গাড়ির ট্যাংকে যে পেট্রোল কম ছিল তা আগে থেকে বোঝা যায়নি কেন?
মৃগাঙ্কবাবুর সন্দেহটা যে অমূলক নয় সেটা প্রমাণ হলো পানাগড়ের কাছাকাছি এলে। গাড়ির পেট্রোল ফুরিয়ে গেল। পেট্রোলের ইনডিকেটরটা কিছুকাল থেকেই গোলমাল করছে, সে কথা আজও বেরোবার মুখে ড্রাইভার সুধীরকে বলেছেন, কিন্তু সুধীর গা করেনি। আসলে কাঁটা যা বলছিল তার চেয়ে কম পেট্রোল ছিল ট্যাংকে।
'এখন কী হবে?' জিজ্ঞেস করলেন মৃগাঙ্কবাবু।
'আমি পানাগড় চলে যাচ্ছি', বলল সুধীর, 'সেখান থেকে তেল নিয়ে আসব।'
*পানাগড় এখান থেকে কতদূর?”
'মাইল তিনেক হবে।'
'তার মানে তো দু-আড়াই ঘণ্টা। শুধু তোমার দোষেই এটা হলো। এখন আমার অবস্থাটা কী হবে ভেবে দেখেছ?” মৃগাঙ্কবাবু ঠাণ্ডা মেজাজের মানুষ, কিন্তু আড়াই ঘণ্টা খোলা মাঠের মধ্যে একা পাড়িতে বসে থাকতে হবে জেনে মেজাজটা খিটখিটে হয়ে গিয়েছিল।
'তাহলে আর দেরি করো না, বেরিয়ে পড়ো। আটটার মধ্যে কলকাতা ফিরতে পারবে তো? এখন সাড়ে তিনটে।”
“ভা পাৱৰ বাৰু।'
‘এই নাও টাকা । আর ভবিষ্যতে এমন ভুলটি করো না কখনো । লংজার্নিতে এসব রিস্কের মধ্যে যাওয়া কখনোই
উচিত নয়।’
সুধীর টাকা নিয়ে চলে গেল পানাগড় অভিমুখে
মৃগাঙ্কশেখর মুখোপাধ্যায় খ্যাতনামা জনপ্রিয় সাহিত্যিক। দুর্গাপুরে একটি ক্লাবের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তাঁকে ডাকা হয়েছিল মানপত্র দেওয়া হবে বলে। ট্রেনে রিজার্ভেশন পাওয়া যায়নি, তাই মোটরে যাত্রা । সকালে চা খেয়ে বেরিয়েছেন, আর ফেরার পথে এই দুর্যোগ । মৃগাঙ্কবাবু কুসংস্কারে বিশ্বাস করেন না, পাঁজিতে দিনক্ষণ দেখে যাত্রা করাটা তাঁর মতে কুসংস্কার, কিন্তু আজ পাঁজিতে যাত্রা নিষিদ্ধ বললে তিনি অবাক হবেন না । আপাতত গাড়ি থেকে নেমে আড় ভেঙে তিনি তাঁর চারদিকটা ঘুরে দেখে নিলেন
মাঘ মাস, খেত থেকে ধান কাটা হয়ে গেছে, চারদিক ধু-ধু করছে মাঠ, দূরে, বেশ দূরে, একটিমাত্র কুঁড়েঘর একটি তেঁতুলগাছের পাশে দাঁড়িয়ে আছে। এ ছাড়া বসতির কোনো চিহ্ন নেই। আরও দূরে রয়েছে একসারি তালগাছ, আর সবকিছুর পিছনে জমাটবাঁধা বন। এই হলো রাস্তার এক দিক, অর্থাৎ পুব দিকের দৃশ্য । পশ্চিমেও বিশেষ পার্থক্য নেই। রাস্তা থেকে চল্লিশ-পঞ্চাশ হাত দূরে একটা পুকুর রয়েছে। তাতে জল বিশেষ নেই । গাছপালা যা আছে তা—দু একটা বাবলা ছাড়া—সবই দূরে। এদিকেও দুটি কুঁড়েঘর রয়েছে, কিন্তু মানুষের কোনো চিহ্ন নেই। আকাশে উত্তরে মেঘ দেখা গেলেও এদিকে রোদ। মাঠের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে একটা কাকতাড়ুয়া ।
শীতকাল হলেও রোদের তেজ আছে বেশ, তাই মৃগাঙ্কবাবু গাড়িতে ফিরে এলেন। তারপর ব্যাগ থেকে একটা গোয়েন্দাকাহিনি বার করে পড়তে আরম্ভ করলেন ।
এর মধ্যে দুটো অ্যাম্বাসাডর আর একটা লরি গেছে তাঁর পাশ দিয়ে, তার মধ্যে একটা কলকাতার দিকে। কিন্তু কেউ তাঁর অবস্থা জিজ্ঞেস করার জন্য থামেনি । মৃগাঙ্কবাবু মনে মনে বললেন, বাঙালিরা এ-ব্যাপারে বড়ো স্বার্থপর হয়। নিজের অসুবিধা করে পরের উপকার করাটা তাদের কুষ্ঠিতে লেখে না। তিনি নিজেও কি এদের মতোই ব্যবহার করতেন? হয়ত তাই । তিনিও তো বাঙালি। লেখক হিসেবে তাঁর খ্যাতি আছে ঠিকই, কিন্তু তাতে তাঁর মজ্জাগত দোষগুলোর কোনো সংস্কার হয়নি।
উত্তরের মেঘটা অপ্রত্যাশিতভাবে দ্রুত এগিয়ে এসে সূর্যটাকে ঢেকে ফেলেছে। সঙ্গে সঙ্গে একটা ঠান্ডা হাওয়া। মৃগাঙ্কবাবু ব্যাগ থেকে পুলোভারটা বার করে পরে নিলেন। এদিকে সূর্যও দ্রুত নিচের দিকে নেমে এসেছে। পাঁচটার মধ্যেই অস্ত যাবে। তখন ঠান্ডা বাড়বে। কী মুশকিলে ফেলল তাঁকে সুধীর!
মৃগাঙ্কবাবু দেখলেন যে, বইয়ে মন দিতে পারছেন না। তার চেয়ে নতুন গল্পের প্লট ভাবলে কেমন হয়? ‘ভারত’ পত্রিকা তাঁর কাছে একটা গল্প চেয়েছে, সেটা এখনও লেখা হয়নি। একটা প্লটের খানিকটা মাথায় এসেছে এই পথটুকু আসতেই । মৃগাঙ্কবাবু নোটবুক বার করে কয়েকটা পয়েন্ট লিখে ফেললেন ।
নাহ্, গাড়িতে বসে আর ভালো লাগে না ।
খাতা বন্ধ করে আবার বাইরে এসে দাঁড়ালেন মৃগাঙ্কবাবু। তারপর কয়েক পা সামনে এগিয়ে রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে এদিক-ওদিক দেখে তাঁর মনে হলো বিশ্বচরাচরে তিনি একা। এমন একা তিনি কোনোদিন অনুভব করেননি।
না, ঠিক একা নয়। একটা নকল মানুষ আছে কিছু দূরে দাঁড়িয়ে।
ওই কাকতাড়ুয়াটা
মাঠের মধ্যে এক জায়গায় কী যেন একটা শীতের ফসল রয়েছে একটা খেতে, তারই মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে কাকতাড়ুয়াটা। একটা খাড়া বাঁশ মাটিতে পোঁতা, তার সঙ্গে আড়াআড়িভাবে একটা বাঁশ ছড়ানো হাতের মতো দুদিকে বেরিয়ে আছে। এই হাত দুটো গলানো রয়েছে একটা ছেঁড়া জামার দুটো আস্তিনের মধ্যে দিয়ে। খাড়া বাঁশটার মাথায় রয়েছে একটা উপুড় করা মাটির হাঁড়ি। দূর থেকে বোঝা যায় না, কিন্তু মৃগাঙ্কবাবু অনুমান করলেন সেই হাঁড়ির রং কালো, আর তার ওপর সাদা রং দিয়ে আঁকা রয়েছে ড্যাবা ড্যাবা চোখ মুখ । আশ্চর্য— এই জিনিসটা পাখিরা আসল মানুষ ভেবে ভুল করে, আর তার ভয়ে খেতে এসে উৎপাত করে না। পাখিদের বুদ্ধি কি এতই কম? কুকুর তো এ ভুল করে না। তারা মানুষের গন্ধ পায়। কাক চড়ুই কি তাহলে সে গন্ধ পায় না?
মেঘের মধ্যে একটা ফাটল দিয়ে রোদ এসে পড়ল কাকতাড়ুয়াটার গায়ে। মৃগাঙ্কবাবু লক্ষ করলেন যে, যে জামাটা কাকতাড়ুয়াটার গায়ে পরানো হয়েছে সেটা একটা ছিটের শার্ট। কার কথা মনে পড়ল ওই ছেঁড়া লাল-কালো ছিটের শার্টটা দেখে? মৃগাঙ্কবাবু অনেক চেষ্টা করেও মনে করতে পারলেন না। তবে কোনো একজনকে তিনি ওরকম একটা শার্ট পড়তে দেখেছেন—বেশ কিছুকাল আগে ।
আশ্চর্য—ওই একটি নকল প্রাণী ছাড়া আর কোনো প্রাণী নেই । মৃগাঙ্কবাবু আর ওই কাকতাড়ুয়া । এই সময়টা খেতে
কাজ হয় না বলে গ্রামের মাঠেঘাটে লোকজন কম দেখা যায় ঠিকই, কিন্তু এরকম নির্জনতা মৃগাঙ্কবাবুর অভিজ্ঞতায় এই প্রথম ৷
মৃগাঙ্কবাবু ঘড়ি দেখলেন। চারটা কুড়ি। সঙ্গে ফ্লাস্কে চা রয়েছে। সেটার সদ্বব্যবহার করা যেতে পারে।
গাড়িতে ফিরে এসে ফ্লাস্ক খুলে ঢাকনায় চা ঢেলে খেলেন মৃগাঙ্কবাবু। শরীরটা একটু গরম হলো । কালো মেঘের মধ্যে ফাঁক দিয়ে সূর্যটাকে একবার দেখা গেল। কাকতাড়ুয়াটার গায়ে পড়েছে লালচে রোদ। সূর্য দূরের তালগাছটার মাথার কাছে এসেছে, আর মিনিট পাঁচেকেই অস্ত যাবে।
আরেকটা অ্যাম্বাসাডর মৃগাঙ্কবাবুর গাড়ির পাশ দিয়ে বেরিয়ে গেল। মৃগাঙ্কবাবু আরেকটু চা ঢেলে খেয়ে আবার
গাড়ি থেকে নামলেন । সুধীরের আসতে এখনও ঘণ্টাখানেক দেরি। কী করা যায়?
পশ্চিমের আকাশ এখন লাল। সেদিক থেকে মেঘ সরে এসেছে। চ্যাপটা লাল সূর্যটা দেখতে দেখতে দিগন্তের আড়ালে চলে গেল। এবার ঝপ করে অন্ধকার নামবে ।
কাকতাড়ুয়া ৷
কেন জানি মৃগাঙ্কবাবু অনুভব করছেন প্রতি মুহূর্তেই ওই নকল মানুষটা তাঁকে বেশি করে আকর্ষণ করছে। সেটার দিকে একদৃষ্টে চেয়ে থাকতে থাকতে মৃগাঙ্কবাবু কতকগুলো জিনিস লক্ষ করে একটা হৃদকম্প অনুভব করলেন।
ওটার চেহারায় সামান্য পরিবর্তন হয়েছে কি ? হাত দুটো কি নিচের দিকে নেমে এসেছে খানিকটা? দাঁড়ানোর ভঙ্গিটা কি আরেকটু জ্যান্ত মানুষের মতো?
খাড়া বাঁশটার পাশে কি আরেকটা বাঁশ দেখা যাচ্ছে?
ও দুটো কি বাঁশ, না ঠ্যাং?
মাথার হাঁড়িটা একটু ছোটো মনে হচ্ছে না?
তিনি কি এই তেপান্তরের মাঠে একা দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে চোখে ভুল দেখছেন ?
কাকতাড়ুয়া কখনো জ্যান্ত হয়ে ওঠে?
কখনোই না ৷
কিন্তু-
মৃগাঙ্কবাবুর দৃষ্টি আবার কাকতাড়ুয়াটার দিকে গেল । কোনও সন্দেহ নেই। সেটা জায়গা বদল করেছে। সেটা ঘুরে দাঁড়িয়ে তাঁর দিকে খানিকটা এগিয়ে এসেছে।
এসেছে না, আসছে।
খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলা, কিন্তু দু পায়ে চলা । হাঁড়ির বদলে একটা মানুষের মাথা । গায়ে এখনো সেই ছিটের শার্ট; আর তার সঙ্গে মালকোঁচা দিয়ে পরা খাটো ময়লা ধুতি ।
'বাবু!’
মৃগাঙ্কবাবুর সমস্ত শরীরের মধ্যে দিয়ে একটা শিহরন খেলে গেল। কাকতাড়ুয়া মানুষের গলায় ডেকে উঠেছে এবং
এ গলা তাঁর চেনা।
এ হলো তাঁদের এককালের গৃহকর্মী অভিরামের গলা। এদিকেই তো ছিল অভিরামের দেশ। একবার তাকে
জিজ্ঞেস করেছিলেন মৃগাঙ্কবাবু। অভিরাম বলেছিল সে থাকে মানকড়ের পাশের গাঁয়ে। পানাগড়ের আগের
স্টেশনই তো মানকড়
মৃগাঙ্কবাবু চরম ভয়ে পিছোতে পিছোতে গাড়ির সঙ্গে সেঁটে দাঁড়ালেন। অভিরাম এগিয়ে এসেছে তাঁর দিকে।
এখন সে মাত্র দশ গজ দূরে।
‘আমায় চিনতে পারছেন বাবু?'
মনে যতটা সাহস আছে সবটুকু একত্র করে মৃগাঙ্কবাবু প্রশ্নটা করলেন ।
‘তুমি অভিরাম না?’
‘অ্যাদ্দিন পরেও আপনি চিনেছেন বাবু?’
মানুষেরই মতো দেখাচ্ছে অভিরামকে, তাই বোধহয় মৃগাঙ্কবাবু সাহস পেলেন। বললেন, ‘তোমাকে চিনেছি
তোমার জামা দেখে। এ জামা তো আমিই তোমাকে কিনে দিয়েছিলাম।' ‘হ্যাঁ বাবু, আপনিই দিয়েছিলেন। আপনি আমার জন্য অনেক করেছেন, কিন্তু শেষে এমন হলো কেন বাবু? আমি তো কোনো দোষ করিনি । আপনারা আমার কথা বিশ্বাস করলেন না কেন?”
মৃগাঙ্কবাবুর মনে পড়ল। তিন বছর আগের ঘটনা। অভিরাম ছিল মৃগাঙ্কবাবুদের বিশ বছরের পুরনো গৃহকর্মী। শেষে একদিন অভিরামের ভীমরতি ধরে। সে মৃগাঙ্কবাবুর বিয়েতে পাওয়া সোনার ঘড়িটা চুরি করে বসে। সুযোগ-সুবিধা দুই-ই ছিল অভিরামের । অভিরাম নিজে অবশ্য অস্বীকার করে । কিন্তু মৃগাঙ্কবাবুর বাবা ওঝা ডাকিয়ে কুলোতে চাল ছুড়ে মেরে প্রমাণ করিয়ে দেন যে, অভিরামই চোর। ফলে অভিরামকে ছাড়িয়ে দেওয়া হয় ।
অভিরাম বলল, ‘আপনাদের ওখান থেকে চলে আসার পর আমার কী হলো জানেন? আর আমি চাকরি করিনি কোথাও, কারণ আমার কঠিন ব্যারাম হয়। উদুরি। টাকা-পয়সা নাই । না ওষুধ, না পথ্যি। সেই ব্যারামই আমার শেষ ব্যারাম। আমার এই জামাটা ছেলে রেখে দেয়। সে নিজে কিছুদিন পরে। তারপর সেটা ছিঁড়ে যায়। তখন সেটা কাকতাড়ুয়ার পোশাক হয়। আমি হয়ে যাই সেই কাকতাড়ুয়া। কেন জানেন? আমি জানতাম একদিন না একদিন আপনার সঙ্গে আবার দেখা হবে । আমার প্রাণটা ছটফট করছিল। —হ্যাঁ, মৃত লোকেরও প্রাণ থাকে—আমি মরে গিয়ে যা জেনেছি সেটা আপনাকে বলতে চাইছিলাম ।’
‘সেটা কী অভিরাম?'
‘বাড়ি ফিরে গিয়ে আপনার আলমারির নিচে পিছন দিকটায় খোঁজ করবেন। সেখানেই আপনার ঘড়িটা পড়ে আছে এই তিন বছর ধরে। আপনার নতুন চাকর ভালো করে ঝাড়ু দেয় না, তাই সে দেখতে পায়নি। এই ঘড়ি পেলে পরে আপনি জানবেন অভিরাম কোনো দোষ করেনি।'
অভিরামকে আর ভালো করে দেখা যায় না— সন্ধ্যা নেমে এসেছে। মৃগাঙ্কবাবু শুনলেন অভিরাম বলছে, ‘এতকাল পরে নিশ্চিন্ত হলাম বাবু। আমি আসি । আমি আসি...'
মৃগাঙ্কবাবুর চোখের সামনে থেকে অভিরাম অদৃশ্য হয়ে গেল ।
‘তেল এনেছি বাবু।’
সুধীরের গলায় মৃগাঙ্কবাবুর ঘুমটা ভেঙে গেল। গল্পের প্লট ফাঁদতে ফাঁদতে কলম হাতে গাড়ির মধ্যে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন তিনি। ঘুম ভাঙতেই তাঁর দৃষ্টি চলে গেল পশ্চিমের মাঠের দিকে। কাকতাড়ুয়াটা যেমন ছিল
তেমনভাবেই দাঁড়িয়ে আছে ।
বাড়িতে এসে আলমারির তলায় খুঁজতেই ঘড়িটা বেরিয়ে পড়ল। মৃগাঙ্কবাবু স্থির করলেন ভবিষ্যতে আর কিছু
গেলেও ওঝার সাহায্য আর কখনো নেবেন না।
লেখক-পরিচিতি
সত্যজিৎ রায়ের জন্ম ১৯২১ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতায়। তাঁর পূর্ব-প্রজন্মের ভিটা ছিল কিশোরগঞ্জের কটিয়াদি উপজেলার মসুয়া গ্রামে। সত্যজিৎ রায় একজন চলচ্চিত্র-নির্মাতা, চিত্রনাট্যকার, শিল্পনির্দেশক, সংগীত পরিচালক ও লেখক। তিনি বিশ শতকের শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র-নির্মাতাদের একজন হিসাবে বিবেচিত। তাঁর নির্মিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘পথের পাঁচালী' (১৯৫৫) বহু আন্তর্জাতিক পুরস্কার লাভ করে। চলচ্চিত্র নির্মাণের বাইরে তিনি ছিলেন একাধারে কল্পকাহিনি লেখক, প্রকাশক ও চিত্রকর । তিনি ছোটোগল্প ও উপন্যাসও রচনা করেছেন। তাঁর সৃষ্ট জনপ্রিয় চরিত্র গোয়েন্দা ফেলুদা ও প্রোফেসর শঙ্কু । ১৯৯২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।