হাঙ্গেরিবাসীরা বছরের শেষ দিন হাঁস, মুরগি বা কোনো ধরনের পাখির মাংস খান না। তারা বিশ্বাস করেন, উড়তে পারে এমন পাখির মাংস খেলে নতুন বছরে জীবন থেকে সব সৌভাগ্য উড়ে যাবে। তারা নতুন বছরে পরিচিত বা বন্ধুদের যে উপহার দেন, তাতে চিমনি পরিষ্কার করছেন এমন একজন শ্রমিকের ছবি থাকে। উপহারে এই ছবিটি থাকলে পুরনো বছরের সমস্ত দুঃখ নতুন বছরে মুছে যাবে বলে তারা বিশ্বাস করে।
উদ্দীপকের চেয়ে কবীর চৌধুরী রচিত 'পয়লা বৈশাখ' প্রবন্ধের মর্মবাণী আরও গভীর- মন্তব্যটি যথার্থ।
বাংলা নববর্ষ উদযাপন বাঙালির শ্রেষ্ঠ সামাজিক উৎসব। প্রাচীনকাল থেকেই বাংলা নববর্ষ উদ্যাপনের ধারণা তৈরি হয়। এটি বাঙালির প্রাণের উৎসব। এই উৎসবে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে। পয়লা বৈশাখে সবাই আনন্দ উৎসবে মেতে ওঠে।
উদ্দীপকে নববর্ষ উদ্যাপনের মধ্যে কুসংস্কার থাকলেও সবাই মিলে একই দিনে উৎসব পালনের জন্য একত্র হয়। অন্যদিকে 'পয়লা বৈশাখ' প্রবন্ধে কবীর চৌধুরীর মর্মবাণী ছিল আরও গভীর। তাঁর মতে পয়লা বৈশাখ শুধু একটি উৎসব নয়- এটি জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার জন্য মিলিত একটি সর্বজনীন উৎসব। পুরনো বছরের সমস্ত গ্লানি মুছে ফেলে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ নতুন করে নতুন দিনের আনন্দে মেতে ওঠে। কারণ বাঙালি বাংলা ভাষা, বাংলার উৎসব পালনে পরস্পর নিবিড়ভাবে জড়িত।
উদ্দীপকে হাঙ্গেরিবাসীর নির্দিষ্ট কিছু কাজকর্মের মাধ্যমে নববর্ষ উদ্যাপনের চিত্র ফুটে উঠেছে। আর 'পয়লা বৈশাখ' প্রবন্ধে জাতি- ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ধর্মনিরপেক্ষ চেতনার প্রতিফলন ঘটেছে। অপরাজেয় শক্তি ও মহিমায় পূর্ণ করে তোলার জন্য এই আনন্দ উৎসব। এসব বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, উদ্দীপকের চেয়ে কবীর চৌধুরী রচিত 'পয়লা বৈশাখ' প্রবন্ধের মর্মবাণী আরও গভীর।