কোনো তরল পদার্থকে একটি আবদ্ধ পাত্রে রেখে বাষ্পায়নের সুযোগ দিলে দেখা যাবে যে, ঐ পাত্র ক্রমশ বাষ্প দ্বারা পূর্ণ হচ্ছে। বাষ্পের অণুগুলো পাত্রের মধ্যে ইতস্তত বিক্ষিপ্তভাবে চারদিকে ছুটাছুটি করে বেড়ায়। ছুটাছুটি করার সময় অণুগুলো পরস্পরের সাথে এবং পাত্রের গায়ে ধাক্কা খায়। ফলে পাত্রের গায়ে চাপের সৃষ্টি হয়। এ চাপকে বাষ্পচাপ (Vapour pressure) বলে। বাষ্পের অণুগুলো বিক্ষিপ্তভাবে ঘুরাফেরা করার সময় কিছু কিছু জাণু তরলের মধ্যে ফিরে আসে। ক্রমে এমন একটা অবস্থার সৃষ্টি হয় যখন বাষ্পে রূপান্তরিত হওয়া অণুর সংখ্যা এবং তরলে ফিরে আসার অণুর সংখ্যা সমান হয়। অর্থাৎ বলা যেতে পারে ঐ স্থানে যতটুকু বাষ্প থাকা সম্ভব তা পূর্ণ হয়েছে এবং এর চেয়ে বেশি বাষ্প আর ঐ স্থানে থাকতে পারে না। তাই বাষ্পায়িত সমস্ত অণুগুলো পুনরায় তরলে ফিরে আসে। এ অবস্থায় বলা হয় যে, ঐ স্থান বাষ্প দ্বারা সম্পৃক্ত হয়েছে। এ অবস্থায় বাষ্প যে চাপ দেয় তাকে সম্পৃক্ত বাষ্পচাপ বলে। কোনো স্থানের বাষ্প ধারণ ক্ষমতার চেয়ে কম বাষ্প থাকলে এ বাষ্পকে অসম্পৃক্ত বাষ্প বলে এবং ঐ বাষ্প যে চাপ দেয় তাকে অসম্পৃক্ত বাষ্পচাপ বলে।
কোনো নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় কোনো আবদ্ধ স্থানের বাষ্প সর্বাধিক যে চাপ দিতে পারে তাকে সম্পৃক্ত বাষ্পচাপ (Saturated Vapour Pressure বা S. V. P) বা সর্বোচ্চ বাষ্পচাপ (Maximum vapour pressure) বা শুধু বাষ্পচাপ (Vapour pressure) বলে। আবার কোনো নির্দিষ্ট তাপমাত্রার কোনো আবদ্ধ স্থানের বাষ্পচাপ যদি সর্বোচ্চ বাষ্পচাপের চেয়ে কম হয় শো আরম্ভ স্থানের বান্দা তাহলে সেই চাপকে অসম্পৃক্ত বাষ্পচাপ বলে।
পরীক্ষার সাহায্যে অসম্পৃক্ত ও সম্পৃক্ত জলীয় বাষ্পের চাপ ও আয়তন পরিমাপ করে X অক্ষের দিকে বাষ্পের আয়তন এবং Y-অক্ষের দিকে অসম্পৃক্ত বাষ্প চাপ নিয়ে লেখচিত্র আঁকলে (১০.১১) চিত্রের ন্যায় লেখচিত্র পাওয়া যাবে।
লেখচিত্রের AB অংশ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, অসম্পৃক্ত বাষ্পচাপ বাষ্পের আয়তনের ব্যস্তানুপাতিক অর্থাৎ অসম্পৃক্ত বাষ্প বয়েলের সূত্র মেনে চলে। B বিন্দুতে অসম্পৃক্ত বাষ্প সম্পৃক্ত হতে শুরু করে এবং ঐ তাপমাত্রায় বাষ্পের সম্পৃক্ত বাষ্পচাপ পাওয়া যায়। এ অবস্থায় চাপ বৃদ্ধির সাথে সাথে বাষ্প ঘনীভূত হতে শুরু করে এবং বাষ্পের খানিকটা অংশ তরলে রূপান্তরিত হয় যদিও বাষ্পচাপ সম্পৃক্ত বাষ্প চাপে স্থির থাকে। BC অংশে তরল ও সম্পৃক্ত বাষ্প সহাবস্থান করে। C বিন্দুতে সমুদয় বাষ্প তরলের রূপান্তরিত হয়। লেখচিত্রের BC অংশ থেকে দেখা যায় যে সম্পৃক্ত বাষ্প বয়েলের সূত্র মেনে চলে না। এক্ষেত্রে কিছু বাষ্প ঘনীভূত হয়ে যাওয়ায় বাষ্পের ভর হ্রাস পায় বলে সম্পৃক্ত বাষ্প আর বয়েলের সূত্র মেনে চলে না। কারণ বয়েলের সূত্র নির্দিষ্ট ভরের বাষ্প বা গ্যাসের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
পৃথিবীর সাগর, মহাসাগর, খাল-বিল, নদী-নালা, পুকুর প্রভৃতি থেকে প্রতিনিয়ত পানি বাষ্পীভূত হচ্ছে এবং এ জলীয় বাষ্প বায়ুমণ্ডলে মিশে যাচ্ছে। এ জলীয় বাষ্প শুষ্ক বায়ুর চেয়ে হালকা অর্থাৎ জলীয় বাষ্পের ঘনত্ব শুষ্ক বায়ুর ঘনত্বের চেয়ে কম। বায়ুতে জলীয় বাষ্প থাকলে সেই বায়ুকে বলা হয় আর্দ্র বায়ু ।
আমরা জানি বায়ুমণ্ডল চাপ দেয়। এ চাপের মধ্যে আছে শুষ্ক বায়ুর চাপ এবং জলীয় বাষ্পের চাপ। আমরা এখন তাদের
মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করবো। কোনো এক সময়ে বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা, T
ঐ সময় বায়ুমণ্ডলের চাপ, P
ঐ সময় বায়ুমণ্ডলে উপস্থিত জলীয় বাষ্পের চাপ, f
ঐ সময় শুধু বায়ুর চাপ, Pa
ঐ সময় অর্থাৎ T' তাপমাত্রা ও Pa চাপে বায়ুর ঘনত্ব Pa
STP তে তাপমাত্রা, To = 273 K
STP তে বায়ুর চাপ, P = 1.013 x 105Nm-2
STP তে বায়ুর ঘনত্ব po = 1.293 kgm-3
সুতরাং ডাল্টনের আংশিক চাপের সূত্রানুসারে ঐ সময়ের শুধু বায়ুর চাপ,
Pa=P-f
এখন গ্যাসের সমীকরণ থেকে আমরা পাই,
বা,
এটি হচ্ছে জলীয় বাষ্পের চাপ ও বায়ুর চাপের মধ্যকার সম্পর্ক।
পৃথিবীর চারভাগের তিনভাগই জলাশয়। জলাশয়গুলো থেকে প্রতিনিয়ত পানি বাষ্পীভূত হয়ে বায়ুমণ্ডলে মিশে যাচ্ছে। ফলে বায়ুমণ্ডল ভিজা থাকে তথা আর্দ্র থাকে। বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সময়ে বায়ুমণ্ডলে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বিভিন্ন হয়। এটা নির্ভর করে স্থান ও আবহাওয়ার উপর। আবার একই স্থানে বিভিন্ন ঋতু ও সময়ে বায়ুমণ্ডলে অবস্থিত জলীয় বাষ্পের তারতম্য হয়। বর্ষাকালে বায়ুমণ্ডলে জলীয় বাষ্প বেশি থাকে এবং শীতকালে ।
আমরা এ অনুচ্ছেদে বায়ুমণ্ডলে জলীয় বাষ্পের উপস্থিতি তথা বায়ুমণ্ডলের আর্দ্রতা নিয়ে আলোচনা করব।
পরম আর্দ্রতা (Absolute humidity) : বায়ুর প্রতি একক আয়তনে উপস্থিত জলীয়বাষ্পের ভরকে ঐ স্থানের পরম আর্দ্রতা বলে। কোনো স্থানের পরম আর্দ্রতা 5 gm-3 বলতে বোঝায় ঐ স্থানের প্রতি ঘনমিটার বায়ুতে 5 g জলীয়বাষ্প আছে।
নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় নির্দিষ্ট আয়তনের বায়ুর জলীয়বাষ্প ধারণ করার ক্ষমতা সীমাবদ্ধ। তাপমাত্রা বাড়লে ঐ স্থানের জলীয়বাষ্প ধারণ করার ক্ষমতা বেড়ে যায়। যখন কোনো স্থানে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় সর্বোচ্চ পরিমাণ জলীয়বাষ্প থাকে, তখন ঐ স্থানকে জলীয়বাষ্প দ্বারা সম্পৃক্ত বলা হয়। বায়ু জলীয়বাষ্প দ্বারা সম্পৃক্ত হলে ঐ বায়ু আর জলীয়বাষ্প ধারণ করতে পারে না, তখন জলীয়বাষ্প ঘনীভূত হয়ে শিশিরে পরিণত হয়।
কোনো স্থানের তাপমাত্রা কমলে ঐ স্থানের জলীয়বাষ্প ধারণ ক্ষমতা কমে যায়। তাপমাত্রা ক্রমশ কমতে থাকলে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় বায়ুমণ্ডল ঐ স্থানের জলীয়বাষ্প দ্বারাই সম্পৃক্ত হয়। ঐ তাপমাত্রায় বায়ুতে অবস্থিত জলীয়বাষ্প তখন শিশিরে পরিণত হয়। এ তাপমাত্রাই শিশিরাঙ্ক।
কোনো স্থানের তাপমাত্রা 30°C এবং শিশিরাঙ্ক 22°C বলতে বোঝা যায় ঐ স্থানে 30°C তাপমাত্রায় যে পরিমাণ জলীয়বাষ্প আছে তা দ্বারা ঐ স্থানের বায়ু অসম্পৃক্ত কিন্তু তাপমাত্রা কমিয়ে 22°C করা হলে ঐ জলীয়বাষ্প দ্বারাই ঐ স্থানের বায়ু সম্পৃক্ত হয়।
কোনো স্থানের জলীয়বাষ্পের চাপ ঐ স্থানের জলীয়বাষ্পের পরিমাণের উপর নির্ভর করে। জলীয়বাষ্পের পরিমাণ যত বেশি হবে তার চাপও তত বেশি হবে। কোনো নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় কোনো স্থানের অসম্পৃক্ত জলীয়বাষ্পের চাপ এবং শিশিরাঙ্কে ঐ স্থানের সম্পৃক্ত জলীয়বাষ্পের চাপ সমান হবে (কারণ একই পরিমাণ জলীয়বাষ্প দ্বারা শিশিরাক্ষে ঐ স্থানের বায়ু সম্পৃক্ত হয়)।
আবহাওয়া বিজ্ঞানে বায়ুমণ্ডলে উপস্থিত জলীয়বাষ্পের পরিমাণের চেয়ে বায়ুমণ্ডলের সম্পৃক্ততার মাত্রা অর্থাৎ বায়ুমণ্ডল কতখানি শুষ্ক বা ভেজা তা বেশি প্রয়োজন হয়। আপেক্ষিক আর্দ্রতা দিয়ে তাই বোঝানো হয়।
:- আপেক্ষিক আর্দ্রতা =বায়ুর তাপমাত্রায় নির্দিষ্ট আয়তনের বায়ুতে উপস্থিত জলীয়বাষ্পের ভর/বায়ুর তাপমাত্রায় ঐ বায়ুকে সম্পৃক্ত করতে প্রয়োজনীয় জলীয়বাষ্পের ভর
কিন্তু নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় কোনো স্থানের জলীয়বাষ্পের চাপ ঐ স্থানের জলীয়বাষ্পের ভরের সমানুপাতিক।
:- আ: আর্দ্রতা= বায়ুর তাপমাত্রায় ঐ স্থানে উপস্থিত জলীয়বাষ্পের চাপ/বায়ুর তাপমাত্রায় ঐ স্থানকে সম্পৃক্ত করতে প্রয়োজনীয় জলীয়বাষ্পের চাপ
কিন্তু কোনো তাপমাত্রায় কোনো স্থানে জলীয়বাষ্পের চাপ ঐ স্থানে শিশিরাঙ্কে সম্পৃক্ত জলীয়বাষ্পের চাপের সমান ।
:-আপেক্ষিক আর্দ্রতা = শিশিরান্ধে সম্পৃক্ত জলীয়বাষ্পের চাপ/বায়ুর তাপমাত্রায় সম্পৃক্ত জলীয়বাষ্পের চাপ
আপেক্ষিক আর্দ্রতাকে R, শিশিরাঙ্কে সম্পৃক্ত জলীয়বাষ্পের চাপকে f, বায়ুর তাপমাত্রায় সম্পৃক্ত জলীয়বাষ্পের চাপকে F দিয়ে প্রকাশ করলে,
আপেক্ষিক আর্দ্রতাকে সাধারণত শতকরা হিসাবে প্রকাশ করা হয়।
তাৎপর্য : কোনো স্থানের আপেক্ষিক আর্দ্রতা 60% বলতে বোঝা যায়, বায়ুর তাপমাত্রায় ঐ স্থানকে সম্পৃক্ত করতে যে পরিমাণ জলীয়বাষ্পের প্রয়োজন তার শতকরা 60 ভাগ জলীয়বাষ্প ঐ স্থানের বায়ুতে আছে। বিভিন্ন তাপমাত্রায় সম্পৃক্ত জলীয়বাষ্পের চাপ কত রেনো (Regnaults) পরীক্ষার সাহায্যে সেগুলো নির্ণয় করে একটি তালিকা তৈরি করেছেন। নিম্নে সেই তালিকা প্রদান করা হলো :
কোনো স্থানের কোনো সময়ের আর্দ্রতা পরিমাপের জন্য যে যন্ত্র ব্যবহৃত হয় তাকে আর্দ্রতামাপক যন্ত্র বা হাইগ্রোমিটার বলে। আর্দ্রতামাপক যন্ত্রের কার্যপ্রণালির উপর ভিত্তি করে এদের চারটি শ্রেণিতে ভাগ করা যায়; যথা :
১। সিক্ত ও শুষ্ক বালব আর্দ্রতামাপক যন্ত্র (Wet and dry bulb hygrometer),
২। শিশিরাঙ্ক আর্দ্রতামাপক যন্ত্র (Dewpoint hygrometer),
৩। রাসায়নিক আর্দ্রতামাপক যন্ত্র (Chemical hygrometer) এবং
৪। কেশ আর্দ্রতামাপক যন্ত্র (Hair hygrometer)।
যন্ত্রের বর্ণনা এ যন্ত্রে একই রকম দুটি পারদ থার্মোমিটার আছে যেগুলো পাশাপাশি উল্লম্বভাবে একটি কাঠের ফ্রেমের সাথে লাগানো থাকে। একটি থার্মোমিটার বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা প্রদান করে, অন্যটির বালবে মসলিনের বা লিনেনের সলতে জড়ানো থাকে এবং এ সলতে একটি পাত্রে রাখা পানির মধ্যে ডুবানো থাকে। পানি মসলিন বা লিনেন বেয়ে উপরে ওঠে এবং থার্মোমিটারের বাল্বকে সব সময় ভিজা রাখে (চিত্র : ১০.১২)।
মসলিন বা লিনেন থেকে পানি বাষ্পায়িত হয় ফলে সিক্ত বাল্ব থার্মোমিটার শুষ্ক বালব থার্মোমিটারের চেয়ে কম তাপমাত্রা নির্দেশ করে। এ দু তাপমাত্রার পার্থক্য বায়ুমণ্ডলের আপেক্ষিক আর্দ্রতার উপর নির্ভর করে। বায়ুমণ্ডলের আর্দ্রতা কম হলে বাষ্পায়ন দ্রুত হয়, ফলে দু তাপমাত্রার পার্থক্য বেশি হয়, অপরপক্ষে আর্দ্রতা বেশি হলে তাপমাত্রার পার্থক্য কম হয়। আর যদি বায়ুমণ্ডল জলীয়বাষ্প দ্বারা সম্পৃক্ত হয়, তবে কোনো বাষ্পায়ন হয় না ফলে উভয় থার্মোমিটারের পাঠ একই হয়।
পরীক্ষা : যে স্থানের আপেক্ষিক আর্দ্রতা নির্ণয় করতে হবে সেই স্থানে যন্ত্রটিকে রেখে এর থার্মোমিটার দুটির পাঠ নেয়া হয়। এরপর গ্রেসিয়ারের উৎপাদকের সাহায্যে শিশিরাঙ্ক বের করে আপেক্ষিক আর্দ্রতা নির্ণয় করা হয়। মনে করা যাক, শুষ্ক ও সিক্ত বাল্ব থার্মোমিটারে নির্দেশিত তাপমাত্রা যথাক্রমে ও এবং ঐ সময়ের শিশিরাঙ্ক । তাহলে গ্লেসিয়ারের সূত্রানুসারে,
এ সমীকরণ থেকে শিশিরাঙ্ক নির্ণয় করা যায়, এখানে G হচ্ছে B°C তাপমাত্রায় গ্লেসিয়ারের উৎপাদক (সারণি ১০.২ দ্রষ্টব্য)। শিশিরাঙ্ক পাওয়া গেলে রেনোর তালিকা থেকে শিশিরাঙ্কে () সম্পৃক্ত জলীয়বাষ্পের চাপ, বায়ুর তাপমাত্রায় (f) সম্পৃক্ত জলীয়বাষ্পের চাপ F নির্ণয় করে আপেক্ষিক আর্দ্রতা নির্ণয় করা যায়।
সুতরাং,
১। সুবেদী থার্মোমিটার ব্যবহার করা হয়।
২। থার্মোমিটার দুটির পারদস্তম্ভ স্থির অবস্থানে এলে পাঠ নেয়া হয়।
৩। মসলিন বা লিনেনের সলতে যাতে থার্মোমিটারের বালবকে আবৃত রাখে সে দিকে লক্ষ রাখা হয়।
৪। সলতের নিচের প্রান্ত যাতে পাত্রের পানিতে ডুবে থাকে সে দিকে লক্ষ রাখা হয়।