নিচের উদ্দীপকটি পড়ে  প্রশ্নের উত্তর দাও :
মা মারা গেলে নিরাশ্রয় কেষ্টা বৈমাত্রেয় বোন কাদম্বিনীর বাড়িতে আশ্রয় নেয়। তার এই অনাকাঙ্ক্ষিত আগমন কাদম্বিনী ভালোভাবে নেয়নি বরং মনে মনে সে ভীষণ অখুশি। তাকে দিয়ে প্রতিনিয়ত সংসারের নানা কাজ করিয়ে নিচ্ছে। কারণে-অকারণে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে প্রায়ই দুর্ব্যবহার করে। নিরুপায় কেষ্টা সবকিছু নীরবে সহ্য করে।

যে বিচারে কেষ্টা ও মমতাদি একসূত্রে গাঁথা তা হলো-i. দারিদ্র্য ii. অসহায়ত্ব iii. নিরাশ্রয়
নিচের কোনটি সঠিক?

Created: 1 year ago | Updated: 1 year ago
Updated: 1 year ago

মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরীসৃপ (১৯৩৯) গ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত ‘মমতাদি’ গল্প। এই গল্পে গৃহকর্মে নিয়োজিত মানুষের প্রতি মানবিক আচরণের দিকটি প্রাধান্য পেয়েছে। স্কুল পড়ুয়া একটি ছেলে যখন দেখে তাদের বাড়িতে মমতাদি নামে এক গৃহকর্মী আসে, তখন সে আনন্দিত হয়। তাকে নিজের বাড়ির একজন বলে ভাবতে শুরু করে ছেলেটি। মমতাদির সংসারে অভাব আছে বলেই মর্যাদাসম্পন্ন ঘরের নারী হয়েও তাকে অপরের বাড়িতে কাজ নিতে হয়। এই আত্মমর্যাদাবোধ তার সবসময়ই সমুন্নত ছিল। সে নিজে যেমন আদর ও সম্মানপ্রত্যাশী, তেমনি অন্যকেও স্নেহ ও ভালোবাসা দেবার ক্ষেত্রে তার মধ্যে দ্বিধা ছিল না। স্কুলপড়ুয়া ছেলেটি তাই মমতাদির কাছে ছোটো ভাইয়ের মর্যাদা লাভ করে। তাকে নিজ বাসায় নিয়ে গিয়ে যথাসামর্থ্য আপ্যায়ন করে মমতাদি । সম্মান ও সহমর্মিতা নিয়ে মমতাদির পাশেও দাঁড়ায় স্কুলপড়ুয়া ঐ ছেলে ও তার পরিবার। প্রকৃতপক্ষে, আমাদের গৃহকর্মে যাঁরা সহায়তা করে থাকেন তাঁদের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করা জরুরি। আত্মসম্মানবোধ তাদেরও আছে। ‘মমতাদি' গল্পটি আমাদের এই শিক্ষা দেয় যে, সামাজিক শ্রেণি মানবিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় কোনো বাধা সৃষ্টি করতে পারে না; যে কোনো পেশার যে কোনো মানুষকে দেখতে হবে শ্রদ্ধা ও মর্যাদার দৃষ্টিতে ।

Content added by
Promotion