'ক' নামক কলেজের শিক্ষক কাউন্সিলের সভায় বিদায়ী উপাধ্যক্ষের সংবর্ধনার তারিখ নির্ধারণ ও হোস্টেল সুপার নিয়োগ বিষয়ে আলোচনা হয়। উপাধ্যাক্ষের শেষ কার্যদিবসে সংবর্ধনার তারিখ নির্ধারণের প্রস্তাব উত্থাপিত হলে সব শিক্ষক পক্ষে অভিমত ব্যক্ত করেন; কিন্তু সিনিয়র শিক্ষক জনাব মারুফকে হোস্টেল সুপার নিয়োগের প্রস্তাব উত্থাপিত হলে, অধিকাংশ শিক্ষক এর পক্ষে অভিমত ব্যক্ত করলেও দুইজন শিক্ষক নীরব থাকেন। সভায় কলেজ অধ্যক্ষ দুটি প্রস্তাবই পাস হলো মর্মে ঘোষণা প্রদান করেন।
উদ্দীপকে দুইজন জ্যেষ্ঠ শিক্ষকের নীরবতা সত্ত্বেও জনাব মারুফকে হোস্টেল সুপার নিয়োগের প্রক্রিয়াটি শরিয়তের তৃতীয় উৎস ইজমার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ। 'ইজমা' শব্দের অর্থ হলো একমত হওয়া, ঐক্যবদ্ধ হওয়া, মতৈক্য প্রতিষ্ঠা করা ইত্যাদি। সাধারণভাবে বলা যায়, মহানবি (স)-এর পর কোনো এক সময়কার মুসলিম উম্মতের সমস্ত মুজতাহিদ একত্রিত ও সম্পূর্ণ একমত হয়ে ইজতিহাদযোগ্য বিষয়ে শরিয়তের যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন, তাই ইজমা। তবে সবার ঐকমত্য বাদেও কয়েকজনের মৌনসম্মতি থাকা সত্ত্বেও ইজমা হতে পারে। উদ্দীপকেও এ বিষয়টি লক্ষ করা যায়।
উদ্দীপকে জনাব মারুফকে হোস্টেল সুপার হিসেবে নির্বাচিত করার প্রস্তাব উত্থাপিত হলে অধিকাংশ শিক্ষক তাতে মত দেন। কিন্তু দুইজন শিক্ষক এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত না দিয়ে নীরব থাকেন। তারপরও মারুফকে নির্বাচিত করা হয়। ইসলামি শরিয়তে ইজমার ক্ষেত্রেও অনুরূপ প্রক্রিয়া অনুসৃত হতে পারে। ইজমার একটি স্তর হচ্ছে সাহাবি (রা)-দের নীরবতামূলক ইজমা পালন করা। যে ইজমার মধ্যে কতিপয় মুজতাহিদ সম্মতি দিয়ে সম্মিলিতভাবে কাজটি করেছেন, কিন্তু বাকিরা ওই বিষয়ে নীরব থেকেছেন এবং কোনো রূপ প্রতিবাদ করেননি, তাকেই সাহাবি (রা)-দের নীরবতামূলক ইজমা বলা হয়। উদ্দীপকের ঘটনাটিতেও একই ধরনের প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছে। তাই প্রক্রিয়াগত দিক থেকে এ দুটি বিষয় সাদৃশ্যপূর্ণ।