সপ্তম শ্রেণি (দাখিল) - ডিজিটাল প্রযুক্তি - NCTB BOOK

সেশন ১

ষষ্ঠ শ্রেণিতে আমরা জেনেছি, যোগাযোগ হচ্ছে এমন একটি প্রক্রিয়া, যেখানে আমরা আমাদের চিন্তা, ধারণা, অনুভূতি, অভিজ্ঞতা এবং মতামতো একে অন্যের সঙ্গে আদান-প্রদান করি। আমরা যোগাযোগের কয়েকটি ধরন সম্পর্কে বোঝার চেষ্টা করেছিলাম, যেমন মৌখিক যোগাযোগ, লিখিত যোগাযোগ, অমৌখিক বা সাংকেতিক যোগাযোগ। ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্ক এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী যোগাযোগ দুই ধরনের হয়ে থাকে, আনুষ্ঠানিক বা ফরমাল যোগাযোগ এবং লৌকিকতা বর্জিত বা ইনফরমাল যোগাযোগ।

একবার সজল একটি বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে তাদের থানা পর্যায়ের একটি স্কুলে গেল। সজলের বাবা সজলকে পৌঁছে দিয়েই তার অফিসে চলে গেলেন। সজল একা একা ঐ বিদ্যালয়ের ভেতরে ঢুকল। এখানকার কাউকেই সজল চেনে না। প্রতিযোগিতার একটি বড় পোস্টার দেখে সে বুঝতে পারল তাকে কোথায় যেতে হবে। ওখানে গিয়ে দেখতে পেল একজন আপু ডেস্কে বসে আছেন এবং সবার উপস্থিতি নিশ্চিত করছেন। সজল তার কাছে গিয়ে তার নাম বলল এবং জিজ্ঞেস করল তাকে এখন কী করতে হবে। আপু কথা বলা শুরু করতে না করতে সজলের বয়সী আরেকটি ছেলে এসেই ডেস্কের সামনে রাখা চেয়ারে বসে পড়ল এবং বলল, ‘কী করতে হবে'। সজল ভাবল, এই ছেলেটি নিশ্চয়ই এখানকার সবাইকে চেনে, কিন্তু সজল তো কাউকে চেনে না, এটা ভেবেই সজলের একটু মন খারাপ হলো। কিন্তু ওই আপুটি সজলকে অবাক করে দিয়ে ঐ ছেলেকে বলল ‘আপনার নাম কি ? কেন এসেছেন? আপনাকে কে বসতে বলেছে?'। ছেলেটি সঙ্গে সঙ্গে চেয়ার ছেড়ে উঠে বলল, “আমি বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে এসেছি।'

গল্পের ছেলেটি বুঝতে পারেনি যে কোনো অপরিচিত কারও সঙ্গে কথা বলতে হলে, প্রথমে নিজের পরিচয় দিতে হয়, তারপর কেন কথা বলতে চায় সে উদ্দেশ্য বা কারণ জানাতে হয়। তারপর সে বসতে বললে বসতে হয় বা বসার অনুমতি চাইতে হয়। আমাদের কথা বলা, কথার মধ্যে শব্দের ব্যবহার এবং আমাদের শারীরিক ভাষা বা বডি ল্যাঙ্গুয়েজ এই সব বিষয় যোগাযোগের ক্ষেত্রে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। আমরা কমবেশি এগুলো জানি।

তোমার মনে কী প্রশ্ন এসেছে, ডিজিটাল প্রযুক্তি বইতে আমরা এগুলো নিয়ে কেন কথা বলছি?

যোগাযোগের এই নিয়মকানুনগুলো নিয়ে এখানে কথা বলার কারণ হচ্ছে, সাধারণ জীবনে আমরা এই বিষয়গুলো জানলেও ডিজিটাল যোগাযোগের ক্ষেত্রে আমরা এই একই নিয়মগুলো কীভাবে কাজ করে তা একটু আলাদা করে বুঝে নিতে চাই।

তার আগে চলো আমরা একটি ভূমিকাভিনয় বা রোলপ্লে খেলি।

শ্রেণিকক্ষের দুজন দুজন করে মোট ছয়জন আমরা ভূমিকাভিনয় করব, বাকিরা তাদের অভিনয় দেখে কোনো অভিনয়টি পরিস্থিতি এবং সম্পর্ক অনুযায়ী সঠিক হচ্ছে না সেটি বুঝে মতামতো দেব।

১. ১ম জোড়া - একজন প্রধান শিক্ষক ও একজন শিক্ষার্থীর ভূমিকায় অভিনয় করব (শিক্ষার্থী শিক্ষকের কাছে ক্লাসের পরে পড়া বুঝতে গিয়েছে)

২. ২য় জোড়া - একজন পুলিশ অফিসার এবং একজন শিক্ষার্থীর ভূমিকায় অভিনয় করব (শিক্ষার্থী থানায় অভিযোগ জানাতে গিয়েছে)

৩. ৩য় জোড়া - একজন বন্ধু অন্য একজন বন্ধুর কাছে গতকাল রাতে টেলিভিশনে প্রচার হওয়া ফুটবল খেলার ফলাফল ও খেলা কেমন ছিল তা জানতে চাচ্ছে।

আনুষ্ঠানিক যোগাযোগে কিছু বিধিবদ্ধ শিষ্টাচার বজায় রেখে উপযুক্ত আচরণের মাধ্যমে একে অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ করে অন্যদিকে অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে তেমন কোনো নিয়মকানুনের বাধ্যবাধকতা থাকে না। ব্যক্তির সম্পর্ক এবং পরিস্থিতির কারণে এই ভিন্নতা তৈরি। যেমন ভাই-বোন, বাবা মা, কাছের আত্মীয়, বন্ধু এদের সঙ্গে আমরা সাধারণত অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ করে থাকি। অন্যদিকে শিক্ষক, অপিরিচিত বা অল্প পরিচিত ব্যক্তি, বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি এদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ হয়ে থাকে।

আমরা যে তিনটি ভুমিকাভিনয় করলাম এবং দেখলাম, তার মধ্যে কোনোটি কী ধরনের যোগাযোগ তা টিক দিই—

 আনুষ্ঠানিক যোগাযোগঅনানুষ্ঠানিক বা লৌকিকতা বর্জিত যোগাযোগ
শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ  
পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীর যোগাযোগ  
দুই বন্ধুর মধ্যে যোগাযোগ  

আগামী সেশনের প্রস্তুতি

ভূমিকাভিনয় একে অন্যের সঙ্গে যোগাযোগের সময় কোনো ভুল হয়েছিল কি না, আর ভুল হলে সেটি কী ধরনের ভুল তা নিচের ছকে লিখি। আমাদের সুবিধার্থে একটি উদাহরণ নিচে দেওয়া হলো । আমরা কমপক্ষে আরও পাঁচটি ভুল নিচের ছকে লিখব। আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেও খুঁজে বের করতে পারি।

১. শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগের সময় প্রথমে কুশল বিনিময় করেনি
২.
৩.
৪.
৫.
৬.

 

সেশন ২ - যোগাযোগের মাধ্যম বা চ্যানেল

আমরা যখন সামনা সামনি একে অন্যের সঙ্গে কথা বলি বা মৌখিক যোগাযোগ করি, তখন শব্দের সৃষ্টি হয় এবং আর এই শব্দ প্রবাহিত হয় বাতাসের মাধ্যমে। তাই এখানে বাতাস হচ্ছে একটি ‘মাধ্যম’। যা ব্যবহার করে প্রাপক ও প্রেরক একে অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ করে, তা হলো মাধ্যম। যেমন চিঠি, টেলিফোন ও ইন্টারনেট হলো মাধ্যম।

বিদ্যুৎ এবং ইন্টারনেট আবিষ্কারের ফলে আমাদের যোগাযোগের সুবিধার্থে অনেক অনেক যোগাযোগমাধ্যম তৈরি হয়েছে। টেলিভিশন, রেডিও, টেলিফোন এগুলোর কথা তো আমরা সবাই জানি, কিন্তু ইন্টারনেট সুবিধা নিয়ে আমরা নিয়মিত আরও অনেক মাধ্যম বা চ্যনেল ব্যবহার করি। যেমন –

১. ইমেইল 

২. ওয়েবসাইট 

৩. ভিডিও কল 

৪. ভয়েস কল / রেকর্ড করা ভয়েস 

৫. চ্যাট মেসেজ 

৬. সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম 

৭. ব্লগ 

৮. ভগ 

৯. ভার্চুয়াল মিটিং/ক্লাস রুম

আনুষ্ঠানিক বা অফিসিয়াল যোগাযোগের ক্ষেত্রে যোগাযোগের মাধ্যমটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেমন সরকার থেকে যখন কোনো নির্দেশনা আসে, তখন সাধারণত এটি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন আকারে ছাপা হয় আবার ওয়েবসাইটে রাখা হয় যেন সকল মানুষ সেটি জানতে পারে। অনেক সময় ফোনে এসএমএস আসে। তা ছাড়া ব্যক্তি পর্যায়ে সকল সরকারি যোগাযোগ এখনও ডাকের মাধ্যমেই হয়। কারণ দেশের সবার কাছে তো ইন্টারনেট নেই !

কিন্তু আমরা যখন খুব ছোট পরিসরে যোগাযোগ করি, তখন যদি আমাদের ইন্টারনেট সুবিধা থাকে তাহলে কোনো মাধ্যম ব্যবহার করা সবচেয়ে সঠিক বা সমীচীন হবে ?

নিচের ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করে সঠিক মাধ্যম কোনোটি হতে পারে সেটিতে টিক √ দিব । একটি উদাহরণ দেওয়া হলো ।

১. আমি যদি উপজেলা শিক্ষা অফিসে বৃত্তির  আবেদনের সঠিক নিয়ম জানতে চাই।

ক. ইমেইল করব         খ. ফোন দেব 

গ. মেসেঞ্জারে টেক্সট পাঠাব

২. শিক্ষকের কাছে আগামীদিনের পরীক্ষা বাতিল হয়েছে কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে যোগাযোগ করব।

ক. ভিডিও কল দেব,       খ. এসএমএস করব 

গ. ব্লগ বানাব

৩. বন্ধুর কাছে আগামীকালের বাড়ির কাজ জানতে যোগাযোগ করব।

ক. অডিও কল দেব       খ. সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখ 

গ. ইমেইল করব

৪. নিজের উপজেলায় পরিবেশ দিবস পালন উপলক্ষে আন্তঃ উপজেলা পরিবেশ বিজ্ঞান মেলা আয়োজন করার জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসারের নিকট আবেদন করব।

ক. চ্যাটে টেক্সট পাঠাব      খ. অডিও কল দেব 

গ. ইমেইল করব

 

আগামী সেশনের প্রস্তুতি

আমরা এই অভিজ্ঞতার মাধ্যমে, সবাই মিলে আমাদের আশপাশের এমন একটি সমস্যা চিহ্নিত করব যেটির সমাধান একা করা প্রায় অসম্ভব। এই সমস্যা সমাধানের জন্য কোনো ব্যক্তি, সংগঠন বা প্রতিষ্ঠানের সহায়তার প্রয়োজন হবে। আমরা আজ বিদ্যালয় থেকে বাড়ি ফেরার পথে এমন একটি সমস্যা খুঁজে বের করব।

সমস্যাটি এ রকম হতে পারে— বিদ্যালয়ের পাশের রাস্তা মেরামত, বিদ্যালয়ের কাছের বাঁধ নির্মাণ, বিদ্যালয়ের পাশের রাস্তা পারাপারের ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ, বিদ্যালয়ের পাশে ডাস্টবিন তৈরি, বিদ্যালয়ে বিশুদ্ধ খাবার পানির জন্য টিউবওয়েল বসানো ইত্যাদি। এই উদাহরণগুলো বোঝার সুবিধার্থে দেওয়া হলো, তুমি তোমার বিদ্যালয়ের চারপাশ পর্যবেক্ষণ করে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা খুঁজে বের করবে। 

 

সেশন-৩   -  যোগাযোগ ও ভাষার ব্যবহার

এক ছুটির দিনে বাবা-মা বাড়ির কাজ নিয়ে ভীষণ ব্যস্ত! আমিও বাবা-মাকে সাহায্য করে | ক্লান্ত হয়ে বসে বসে বই পড়ছিলাম। হঠাৎ বাবা এসে বললেন, ‘তন্তু চুলায় ভাত বসিয়েছি, তুমি রান্নাঘরের পাশে বসে গল্পের বই পড়ো, ভাতগুলো দেখে রেখ'। আমি পড়ছি, ভাত রান্না হচ্ছে, আমি | পড়ছি ভাতের পাতিলের অনেক ফেনা উঠে পাতিলের ঢাকনা পড়ে গেল, কিছুক্ষন পর ভাত পোড়া গন্ধ পেলাম, আমি পড়ছি। একটু পর মা এসে তাড়াতাড়ি ভাতের পাতিল নামালো আর আমাকে খুব বকা দিলেন! আমি বুঝলাম না, মা এত রেগে গেলেন কেন? আমাকে ভাত দেখতে বলেছে, আমি তো | দেখছিলাম! এক মিনিট পর পরই নিয়ম করে বই থকে চোখ তুলে ভাতের পাতিল দেখছিলাম!

এই ধরনের কৌতুক আমরা প্রায় শুনি তাই না? ‘ভাত দেখে রাখা’ মানে হচ্ছে ‘ভাত হয়ে গেলে নামিয়ে ফেলা' এটি আমরা সবাই বুঝি। কিন্তু এমন অনেক শব্দ আছে হয়তো দুই দেশে বা দুই জেলায় দুই রকমের অর্থ বোঝায়। তাই যোগাযোগের ক্ষেত্রে আমরা যার সঙ্গে যোগাযোগ করছি, সে যেন আমার বার্তা বা মেসেজের অর্থ বুঝতে পারে তা আমাদের লক্ষ্য রাখতে হয়।

যোগাযোগের প্রক্রিয়ার ব্যক্তির নিজস্বতা: যোগাযোগ নিয়ে যারা গবেষণা করেন, তারা মনে করেন যোগাযোগের ক্ষেত্রে সামাজিক রীতিনীতি ও সাংস্কৃতিক উপাদান অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যার সঙ্গে যোগাযোগ করব তার সংস্কৃতি, তার কোনো কিছু বোঝার দৃষ্টিভঙ্গি, তার সামাজিক আচার-আচরণ আমাদের বুঝে তারপর আমাদের যোগাযোগ করতে হয়, তা না হলে আমার যোগাযোগটি সফল হবে না।

চিত্ৰ: ক

১. যোগাযোগের দক্ষতা                                                                                                   ১. যোগাযোগের দক্ষতা

২. দৃষ্টিভঙ্গি                                                                                                                    ২. দৃষ্টিভঙ্গি

৩. জ্ঞান                                                                                                                         ৩. জ্ঞান

৪. সামাজিক রীতিনীতি                                                                                                   ৪. সামাজিক রীতিনীতি

৫. সংস্কৃতি                                                                                                                      ৫. সংস্কৃতি

এখানে বোঝাতে চেয়েছে, একজন ব্যক্তি যখন অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ করতে চায়, তখন তাদের উভয়পক্ষের যোগাযোগ দক্ষতা, চিন্তার ধরন, জ্ঞান, তাদের সমাজে প্রচলিত নিয়মকানুন এবং সংস্কৃতি যোগাযোগের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রাখে। যেমন একজন শিশু, যে কেবলমাত্র কয়েকটি শব্দ বলতে শিখেছে, তাকে যদি গিয়ে আমি বলি, ‘আমি টিফিন ব্রেকের সময় স্কুল থেকে চলে আসব তারপর তোমাকে বেড়াতে নিয়ে যাবো।' সে হয়তো টিফিন ব্রেক শব্দটির সঙ্গে পরচিত নয় তাই সে বুঝবেই না আমি কী বলতে চাচ্ছি। আবার ধরি, একজন নতুন রিকশাচালক যে ট্রাফিক নিয়মকানুন কিছুই জানেন না, তাকে বললাম, “আপনি জেব্রাক্রসিং এর সামনে রিকসা থামাবেন।' তিনি কি বুঝতে পারবেন?

তাই যার বা যাদের সঙ্গে যোগাযোগ করব তাদেরকে বুঝে নেওয়াটা জরুরি, তা না হলে সফলভাবে যোগাযোগ করা সম্ভব হবে না ।

আনুষ্ঠানিক বা ফরমাল যোগাযোগে ভাষার ব্যবহার: আমরা আমার বন্ধুর সঙ্গে যেভাবে কথা বলি, আমার শিক্ষকের সঙ্গে সেভাবে কথা বলি না এটি আমরা এর আগে ভূমিকাভিনয়ের মাধ্যমে চিহ্নিত করতে পেরেছি। কিন্তু আমরা যদি কারও সঙ্গে লিখিতভাবে আনুষ্ঠানিক বা অফিসিয়াল প্রথায় যোগাযোগ করি, তাহলে বাক্যের গঠন কিছুটা আলাদা হবে—

অনানুষ্ঠানিক/ বন্ধু বা সমবয়সীদের সঙ্গেবয়োজ্যেষ্ঠ বা অল্প পরিচিত মানুষের সঙ্গেআনুষ্ঠানিক যোগাযোগে লিখিত আকারে
কী অবস্থা?আপনি ভালো আছেন?আশা করি আপনি সুস্থ আছেন।
এ কাজ আমি এখন করতে পারব না ।আমার পক্ষে এত অল্প সময়ে কাজটি করা সম্ভব হবে নাযদি কিছু মনে না করেন, আমি কি কাজটি করার জন্য আর দুই দিন সময় পেতে পারি?
গতকাল তুমি ফোন ধরোনি কেন?আমি গতকাল আপনাকে ফোন দিয়েছিলাম, আমার একটু জরুরি কথা ছিল। আমি কি কথাটি এখন বলতে পারি?গতকাল আমি একটি জরুরি বিষয় জানাতে ফোন দিয়েছিলাম। আপনি সম্ভবত ব্যস্ত ছিলেন। আমি আজ কখন ফোন দিলে আপনার সুবিধা হবে?
চল বন্ধু ছবি তুলিআমি কি আপনার সঙ্গে একটি ছবি তুলতে পারি?আগামীকাল অনুষ্ঠান শেষে আমরা সবাই আপনার সঙ্গে ছবি তোলার ইচ্ছা পোষণ করছি। আশা করি আপনি আমাদের সঙ্গে ছবি তোলার জন্য কিছুটা সময় বরাদ্দ রাখবেন।

এবার আমরা একটি খেলা খেলব-

তোমরা কি কখনো গানের কলি খেলেছ? একদল একটি গান গায় সে গানের শেষের অক্ষর দিয়ে অন্যদলকে আরেকটি গান গাইতে হয়। আজকের খেলাটি অনেকটা সে রকম। শ্রেণিকক্ষের সবাই দুই দলে ভাগ হয়ে একদল একটি অনানুষ্ঠানিক ধারার বাক্য বলবে অন্য দল সে বাক্যটি আনুষ্ঠানিক ভাবে বললে কেমন হতে পারে তা বলবে, বলার পর তার আবার অন্যদলকে একটি অনানুষ্ঠানিক ধারার বাক্য দেবে। তারা আবার ঐ বাক্যটি আনুষ্ঠানিক ধারার হলে কেমন হবে তা বলবে। একটি বাক্য রূপান্তর করার জন্য প্রতিটি দল এক মিনিট করে সময় পাবে।

আগামী সেশনের প্রস্তুতি 

আমার চিহ্নিত সমস্যা সমাধানের জন্য উপযুক্ত ব্যক্তি, সংগঠন বা প্রতিষ্ঠান কে হতে পারে তা ভেবে বের করব।

 

সেশন-৪  - আনুষ্ঠানিক যোগাযোগের প্রস্তুতি

আনুষ্ঠানিক যোগাযোগের প্রচলিত মাধ্যম হচ্ছে দরখাস্ত অথবা চিঠি। আমরা আমাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষক বা প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কোনো বিষয়ে আবেদন জানানোর জন্য সাধারণত দরখাস্ত লিখে থাকি। তবে এখন যেহেতু আমাদের ঘরে ঘরে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে যাচ্ছে, তাই আমরা একই যোগাযোগটি করতে পারি ইমেইলের মাধ্যমে। আজ ইমেইল লেখার জন্য যে খুটিনাটি বিষয়গুলো জানা প্রয়োজন, তা আমরা একটু দেখে নেব।

আমাদের কি মনে আছে আমরা আমাদের আশপাশের একটি সমস্যা সমাধানের জন্য কোনো ব্যক্তি, সংগঠন বা প্রতিষ্ঠানের কাছে আবেদন জানাবো? হ্যাঁ, এ জন্যই আমাদের ইমেইল লেখার প্রস্তুতি আজকে সম্পন্ন করব।

ইমেইলের সুবিধা হচ্ছে -

১. আমরা খুব দ্রুত সময়ে যোগাযোগ করতে পারি।

২। একই সঙ্গে একের অধিক ব্যক্তিকে একই ইমেইল পাঠাতে পারি। (কয়েকটি সুবিধা নিজে খুঁজে বের করে লিখবো)

৩। অনেক কম খরচে যোগাযোগ করতে পারি,

৪। আমার ইমেইলটি যে ব্যক্তিকে পাঠাচ্ছি, সে ব্যক্তি ছাড়া আমি না চাইলে অন্য ব্যক্তি আমার ইমেইলটি দেখে ফেলার ঝুঁকি কম। যেটি চিঠির ক্ষেত্রে ঝুঁকিটা বেশি থাকত।

৫। ইমেইলে আমি বড় কোনো ফাইল বা ছবি যুক্ত করতে পারি।

৬। আমি চাইলে একই সঙ্গে একাধিক ব্যক্তিকে ইমেইল পাঠাতে পারি; কিন্তু এটিও ঠিক করে দিতে পারি, আমার প্রাপকরা জানবে না আমি কাকে কাকে এই একই ইমেল পাঠাচ্ছি।

আমরা ষষ্ঠ শ্রেণিতে জেনেছি 

- ‘To’ ঘরে আমার প্রাপকের ইমেইল ঠিকানা লিখতে হবে।

- ‘Subject’ ঘরে আমি যে বিষয়ে ইমেইল লিখতে চাই সেই বিষয় লিখব। অনেকটা দরখাস্ত বা আবেদনপত্রে যেভাবে বিষয়            লিখি

- @ ‘Body' ঘরে আমার পুরো ইমেইলটি লিখব।

- ‘Attachment’ এ ক্লিক করে আমরা ইমেইলের সঙ্গে কোনো ফাইল বা ছবি পাঠাতে হলে তা যুক্ত করব।

আমরা ইমেইলের আরও কিছু ফিচার জানব।

বিশ্বে অনেকগুলো ইন্টারনেট সেবাদানকারি প্রতিষ্ঠানের ইমেইল সেবা রয়েছে।

যেমন জিমেইল, ইয়াহু, আউটলুক ইত্যাদি। আবার আমরা যখন নিজেদের জন্য নিজেস্ব ওয়েবসাইট তৈরি করব তখন ওই ওয়েবসাইটেও আলাদা করে ইমেইল সেবা যোগ করতে পারব।

সব ইমেইলেই কিছু সাধারণ বা প্রচলিত ফিচার থাকে যেগুলো বিভিন্ন ইমেইলের ক্ষেত্রে প্রায় একই রকম। এ রকম কিছু ফিচার একটু দেখে নিই।

1. 'New / Compose' এ ক্লিক করে আমার ইমেইল লেখা শুরু করতে পারি। অর্থাৎ এখানে ক্লিক করলে ইমেইল লেখার জন্য একটি বক্স আসবে। এটিকে এই ধরনের কলমের মতো সাংকেতিক চিহ্ন দিয়েও বোঝানো হয়।

2. ‘Inbox’ এ আমার ইমেইলে অন্য কেউ যদি ইমেইল পাঠায়, সেগুলো জমা হয়ে থাকে।

3. ‘Sent’ বক্সে আমি যা যা ইমেইল পাঠাব সেগুলো জমা থাকবে।

4. ‘Junk/Spam’ ভিন্ন ভিন্ন ইমেইলে এই বক্স বা ফোল্ডারটি ভিন্ন নামে থাকে। এই বক্সটি থেকে একটু সাবধানে থাকা প্রয়োজন। প্রতারণা করার জন্য অনেক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কিছু ইমেইল পাঠিয়ে থাকে, যেখানে অর্থ, লটারি বা লোভনীয় কোনো পণ্যের লোভ দেখায়। এই ধরনের ইমেইল এখানে এসে জমা হয়। তাই এই ইমেইলগুলোর কোনো উত্তর বা প্রপ্তিক্রিয়া দিতে হয় না, কোনো লিংক থাকলে সে লিংককেও ক্লিক করা যাবে না। যতক্ষণ পর্যন্ত আমি নিশ্চিত না হব যে ইমেইল পাঠিয়েছে, তাকে চিহ্নিত করা যাচ্ছে এবং তার উদ্দেশ্য কী তা বোঝা যাচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমি ইমেইলটি ক্লিক বা ‘Reply’ দেব না।

5. ‘Draft’ বক্স আমি কোনো ইমেইল লিখে সেইভ বা জমা করে রাখতে পারি। আমি একটিই ইমেইল লেখার মাঝপথে মনে হলো আমি ইমেইলটি পরে পাঠালে ভালো হয়, তখন আমি এটিকে ড্রাফট বক্সে রেখে দিতে পারি।

১. ‘To’ তে আমি যার কাছে ইমেইল করছি তার ঠিকানা লিখতে হবে, তা আমরা ইতোমধ্যে জানি। 

২. ‘CC’ অর্থ হচ্ছে কার্বন কপি। আমি একজনকে ইমেইল করছি সেটি যদি অন্যজনকে অবহিত করে রাখতে চাই, তাহলে যাকে অবহিত করে রাখতে চাই তার ঠিকানা ‘CC’ তে দিব। যেমন – আমি আমার প্রধান শিক্ষকের কাছে ছুটির আবেদন করব, আমি যে আবেদন করছি সেটি আমার শ্রেণি শিক্ষকের জানা প্রয়োজন, তাই আমি তাকে ‘CC' তে রাখতে পারি, যেন তিনিও অবহিত থাকেন আমি ছুটির আবেদন করছি। আনুষ্ঠানিক বা ফরমাল যোগাযোগে CC ব্যবহার করা ভালো। একই সঙ্গে অনেকজনকে CC করা যায়।

৩. ‘BCC’ সাধারণত একসঙ্গে অনেক মানুষকে পাঠালে তখন ব্যবহার করা হয়। এর মূল উদ্দেশ্য আমার একজন প্রাপক অন্য প্রাপকের ইমেইল ঠিকানা জানবে না। ইমেইল ঠিকানাও একটি ব্যক্তি- গত তথ্য। ধরি, আমি আমার বিদ্যালয়ের ১০০ জন শিক্ষার্থীকে একটি ইমেইল করব। ১০০ জনের ইমেইল ঠিকানা TO তে দিলে সবাই সবার ঠিকানা জেনে যাবে, যেটি ঠিক হবেনা, এমন পরিস্থিতিতে আমি ১০০ জনকে BCC তে রাখতে পারি।

৪. ‘সাবজেক্ট/বিষয় ’ এর কাজ কী আমি লিখি………………………………………………………………………….

৫. ‘৫’ ‘অ্যাটাচমেন্ট'-এর কাজ কী আমি লিখি………………………………………………………………………..

৬. আমি যদি আমার ইমেইলে কোনো ওয়েবসাইটের ঠিকানা দিতে চাই তাহলে আমার মূল ইমেইলের যে অংশে বা যে শব্দটির মধ্যে লিংকটি রাখতে চাই, সে শব্দটি ক্লিক করে উপরের ছবিতে দেখানো ৬ নম্বর প্রতীকটির উপর ক্লিক করব, ক্লিক করলে একটি বক্স আসবে, বক্সে আমি আমার ওয়েবসা- ইটের লিংকটি যোগ (paste) করব।

৭. আমরা সাধারণত বেশি কথা বা অনুভূতি অল্পকথায় প্রকাশ করতে ইমোজি ব্যবহার করি। এখানে ক্লিক করলে ইমোজি পাওয়া যাবে। তবে দাপ্তরিক যোগাযোগ বা অফিসিয়াল যোগাযোগে ইমোজি ব্যবহার করা খুব একটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।

বাড়ির কাজ নিয়ে আলোচনা:

আমরা বাড়ির কাজ হিসেবে আমার চিহ্নিত সমস্যাটি সমাধানের জন্য কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সংগঠন আমাদের সহায়তা করতে পারে তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছি। আজকে আমরা আমাদের সমস্যা এবং তার সঙ্গে সম্পর্কিত সমাধানের জন্য ব্যক্তি/সংগঠন/প্রতিষ্ঠানের নাম শিক্ষককে জানাব। শিক্ষকের সহায়তায় আমরা ঠিক করব, কোনো সমস্যাটি নিয়ে আমরা ইমেইল যোগাযোগ করতে চাই। সবার মতামতো নিয়ে আমরা যে কোনো একটি সমস্যা নির্ধারণ করব।

 

আগামী সেশনের প্রস্তুতি

আমরা আমাদের সমস্যা ও আবেদন জানিয়ে আমাদের ইমেইলে কী লিখতে চাই তার একটা খসড়া এখানে লিখব। এখানে যে বিষয়গুলো থাকবে 

১. আমার পরিচয় ও ইমেইল লেখার উদ্দেশ্য 

২. আমাদের সমস্যার বিস্তারিত 

৩. কীভাবে আমার প্রাপক আমাদের এই সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসতে পারেন। 

৪. ধন্যবাদ

এ ছাড়া চিত্র - ক থেকে শেখা (প্রাপকের দক্ষতা, জ্ঞান, দৃষ্টিভঙ্গি, সামাজিক রীতিনীতি, সংস্কৃতি) বিষয়গুলো আমরা আমাদের লেখা ইমেইলে কীভাবে কাজে লাগিয়েছি সেটিও লিখব। প্রয়োজনে অতিরিক্ত কাগজ ব্যবহার করব। কাগজটি আঠা দিয়ে খালি পৃষ্ঠার সঙ্গে জোড়া লাগাব।

                   ‘চিত্র ক’ থেকে শেখা উপাদান যেভাবে কাজে লাগিয়েছি:

 

 

সেশন ৫ - ইমেইল পাঠানোর সময় হলো

অবশেষে আজকে আমাদের ইমেইল পাঠানোর পালা। আমরা ঠিক করে ফেলেছি আমরা কাকে ইমেইল পাঠাতে চাই এবং ইমেইলের খসড়াও লিখে ফেলেছি। আজকে সবাই মিলে আমরা শ্রেণিকক্ষে বসেই ইমেইলটি লিখব। সবাই মিলে যেহেতু একটি ইমেইল লিখব তাই যেকোনো একজনের ইমেইল ঠিকানা আমরা ব্যবহার করব। আমাদের সবার বয়স যেহেতু এখনও ১৩ বছর হয়নি, অনেকের হয়তো ইমেইল ঠিকানা নেই, তাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে যদি আমরা আমাদের শিক্ষকের ইমেইল ঠিকানা ব্যবহার করি। শিক্ষকের ইমেইল ঠিকানা ব্যবহার করলেও কাজটা কিন্তু আমরাই করব।

প্রথমে আমরা একটি কাগজে (বই-এর পরবর্তী পৃষ্ঠাই) ইমেইলের মূল বক্তব্যটি লিখব। আমরা আমদের বাড়ির কাজ এর খসড়া ইমেইল থেকে লেখাগুলো নিয়ে এটি করতে পারি। এক্ষেত্রে শিক্ষকের সহায়তায় একজন ক্লাসের সামনে গিয়ে লেখার দায়িত্বটি নেবে, বাকি সবাই তাকে সাহায্য করবে। অর্থাৎ কী লিখতে হবে তা বাকিরা একটি একটি বাক্য করে প্রস্তাব করবে। (লক্ষ্য রাখবে শ্রেণিকক্ষে যেন হইচই না হয়)। যে বাক্যটি ঠিক হচ্ছে, অর্থাৎ সামনের শিক্ষার্থী যা লিখছে তা আমি নিজেও নিজের বইতে লিখব।

লেখা শেষ হলে, আমরা এবার পুরো লেখাটি কম্পিউটার ব্যবহার করে শ্রেণিকক্ষে লিখব। আমরা যাকে ইমেইলটি করব আমাদের শিক্ষক ইতিমধ্যে সেই প্রাপকের ইমেইল ঠিকানাটি জোগাড় করেছেন। শিক্ষক কম্পিউটার খুলে তার নিজের ইমেইল ঠিকানাটি খুলে দেবেন, এরপর ‘New Email / Compose'-এ ক্লিক করলে একটি নতুন বক্স আসবে। এরপর থেকে আমাদের কাজ, আমরা ইমেইলটি লিখব। শ্রেণিকক্ষের সবাই ২/৩ টি করে লাইন লেখার চেষ্টা করব। শ্রেণিকক্ষের সবাই যদি বাংলা টাইপ করতে না পারি, তাহলে যে পারে তার সহায়তায় আমরা অন্তত ২/৩ টি করে শব্দ হলেও লিখব।

যদি শ্রেণিকক্ষের কেউই বাংলা টাইপ করতে না পারে, তাহলে পরবর্তী পৃষ্ঠায় যে ইমেইলটি লেখা হয়েছে শিক্ষক সেটির ছবি তুলে দেবেন। সেই ছবি আমাদের ইমেইলের ‘অ্যাটাচমেন্ট’ আকারে পাঠাব। এক্ষেত্রে ইমেইল বড়ি বা মূল অংশের জায়গায় আমরা ইংরেজিতে সংক্ষেপে আমাদের পরিচয় লিখে অ্যাটাচমেন্ট দেখার অনুরোধ করব।

ইমেইল:

To:

CC:

Subject:

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

*** যদি বিদ্যালয়ে ইন্টারনেট সুবিধা না থাকে তাহলে মন খারাপ করার কিছু নেই। আমাদের শিক্ষক আমাদের লেখা ইমেইলটি চিঠির আকারে ডাকঘরে পৌছানোর ব্যবস্থা করবেন। এ ক্ষেত্রে ইমেলটি কাগজে লেখা হয়ে গেলে আমরা খামে কীভাবে প্রাপক ও প্রেরকের ঠিকানা লিখতে হয় তা জেনে একটি খামে তা লিখব। আমাদের এবং আমাদের প্রাপকের পোস্ট কোড কত তা আমরা শিক্ষকের কাছে জেনে নেব।

 

অভিভাবকের কাছ থেকে তারকা সংগ্রহ

একজন সুনাগরিক হিসেবে আমরা আমাদের দায়িত্ব পালন করেছি। আমাদের সমস্যা ও সমাধান চেয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছি। আমাদের এই কাজ সম্পর্কে আমাদের অভিভাবক জানলে নিশ্চয়ই অনেক খুশি হবেন । আমাদের ইমেইল/ চিঠিটি বাসায় গিয়ে আমার অভিভাবককে পড়ে শোনাব। আমার অভিভাবক বলবেন আমাদের লেখাটি কেমন হয়েছে। অভিভাবক তার পছন্দ অনুযায়ী ১টি থেকে ৫টি তারা আমাদের রং করে দিতে পারেন। ১টি অর্থ অল্প পছন্দ, ৫টি অর্থ অনেক বেশি পছন্দ।

 

অভিভাবকের স্বাক্ষর:

 

Content added By