একজন মুসল্লী মহল্লার ইমাম সাহেবকে জিজ্ঞাসা করলেন, ইসলামের কোনো বিষয়ে সমস্যা সষ্টি হলে আমি কীভাবে এর সমাধান করবো? ইমাম সাহেব বললেন, ইসলামি শরিয়তের চারটি উৎস রয়েছে। কোন বিষয়ে সমস্যার সম্মুখীন হলে প্রথমে কুরআন তারপর হাদিসে খুঁজবেন। তাতে না পাওয়া গেলে তৃতীয় উৎসে খুঁজবেন। 'কুরআন ও হাদিসের পরেই এর স্থান'।
কুরআন ও হাদিসের পরে শরিয়তের যে উৎস রয়েছে তা হলো ইজমা। ইজমার গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনস্বীকার্য। ইজমা অর্থ-ঐকমত্য, ঐক্যবদ্ধ হওয়া। ধর্মীয় কোনো বিষয়ে একই যুগের মুজতাহিদদের ঐকমত্যকে ইজমা বলে। ইমাম সাহেবের উক্তিতে এরই ইঙ্গিত বিদ্যমান।
মানব সমাজ পরিবর্তন ও প্রগতিশীল। ইসলামি সমাজও এ ধারার ব্যতিক্রম নয়। মহানবি (স)-এর সময়ে থেকে এবং পরবর্তীতে ইসলাম ও মুসলিম সাম্রাজ্যের প্রসারের ফলে রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে মুসলিম সমাজ এমন কতগুলো সমস্যার সম্মুখীন হয়, যার সমাধান কুরআন-হাদিসে স্পষ্টভাবে দেয়া হয়নি। বর্তমান যুগ বিজ্ঞান- প্রযুক্তির যুগ। প্রযুক্তির নতুন নতুন সময়ে আমাদেরকে নতুন নতুন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। বিভিন্ন প্রযুক্তির ব্যবহারের বিধি-বিধান কুরআনে বিদ্যমান। যদিও আমরা তার মর্মার্থ উপলব্ধি করতে পারি না। বস্তুত আল্লাহ কুরআনে কোন কিছুই বাদ রাখেনি। মানব জ্ঞান সসীম হওয়ায় শিক্ষা ও গবেষণায় কুরআন থেকে যাবতীয় সমস্যার সমাধান আহরণ করা সম্ভব হয়নি। এজন্য আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাদের মধ্য থেকে একদল বান্দাদেরকে মধ্যমপন্থি জাতি হিসেবে নির্বাচন করেছেন। যারা তার প্রণীত মূলনীতি গবেষণার মাধ্যমে শরিয়ত নির্দেশিত বিধান প্রণয়ন করেন। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন- 'আর এমনিভাবে আমি তোমাদের করেছি মধ্যমপন্থি জাতি, যেন তোমরা মানুষের ওপর সাক্ষী হতে পারো এবং রাসুল (স) হবেন তোমাদের ওপর সাক্ষী' (সুরা বাকারা: ১৪৩)। পরিশেষে বলা যায় যে, মুসলিম জীবনদর্শন ও ব্যবস্থাপনায় ইজমার তাৎপর্য অনস্বীকার্য।