রোপেন কেয়ার সাথে কথা বলে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করত কেন?

Created: 10 months ago | Updated: 10 months ago
Updated: 10 months ago

ষষ্ঠ অধ্যায়

বিশ্বস্ত বন্ধু

ঈশ্বরের কাছ থেকে আমরা অনেক সুন্দর সুন্দর দান ও উপহার পেয়েছি। তার মধ্যে শ্রেষ্ঠ দান হলো বন্ধু ও বন্ধুত্ব । যীশু নিজেই বলেছেন, বন্ধুর জন্য প্রাণ দেওয়ার মতো বড় ভালোবাসা আর নাই । যীশুর এই কথা দ্বারাই আমরা বন্ধুত্বের মর্যাদা ও তাৎপর্য কী তা সহজেই উপলব্ধি করতে পারি । পুরাতন নিয়মে আব্রাহামকে ঈশ্বর বন্ধু বলেছেন । আব্রাহামও ঈশ্বরকে বন্ধু বলেছেন । যীশুর মানুষ হয়ে এই পৃথিবীতে এসে শিষ্যদের বাছাই করার মাধ্যমেও আমরা জীবনে বন্ধু নির্বাচনের বিষয়টি কত গুরুত্বপূর্ণ তা অনুভব করতে পারি । বিশ্বস্ত বন্ধু জীবনে মণি-মুক্তার চেয়েও অনেক বেশি মূল্যবান। বন্ধুত্ব আমাদের জীবনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । তাই এই বিষয়টি সম্পর্কে আমাদের গভীরভাবে জানা দরকার। বন্ধুত্ব সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা থাকলে আমাদের জীবন হয়ে উঠবে আনন্দময় ও অর্থপূর্ণ ।

এই অধ্যায় পাঠ শেষে আমরা-

বিশ্বস্ত বন্ধুত্বের ধারণা ব্যাখ্যা করতে পারব;

  • জীবনে বিশ্বস্ত বন্ধুর গুরুত্ব মূল্যায়ন করতে পারব;
  • ভালো ও খারাপ বন্ধুত্বের পার্থক্য নির্ণয় করতে পারব;
  • বিশ্বাসে সমৃদ্ধ জীবনের তাৎপর্য বিশ্লেষণ করতে পারব এবং
  • প্রকৃত বন্ধুত্ব স্থাপনে উদ্যোগী হবো ।

বন্ধুত্ব

জীবনটা অনেক সুন্দর! মানুষের সাথে মানুষের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কারণে তা আরও সুন্দর হয়ে ওঠে । দূর হয়ে যায় নিঃসঙ্গতা । পৃথিবীর সুন্দর, আনন্দদায়ক ও আকর্ষণীয় শব্দগুলোর একটি হলো বন্ধু । বন্ধু কথাটি বললেই বা শুনলেই আমরা খুব আনন্দ বোধ করি । এই শব্দটি উচ্চারণে এমন কারো কথা মনে পড়ে, যাকে আমি বিশ্বাস করি, যার ওপর আমার গভীর আস্থা, যার সাথে আমি সময় কাটাতে চাই, যার সান্নিধ্য উপভোগ করি, যার জন্য আমি যে-কোন কিছু করার জন্য প্রস্তুত এবং আমি আশা করি যে সেও আমার জন্য সব কিছু করতে প্রস্তুত । শুধু তাই নয় আমি তাকে ভালোবাসি এবং আমাকেও সে ভালোবাসে । এক কথায় আমরা বলতে পারি একজন মানুষের সাথে আর একজন মানুষের যে আন্তরিকতাপূর্ণ বা সুহৃদ সম্পর্ক তাকেই বলা হয় বন্ধুত্ব । এই সম্পর্কে রয়েছে পরস্পর পরস্পরের জন্য দরদ, আন্তরিকতা, যত্ন, সহৃদয়তা, মঙ্গল কামনা, গ্রহণযোগ্যতা, সাহায্য-সহযোগিতার মনোভাব এবং ত্যাগ স্বীকার করার ইচ্ছা। মানুষে মানুষে এই গভীর আন্তরিক ও অন্তরঙ্গ সম্পর্কই হলো বন্ধুত্ব। বন্ধু হলো আত্মার আত্মীয়। রক্তের সম্পর্ক না থাকলেও মনের টানে, হৃদয়ের টানে মানুষের মধ্যে যে আত্মার সম্পর্ক তৈরি হয় তাই হলো বন্ধুত্ব ।

 

 

কে আমাদের প্রকৃত বন্ধু?

বাবা ও মায়ের সম্পর্ক থেকেই আমাদের জন্ম । পিতামাতা, ভাইবোন, আত্মীয় পরিজনদের সাথে আমাদের প্রথম সম্পর্ক তৈরি হয় । তারপর ধীরে ধীরে আমরা পরিবারের বাইরের অন্য মানুষদের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলি । বড় হবার সাথে সাথে আমরা বুঝতে পারি একেক জনের সাথে আমাদের একেক রকম হৃদ্যতা গড়ে ওঠে । শিশু, যুবকযুবতী, প্রাপ্ত বয়স্ক, বৃদ্ধ--সবার জন্য একথা সত্য । পরিবার থেকে শুরু করে খেলার মাঠ, রাস্তাঘাট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কর্মক্ষেত্র, সামাজিক অনুষ্ঠান--মোটকথা যেখানেই মানুষের সাথে আমাদের ভাবের আদান প্রদান হবার সুযোগ ও সম্ভাবনা আছে সেখানেই কারো না কারো সাথে আমাদের মনের মিল হতে পারে । তারপর ধীরে ধীরে তা বন্ধুত্বে পরিণত হতে পারে । ব্যক্তিত্বের ভিন্নতায় বন্ধু হবার জন্য বয়স, পেশা, শ্রেণি, শিক্ষাগত যোগ্যতা, ভৌগোলিক দূরত্ব কখনো কার্যকরী হতেও পারে আবার না-ও হতে পারে । কে যে কার বন্ধু হয় তা সুনির্দিষ্ট করে বলা কঠিন। তবে বয়স, পেশা, শ্রেণী, সহপাঠী, সহকর্মী, পাড়াপ্রতিবেশী বা নিকট অবস্থানের লোকজন, এমনকি নিজ পরিবার ও আত্মীয় স্বজনের মধ্যে এই সুহৃদ সম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে । বন্ধু আসলে আত্মার আত্মীয় । হৃদয়ে বা আত্মায় যার সাথে আমাদের অবিচ্ছেদ্য বন্ধন তৈরি হয় সেই হলো বন্ধু । গণমাধ্যম ও ত্বরিৎ যোগাযোগের যুগে নানারকম সামাজিক নেটওয়ার্ক রয়েছে । যেমন, ইন্টারনেট, ফেইসবুক ইত্যাদির মাধ্যমে পৃথিবীর একপ্রান্তের মানুষের সাথে অন্যপ্রান্তের মানুষের বন্ধুত্ব গড়ে উঠছে । যদিও এই ধরনের বন্ধুত্বে মানুষ নানাভাবে প্রতারিতও হচ্ছে। তাহলে কে বিশ্বস্ত বন্ধু? বন্ধুত্বের বিশেষ বিশেষ কতকগুলো গুণ নিয়ে এবার আমরা আলোচনা করব, যেগুলো থাকলে একজনকে আমরা প্রকৃত বন্ধু বলতে পারি ।

ভালোবাসা ও আন্তরিকতাঃ আমাদের জন্মই ভালোবাসা থেকে । আমাদের জন্ম মানুষকে ভালোবাসার জন্য ।

বন্ধুত্বের মাধ্যমে আমরা সেই ভালোবাসা ও আন্তরিকতা বিনিময় করে থাকি। বন্ধুত্বপূর্ণ এ ভালোবাসার জন্য যীশু বলেছিলেন আমি তোমাদের আর দাস বলছি না বরং বন্ধু বলছি । বন্ধুত্বের বড় শক্তি হলো ভালোবাসা । ভালোবাসা থাকলে একজন মানুষ যেমনই হোক না কেন তাকে গ্রহণ করতে পারি । দরদ ও মমতা: বন্ধুর জন্য বন্ধুর থাকে দরদ ও মমতা । যে-কোন ঘটনায় সে নিজের মতোই তার বন্ধুর জন্য অনুভব করে । অনুভূতির তীব্রতা বন্ধুত্বের একটি বড় গুণ । দরদ ও মমতায় তার প্রকাশ ঘটে ।

মঙ্গল আকাঙ্ক্ষা: সে-ই আমার বন্ধু যার নিরন্তর শুভ কামনায় আমি বেঁচে আছি। বন্ধু আমার জন্য সর্বদা শুভ কামনা করে । আমার উদ্দেশ্যে তার প্রতিটি কথা ও কাজ আমার মঙ্গল কামনায় নিবেদিত। প্রকৃত বন্ধু যে কোন অবস্থায় আমার মঙ্গল কামনা করে ।

বিশ্বস্ততা: বিশ্বস্ততা বন্ধুত্বের কেন্দ্রবিন্দু । পরস্পর বিশ্বাস ও বিশ্বস্ততাকে ঘিরে বন্ধুত্বের অন্য গুণগুলো প্রকাশ পায় । একজন বিশ্বস্ত বন্ধু জীবনের অনেক বড় পাওয়া । মণি-মুক্তার চেয়েও মূল্যবান হলো বিশ্বস্ত বন্ধু--যার ওপর আস্থা রাখা যায়, নিজের জীবনের একান্ত সুখ দুঃখ মন খুলে সহভাগিতা করা যায় ।

আত্মদান ও সমর্থন: প্রকৃত বন্ধু তার বন্ধুর জন্য জীবন দিতেও প্রস্তুত । যীশু আমদের প্রকৃত বন্ধু । তিনি আমাদের ভালোবেসে জীবন দিয়েছেন । সব অবস্থায় এক বন্ধু আর এক বন্ধুকে সমর্থন করে । তবে মনে রাখতে হবে যে প্রকৃত বন্ধু তার বন্ধুর অন্যায় কাজকে সমর্থন করে কখনো তাকে বিপদের দিকে ঠেলে দেবে না । সমর্থন হতে হবে সত্য ও ন্যায়ের পথে সমর্থন ।

 

 

সহমর্মিতা, সহভাগিতা ও সহযোগিতাঃ প্রকৃত বন্ধু জীবনের ভালোমন্দ, আনন্দবেদনা, ঘাত-প্রতিঘাত, বিপদ-আপদের সঙ্গী ও সহমর্মী । যে কোন প্রয়োজনে সে বাড়িয়ে দেয় তার সহভাগিতা ও সহযোগিতার হাত । বিনা দ্বিধায় যাকে বলা যায় সব কথা ও চাওয়া যায় সাহায্য সহযোগিতা । জীবনের আনন্দময় ঘটনা বা উৎসবে সে যেমন আনন্দ করে দুঃখের সময়ও সে তেমনিভাবে কাতর হয় ।

গ্রহণযোগ্যতা: মানুষ হিসেবে আমরা প্রত্যেকেই ভিন্ন । আমাদের রয়েছে আলাদা বৈশিষ্ট্য । এই আলাদা বৈশিষ্ট্য নিয়েই আমরা হয়ে উঠি একে অপরের বন্ধু । কিন্তু বন্ধুত্বের সবচেয় বড় গুণ হলো যে, আমরা বন্ধু হিসেবে পরস্পরের এই ভিন্নতাকে খুব সহজেই গ্রহণ করি; বৈচিত্র্যের সৌন্দর্যকে স্বীকৃতি দেই; বন্ধু হিসেবে যে যেমন তাকে সেইভাবেই গ্রহণ করি । এতে আমরা পরস্পর খুব স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি ।

স্বাধীনতা: বন্ধুত্বের প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো এই যে, প্রকৃত বন্ধুত্ব পরস্পরকে স্বাধীন করে তোলে কিংবা একে অপরকে পূর্ণ স্বাধীনতা দান করে। স্বাধীনতায় তারা বেড়ে ওঠে। স্বাধীনতায় তারা একে অন্যকে কেবলমাত্র ‘আমার আমার’ বলে দাবী করে না বা তাকে নিজের গণ্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখে না । বিশ্বাস ও বিশ্বস্ততার কারণে তারা একে অন্যকে স্বাধীন করে তোলে। স্বাধীনতার কারণে তারা পরস্পর পরস্পরের কাছে আরও ঘনিষ্ঠ ও অন্তরঙ্গ হয়ে ওঠে। প্রকৃত বন্ধুত্বের এ স্বাধীনতায় একজন মানুষ নিজের মতো করে বেড়ে ওঠার সুযোগ পায় এবং সুন্দরভাবে বিকশিত হয় ।

কাজ: তোমার ঘনিষ্ঠ বন্ধুকে কী কারণে তুমি ঘনিষ্ঠ বলে মনে কর? তার বিশেষ গুণগুলো লেখ ।

বিশ্বস্ত বন্ধুত্বের গুরুত্ব

আমরা অনেকের সাথেই বন্ধুসুলভ । কিন্তু সবাই আমাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু নয়। ঘনিষ্ঠ বন্ধু সে-ই যাকে আমি সত্যিকারভাবে বিশ্বাস করি । আমরা জীবনে হয়তো অনেক বন্ধু পাব, প্রকৃত বিশ্বস্ত বন্ধুর সংখ্যা খুবই কম । জীবনে দুই একজন যদি পাই তাও বড় ভাগ্যের ব্যাপার । যীশুর জীবনের দিকে তাকালে আমরা এই বিষয়টি খুবই ভালোভাবে বুঝতে পারি । বারোজন শিষ্যের মধ্যে যুদাস যীশুর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল । সাধু পিতরও ভয়ে তাঁকে তিনবার অস্বীকার করেছিলেন, পরে নিজের ভুল বুঝতে পেরে অনুতপ্ত হয়েছিলেন এবং শেষ পর্যন্ত যীশুর প্রতি আজীবন বিশ্বস্ত থেকে নিজের জীবনও দান করেছেন । বিশ্বস্ত বন্ধু আর বন্ধুর বিশ্বস্ততা সত্যি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । যীশু নিজে কিন্তু সমগ্র মানবজাতির বিশ্বস্ত বন্ধু । মানুষকে ভালোবেসে তিনি তাঁর নিজের জীবন দিয়েছেন । রোমান ক্যাথলিক বাইবেলের পুরাতন নিয়মের বেন সিরা পুস্তকে বিশ্বস্ত বন্ধুর গুরুত্ব দেখতে পাই ।

বন্ধুত্ব এক অমূল্য সম্পদ: (বেন সিরা : ৬ : ৫-১৭)

মধুর আলাপ কত বন্ধু আনে;

স্নিগ্ধ কথা নিয়ে আসে কত প্রীতিসম্ভাষণ !

বহু মানুষেরই সঙ্গে তোমার সদ্ভাব ঘটুক,

তবে হাজারজনের মধ্যেও তোমার মন্ত্রণাদাতা হোক মাত্র একজন!

কাউকে বন্ধু বলে গ্রহণ করার আগে যাচাই করে নাও তাকে;

 

 

সঙ্গে সঙ্গে তাকে যেন করো না বিশ্বাস!

এক ধরনের বন্ধু আছে, যারা যতক্ষণ সুবিধা পায়, ততক্ষণই বন্ধু থাকে;

এক ধরনের বন্ধু আছে, শেষকালে যারা শত্রু হয়ে ওঠে;

তবে বিপদের দিনে তোমার পাশে তারা কেউই থাকবে না । এক ধরনের বন্ধু আছে, যারা ভোজন সঙ্গী হয়; তবে বিপদের দিনে তোমার পাশে তারা কেউই থাকবে না ৷

তারা তো তোমার সঙ্গে তাদের ঝগড়ার কথা সকলকে জানাবে, তোমাকে লজ্জাই দেবে ।

তোমার সুদিনে তারা হবে যেন দ্বিতীয় কোন তুমি;

তোমার লোকজনের ওপর তারা ইচ্ছামতো কর্তৃত্বই করবে ।

কিন্তু তোমার অবস্থা পড়ে গেলে তারা তোমার বিরোধিতা করবে;

সেদিন তোমাকে দেখে লুকিয়ে পড়বে তারা । তোমার যত শত্রুর কাছ থেকে নিজেকে দূরেই রাখ তুমি,

আর বন্ধুদের ব্যাপারে তুমি সজাগ-সতর্ক থাক । বিশ্বস্ত বন্ধু, সে তো নিরাপদ আশ্রয়ের মতো; তেমন বন্ধুকে পাওয়া, সে তো মহাসম্পদ-ই পাওয়া । বিশ্বস্ত বন্ধু, আহা, কোন মূল্যেই মেটে না তার দাম; সে নিজেও যেমন, তার সঙ্গী-ও তো তেমনই হয়ে থাকে ।

কোন তুলাদণ্ডেই তার যোগ্যতার হয় না পরিমাপ । বিশ্বস্ত বন্ধু, সে তো জীবনদায়ী অমৃতেরই মতো; প্রভুকে সম্ভ্রম করে যারা, তারাই বন্ধুত্বকে সুপথে নিয়ে চলে;

বিশ্বস্ত বন্ধুর উপকারিতা সম্পর্কে কিছু বাস্তব কথাও শুনি :

  • নিঃসঙ্গতা দূর করে বন্ধুত্ব মানুষের জীবনে নূতন অর্থ দান করে; ব্যক্তির জীবন বিকাশে সাহায্য করে বন্ধুত্ব
  • বিশ্বত্ব বন্ধুত্বের মাধ্যমে ব্যক্তি উপলব্ধি করতে পারে তার নিজ জীবনের মূল্য, শক্তি এবং সে ভালোবাসার যোগ্য;
  • বিশ্বস্ত বন্ধুর কাছ থেকে পাওয়া যায় সুপরামর্শ ও সঠিক নির্দেশনা;
  • বিশ্বস্ত বন্ধু নিরাপদ আশ্রয়--যার ওপর রাখা যায় আস্থা ও ভরসা;
  • বিশ্বস্ত বন্ধু দর্পণস্বরূপ । সে আমাকে চিনে, জানে ও বোঝে এবং আমার আমিকে চিনতে ও জানতে (আত্মজ্ঞান অর্জনে) সাহায্য করে;
  • আমার আসল আমি বা প্রকৃত আত্মপ্রকাশের জন্য বিশ্বস্ত বন্ধু দরকার; তার কাছে আমার মুখোশ খুলে যায় ।
  • বিশ্বস্ত বন্ধু জীবন পথের ঘাত-প্রতিঘাতে এগিয়ে চলার প্রেরণা ;

 

আমাদের সবার জীবনে তাই বিশ্বস্ত বন্ধু খুবই দরকার । নিঃসঙ্গ জীবন নিরর্থক, যন্ত্রণাদায়ক ও ভারগ্রস্ত ।

কাজঃ ১. তোমার বিশ্বস্ত বন্ধু তোমাকে কী কী ভাবে সাহায্য করে তা লেখ । কাজ: ২. তুমি যদি কারও বিশ্বস্ত বন্ধু হতে চাও তবে তোমাকে কী রকম মানুষ হতে হবে তা লেখ ।

ভালো ও মন্দ বন্ধু

বাংলা ভাষায় একটি প্রবাদ রয়েছে ‘সঙ্গদোষে লোহা ভাসে ।' অর্থাৎ আপাতদৃষ্টিতে যা সম্ভব নয় বলে মনে হয়, কারো সান্নিধ্য বা সাহচর্যে তাই সম্ভব হতে পারে। স্বাভাবিকভাবে লোহার মতো ভারী বস্তু জলে কখনো ভাসতে পারে না । কিন্তু নৌকা বানাবার জন্য লোহার পেরেক যখন কাঠের সাথে লাগানো হয় তখন কিন্তু লোহাগুলো নৌকার সাথে ঠিকই ভাসতে থাকে । এই বিষয়টি কিন্তু মানুষের জীবনের বন্ধুত্বের বেলায় খুব সত্য । ভালো বন্ধুর সান্নিধ্যে এসে অনেক খারাপ প্রকৃতির মানুষও ভালো হয়ে যেতে পারে । এক্ষেত্রে বলা যায়, যা অসম্ভব তাই সম্ভব হতে পারে । আবার খারাপ মানুষের সাহচর্যে এসে অনেক ভালো মানুষও খারাপ হয়ে যেতে পারে । তাই আমাদের জীবনে বন্ধু নির্বাচনের জন্য ভালো বা মন্দের বিষয়টি বিবেচনা করা দরকার । আমাদের জানতে ও বুঝতে হয় কে ভালো বা কে মন্দ বন্ধু ।

রোপেন, কেয়া, দ্যুতি, সাবরিন, ঐক্য, সাম্য, আকাশ তারা সবাই নবম শ্রেণিতে পড়ে । তারা সহপাঠী ও বন্ধু । তারা একসাথে লেখাপড়া, খেলাধুলা ও নানারকম কাজ করে, অনেক জায়গায় দল বেঁধে বেড়াতে যায় । দ্যুতি, সাবরিন ও কেয়া তাদের নিজেদের মধ্যে অনেক বিষয়ে কথা হতো, পড়াশুনায় একে অন্যকে সাহায্য করত । তারা সবাই পরস্পর বন্ধু হলেও রোপেন ও কেয়া পরস্পর বেশ ঘনিষ্ঠ । রোপেনের পরিবারে বেশ কিছু সমস্যা ছিল কেয়ার সাথে কথা বলতে সে বেশ স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করত । কেয়ার প্রতি তার অন্যরকম একটি আস্থা ও বিশ্বাস ছিল । কেয়াও তার প্রতি বেশ মনোযোগী ছিল । তার কথাগুলো সে গভীর মনোযোগ দিয়ে শুনত এবং তাকে বোঝার চেষ্টা করত । তাকে বেশ উৎসাহ দিত । যে কোন ব্যাপারে তারা পরস্পরকে সাহায্য করার আপ্রাণ চেষ্টা করত । আকাশ দলে সবার সঙ্গে সব কিছু করলেও রোপেনকে সে একবারে সহ্য করতে পারত না । রোপেনের বিষয়ে সে নানারকম কথা বলত । এতে অবশ্য রোপেন কিছু বলত না। একদিন আকাশ রোপেনকে তার সাথে এক জায়গায় যেতে অনুরোধ করল । রোপেন রাজী হলো । তাকে নিয়ে আকাশ একটি গোপন জায়গায় গেল । সেখানে গিয়ে সে রোপেনকে গাঁজা খেতে পরামর্শ দিল । সে বলল, গাঁজা খেলে তার কোন কষ্ট থাকবে না; পরিবারের সব সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে । রোপেন কিছুতেই রাজী হচ্ছিল না বলে তাকে সে বেশ বাজে বাজে কথা বলল । রোপেনকে সে এও বলল, ‘তুই অন্য কারো সাথে মিশতে পারবি না এবং আজকের কথা কাউকে বলতে পারবি না।' রোপেন সেদিনের মতো রক্ষা পেল । এই ঘটনার পর থেকে আকাশ তাদের দল থেকে দূরে দূরে থাকতে লাগল । ঐক্য ও সাম্যকেও আকাশ বাসা থেকে টাকা চুরি করার বুদ্ধি দিয়েছে । তারাও আকাশের কথা শোনেনি এবং আজকাল তাকে এড়িয়ে চলছে । হঠাৎ একদিন শোনা গেল আকাশকে আর পাওয়া যাচ্ছে না । বাড়ি থেকে টাকা চুরি করে আকাশ কোথায় যেন পালিয়ে গেছে ।

 

 

 

বিশ্বাসে সমৃদ্ধ জীবন

বন্ধুত্ব একটি অতি প্রাচীন ও সর্বজনীন মূল্যবোধ । মানব ইতিহাসে বন্ধুত্ব হলো বিশ্বাসের অভিজ্ঞতা । সুসম্পর্ক ও বন্ধুত্বের মধ্য দিয়েই মানুষ ঈশ্বর ও মানুষকে বিশ্বাস করতে শিখে। বিশ্বাস হলো জীবনের ভিত্তি । ঈশ্বর মানুষকে ভালোবেসে ও বিশ্বাস করে সৃষ্টি করেছেন । তিনি চেয়েছেন মানুষ তাঁকে ভালোবাসবে, তাঁর ওপর আস্থা রাখেবে, তাঁকে বিশ্বাস করবে । ঈশ্বর চিরদিন মানুষের প্রতি বিশ্বস্ত থাকলেও মানুষ কিন্তু ঈশ্বরের প্রতি অনেকবার অবিশ্বস্তই হয়েছে । তারপরও ঈশ্বর কিন্তু চিরবিশ্বস্তই থেকেছেন। তিনি বার বার মানুষকে নানাভাবে বোঝাতে চেয়েছেন পরস্পর পরস্পরের সাথে বিশ্বাস ও আস্থার মাধ্যমেই আমরা সমৃদ্ধ আনন্দময় জীবন গড়ে তুলতে পারি । খ্রিষ্টীয় বিশ্বাসে সমৃদ্ধ জীবনের নানা ঘটনা ও দৃষ্টান্ত আমরা পবিত্র বাইবেলে দেখতে পাই ।

১. প্রথম সামুয়েলের ২০তম অধ্যায়ে আমরা দাউদ ও যোনাথনের বন্ধুত্বের অপূর্ব সুন্দর ঘটনাটি দেখতে পাই । রাজা শৌল যখন হিংসার বশবর্তী হয়ে দাউদকে হত্যা করতে দৃঢ়সংকল্প, তখন রাজা শৌলের পুত্র যোনাথন তার বন্ধু দাউদকে কোন না কোনোভাবে রক্ষা করেছেন । পিতার বিরোধিতা করেও তিনি তার বন্ধুর প্রাণ রক্ষা করেছেন । বন্ধুর প্রতি বিশ্বস্ততার এই অনন্য সুন্দর ঘটনাটি তাদের পরস্পরকে দিয়েছে একটি সমৃদ্ধ জীবন ।

কাজ: প্রথম সামুয়েল ২০তম অধ্যায় পাঠ করে দাউদ ও যোনাথনের বন্ধুত্বের ওপর একটি ছোট একাঙ্কিকা প্রস্তুত কর

২. মথি লিখিত মঙ্গল সমাচারের ১২: ২৮-৩০ এ যীশু বলছেন-

“তোমরা, শ্রান্ত যারা, বোঝার ভারে ক্লান্ত যারা, তোমরা সকলেই আমার কাছে এসো: আমি তোমাদের বিশ্রাম দেব! তোমরা কাঁধে তুলে নাও আমারই জোয়াল, আমারই শিষ্য হও তোমরা: কারণ আমি যে কোমল, বিনম্র-হৃদয় আমি । দেখো, পাবে তোমরা প্রাণের আরাম, কেননা জোয়াল আমার সুবহ, বোঝাও আমার লঘুভার!” এই কথার মধ্যে যীশুর বন্ধুসুলভ আমন্ত্রণ রয়েছে । বিশ্বাসে সাড়া দিয়ে আমরা তাঁর বন্ধু হয়ে উঠলে তিনি কোমলতা, উষ্ণ ভালোবাসা, দয়া, প্রশান্তি ও মমতায় আমাদের জীবন ভরিয়ে তুলবেন । তাই অসীম বিশ্বাসে তাঁর বন্ধু হয়ে উঠলে আমরা হয়ে উঠব সমৃদ্ধ ।

৩. যোহন ১৩: ২৩ “শিষ্যদের মধ্যে একজন, যাকে যীশু বিশেষ স্নেহের চোখে দেখতেন, সে তখন তাকিয়ায় হেলান দিয়ে তাঁর পাশ ঘেঁষেই বসে ছিল ।” যীশু তাঁর সব শিষ্যদেরই ভালোবাসতেন, স্নেহ এবং বিশ্বাস করতেন । তাঁদের সান্নিধ্য ও সাহচর্য তিনি উপভোগ করতেন । যোহনকে তিনি একটু ভিন্ন বা বিশেষ স্নেহের চোখেই দেখতেন । যোহনও তা বুঝতেন । এই বিশ্বাস ও ভালোবাসায় উদ্বুদ্ধ হয়েই তাঁর লিখিত মঙ্গলসমাচারে যীশুকে অনেক গভীরভাবে তিনি উপস্থাপন করতে পেরেছিলেন । এটি ছিল তাঁর একান্ত ব্যক্তিগত বিশ্বাস ও ভালোবাসার অভিজ্ঞতা । এ কারণেই তাঁরা হতে পেরেছিলেন অনেক বেশি আন্তরিক ও অন্তরঙ্গ ।

৪. যোহন ১৫: ১২-১৫খ: “আমার আদেশ হলো এই: আমি যেমন তোমাদের ভালোবেসেছি, তোমরাও তেমনি পরস্পরকে ভালোবাসবে । বন্ধুদের জন্য প্রাণ দেওয়ার চেয়ে বড় ভালোবাসা আর কিছুই নেই । তোমরা আমার বন্ধু--অবশ্য আমি তোমাদের যা করতে বলেছি, তোমরা যদি তাই কর। আমি তোমাদের আর দাস বলছি না, কারণ প্রভু যে কী করছেন, দাসের তো তা জানার কথা নয় । তোমাদের আমি এই জন্যেই বন্ধু বলছি যে, আমার পিতার কাছ থেকে যা কিছু শুনেছি, সবই তোমাদের জানিয়েছি।”

৫. বাইবেলের পুরাতন নিয়মের বেন সিরা পুস্তকের ৬: ৫-১৭-এ আমরা দেখেছি বন্ধুকে ঘিরে বিশ্বস্ততা ও বিশ্বাসের আলোকে জীবন আলোকিত করার একটি অপূর্ব সুন্দর নির্দেশনা । বিশ্বস্ত বন্ধু মণি-মুক্তার চেয়ে দামি, একটি নিরাপদ আশ্রয় । যাকে লাভ করে আমরা সত্যি সত্যি ঐশ্বর্যমণ্ডিত হয়ে উঠি ।

আমাদের জীবনে কে এই প্রকৃত বন্ধু যে সত্যি সত্যি আমাদের জন্য দিতে পারেন একটি সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী জীবন? তিনি হলেন যীশু, যিনি যোহন, পিতর, লাজার, মেরী ম্যাগডেলিন, শামারীয় নারী-- সবাইকে সেই জীবন দিয়েছিলেন । প্রকৃত বন্ধুর সব গুণাবলি যীশুর মধ্যে রয়েছে। অন্য সব বন্ধুরা অবিশ্বস্ত হলেও, তারা আমাদের সাথে প্রতারণা করলেও যীশু কিন্তু কোন দিন আমাদের ছেড়ে যান না । সাধু-সাধ্বীগণ ও যারা বিশ্বাসে সবল ছিলেন তারা কিন্তু ঠিকই তাঁদের জীবনকালে এই কথা বুঝেছিলেন । এ কারণে তাঁরা নিজেদের জীবন দিয়ে যীশুকে ভালোবেসেছিলেন। যেমন সাধু পল, ক্ষুদ্র পুষ্প সাধ্বী তেরেজা, মাদার তেরেজা, আভিলার সাধ্বী তেরেজা, ক্রুশভক্ত সাধু যোহন, সিয়েনার সাধ্বী তেরেজা, সাধ্বী মারীয়া গরেটি প্রমুখ। যীশু আমাদেরও বন্ধু । তিনি প্রতিনিয়ত আমাদের মধ্যে আছেন । তিনি আমাদের ভালোবাসেন । তিনি আমাদের স্বাধীন করে তোলেন । তিনি আমাদের আশা নিরাশা, আনন্দ, দুঃখ-বেদনা, নিঃসঙ্গতা সব বোঝেন । অনেক সময় আমরা তা বুঝি না।

 

 

 

যীশুকে আমাদের ব্যক্তিগত বন্ধু বলে মনে করি না । যীশুকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করতে হবে, কারণ তিনি আমাদের জন্য প্রাণ দিয়েছেন । তিনি আমাদের বন্ধু বলে গ্রহণ করেছেন । যীশুর প্রতি বিশ্বাস আমাদের জীবনকে অর্থপূর্ণ ও আনন্দময় করে তুলবে ।

কাজঃ ১. যীশুর সাথে তোমার সম্পর্ক কী রকম? যীশুর সাথে সম্পর্ক গভীর করার জন্য তুমি কী কর? দলে তা সহভাগিতা কর ।

কাজ: ২. দলে বন্ধুত্ব স্থাপনের কৌশলসমূহ আলোচনা ও লিপিবদ্ধ করে শ্রেণিতে উপস্থাপন কর ।

একসাথে গান করি:

তুমি আমার বন্ধু যীশু, তুমি মম সাথী অন্ধকারে তুমি যে মোর পথ দেখানো বাতি ।। তুমি আমার পালক প্রভু, ভুলে আমার যাও না কভু চোখে চোখে রাখ মোরে তুমি দিবস রাতি ।। তুমি সাথে আছ প্রভু, করি না আর ভয় আসুক যত কঠিন বাধা হবে আমার জয় । ওগো পাপীর পরিত্রাতা, তুমি আমার মুক্তিদাতা তোমায় পেয়ে দুখের মাঝে আনন্দে তাই মাতি । ।

-লেখক : মাণিক নাথ

অনুশীলনী

 

বহুনির্বাচনি প্রশ্ন

১ . বন্ধুত্বের মাধ্যমে কী দূর হয়ে যায় ?

ক. নিঃসঙ্গতা

গ. অসহায়বোধ

খ. অভাববোধ

ঘ. দুশ্চিন্তা

যীশু মানুষকে বন্ধু বলেছেন কেন ?

ক. সুসম্পর্কের জন্য

গ. সমাজের জন্য

খ. আন্তরিকতার জন্য

ঘ. ভালোবাসার জন্য

নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৩ ও ৪নং প্রশ্নের উত্তর দাও :

শ্রেয়া ও ঐশী দুই বান্ধবী । তারা মিলেমিশে পড়াশুনা করে । কিন্তু ঐশী যখন পরীক্ষায় ফলাফল ভালো করে তখন শ্রেয়া ঐশীকে সহ্য করতে পারে না । ঐশী কিন্তু শ্রেয়ার সাথে খারাপ আচারণ করেনি বরং একই রকম সুসম্পর্ক বজায় রাখে ।

৩. শ্রেয়ার মধ্যে বন্ধুত্বের কোন বৈশিষ্ট্যের অভাব রয়েছে ?

ক. সহমর্মিতার

খ. মঙ্গলাকাঙ্ক্ষার

গ. গ্রহণযোগ্যতার

ঘ. দরদের

৪. শ্রেয়ার সাথে ঐশীর সম্পর্ক -

i. আন্তরিকতার

ii. সহযোগিতার

iii. অন্তরঙ্গতার

নিচের কোনটি সঠিক ?

ক. i ও ii

গ. i ও iii

খ. ii ও iii

ঘ. i, ii ও iii

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন

১ . কে আমাদের প্রকৃত বন্ধু হতে পারে ?

২. বিশ্বস্ত বন্ধুর উপকারিতা উল্লেখ কর ।

৩. ভালো ও মন্দ বন্ধুর ৩টি বৈশিষ্ট্য নির্ণয় কর । 

৪. মথি লিখিত মঙ্গল সমাচার ১২: ২৮-৩০ পদে যীশু কী বলেছেন ?

৫. তোমার বন্ধুর কয়েকটি ভালো দিক উল্লেখ কর ।

সৃজনশীল প্রশ্ন

১. বিমল ধনী পিতামাতার একমাত্র সন্তান । স্কুলের পড়াশুনা সমাপ্ত করে কলেজে ভর্তি হয়েছে । সেখানে বেশ কয়েক জনের সাথে তার বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছে। বিমলের সম্পদের লোভে বন্ধুরা তাকে দলনেতা বানিয়েছে । বন্ধু শিশির বুঝতে পারল যে অন্যান্য বন্ধুদের মনোভাব বেশি ভালো নয় । তাই শিশির বিমলকে বন্ধুদের সাথে মেলামেশার ব্যাপারে সচেতন হতে পরামর্শ দেয় । পরবর্তীতে তাকে সঙ্গ দেয় ও সব সময় পড়াশুনায় সাহায্য করে ।

ক. বিশ্বস্ত বন্ধুকে কিসের সাথে তুলনা করা হয়েছে ?

খ. বন্ধুত্ব বলতে কী বুঝ ?

গ.   শিশির বিমলের কী ধরনের বন্ধু – তা ব্যাখ্যা কর ।

ঘ. বিমল ও শিশিরের বন্ধুত্বের ফলাফল মূল্যায়ন কর ।

 

 

২. তনয়, সোহেল, চঞ্চল, প্রতিমা ও অভি সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী । শিক্ষাঙ্গনে তাদের অবদান অনেক। সোহেল পড়াশুনায় একটু দুর্বল । তাই বন্ধু মহল থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। এক পর্যায়ে সে দুষ্ট বন্ধুদের সাথে মেলামেশা আরম্ভ করে । বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে, নিয়মিত স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দেয়। অভি সোহেলের ঘটনাটি লক্ষ করে । অভি স্কুলের পর সোহেলের বাড়িতে যায়। সোহেলের মানসিক অবস্থা সে বুঝতে পারে । সোহেলকে পুনরায় সঠিক পথে ফিরিয়ে আনার জন্য যথেষ্ট সময় দেয়, পড়াশুনা বুঝতে সাহায্য করে, সৎ পথে ফিরে আসতে উৎসাহিত করে ।

ক. মানুষের জন্মের উদ্দেশ্য কী ?

খ. বন্ধুত্ব গড়ার ক্ষেত্রে স্বাধীনতার ভূমিকা ব্যাখ্যা কর ।

গ. অভি সোহেলের কী ধরনের বন্ধু – বর্ণনা কর ।

ঘ.‘সোহেল ভালো ও মন্দ বন্ধুর দ্বারা প্রভাবিত'- উদ্দীপকের আলোকে মূল্যায়ন কর ।

Content added/updated by
Promotion