'ক' নামক কলেজের শিক্ষক কাউন্সিলের সভায় বিদায়ী উপাধ্যক্ষের সংবর্ধনার তারিখ নির্ধারণ ও হোস্টেল সুপার নিয়োগ বিষয়ে আলোচনা হয়। উপাধ্যাক্ষের শেষ কার্যদিবসে সংবর্ধনার তারিখ নির্ধারণের প্রস্তাব উত্থাপিত হলে সব শিক্ষক পক্ষে অভিমত ব্যক্ত করেন; কিন্তু সিনিয়র শিক্ষক জনাব মারুফকে হোস্টেল সুপার নিয়োগের প্রস্তাব উত্থাপিত হলে, অধিকাংশ শিক্ষক এর পক্ষে অভিমত ব্যক্ত করলেও দুইজন শিক্ষক নীরব থাকেন। সভায় কলেজ অধ্যক্ষ দুটি প্রস্তাবই পাস হলো মর্মে ঘোষণা প্রদান করেন।
উদ্দীপকে উপাধ্যক্ষের সংবর্ধনার সিদ্ধান্তের প্রক্রিয়াটি সব সাহাবি (রা)-এর ইজমার অনুরূপ। আর এ ধরনের ঐকমত্য যেকোনো বিষয়ে সফলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কোনো একটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে যদি সব সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেন, তবে সে সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে অনেক ফলপ্রসূ হয়। এ কারণে ইসলামে ইজমার ক্ষেত্রে সবার ঐকমত্যের বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। উদ্দীপকে এ ধরনের ইজমার প্রকাশ পেয়েছে।
উদ্দীপকের উপাধ্যক্ষের সংবর্ধনা প্রদানের তারিখ নির্ধারনে সবার ঐক্যমত্য হয়। এ ঐকমত্যের গুরুত্ব অনেক বেশি। কেননা হকুম অনুসারে সব সাহাবির ঐকমত্যের ভিত্তিতে যে ইজমা সংঘটিত হয়, তা সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য ও শক্তিশালী। এ ধরনের ইজমা প্রথম শ্রেণির ইজমা। সবার একমত হওয়ার মধ্য দিয়ে মূলত সমস্যাধীন বিষয়ে সব বিভ্রান্তি দূরীভূত হয়। এ নিয়ে পরবর্তীতে আর কোনো প্রশ্ন করার সুযোগ যেমন থাকে না। তেমনি কোনোরূপ দ্বন্দ্ব- সংঘাতেরও আশঙ্কা থাকে না। এ ধরনের ইজমার মধ্য দিয়ে মূলত জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়। ইসলামের দৃষ্টিতে এ ধরনের ইজমা অবশ্যই মানতে হবে এবং কেউ এটি অস্বীকার করলে সে কাফির হয়ে যাবে। এ পরিপ্রেক্ষিতে উদ্দীপকে সবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে আলোচ্য সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজনও বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। এক্ষেত্রে উক্ত অনুষ্ঠানটি সফলতার সাথে সুসম্পন্ন করা সহজ হবে।
পরিশেষে বলা যায়, আমাদের জীবনের সবক্ষেত্রে একতা ও ঐকমত্য গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে আমাদের উচিত ইজমার শিক্ষা বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করা।