Academy

সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন 

(১০টির উত্তর দিতে হবে)

ঈশ্বর সকল মানুষকে সন্মান করতে বলেছেন কেন?

Created: 6 months ago | Updated: 6 months ago
Updated: 6 months ago
Answer :

 

ঈশ্বর পবিত্র বাইবেলে সকল মানুষকে সম্মান করতে বলেছেন, কারণ প্রতিটি মানুষ ঈশ্বরের সৃষ্টিকর্ম এবং তাঁর নিজের প্রতিচ্ছবি (Image of God) হিসেবে গঠিত। ঈশ্বর মানবজাতিকে বিশেষ মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছেন এবং সেই কারণেই প্রত্যেক মানুষ, তার ধর্ম, জাতি, বা সামাজিক অবস্থান নির্বিশেষে, সম্মান ও মর্যাদার যোগ্য। বাইবেলের বিভিন্ন অংশে এটি পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এখানে কয়েকটি প্রধান কারণ ব্যাখ্যা করা হলো:

১. মানুষ ঈশ্বরের সৃষ্টিকর্ম:

প্রতিটি মানুষ ঈশ্বরের সৃষ্টিকর্ম এবং তাঁর ইচ্ছার প্রকাশ। বাইবেলের মতে, ঈশ্বর মানুষকে নিজের প্রতিচ্ছবি হিসেবে তৈরি করেছেন। তাই মানুষকে সম্মান করা মানে ঈশ্বরের সৃষ্টিকে সম্মান করা।

  • “সুতরাং ঈশ্বর মানুষকে তাঁর নিজের প্রতিচ্ছবিতে সৃষ্টি করলেন।” (উৎপত্তি ১:২৭) এই আয়াত থেকে বোঝা যায় যে, প্রতিটি মানুষের মধ্যে ঈশ্বরের প্রতিফলন রয়েছে, এবং সেই জন্য প্রত্যেককে সম্মান করা উচিত।

২. ভালোবাসা এবং সহমর্মিতা:

ঈশ্বর সকল মানুষকে ভালোবাসেন এবং মানবজাতির প্রতি সহানুভূতিশীল। যীশু খ্রিস্টও তাঁর শিক্ষায় মানুষকে ভালোবাসা, সহানুভূতি, এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধার আদেশ দিয়েছেন। “তোমার প্রতিবেশীকে তোমার নিজের মতো ভালোবাসবে।” (মথি ২২:৩৯)
এটি শিক্ষা দেয় যে, মানুষকে ভালোবাসা এবং সম্মান করা ঈশ্বরের আদেশ পালন করারই একটি অংশ।

৩. সমাজে শান্তি ও ঐক্য বজায় রাখা:

সকল মানুষকে সম্মান করার শিক্ষা সমাজে শান্তি ও ঐক্য বজায় রাখতে সহায়ক হয়। যদি মানুষ একে অপরকে সম্মান না করে, তবে সমাজে অশান্তি, হিংসা, এবং বিরোধ সৃষ্টি হতে পারে। ঈশ্বর চেয়েছেন মানুষ পরস্পরের প্রতি সম্মান ও ভালোবাসার সঙ্গে আচরণ করুক, যাতে পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়।

৪. মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা:

প্রতিটি মানুষকে সম্মান করা মানে তার মানবিক মর্যাদা এবং অধিকারকে স্বীকৃতি দেওয়া। বাইবেলে বারবার বলা হয়েছে যে, সকল মানুষের সমান মূল্য রয়েছে এবং সকলেই ঈশ্বরের সন্তান। “কোনও আংশিকতা করবেন না, বিচার করার সময় গরীব বা ধনীর প্রতি পক্ষপাতিত্ব করবেন না, বরং ন্যায় বিচার করবেন।” (লেবীয় ১৯:১৫)
এই শিক্ষা মানুষকে ন্যায় ও সমতা প্রতিষ্ঠায় উৎসাহিত করে।

৫. ক্ষমা এবং সহনশীলতার শিক্ষা:

যীশু খ্রিস্ট শিক্ষা দিয়েছেন যে, প্রতিটি মানুষকে সম্মান করা মানে ক্ষমাশীল হওয়া এবং অন্যের ভুলের প্রতি সহনশীলতা দেখানো। যীশু বলেছেন, “তোমরা যেমন আশা করো যে, অন্যরা তোমাদের প্রতি ব্যবহার করবে, তেমন তোমরাও তাদের প্রতি ব্যবহার করো।” (লূক ৬:৩১)
এই নীতি মানুষের মাঝে সহানুভূতি এবং সহিষ্ণুতা তৈরি করে, যা একটি ন্যায়পরায়ণ এবং শান্তিপূর্ণ সমাজ গড়ে তুলতে সাহায্য করে।

৬. ঈশ্বরের আদেশ পালন:

ঈশ্বরের আদেশ অনুযায়ী জীবনযাপন করা একজন বিশ্বাসীর অন্যতম দায়িত্ব। ঈশ্বর বলেছেন, মানুষ যেন একে অপরকে সম্মান করে এবং ঈশ্বরের আদেশ অনুযায়ী চলে। ঈশ্বরের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করতে হলে তাঁর সৃষ্টিকে সম্মান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। “প্রভুর ভয়ে একে অপরকে সম্মান করো।” (এফেসিয় ৫:২১)

৭. সমান মর্যাদা এবং ন্যায়বিচার:

বাইবেলে সকল মানুষকে সমান মর্যাদার সাথে দেখার শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। কোনো জাতি, গোষ্ঠী, বা শ্রেণি অনুযায়ী মানুষের প্রতি বৈষম্য করা যাবে না। ঈশ্বর প্রতিটি মানুষকে সমানভাবে দেখেন এবং সেই কারণে আমাদেরও সব মানুষের প্রতি সমানভাবে আচরণ করা উচিত।

সারমর্ম:

ঈশ্বর সকল মানুষকে সম্মান করতে বলেছেন, কারণ প্রতিটি মানুষ তাঁর সৃষ্টিকর্ম এবং তাঁর প্রতিচ্ছবি হিসেবে সৃষ্ট। মানবিক মর্যাদা, সহানুভূতি, ন্যায়বিচার, এবং পরস্পরের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের মাধ্যমে ঈশ্বরের আদেশ পালন করা হয় এবং পৃথিবীতে শান্তি ও সমান অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়।

5 months ago

খ্রিষ্টধর্ম শিক্ষা

**'Provide valuable content and get rewarded! 🏆✨**
Contribute high-quality content, help learners grow, and earn for your efforts! 💡💰'
Content
Promotion