শব্দের শেষে দ্বিস্বর থাকলে ‘-য়ের বিভক্তি হয়, এরকম উদাহরণ হচ্ছে-
বাক্যের মধ্যে অন্য শব্দের সাথে সম্পর্ক বোঝাতে বিশেষ্য ও সর্বনামের সঙ্গে অর্থহীন কিছু লগ্নক যুক্ত হয়, সেগুলোকে বিভক্তি বলে। যেমন: -এ, -তে, -য়, -য়ে, কে, রে, -র, -এর, -য়ের ইত্যাদি।
লোকে কি না বলে! এই বাক্যে 'লোক' শব্দের সঙ্গে জুড়ে আছে '-এ' বিভক্তি।
সে ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে গরু চরাতে গেছে। এই বাক্যে 'ছেলে' শব্দের সঙ্গে জুড়ে আছে 'কে বিভক্তি ।
বাড়ির পুকুরের পাড়ে বড়ো ভাইয়ের কলাবাগান। এই বাক্যে 'বাড়ি', 'পুকুর' এবং 'ভাই' শব্দের সঙ্গে জুড়ে আছে'-র', '-এর' এবং '-য়ের' বিভক্তি।
বিভক্তিগুলোকে তিন ভাগে বিভক্ত করে দেখানো যায়।
ক) -এ, -তে, -য়, -য়ে বিভক্তি
সাধারণত ক্রিয়ার স্থান, কাল, ভাব বোঝাতে -এ, তে, -য়, য়ে ইত্যাদি বিভক্তির ব্যবহার হয়। কখনো কখনো বাক্যের কর্তার সঙ্গেও এসব বিভক্তি বসে।
যেসব শব্দের শেষে কারচিহ্ন নেই, সেসব শব্দের সঙ্গে-এ বিভক্তি যুক্ত হয়। যেমন সকালে, দিনাজপুরে, ই- মেইলে, কম্পিউটারে, ছাগলে, তিলে ইত্যাদি।
শব্দের শেষে ই-কার ও উ-কার থাকলে -তে বিভক্তি হয়। যেমন হাতিতে, রাত্রিতে, মধুতে, রামুতে ইত্যাদি।
আ-কারান্ত শব্দের শেষে-য় বিভক্তি হয়। যেমন ঘোড়ায়, সন্ধ্যায়, ঢাকায় ইত্যাদি।
শব্দের শেষে দ্বিস্বর থাকলে-য়ে বিভক্তি হয়। যেমন ছইয়ে, ভাইয়ে, বউয়ে।
ই-কারান্ত শব্দের শেষেও-য়ে বিভক্তি দেখা যায়। যেমন- ঝিয়ে, ঘিয়ে।
খ) -কে, -রে বিভক্তি
বাক্যে গৌণকর্মের সঙ্গে সাধারণত কে এবং-রে বিভক্তি বসে। ক্রিয়াকে 'কাকে' প্রশ্ন করলে যে শব্দ পাওয়া যায় তার সঙ্গে এই বিভক্তি যুক্ত হয়। যেমন- শিশুকে, দরিদ্রকে, আমাকে, আমারে ইত্যাদি।
গ) -র, -এর, -য়ের বিভক্তি
বাক্যের মধ্যে পরবর্তী শব্দের সঙ্গে সম্বন্ধ বোঝাতে পূর্ববর্তী শব্দের সঙ্গে-র, -এর এবং-য়ের বিভক্তি যুক্ত হয়। সাধারণত আ-কারান্ত, ই/ঈ-কারান্ত ও উ/ঊ-কারান্ত শব্দের শেষের বিভক্তি বসে। যেমন- রাজার, প্রজার, হাতির, বুদ্ধিজীবীর, তনুর, বধূর।
যেসব শব্দের শেষে কারচিহ্ন নেই, সেসব শব্দের শেষে-এর বিভক্তি হয়। যেমন বলের, শব্দের, নজরুলের, সাতাশের ইত্যাদি।
শব্দের শেষে দ্বিস্বর থাকলে-য়ের বিভক্তি হয়। যেমন ভাইয়ের, বইয়ের, লাউয়ের, মৌয়ের ইত্যাদি।