পঁচিশ বছর আগে চৌধুরী কীসের প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছিলেন?
ভোরের ট্রেনে গাঁয়ে ফিরে এলেন শনু পণ্ডিত।
ন্যুব্জ দেহ, রুক্ষ চুল, মুখময় বার্ধক্যের জ্যামিতিক রেখা ।
অনেক আশা-ভরসা নিয়েই শহরে গিয়েছিলেন তিনি। ভেবেছিলেন, কিছু টাকাপয়সা সাহায্য পেলে আবার নতুন করে দাঁড় করাবেন স্কুলটাকে। আবার শুরু করবেন গাঁয়ের ছেলেমেয়েদের পড়ানোর কাজ। কত আশা !
আশার মুখে ছাই!
কেউ সাহায্য দিল না স্কুলটার জন্য। না চৌধুরীরা। না সরকার। সরকারের কাছে সাহায্য চাইতে গিয়ে তো রীতিমতো ধমকই খেলেন শনু পণ্ডিত। শিক্ষা বিভাগের বড়ো সাহেব শমসের খান বললেন, রাজধানীতে দুটো নতুন হোটেল তুলে, আর সাহেবদের ছেলেমেয়েদের জন্য একটা ইংলিশ স্কুল দিতে গিয়ে প্রায় কুড়ি লাখ টাকার মতো খরচ। ফান্ডে এখন আধলা পয়সা নেই সাহেব। অযথা বারবার এসে জ্বালাতন করবেন না আমাদের। পকেটে যদি টাকা না থাকে, স্কুল বন্ধ করে চুপচাপ বসে থাকুন। এমনভাবে ধমকে উঠেছিলেন তিনি যেন স্কুলের জন্য সাহায্য চাইতে এসে ভারি অন্যায় করে ফেলেছেন শনু পণ্ডিত।
হেঁট মাথায় সেখান থেকে বেরিয়ে চলে এলেও, একেবারে আশা হারাননি তিনি । ভেবেছিলেন সরকার সাহায্য দিল না, চৌধুরী সাহেব নিশ্চয়ই দেবেন। এককালে তো চৌধুরী সাহেবের সহযোগিতা পেয়েই না স্কুলটা দিয়েছিলেন শনু পণ্ডিত ৷
সে আজ বছর পঁচিশেক আগের কথা—
আশেপাশে দু-চার গাঁয়ে স্কুল বলতে কিছুই ছিল না ।
লেখাপড়া কাকে বলে তা জানতই না গাঁয়ের লোক । তখন সবেমাত্র এনট্রান্স পাশ করে বেরিয়েছেন শনু পণ্ডিত। বাইশ বছরের জোয়ান ছেলে । চৌধুরীর তখন যৌবনকাল। গাঁয়েই থাকতেন তিনি। গাঁয়ে থেকে জমিদারির তদারক করতেন। অবসর সময় তাস, পাশা আর দাবা খেলতেন বসে বসে। কথায় কথায় গাঁয়ে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠার ইচ্ছেটা তাঁর কাছে ব্যক্ত করেছিলেন শনু পণ্ডিত । জুলু চৌধুরী বেশ আগ্রহ দেখালেন। বললেন, সে তা বড়ো ভাল কথা, গাঁয়ের লোকগুলো সব গণ্ডমূর্খ রয়ে যাচ্ছে। একটা স্কুলে যদি ওদের লেখাপড়া শেখাতে পারো সে তো বড়ো ভালো কথা। কাজ শুরু করে দাও।
টাকাপয়সা খুব বেশি না দিলেও, স্কুলের জন্য একটা অনাবাদী জমি ছেড়ে দিয়েছিলেন জুলু চৌধুরী। শহর থেকে ছুতোর মিস্ত্রি নিয়ে এসে গুটিকয়েক ছোটো ছোটো টুল আর টেবিলও তৈরি করে দিয়েছিলেন তিনি । একমাত্র সম্বল দু-টুকরো ধেনো জমি ছিল শনু পণ্ডিতের। সে দুটো বিক্রি করে, স্কুলের জন্য টিন, কাঠ আর বেড়া
তৈরির বাঁশ কিনেছিলেন তিনি
ব্যয়ের পরিমাণটা তাঁরই বেশি ছিল, তবু চৌধুরীর নামেই স্কুলটার নামকরণ করেছিলেন তিনি—জুলু চৌধুরীর স্কুল । আটহাত কাঠের মাথায় পেরেক আঁটা চারকোনি ফলকের ওপর জুলু চৌধুরীর নামটা জ্বলজ্বল করত সকাল,
বিকেল ।
আজো করে।
যদিও আকস্মিক ঝড়ে মাটিতে মুখ থুবড়ে ভেঙে পড়েছে স্কুলটা। আর তার টিনগুলো জং ধরে অকেজো হয়ে গেছে
বয়সের বার্ধক্যহেতু।
স্কুলটা ভেঙে পড়েছে। সেটা আবার নতুন করে তুলতে হলে অনেক টাকার দরকার। শনু পণ্ডিত ভেবেছিলেন,
সরকার সাহায্য দিল না, জুলু চৌধুরী নিশ্চয়ই দেবেন। কিন্তু ভুল ভাঙল। সাহায্যের নামে রীতিমতো আঁতকে উঠলেন জুলু চৌধুরী। বললেন, পাগল, টাকাপয়সার কথা মুখে এনো না
কখনো। দেখছ না কত বড়ো স্টাব্লিশমেন্ট। চালাতে গিয়ে রেগুলার হাঁসফাঁস হয়ে যাচ্ছি। আধলা পয়সা নেই হাতে। এদিক দিয়ে আসছে, ওদিক দিয়ে যাচ্ছে।
শনু পণ্ডিত বুঝলেন, গাঁয়ের ছেলেগুলো লেখাপড়া শিখুক, তা আর চান না চৌধুরী সাহেব । কেউই চান না ।
না চৌধুরী, না সরকার, কেউ না ৷
অগত্যা গাঁয়ে ফিরে এলেন শনু পণ্ডিত।
ভেঙে পড়া স্কুলটার পাশ দিয়ে আসবার সময় দু-চোখে পানি উপচে পড়ছিল শনু পণ্ডিতের। লুঙ্গির খুঁটে চোখের পানিটা মুছে নিলেন । গ্রামের লোকগুলো উন্মুখ হয়ে প্রতীক্ষা করছিল তাঁর অপেক্ষায়। ফিরে আসতেই জিজ্ঞেস করল, কী পণ্ডিত, টাকা-পয়সা কিছু দিল চৌধুরী সাহেব?
না, গম্ভীর গলায় উত্তর দিলেন শনু পণ্ডিত। চৌধুরীর আশা ছাইড়া দাও মিয়ারা। এক পয়সাও আর পাইবা না তার
কাছ থাইকা । সেই আশা ছাইড়া দাও ।
পণ্ডিতের কথা শুনে কেমন ম্লান হয়ে গেল উপস্থিত লোকগুলো । বুড়ো হাশমত বলল, আমাগো ছেইলাপেইলাগুলা
বুঝি মূর্খ থাইকবো?
তা, , আর কী কইরবার আছে কও । আমি তো আমার সাধ্যমতো করছি? আস্তে বলল শনু পণ্ডিত! বুড়ো হাশমত বলল, তুমি আর কী কইরবা পণ্ডিত। তুমি তো এমনেও বহুত কইরছ। বিয়া কর নাই, শাদি কর নাই। সারা জীবনটাই তো কাটাইছ ওই স্কুলের পিছনে। তুমি আর কী কইরবা ।
দুপুরে তপ্ত রোদে তখন খাঁ খাঁ করছিল মাঠ ঘাট, প্রান্তর। দূরে খাসাড়ের মাঠে গরু চরাতে গিয়ে বসে বসে বাঁশি
বাজাচ্ছিল কোনো রাখাল ছেলে । বাতাসে বেগ ছিল না। আকাশটা মেঘশূন্য ।
সবাইকে চুপচাপ দেখে আমিন বেপারি বলল, আর রাইখা দাও লেখাপড়া। আমাগো বাপ-দাদা চৌদ্দপুরুষে কোনো দিন লেখাপড়া করে নাই। খেতের কাজ কইরা খাইছে। আমাগো ছেইলাপেইলারাও তাই কইরবো। লেখাপড়ার দরকার নাই ।
তা মন্দ কও নাই বেপারি। তাকে সমর্থন জানাল মুন্সি আকরম হাজি। লেখাপড়ার কোনো দরকার নাই । আমাগো
বাপ-দাদায় লেখাপড়া কারে কয় জাইনতোও না ।
বাপ-দাদায় জাইনতোও না দেইখা বুঝি আমাগো ছেইলাপেইলাগুলাও কিছু জাইনবো না । ইতা কিতা কও মিয়া ।
তকু শেখ রুখে উঠল ওদের ওপর। শনু পণ্ডিত বলল, আগের জমানা চইলা গেছে মিয়া। এই জমানা অইছে লেখাপড়ার জমানা। লেখাপড়া না জাইনলে এই জমানায় মানুষের কদর অয় না ৷
তা তোমরা কি কেবল কথা কইবা, না কিছু কইরবা। জোয়ান ছেলে তোরাব আলী অধৈর্য হয়ে পড়ল। বলল, চৌধুরীরা তো কিছু দিব না, তা বুঝাই গেল । আর গরমেন্টো—গরমেন্টোর কথা রাইখা দাও। গরমেন্টোও মইরা গেছে। এহন কী কইরবা, একডা কিছু করো।
হুঁ। কী কইরবা করো। চিন্তা করো মিয়ারা। বিড়বিড় করে বলল শনু পণ্ডিত। বুড়ো হাশমত চুপচাপ কী যেন ভাবছিল এতক্ষণ। ছেলে দুটো আর বাচ্চা নাতিটাকে অনেক আশা-ভরসা নিয়ে স্কুলে দিয়েছিল সে। আশা ছিল আর কিছু না হোক লেখাপড়া শিখে অন্তত কাচারির পিয়ন হতে পারবে ওরা। গভীরভাবে হয়ত তাদের কথাই ভাবছিল সে। হঠাৎ লাফ দিয়ে উঠে বলল, যতসব ইয়ে অইছে—যাও ইস্কুল আমরাই দিমু। কারো পরোয়া করি না। না গরমেন্টো। না চৌধুরী, বলে কোমরে গামছা আঁটল হাশমত। বুড়ো হাশমতকে গামছা আঁটতে দেখে জোয়ান ছেলে তোরাব আলীও লাফিয়ে উঠল। বলল, টিনের ছাদ যদি না দিবার পারি অন্তত ছনের ছাদ তো দিবার পারমু একডা । কি মিয়ারা?
হ-হ ঠিক। ঠিক কথাই কইছ আলির পো । গুঞ্জরন উঠল চারদিকে।
হাশমত বলল, মোক্ষম প্রস্তাব । ছনের ছাদই দিমু আমরা । ছনের ছাদ দিতে কয় আঁটি ছন লাইগবো? কী পণ্ডিত, চুপ কইরা রইলা ক্যান ৷ কও না?
কমপক্ষে তিরিশটা লাইগবো। মুখে মুখে হিসেব করে দিল শনু পণ্ডিত। তকু বলল, ঘাবড়াইবার কি আছে, আমি
তিনডা দিমু তোমাগোরে ।
আমি দুইডা দিমু পণ্ডিত। আমারডাও লিস্টি করো। এগিয়ে এসে বলল কদম আলী । তোরাব বলল, আমার কাছে ছন নাই । ছন দিবার পারমু না আমি । আমি বাঁশ দিমু গোটা সাত কুড়ি । বাঁশও তো সাত-আট কুড়ির কম লাইগবো না ।
হ-হ ঠিক ঠিক। সবাই সায় দিল ওর কথায় । দু দিনের মধ্যে জোগাড়যন্ত্র সব শেষ ।
বাঁশ এল, ছন এল । তার সঙ্গে বেতও এল বাঁশ আর ছন বাঁধবার জন্য ।
আয়োজন দেখে আনন্দে বুকটা নেচে উঠল শনু পণ্ডিতের । এতক্ষণ গম্ভীর হয়ে কী যেন ভাবছিল আমিন বেপারি । সবার যাতে নজরে পড়ে এমন একটা জায়গায় গলা খাঁকরিয়ে বলল সে, জিনিসপত্তর তো জোগাড় কইরাছ
মিয়ারা । কিন্তুক যারা গতর খাইটবো তাগোরে পয়সা দিবো কে?
হাঁ, তাই তো । কথাটা যেন এক মুহূর্তে নাড়া দিল সবাইকে ।
হঠাৎ হো হো করে হেসে উঠলেন শনু পণ্ডিত। এইডা বুঝি একটা কথা অইল। নিজের কাম নিজে করমু পয়সা আবার কে দিবো? বলে বাঁশ কেটে চালা বাঁধতে শুরু করলেন তিনি। বললেন, নাও নাও মিয়ারা শুরু কর। হুঁ। শুরু করো মিয়ারা। বলল তকু শেখ।
স্কুলের খুঁটি তৈরির জন্য লম্বা একটা গাছের গুঁড়ি খালপার থেকে টেনে নিয়ে এল তোরাব। হুঁ, টান মারো না
মিয়ারা। টান মারো।
হুঁ। মারো জোয়ান হেঁইয়ো—সাবাস জোয়ান হেঁইয়ো। টান মারো। টান মারো। আস্তে আস্তে । এত তড়বড় করলে অয়। বলল বুলির বাপ। হুঁ।
কামের মানুষ হেঁইয়ো–আপনা কাম হেঁইয়ো। টান টান। মরা চৌধুরী হেঁইয়ো। চৌধুরীর লাশ হেঁইয়ো। হঠাৎ খিলখিলিয়ে হেসে উঠল তোরাব আর তকু ।
হাসল সবাই । খকখক করে কেশে নিয়ে বুড়ো হাশমত বলল, মরা গরমেন্টো কইলানা মিয়ারা? মরা গরমেন্টো কইলা না?
হুঁ। মরা গরমেন্টো হেঁইয়ো। —গরমেন্টোর লাশ হেঁইয়ো। টান টান। করম মাঝি চুপ করে এতক্ষণ। বলল, ফুর্তিছে কাম কর মিয়া সিন্নি পাকাইবার বন্দোবস্ত করিগা। বাবা, মাজির পো, বাবা। চালাও ফুর্তি। কলকণ্ঠে চিৎকার উঠল চারদিক থেকে— পাটারি বাড়ির রোগা লিকলিকে বুড়ো কাদের বক্সটাও এসে জুটেছে সেখানে। তাকে দেখে আমিন বেপারি ভ্রূ কুঁচকালো। কী বক্স আলী। সিন্নির গন্ধে ধাইয়া আইছ বুঝি? কয় দিনের উপাস?
যত দিনের অই; তোমার তাতে কী? বেপারির কথায় খেপে উঠল কাদের বক্স। এত দেমাক দেহাও ক্যান মিয়া উপাস ক্যাডা না থাকে? তুমিও থাক। সক্কলে থাকে ।
ঠিক ঠিক। তফু সমর্থন করল তাকে। চৌধুরীরা ছাড়া আর সক্কলেই এক-আধ বেলা উপাস থাকে । এমন কোনো বাপের ব্যাটা নাই যে বুক থাবড়াইয়া কইবার পারব—জীবনে একদিনও উপাস থাকে নাই—হ।
তকু আর কাদেরের কথায় চুপসে গেল আমিন বেপারি । তোরাব বলল, কী মিয়ারা, কিতা নিয়া তর্ক কর তোমরা । বেড়াটা ধরো। টান মারো ।
হুঁ । মারো জোয়ান হেঁইয়ো—চৌধুরীর লাশ হেঁইয়ো—মরা চৌধুরী হেঁইয়ো। আহারে চৌধুরী রে! খিলখিলিয়ে হেসে উঠল সবাই একসঙ্গে।
আকরম হাজি রুষ্ট হলো এদের ওপর। এত বাড়াবাড়ি ভালা না মিয়ারা। এত বাড়াবাড়ি ভালা না। এহনও চৌধুরীর জমি চাষ কইরা ভাত খাও। তারে নিয়া এত বাড়াবাড়ি ভালা না । চাষ করি তো মাগনা চাষ করি নাকি মিয়া । তোরাব রেগে উঠল ওর কথায়। পাল্লায় মাইপা অর্ধেক ধান দিয়া দিই তারে ৷
পাক্কা অর্ধেক । বলল কাদের।
সন্ধ্যা নাগাদ তৈরি হয়ে গেল স্কুলটা।
শেষ বানটা দিয়ে চালার ওপর থেকে নেমে এলেন শনু পণ্ডিত।
লম্বা স্কুলটার দিকে তাকাতে আনন্দে চিকচিক করে উঠল কর্মক্লান্ত চোখগুলো । সৃষ্টির আনন্দ । কদম আলী বলল, গরমেন্টোরে আর চৌধুরীরে আইনা একবার দেখাইলে ভালা অইবো পণ্ডিত। তাগোরে ছাড়াও চইলবার পারি আমরা ।
হ-হ। তাগোরে ছাড়াও চইলবার পারি। ঘাড় বাঁকাল শনু পণ্ডিত।
একটু দূরে সরে গিয়ে বটগাছের নিচে বসতেই কাঠের ফলকটার দিকে চোখ গেল তকু শেখের । আট-হাত লম্বা কাঠের ওপর পেরেক-আঁটা ফলক। তার ওপর জুলু চৌধুরীর নামটা জ্বলজ্বল করে সকাল বিকেল।
ওইটা আর এইহানে ক্যান? বলল তকু শেখ। ওইটারে ফালাইয়া দে খালে; চৌধুরী খালে ভাসুক। হঠাৎ কী মনে করে আবার নিষেধ করল তোরাব। থাম—থাম—ফালাইস না। ইদিকে আন। কালো চারকোনি ফলকটার ওপর ঝুঁকে পড়ে একখানা দা দিয়ে ঘষে ঘষে চৌধুরীর নামটা তুলে ফেলল তোরাব আলী। তারপর বুড়ো হাশমতের কল্কে থেকে একটা কাঠকয়লা তুলে নিয়ে অপটু হাতে কী যেন লিখল সে ফলকটার ওপর।
শনু পণ্ডিত জিরোচ্ছিল বসে বসে। বলল, ওইহানে কী লেইখবার আছ আলীর পো। কিতা লেইখবার আছ ওইহানে? পইড়া দেহ না পণ্ডিত, আহ পইড়া দেহ। আটহাত লম্বা কাঠের ওপর পেরেক-আঁটা ফলকটাকে যথাস্থানে গেঁড়ে
দিল তোরাব ।
অদূরে দাঁড়িয়ে ক্লান্ত দৃষ্টি মেলে মৃদুস্বরে পড়লেন পণ্ডিত। শনু পণ্ডিতের ইস্কুল। পড়েই বার্ধক্য-জর্জরিত মুখটা লজ্জায় রাঙা হয়ে উঠল তাঁর। বিড়বিড় করে বললেন, ইতা কিতা কইরাছ আলীর পো । ইতা কিতা কইরাছ? ঠিক কইরছে। একদম ঠিক। ফোকলা দাঁত বের করে মৃদু হাসল বুড়ো হাশমত। লজ্জায় তখন মাথাটা নুয়ে এসেছে শনু পণ্ডিতের।