আনন্দপুর গ্রামের অরিন্দমকে ভালো ছেলে বলে সবাই চেনে। বড়দের সম্মান, ছোটদের ভালোবাসা, সমবয়সীদের সাথে সব বজায় রেখে চলে। মানুষের উপকার করতে সে খুব ভালোবাসে। কেউ অসুস্থ হলে সে সেবার জন্য এগিয়ে যায়। মানুষকে সেবা ও ভালোবাসার জন্যই সে সবার প্রিয়পাত্র।
"সেবাকাজে অরিন্দম যেন যীশুর প্রতিনিধি।" নিচে উক্তিটির যথার্থতা মূল্যায়ন করা হলো-
যীশুখ্রিষ্ট এ পৃথিবীতে এসেছিলেন যেন মানুষ পরিপূর্ণভাবেই জীবন পায় এবং তিনি অগণিত মানুষকে সেবা করেছেন, তাদের রোগমুক্ত করেছেন, দরিদ্র ও ক্ষমতাহীনদের পক্ষ নিয়েছেন এবং নিঃশর্তভাবে মানুষকে ভালোবেসেছেন। মানুষের কাছে পিতার সীমাহীন ভালোবাসার কথা বলেছেন। ঈশ্বরকে পিতা বলে ডাকতে মানুষকে শিখিয়েছেন। মানুষকে পাপ থেকে রক্ষা করার জন্য শেষ পর্যন্ত বিশ্বস্ত থেকে তিনি ক্রুশের উপর আত্মদান করেছেন।
অরিন্দমও মানুষের সেবা করার মাধ্যমে যীশুর প্রতিনিধি হওয়ার চেষ্টা করছে। আমাদের জন্ম ও জীবন পরার্থে, নিজের জন্য নয়। কবি বলেছেন, "পুষ্প আপনার জন্য ফোটে না, পরের জন্য তোমার হৃদয়কুসুমকে প্রস্ফুটিত করিও।" বিশ্বপ্রকৃতি ও প্রতিটি সৃষ্টির দিকে তাকালে আমরা খুব সহজেই এ সত্য উপলদ্ধি করতে পারি। ফুল তার আপন সৌন্দর্য ও গন্ধ বিলিয়ে সবাইকে আনন্দ দেয় এবং পশুপাখি, ফলফলাদি, ফসলও অন্যের জন্য খাদ্যরূপে নিজেকে বিলিয়ে দেয়। বায়ু সেবন করে আমরা বেঁচে থাকি।
আমাদের সব গুণাবলি, শক্তি, প্রতিভা সবই হলো ঈশ্বরের গৌরব প্রকাশ ও মানুষের সেবার জন্য। সেবাকাজের মাধ্যমে আমরা নিজেকে দান করি। প্রদীপ ও ধূপ যেমন নিজে পুড়ে আলো ও গন্ধ বিলায়, তেমনি পরার্থে আত্মনিবেদন করে আমরাও আমাদের জীবন সার্থক করতে পারি। সেবাকাজে আত্মনিবেদন করা আমাদের প্রত্যেকের একটি বিশেষ জীবন-আহ্বান। এটি আমাদের একটি স্বাধীন সিদ্ধান্তও বটে। শিষ্যদের পা ধুয়ে দিয়ে যীশু সেবার মহান দৃষ্টান্ত আমাদের সামনে রেখেছেন। তিনি যেমন আমাদের ভালোবেসেছেন তেমনি পরস্পরকে ভালোবাসতে আমাদের আদেশও দিয়েছেন।
মূলকথা: মানবসেবায় নিবেদিত।