SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or

Log in with Google Account

Academy

কোন বাক্যে আবশ্যকতা বোঝাতে ইতে > তে বিভক্তি যুক্ত অসমাপিকা ক্রিয়া ব্যবহৃত হয়েছে?

Created: 1 year ago | Updated: 1 year ago
VOTE STATISTICS
OPTION 1 : 1
OPTION 2 : 0
OPTION 3 : 0
OPTION 4 : 0

সমাপিকা, অসমাপিকা ও যৌগিক ক্রিয়ার সংজ্ঞা ও উদাহরণ ‘ক্রিয়াপদ' সম্পর্কে আলোচনা (চতুর্থ অধ্যায়, দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে) দেওয়া হয়েছে। এখানে সমাপিকা, অসমাপিকা, যৌগিক ক্রিয়ার গঠন ও প্রয়োগ বৈচিত্র্য সম্পর্কে বলা হবে।


                                                                                                      সমাপিকা ক্রিয়া
সমাপিকা ক্রিয়ার গঠন

সমাপিকা ক্রিয়া সকর্মক, অকর্মক ও দ্বিকর্মক হতে পারে। ধাতুর সঙ্গে বর্তমান, অতীত বা ভবিষ্যৎ কালের বিভক্তি যুক্ত হয়ে সমাপিকা ক্রিয়া গঠিত হয়। যথা—
আনোয়ার বই পড়ে। (ক্রিয়া – সকর্মক, কাল – বর্তমান ) । - মাসুদ সারাদিন খেলেছিল। (ক্রিয়া - অকৰ্মক, কাল - - অতীত)।
আমি তোমাকে একটি কলম উপহার দেব। (ক্রিয়া – দ্বিকর্মক, কাল—ভবিষ্যৎ)। -


                                                                                                   অসমাপিকা ক্রিয়া
অসমাপিকা ক্রিয়ার গঠন
ধাতুর সঙ্গে কাল নিরপেক্ষ-ইয়া (য়ে), –ইতে (তে) অথবা –ইলে (লে) বিভক্তি যুক্ত হয়ে অসমাপিকা ক্রিয়া গঠিত হয়। যেমন – যত্ন করলে রত্ন মেলে। তাকে খুঁজে নিয়ে আসতে চেষ্টা করবে।


অসমাপিকা ক্রিয়ার কর্তা
অসমাপিকা ক্রিয়া ঘটিত বাক্যে একাধিক প্রকার কর্তা (কর্তৃকারক) দেখা যায়—
১। এক কর্তা : বাক্যস্থিত সমাপিকা ও অসমাপিকা ক্রিয়ার কর্তা এক বা অভিন্ন হতে পারে। যথা – তুমি চাকরি পেলে আর কি দেশে আসবে? ‘পেলে' (অসমাপিকা ক্রিয়া) এবং ‘আসবে' (সমাপিকা ক্রিয়া) উভয় ক্লিয়ার কর্তা এখানে 'তুমি'।
২।অসমান কর্তা : বাক্যস্থিত সমাপিকা ও অসমাপিকা ক্রিয়ার কর্তা এক না হলে সেখানে কর্তাগুলোকে অসমান কর্তা বলা হয়। যেমন-
ক. শর্তাধীন কর্তা : এ জাতীয় কর্তাদের ব্যবহার শর্তাধীন হতে পারে। উদাহরণ – তোমরা বাড়ি এলে আমি রওনা হব। এখানে ‘এলে' অসমাপিকা ক্রিয়ার কর্তা ‘তোমরা' এবং ‘রওনা হব' সমাপিকা ক্রিয়ার কর্তা ‘আমি’। তোমাদের বাড়ি আসার ওপর আমার রওনা হওয়া নির্ভরশীল বলে এ জাতীয় বাক্যে কর্তৃপক্ষের ব্যবহার শর্তাধীন।

2

খ. নিরপেক্ষ কর্তা : শর্তাধীন না হয়েও সমাপিকা ও অসমাপিকা ক্রিয়ার ভিন্ন ভিন্ন কর্তৃপদ থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে প্রথম কর্তৃপদটিকে বলা হয় নিরপেক্ষ কর্তা। যেমন – সূর্য অস্তমিত হলে যাত্রীদল পথ চলা শুরু করল। এখানে ‘যাত্রীদের' পথ চলার সঙ্গে ‘সূর্য’ অস্তমিত হওয়ার কোনো শর্ত বা সম্পর্ক নেই বলে ‘সূর্য’ নিরপেক্ষ কর্তা।
অসমাপিকা ক্রিয়ার ব্যবহার


১. ‘ইলে’ > ‘লে’ বিভক্তিযুক্ত অসমাপিকা ক্রিয়ার ব্যবহার
ক. কার্যপরম্পরা বোঝাতে : চারটা বাজলে স্কুলের ছুটি হবে।
খ. প্রশ্ন বা বিস্ময় জ্ঞাপনে : একবার মরলে কি কেউ ফেরে ?
গ. সম্ভাব্যতা অর্থে : এখন বৃষ্টি হলে ফসলের ক্ষতি হবে।
ঘ. সাপেক্ষতা বোঝাতে : তিনি গেলে কাজ হবে ।
ঙ. দার্শনিক সত্য প্রকাশে : ‘জন্মিলে মরিতে হবে, অমর কে কোথা কবে?” :
চ. বিধিনির্দেশে : এখানে প্রচারপত্র লাগালে ফৌজদারিতে সোপর্দ হবে।
ছ. সম্ভাবনার বিকল্পে : আজ গেলেও যা, কাল গেলেও তা।
জ. পরিণতি বোঝাতে : বৃষ্টিতে ভিজলে সর্দি হবে ।


২. ‘ইয়া’ > ‘এ’ বিভক্তি যুক্তি অসমাপিকা ক্রিয়ার ব্যবহার
ক. অনন্তরতা বা পর্যায় বোঝাতে : হাত-মুখ ধুয়ে পড়তে বস ।
খ. হেতু অর্থে : ছেলেটি কুসঙ্গে মিশে নষ্ট হয়ে গেল ।
গ. ক্রিয়া বিশেষণ অর্থে : চেঁচিয়ে কথা বলো না ।

ঘ. ক্রিয়ার অবিচ্ছিন্নতা বোঝাতে : ‘হৃদয়ের কথা কহিয়া কহিয়া গাহিয়া গান। '
ঙ. ভাববাচক বিশেষ্য গঠনে : সেখানে আর গিয়ে কাজ নেই ।
চ. অব্যয় পদের অনুরূপ :ঢাকা গিয়ে বাড়ি যাব। 


৩. ‘ইতে’>‘তে’ বিভক্তি যুক্ত অসমাপিকা ক্রিয়ার ব্যবহার
ক. ইচ্ছা প্রকাশে :এখন আমি যেতে চাই । 
খ. উদ্দেশ্য বা নিমিত্ত অর্থে : মেলা দেখতে ঢাকা যাব ।
গ. সামর্থ্য বোঝাতে :খোকা এখন হাঁটতে পারে।
ঘ. বিধি বোঝাতে: বাল্যকালে বিদ্যাভ্যাস করতে হয়। :
ঙ. দেখা বা জানা অর্থে : রমলা গাইতে জানে ।
চ. আবশ্যকতা বোঝাতে :এখন ট্রেন ধরতে 

ছ. সূচনা বোঝাতে  :রানি এখন ইংরেজি পড়তে শিখেছে।
জ. বিশেষণবাচকতায়  : লোকটাকে দৌড়াতে দেখলাম ৷
ঝ. ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য গঠনে : তোমাকে তো এ গ্রামে থাকতে দেখিনি।
ঞ. অনুসর্গরূপে : ‘কোন দেশেতে তরুলতা সকল দেশের চাইতে শ্যামল। '
ট. বিশেষ্যের সঙ্গে অন্বয় সাধনে : ‘দেখিতে বাসনা মাগো তোমার চরণ। ’
ঠ. বিশেষণের সঙ্গে অন্বয় সাধনে : পদ্মফুল দেখতে সুন্দর ।


৪।‘ইতে’> ‘তে’ বিভক্তি যুক্ত ক্রিয়ার দ্বিত্ব প্রয়োগ
ক. নিরন্তরতা প্রকাশে : ‘কাটিতে কাটিতে ধান এলো বরষা।'
খ. সমকাল বোঝাতে : ‘সেঁউতিতে পদ দেবী রাখিতে রাখিতে। সেঁউতি হইল সোনা ‘দেখিতে দেখিতে’।
টীকা : রীতিসিদ্ধ প্রয়োগের ক্ষেত্রে সমাপিকা ক্রিয়া অনুপস্থিত থেকে অসমাপিকা ক্রিয়ার ব্যবহারে বাক্য গঠিত হতে পারে। যেমন— গরু মেরে জুতা দান। আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ ।


                                                                                                                যৌগিক ক্রিয়া
যৌগিক ক্রিয়ার গঠন বিধি : অসমাপিকা ক্রিয়ার পরে যা, পড়, দেখ্, লাগ্, ফেল্, আস্, উঠ, দে, লহ্, থাক্, প্রভৃতি ধাতু থেকে সমাপিকা ক্রিয়া গঠিত হয়ে উভয়ে মিলিতভাবে যৌগিক ক্রিয়া তৈরি করে, এসব যৌগিক ক্ৰিয়া বিশেষ অর্থ প্রকাশ করে। যেমন—
১. যা-ধাতু
                ক. সমাপ্তি অর্থে : বৃষ্টি থেমে গেল ৷
               খ. অবিরাম অর্থে : গায়ক গেয়ে যাচ্ছেন।
               গ. ক্রমশ অর্থে :চা জুড়িয়ে যাচ্ছে।
               ঘ. সম্ভাবনা অর্থে : এখন যাওয়া যেতে পারে।
২।পড়-ধাতু
               ক. সমাপ্তি অর্থে : এখন শুয়ে পড়।
               খ. ব্যাপ্তি অর্থে : কথাটা ছড়িয়ে পড়েছে।
              গ. আকস্মিকতা অর্থে : এখনই তুফান এসে পড়বে।
              ঘ. ক্রমশ অর্থে : কেমন যেন মনমরা হয়ে পড়েছি।

৩. দেখ্‌-ধাতু
ক. মনোযোগ আকর্ষণে : এদিকে চেয়ে দেখ।
খ. পরীক্ষা অর্থে : লবণটা চেখে দেখ ।
গ. ফল সম্ভাবনায় সাহেবকে বলে দেখ ।


8. আস্-ধাতু
              ক. সম্ভাবনায়  : আজ বিকেলে বৃষ্টি আসতে পারে।

              খ. অভ্যস্ততায় : আমরা এ কাজই করে আসছি।
              গ. আসন্ন সমাপ্তি অর্থে : ছুটি ফুরিয়ে আসছে।


৫. দি ধাতু
               ক. অনুমতি অর্থে : আমাকে যেতে দাও ।
               খ. পূর্ণতা অর্থে : কাজটা শেষ করে দিলাম ।
              গ. সাহায্য প্রার্থনায়  :আমাকে অঙ্কটা বুঝিয়ে দাও ৷


৬. নি-ধাতু
ক. নির্দেশ জ্ঞাপনে : এবার কাপড়-চোপড় গুছিয়ে নাও ৷
খ. পরীক্ষা অর্থে : কষ্টি পাথরে সোনাটা কষে নাও।


৭।ফেল-ধাতু
            ক. সম্পূর্ণতা অর্থে : সন্দেশগুলো খেয়ে ফেল ।
            খ. আকস্মিকতা অর্থে : ছেলেরা হেসে ফেলল।


৮. উঠ-ধাতু
          ক. ক্রমান্বয়তা বোঝাতে : ঋণের বোঝা ভারী হয়ে উঠছে।
          খ. অভ্যাস অর্থে : শুধু শুধু তিনি রেগে ওঠেন।
          গ. আকস্মিকতা অর্থে : সে হঠাৎ চেঁচিয়ে উঠল।
          ঘ. সম্ভাবনা অর্থে : আমার আর থাকা হয়ে উঠল না ।
          ঙ. সামর্থ্য অর্থে : এসব কথা আমার সহ্য হয়ে ওঠে না।

৯. থাক্—ধাতু
                      খ. সম্ভাবনায় : তিনি হয়তো বলে থাকবেন ।
                     গ. সন্দেহ প্রকাশে : সে-ই কাজটা করে থাকবে।
                     ঘ. নির্দেশে : আর দরকার নেই, এবার বসে থাক।


১০. লাগ—ধাতু
                  ক. অবিরাম অর্থে : খোকা কাঁদতে লাগল ।
                  খ. সূচনা নির্দেশে : এখন কাজে লাগ তো দেখি ৷

Content added By

Related Question

View More

Promotion