হযরত আবু বকর (রা) খিলাফতের দায়িত্বপ্রাপ্ত হলেন। তখন কতক ভণ্ডনবির আবির্ভাব হলো, অনেকে ইসলাম ত্যাগ করল, আবার অনেকে জাকাত দিতে অস্বীকার করল। হযরত আবু বকর (রা) জাকাত অস্বীকারকারীদের হত্যার সিদ্ধান্ত নিলে সব সাহাবা ঐকমত্য হলো। তবে কেউ কেউ নীরব রইলেন।
উদ্দীপকের শেষাংশে যে ইজমাকে নির্দেশ করা হয়েছে অর্থাৎ সুকুতি ইজমা গ্রহণযোগ্য হওয়ার ব্যাপারে হানাফিরা প্রামাণ্য ও যৌক্তিক দলিল প্রদান করেছেন। সুকুতি ইজমা হলো মৌন সম্মতির মাধ্যমে সংঘটিত ইজমা।মুজতাহিদগণ যখন এক বা একাধিক ব্যক্তি হতে প্রকাশিত মতামত বা কাজের কোনোরূপ প্রতিবাদ না করে তার ওপর নীরব সমর্থন প্রদান করেন তখন তা ইজমা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। এরূপ নীরব সমর্থনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত ইজমাই হলো ইজমায়ে সুকুতি। হানাফি আলেমগণ ইজমায়ে সুকুতিকে সম্পূর্ণভাবে গ্রহণযোগ্য বলেছেন।
উদ্দীপকে নির্দেশকৃত ইজমায়ে সুকুতির ব্যাপারে নিজেদের মতকে সুপ্রতিষ্ঠিত করার জন্য হানাফি আলেমগণ প্রথমে প্রামাণ্য দলিল প্রদান করেছেন। রাসুল (স)-এর ওফাতের পর আমীরুল মুমিনীন হযরত আবু বকর (রা) তাঁর খেলাফতের প্রথমদিকে জাকাত অস্বীকারকারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। আবু বকর (রা) এর ঘোষণার পর হযরত ওমর (রা) সহ বেশ কয়েকজন সাহাবি তাঁর সাথে ঐকমত্য পোষণ করেন আর কিছু সংখ্যক সাহাবি নীরব থেকে মৌনসম্মতি জ্ঞাপন করেন। যা ইজমায় সুকুতির গ্রহণযোগ্যতাকে প্রমানিত করে। এছাড়া যৌক্তিক দলিল হিসেবে হানাফি আলেমগণ বলেন নীরবতাই ঐকমত্যের প্রমাণ। যেহেতু ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও খারাপ কাজ হতে বাধা প্রদান না করা এবং এর ওপর চুপ থাকা একজন মুজতাহিদের পক্ষে সম্ভব নয়; আর এমনটি করা পাপাচারিতা। তাই এ ধরনের পাপচারিতা মুজতাহিদগণের ব্যাপারে আদৌ কল্পনা করা যায় না। তাই তাদের নীরব থাকা মানে সম্মতি জ্ঞাপন করা বোঝায়। তাই তাদের নীরব সম্মতির দ্বারা ইজমা সংঘটিত হতে পারে।
উপরের আলোচনায় প্রতীয়মান হয় যে, ইজমায়ে সুকুতি গ্রহণযোগ্য এবং এটাও ইসলামি শরিয়তের মূলনীতির আওতাধীন, যা মাধ্যমে হুকুম বা বিধান প্রতিষ্ঠিত হয়।