SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or
Log in with Google Account

Academy

সহিংসতা বিপদগ্রস্ত করে তোলে।
i. পরিবারকে
ii. সমাজকে
iii. দেশকে

Created: 4 months ago | Updated: 4 months ago

ত্রয়োদশ অধ্যায়

সহিংসতা ও শান্তি

 

বর্তমান বিশ্বের দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাই, প্রায় সর্বত্র মানুষে মানুষে দাঙ্গা-হাঙ্গামা, হিংসা-বিদ্বেষ, দলাদলি, মারামারি, কাটাকাটি, যুদ্ধ-বিগ্রহ ইত্যাদি লেগেই আছে । কেউ যেন কাউকে সহ্য করতে পারছে না । কাকে ছোট করে কে বড় হবে, কে কাকে মেরে নিজের অবস্থান গড়বে এমনই প্রতিযোগিতায় যেন অগণিত মানুষ মেতে উঠেছে । আমাদের দেশের চিত্রও কম ভয়াবহ নয় । প্রতিদিনের খবরের কাগজ বা রেডিও-টেলিভিশনের খবর দেখে বা শুনে হত্যা, ভাঙচুর, ধ্বংস, জ্বালাও-পোড়াও-এর যে প্রতিহিংসামূলক চিত্র আমরা দেখতে পাই, তা উপলব্ধি করে সত্যি আমাদের মর্মাহত হতে হয়। এসবের ফলে আমাদের মনে নিরাপত্তাহীনতা দেখা দেওয়া স্বাভাবিক । এ অবস্থা থেকে আমরা সবাই মুক্তি চাই । চাই একটু শান্তি বা একটু সান্ত্বনা ।

এই অধ্যায় পাঠ শেষে আমরা-

  • বিভিন্ন প্রকারের সহিংসতার বর্ণনা দিতে পারব;
  • সহিংসতার কুফলসমূহ ব্যাখ্যা করতে পারব;
  • শান্তির ধারণা ব্যাখ্যা করতে পারব;
  • শান্তি প্রতিষ্ঠায় শিক্ষার্থীর ভূমিকা বিশ্লেষণ করতে পারব;
  • সহিংসতা বর্জন করব এবং
  • শান্তি প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করব ।

সহিংসতা

কাজ: খবরের কাগজ থেকে সহিংসতার কিছু সমসাময়িক চিত্র উপস্থাপন করা হবে । তা দেখে নিম্নলিখিত প্রশ্নের আলোকে তোমরা বিশ্লেষণ করবে ।

ক. চিত্রগুলোতে কী দেখতে পাচ্ছ?

খ. তা দেখার পর তোমার প্রতিক্রিয়া কেমন হচ্ছে?

গ. সহিংসতা কি সমস্ত সমস্যার সমাধান দিতে পারে ?

ঘ. এ পরিপ্রেক্ষিতে কার কী করণীয় লিপিবদ্ধ কর ।

 

সহিংসতা বিষয়টি অনেক ভয়াবহ । প্রগতিশীল ও কল্যাণকামী পৃথিবীর বিপরীত হলো সহিংসতা ৷ এটি হচ্ছে ভালোবাসার বিকৃতরূপ । সাধারণভাবে যা-কিছু বৈধ নয় বা বৈধভাবে করা হয় না, তাকেই সহিংসতা বলা হয় । বলপূর্বক, শক্তি বা ক্ষমতা প্রয়োগের মধ্য দিয়ে জানমালের ক্ষতি সাধন করাই হলো সহিংসতা । সহিংসতা হলো বর্বরতামূলক কোন কাজ যেখানে জড়িত থাকে অমানবিকতা, অনৈতিকতা,

 

 

ঘৃণা, ছলচাতুরী, ভণ্ডামী, অসাধুতা, অন্যায় বিচার ইত্যাদি । সংক্ষেপে বলা যায়, প্রকৃত মানবিকতার অপমৃত্যু বা বিবেক-দংশিত রূপই হলো সহিংসতা ।

ধ্বংস করা বা ধ্বংসের মধ্য দিয়ে আনন্দ পাওয়া অনেক মানুষের অভ্যাস । প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে মানুষ যে দমন বা নিপীড়নের পথ বেছে নেয় তা-ই সহিংসতা । এর ফলে মানুষ তার মনুষ্যত্ববোধ বিসর্জন দিয়ে অবৈধ বা আইন বিরোধী কাজে লিপ্ত হয়ে পড়ে । কোন পরিবার, সমাজ, জাতি, দেশ যখন দুর্নীতির চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে যায় অর্থাৎ হানাহানি, মারামারি, অরাজকতায় পর্যবসিত হয়, তখন সেখানে বিরাজ করে সহিংসতা । বর্তমানে ধৈর্য ও সহনশীলতার অভাবে মানুষের মাঝে যে অস্থিরতা সৃষ্টি হচ্ছে তা-ই সহিংসতার রূপ নিচ্ছে । ব্যক্তি, সমাজ তথা দেশের ক্ষতি সাধন করে সহিংসতা । সহিংসতা কখনো কোনো দেশ, কাল, সমাজ বা ব্যক্তি জীবনে কাম্য নয় ।

আধ্যাত্মিক অর্থে সহিংসতা হলো ভালোবাসার মৃত্যু । কেননা যখনই ভালোবাসার মৃত্যু হয় তখন অমানবিক স্বভাব মানুষকে প্রভাবিত করে । তখন মানুষ সৃষ্টিকর্তার সেই সৃষ্টিশীল রূপকে ঘৃণা করে, অমানবিক রূপটি উম্মোচিত হয় । আর এই অমানবিক স্বভাবের প্রভাবে বিপদগ্রস্ত হয় সমগ্র জাতিসত্তা ।

তবে সহিংসতা শুধু শারীরিকভাবে নির্যাতনকে বোঝায় না । অন্যকে হুমকি দেওয়া, ব্ল্যাকমেইল করা, অন্যের অধিকার অস্বীকার করা ইত্যাদি সব এই সহিংসতার মধ্যে পড়ে। শারীরিক আঘাত বা শাস্তি মানুষকে মানবিক মর্যাদা দেওয়া থেকে বঞ্চিত করে । তা আমাদের অনেক ক্ষেত্রে হীনমন্য করে তোলে ।

বিশ্বের সর্বত্রই আজ সহিংসতা বিরাজ করছে। সহিংস ব্যক্তিরা সবাই জানে যে, সহিংসতার মধ্য দিয়ে কেউ কখনো জগতের উন্নতি সাধন করতে পারেনি । বরং সহিংসতা দ্বারা মানসিক, আধ্যাত্মিক ও শারীরিক নানবিধ ক্ষতিকর প্রভার বিস্তৃত হয় । এটা অনেকটা সংক্রামক ব্যাধির মতো । এটা যদি কখনো কোনো পরিবার, সমাজ বা দেশে বাসা বাঁধতে শুরু করে তবে তা অচিরেই সংক্রমিত হয়ে যায় এবং আস্তে আস্তে এর প্রসার ঘটতে থাকে ও শক্তি বৃদ্ধি হয় । এর ফলে পরিবার, সমাজ বা দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে ভয়াবহ প্রভাব পড়ে । সহিংসতার কুফলগুলোকে বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার-বিশ্লেষণ করলে এর একটা স্পষ্ট চিত্র আমাদের কাছে ধরা পড়বে এবং এর ভয়াবহ পরিণতি বুঝতে সুবিধা হবে ।

কাজঃ প্রামাণ্য চিত্র বা খবরের কাগজ থেকে বিভিন্ন ছবির ওপর আলোচনা করবে । এর মাধ্যমে সহিংসতা ও এর বিভিন্ন কুফল বর্ণনা করবে ।

 

 

 

পরিবারের ওপর সহিংসতার ক্ষতিকর প্রভাব

পরিবার হলো সমাজের মৌলিক উপাদান । এই পরিবার থেকেই মানব জীবনের যাত্রা শুরু । আর সহিংসতার কারণে পরিবার নামক ক্ষেত্রটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর ফলে দেখা যায় পরিবারে একে অপরের প্রতি সন্দেহ, সম্পর্কের ফাটল এবং এরকম আরও অনেক অপ্রীতিকর পরিস্থিতি । এর পরিণতি গিয়ে দাঁড়ায় ঝগড়া, মারামারি, হানাহানি ইত্যাদিতে । অনেক সময় জীবনও দিতে হচ্ছে অনেককে ।

সমাজের ওপর সহিংসতার ক্ষতিকর প্রভাব

সহিংসতার ফলে পরিবারের ক্ষতিকর দিকগুলোর প্রভাব গিয়ে পড়ে সমাজের ওপর । ফলে দেখা যায় সমাজের মধ্যে যে একতা বা সম্পৃক্ততা থাকার কথা তার অবক্ষয় ঘটে । ছোট ছোট সমাজেও দলাদলি শুরু হয় । তা থেকে নানারকম কোন্দল সৃষ্টি হয়। ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয় ঘটে । এর ফলে অসামাজিক কার্যকলাপ বৃদ্ধি পায়, যা সামাজিক উন্নয়ন ও গতিশীলতার পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে । রাষ্ট্রের ওপর সহিংসতার ক্ষতিকর প্রভাব

পরিবার ও সমাজের ক্ষতিকর প্রভাবগুলোর রেশ গিয়ে পড়ে দেশ বা রাষ্ট্রের ওপর । সহিংসতা যখন দেশের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে তখন দেশের আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ঘটে; দুর্নীতি বৃদ্ধি পায়; দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা বাধার সম্মুখীন হয় । ফলে দেখা যায় মিটিং, মিছিল, ভাঙচুর, জ্বালাও-পোড়াও, বোমাবাজি, নিখোঁজ ও গুম হওয়া, এসিড নিক্ষেপ, ধর্ষণ, খুন ইত্যাদির মধ্য দিয়ে দেশের শান্তি বিনষ্ট হয় ও কোটি কোটি টাকার সম্পদ ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় ।

সহিংসতা বনাম ভালোবাসা

সহিংসতার বিপরীত দিক হলো অহিংসা অর্থাৎ ভালোবাসা। যদি আমরা অহিংসায় বিশ্বাস করি তাহলে আমরা আমাদের শত্রুকে ভালোবাসব । তখন একই নীতি আমরা সবার ওপর প্রয়োগ করব । যারা আমার বন্ধু তাদের প্রতি যেমন, তেমনি যারা আমার শত্রু তাদের প্রতিও তেমনি ব্যবহার করব । এই কারণে প্রভু যীশু খ্রিষ্ট বলেছেন, তোমরা তোমাদের শত্রুকেও ভালোবাসবে । একথা তিনি শুধু মুখেই বলেননি, তাঁর আপন জীবনে শত্রুদের প্রতি ভালোবাসা দেখিয়েছেন । গেৎসিমানি বাগানে যখন শত্রুরা বিভিন্ন অস্ত্রশাস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তাঁকে ধরতে এল তখন পিতর তরবারি দিয়ে একজন সৈনিকের কান কেটে ফেলেছিলেন। সেই মুহূর্তে যীশু বলেছেন, যে অস্ত্র ব্যবহার করে অস্ত্রের আঘাতেই তার বিনাশ ঘটে । কথায় বলে ‘সহিংসতা সহিংসতার জন্ম দেয়' । এই কারণে তিনি ভালোবাসার কথা বলেছেন । কারণ সমস্ত দানের মধ্যে মহৎ দান হলো ভালোবাসা । এই ভালোবাসা মানুষকে সাহসী ও উদ্যমী করে তোলে । এই ভালোবাসা সমস্ত কিছুকে জয় করতে সাহায্য করে । একমাত্র ভালোবাসাই সহিংসতাকে দূর করতে পারে এবং সহিংসতার কুফল থেকে পরিবার, সমাজ বা দেশকে রক্ষা করতে পারে ।

শান্তি প্রতিষ্ঠায় শিক্ষার্থীর ভূমিকা

শান্তি সবাই চায়! সমাজের সর্বস্তরের মানুষ শান্তি চায় । আমরাও সকলে নিশ্চয়ই শান্তি চাই বা শান্তিতে জীবন যাপন করতে চাই । একটু শান্তির পরশ পাওয়ার জন্য মানুষ কত কী-না করে । সমাজ ও দেশের কিছু সংখ্যক মানুষের ওপর কিছু কিছু গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব ও ক্ষমতা অর্পণ করা হয়ে থাকে । যেমন, শিক্ষাকাজে

 

 

 

নিয়োজিত শিক্ষক, দেশ রক্ষার কাজে নিয়োজিত সেনাবাহিনী, পুলিশ, বেসরকারি কর্মকর্তা ও অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা । তারা শান্তির জন্য কাজ করে থাকেন । পৃথিবীতে আবার এমন অনেক ব্যক্তি আছেন যারা শান্তির জন্য তাদের নিজেদের জীবন বিলিয়ে দিচ্ছেন । পোপ দ্বিতীয় জন পল সহিংসতা বন্ধের জন্য জোরালো আহ্বান জানিয়েছিলেন । তিনি বিশ্ব শান্তি দিবসের মূলভাব হিসেবে ‘সহিংসতা নয়, শান্তি চাই' শ্লোগানের মধ্য দিয়ে সহিংসতা প্রতিরোধের জন্য বিশ্ববাসীর কাছে আবেদন করেছিলেন ।

শান্তি কী

প্রথমত শান্তি হচ্ছে উৎকণ্ঠাহীনতা-একটা মানসিক প্রশান্তিপূর্ণ অবস্থা । সমাজের মানুষের মানসিক শান্তি চারিদিকে বিস্তৃত হয় । আবার শান্তি হচ্ছে এমন একটি পারিপার্শ্বিক অবস্থা যেখানে সর্বদা বিরাজ করে একতা । অর্থাৎ বলা যায়, শান্তি হচ্ছে অরাজকতা, যুদ্ধ, হিংসা, ক্রোধ, কলহ, অপরাধবোধ ইত্যাদি না থাকার অনুভূতি । এসবের পরিবর্তে শান্তির অবস্থা হচ্ছে এমন অবস্থা যেখানে আছে একতা, গভীর নীরবতা যা মানুষকে তার প্রকৃত সত্তা বা অস্তিত্বকে বুঝতে বা জানতে শেখায়, নাগরিক দায়িত্ববোধ সৃষ্টি করে, সেবার মনোভাব গড়ে ওঠে, ন্যায়পরায়ণতা বিরাজ করে এবং বন্ধত্বের মনোভাব গড়ে ওঠে । তাই বলা যায় শান্তি হচ্ছে মনুষ্যত্ব বিকাশের একটি উত্তম বা সর্বোকৃষ্ট মাধ্যম ।

প্রভু যীশু খ্রিষ্ট হলেন শান্তিরাজ । তিনি এই জগতে মানুষের মাঝে শান্তি দিতে এসেছেন । তাই তো তিনি তাঁর পুনরুত্থানের পর ‘তোমাদের শান্তি হোক' বলে শিষ্যদের ওপর তাঁর শান্তি ছড়িয়ে দিয়েছেন । খ্রিষ্টের দেখানো পথে চলে ও তাঁর দেওয়া শান্তি গ্রহণ করে আমরা শান্তির মানুষ হয়ে উঠতে পারি ।

বর্তমানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় শিক্ষার্থীদের ভূমিকা অনেক গুরুত্বপূর্ণ । শিক্ষার্থীদের এটা এমন একটা সময় যে, এ সময় সে তার জীবনে ভবিষ্যৎ লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য ঠিক করে এবং জীবনকে সুন্দর দিক নির্দেশনা দানের মধ্য দিয়ে সঠিকভাবে বেড়ে উঠতে সাহায্য করে । এই বয়সের শিক্ষার্থীদের মধ্যে নানা ধরনের বাধা ও প্রলোভন আসে যা তাদেরকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যেতে পারে। এর ফলে ব্যক্তির মনে আসতে পারে অশান্তি । শান্তি প্রতিষ্ঠায় যে বিষয়গুলো মূলত নির্ভর করে তা হচ্ছে ব্যক্তিগত মূল্যবোধ, সামাজিক মূল্যবোধ, এবং নৈতিক ও আধ্যাত্মিক মূল্যবোধ । তাই শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা যদি নিজেদের মধ্যে প্রকৃত মূল্যবোধ গড়ে তুলতে পারি তবে পরিবার, সমাজ বা রাষ্ট্রের মধ্যে শান্তি বিরাজ করবে । শান্তি প্রতিষ্ঠায় মূল্যবোধগুলোর পাশাপাশি নিম্নোক্ত বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ:

দুর্নীতি দমনে একত্রিত হওয়া: সারা বিশ্বে দুর্নীতি এখন চরমে পৌঁছেছে । প্রতিটি দেশে উন্নতি বা শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রধান অন্তরায় হচ্ছে দুর্নীতি । তাই দুর্নীতি দূর করার জন্য এসময় থেকেই শিক্ষার্থীরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হলে এ ব্যাধি দূর করা সম্ভব হবে এবং দেশ ও সমাজের মধ্যে শান্তি বিরাজ করবে । কারণ আজকের শিক্ষার্থীরাই হবে ভবিষ্যৎ কর্ণধার । তাই আমরা জনসচেতনতামূলক সমাবেশ বা সভা-সেমিনার করে দুর্নীতি দমনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে চেষ্টা করব ।

মাদক সেবন দূরীকরণ: এই সময় দেখা যায় অনেক শিক্ষার্থী বিভিন্ন ধরনের নেশায় আসক্ত হয়ে তাদের ভবিষৎ ধ্বংস করে ফেলে । কিন্তু এসময়টি হলো নিজেকে গঠন করার, ভালো-মন্দ বোঝার এবং সেই অনুসারে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার । শিক্ষার্থীরাই পারে ব্যক্তিগতভাবে মাদক বা অন্যান্য নেশাজাতীয় দ্রব্যকে ‘না' বলতে এবং অন্যকেও তা সেবনে নিরুৎসাহিত করতে ।

 

 

ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি: শিক্ষার্থীদের এই সময়টি হলো নিজের ব্যক্তিত্ব বিকশিত করার সময় । তাই সব কিছুর মধ্যে একটা ইতিবাচক মনোভাব থাকা দরকার । মূলত তাদের এই নীতির বিরুদ্ধে না গিয়ে বরং যা ভালো তা গ্রহণ করা ও সেই অনুসারে জীবন যাপন করাই শ্রেয় ।

সৃজনশীলতা: এই সময়টিতে শিক্ষার্থীরা পারে অসম্ভবকে সম্ভব করতে, অজানাকে জানার কৌতূহল সৃষ্টি করতে এবং নতুন নতুন জিনিস উদ্ভাবন করতে । তাই এটাই সৃজনশীলতা প্রকাশের প্রকৃত সময় ।

সময়ানুবর্তিতা: শান্তি প্রতিষ্ঠায় সময়ানুবর্তিতার গুরুত্ব অনেক বেশি । এই সময় যদি তাদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি হয় তবে ভবিষৎ জীবনকে তারা সঠিক ও সুন্দরভাবে গোছাতে পারবে। এর ফলশ্রুতিতে তাদের মধ্যে শৃঙ্খলা দেখা দেবে ।

আত্মবিশ্বাস: আত্মবিশ্বাসের অর্থ হচ্ছে নিজেকে ও নিজের সামর্থ্যকে বিশ্বাস করা। মানব চরিত্র সমৃদ্ধ করণে এর অবদান অতুলনীয় । নিজের প্রতি যে যেমন আত্মবিশ্বাসী হয়, অন্যের প্রতিও তার ঠিক তেমনি হওয়া উচিত । তাই এই সময়টি আত্মবিশ্বাস সৃষ্টির উত্তম সময় ।

ন্যায্যতা: যার যা পাওনা তাকে তা দান করাই হচ্ছে ন্যায্যতা। ন্যায্যতা মানুষের অধিকার সংরক্ষণ করে । তাই ন্যায্যতা শিক্ষার মধ্য দিয়ে এ সময় শিক্ষার্থীরা ন্যায্যতার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করবে । ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠিত হলে শান্তি আসবে ।

বন্ধুত্ব: বন্ধুত্ব হচ্ছে দুইজন ব্যক্তির ভালোবাসাপূর্ণ অঙ্গীকার বা গৃহীত দায়িত্ব । এটি পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা ও স্নেহ-ভালোবাসার ওপর নির্ভরশীল । বন্ধুত্ব আমাদের একতা সৃষ্টিতে সহায়তা করে যা শান্তি প্রতিষ্ঠার অন্যতম উপায় ।

আলোচ্য বিষয়গুলো হচ্ছে এক একটি গুণ যা শান্তি প্রতিষ্ঠার মাধ্যম । এ মাধ্যমগুলো অনুশীলন ও চর্চার মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা শান্তি প্রতিষ্ঠায় অনন্য ভূমিকা পালন করতে সক্ষম । শান্তি হচ্ছে সকল সুখের মূল । আর এই শান্তি প্রতিষ্ঠায় আমাদের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই শান্তি প্রতিষ্ঠায় আমাদের সকলেরই এগিয়ে আসা একান্ত কর্তব্য ।

একক কাজ: শান্তি প্রতিষ্ঠায় তুমি তোমার পরিবার, পাড়া, বিদ্যালয় ইত্যাদি স্থানে কী ভূমিকা রাখতে পার তার একটা তালিকা তৈরি কর ।

 

অনুশীলনী

বহুনির্বাচনি প্রশ্ন

১. সহিংসতার বিপরীত দিক কোনটি ?

ক. প্রশংসা

খ. ভালোবাসা

গ. শান্তি

ঘ. ন্যায্যতা

শিক্ষার্থীরা শান্তি প্রতিষ্ঠায় কীভাবে ভূমিকা রাখতে পারে ।

ক. খেলাধুলার মাধ্যমে

খ. বই পড়ার মাধ্যমে

গ. ন্যাযতার মাধ্যমে

ঘ. মিটিং মিছিল করে

নিচের চিত্রটি দেখে ৪নং প্রশ্নের উত্তর দাও :

৩. উদ্দীপকের ছবির মাধ্যমে কী প্রকাশ পায় ?

ক. সহিংসতা

খ. সহীনশীলতা

গ. অহিংসা

ঘ. অনুশাসন

 

৪. উদ্দীপকের কাজের প্রভাব

i. মূল্যবোধের অবক্ষয় হবে

ii. দুর্নীতি বৃদ্ধি পাবে

iii. সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি পাবে

নিচের কোনটি সঠিক ?

ক. i

খ. ii

গ. i ও ii

ঘ. ii ও ii

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন

১. সহিংসতা বলতে কী বোঝায় ? ব্যাখ্যা কর ।

২. শান্তি বলতে কী বোঝায় ?

৩. শান্তি প্রতিষ্ঠায় শিক্ষার্থীর ভূমিকাগুলো লেখ ।

8. কীভাবে আমরা ভালোবাসার মাধ্যমে সহিংসতাকে দূর করতে পারি? 

৫. সৃজনশীলতা বলতে কী বোঝায় ? ব্যাখ্যা কর ।

সৃজনশীল প্রশ্ন

 

ক. শান্তি কী ?

খ. ন্যায্যতা বলতে কী বোঝায় ? ব্যাখ্যা কর ।

গ. উদ্দীপকের ‘?’ চিহ্নিত স্থান কী হবে ব্যাখ্যা কর ।

ঘ. উদ্দীপকের তথ্য থেকে বেরিয়ে আসার একমাত্র অবলম্বন ভালোবাসা - মূল্যায়ন কর

 

 

২. আনন্দপুর উচ্চ বিদ্যালয় একটি আদর্শ বিদ্যালয় । প্রধান শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে বিদ্যালয়টি সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হচ্ছে । শিক্ষার্থীরা এই বিদ্যালয়ে খুব বেশি লেখাপড়া করতে পারে । লেখাপড়ার যথেষ্ট সুনাম রয়েছে তাদের। এছাড়াও বিদ্যালয়ের চারিদিকে ফুল, ফল ও ঔষধি গাছ লাগিয়ে বিদ্যালয়ের পরিবেশকে মনোরম করেছে। তারা একে অন্যের সমস্যায় এগিয়ে যায় এবং দরিদ্রদেরও বিভিন্নভাবে সাহায্য করে। শিক্ষকমণ্ডলীও শিক্ষার্থীদের ফলাফল ও ব্যবহারে খুবই আনন্দিত। বিদ্যালয়ের প্রত্যেকেই যেন একই পরিবারে মিলেমিশে বাস করছে।

ক. আধ্যাত্মিক অর্থে সহিংসতা কী?

খ. ন্যায্যতা বলতে কী বোঝায় ? ব্যাখ্যা কর ।

গ. উদ্দীপকের বিদ্যালয়টিতে কী বিরাজ করছে ? বর্ণনা দাও ।।

ঘ. উদ্দীপকে এ ধরনের পরিস্থিতি প্রতিষ্ঠায় শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের ভূমিকা মূল্যায়ন কর ?

Content added By

Related Question

View More

Promotion

Promotion
Content for the offcanvas goes here. You can place just about any Bootstrap component or custom elements here.