একজন মুসল্লী মহল্লার ইমাম সাহেবকে জিজ্ঞাসা করলেন, ইসলামের কোনো বিষয়ে সমস্যা সষ্টি হলে আমি কীভাবে এর সমাধান করবো? ইমাম সাহেব বললেন, ইসলামি শরিয়তের চারটি উৎস রয়েছে। কোন বিষয়ে সমস্যার সম্মুখীন হলে প্রথমে কুরআন তারপর হাদিসে খুঁজবেন। তাতে না পাওয়া গেলে তৃতীয় উৎসে খুঁজবেন। 'কুরআন ও হাদিসের পরেই এর স্থান'।
উদ্দীপকের ইমাম সাহেব শরিয়তের তৃতীয় উৎস ইজমার কথা বোঝাতে চেয়েছেন। নবোদ্ভাবিত ধর্মীয় বা পার্থিব যেকোনো সমস্যা সমাধানের জন্য যেকোন সময়ে যোগ্যতাসম্পন্ন মুজতাহিদদের কুরআন-সুন্নাহ সমর্থিত এবং সর্বসম্মত ঐকমত্যের নাম হলো ইজমা। উদ্দীপকের ইমাম সাহেব এ দিকেই ইঙ্গিত করেছেন।
উদ্দীপকের ইমাম সাহেব সমস্যা সমাধানের জন্য কুরআন ও হাদিসের পরে ইজমার কথা বলেছেন। বস্তুত ইজমা নতুন কোনো মূলনীতি প্রণয়ন করে না। বরং আল্লাহ ও রাসুল (স) যেসব মূলনীতি প্রণয়ন করেছেন তার আলোকে মুসলিম মুজতাহিদগণ নতুন নতুন সমস্যার সমাধান করে। কুরআনে আল্লাহ তায়ালা কোনো কিছুই বাদ দেয়নি। কিন্তু আমাদের এই সীমিত জ্ঞানের দ্বারা তার নিগূঢ় অর্থ উপলব্ধি করা সম্ভব হয় না। তাই ইজমার উৎপত্তি হয়। ইজমা আধুনিককালের সৃষ্ট কোন বিধান নয় বরং রাসুল (স)-এর যুগ থেকে এর নিদর্শন এসেছে। যেমন- আজানের প্রচলনে উমর (রা)-এর সাথে পরামর্শ, খন্দকের যুদ্ধে পরিখা খননের জন্য সালমান ফারসি (রা)-এর সাথে পরামর্শ ইত্যাদি সবই ইজমার অন্তর্ভুক্ত। পরবর্তীতে সাহাবিদের ইজমা তার যথাযথ দাবি ও প্রকৃত রূপ নিয়ে বিমূর্ত হয়ে ওঠে খুলাফায়ে রাশেদিনের যুগে। মহানবি (স)- এর ইন্তেকালের পর অসংখ্য জাতীয় ইস্যুতে মুমিনগণ সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নিয়ে ইজমার বাস্তব দৃষ্টান্ত পেশ করেন। ইজমার চাক্ষুস উদাহরণ হচ্ছে- হযরত আবু বকর (রা)-এর খলিফা নির্বাচিত হওয়া। বর্তমানে রাসুলুল্লাহ ও সাহাবিদের ইজমার দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে প্রয়োজনীয় বিষয়ে অসংখ্য ইজমা সংঘটিত হয়।