লাগ তোলা হয়। এই অবস্থায় গ্যালভানোমিটারে শূন্য বিক্ষেপ' পাওয়ার জন্য R বাহুর রোধের মান পরিবর্তন করা হয়। R বাহুতে R Ω  রোধের জন্য গ্যালভানোমিটারে শূন্য বিক্ষেপ' পাওয়া গেল। অজানা রোধ

S=R100Ω

৬. কাজের ধারা (৫)-এ যদি শূন্য বিক্ষেপ না পাওয়া যায় তাহলে R বাহুতে রোধের মান এমনভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয় যেন R2 ও (R+1)Ω  মানের রোধে গ্যালভানোমিটারে বিপরীত বিক্ষেপ পাওয়া যায়। এখন R  Ω মানের রোধের জন্য গ্যালভানোমিটার কাঁটার বামদিকে বিক্ষেপ d1 ঘর এবং (R + 1) Ω মানের রোধের জন্য ডান দিকে বিক্ষেপ d2 হলে R বাহুতে যে মানের রোধের জন্য শূন্য বিক্ষেপ পাওয়া যাবে তার মান =

R+d1d1+d2Ω সুতরাং অজানা রোধ,

S=1100

ফলাফল :

প্রদত্ত রোধের পরীক্ষালব্ধ মান :

S =…Ω 

সতর্কতা :

১. সংযোগকারী তার ও সংযোগ স্ক্রু শিরিষ কাগজ দিয়ে ভালো করে পরিষ্কার করে নেয়া হয় এবং সংযোগ দৃঢ়ভাবে করা হয়।

২. রোধবাক্সের এবং পোস্ট অফিস বাক্সের প্লাগগুলো খুব শক্তভাবে লাগানো হয় ।

 ৩. স্বকীয় আবেশ পরিহারের জন্য ব্যাটারি বর্তনীর চাবি আগে এবং পরে গ্যালভানোমিটার বর্তনীর চাবি বন্ধ করা নীর পর ভাবি আগে এবং হয়।

৪. নিস্পন্দ বিন্দু নির্ণয়ের পূর্বে বিপরীত বিক্ষেপ দেখে নেয়া হয় ।

 

Content added || updated By
Promotion