বিজন তার বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। তার জন্মের পর এক ঋষি তাকে দেখে প্রথমে উল্লাস প্রকাশ করলেও পরে কেঁদে ফেলেন। সৃজন বড় বড় পণ্ডিতের কাছে বিদ্যাশিক্ষা করে। সে বেদ, পুরাণ, ইতিহাস, যোগ, বৈশেষিক ন্যায় ও চৌষট্টি প্রকার লিপিবিদ্যায় পারদর্শিতা অর্জন করে। বাল্যকালেই বিকাশের অনন্য প্রতিভার পরিচয় পাওয়া যায়।
উদ্দীপকের বিজনের সাথে মহান মনীষী গৌতম বুদ্ধের সাদৃশ্য রয়েছে।
রাজকুমার সিদ্ধার্থের জন্মের পর ঋষি অসিত শিশু রাজকুমারকে দেখে অভিভূত হয়ে প্রথমে উল্লাস প্রকাশ করলেন। একটু পরই তার দুচোখ অশ্রুতে ভিজে গেল। মহারাজ উদ্বিগ্ন হয়ে জানতে চাইলেন তার এই অকস্মাৎ আনন্দ ও বিষাদের কারণ। তখন ঋষি অসিত বললেন, মহারাজ, এই কুমার মহাজ্ঞানী বুদ্ধ হবেন। জগৎকে দুঃখমুক্তির পথ প্রদর্শন করবেন। এ জন্য আমি উল্লাসিত হয়েছি কিন্তু আমি বয়োবৃদ্ধ, বুদ্ধের অমিয় বাণী শোনার সৌভাগ্য আমার হবে না। বহুপূর্বেই আমার মৃত্যু হবে। এ জন্য মন বিষণ্ণতায় ভরে উঠল।
উদ্দীপকের বিজন চরিত্রের মতো বাল্যকালেই সিদ্ধার্থের অনন্য প্রতিভার পরিচয় পাওয়া যায়। ব্রাহ্মণপুত্র বিশ্বমিত্রের কাছে তাঁর প্রথম বিদ্যাশিক্ষা শুরু হয়। বর্ণ পরিচয়ের প্রারম্ভেই সিদ্ধার্থ তাঁর অতুলনীয় প্রতিভা প্রদর্শন করেন।
প্রতিটি বর্ণ উচ্চারণের সাথে সাথে সেই বর্ণসমন্বিত একটি করে নীতিবাক্য উচ্চারিত হলো তাঁর মুখ দিয়ে। ক্রমে তিনি নানাবিধ ভাষা, শাস্ত্র ও চৌষট্টি প্রকার লিপিবিদ্যায় পারদর্শিতা অর্জন করেন। বেদ, পুরাণ, ইতিহাস, যোগ, বৈশেষিক ন্যায়, গণিত, চিকিৎসাবিদ্যা ইত্যাদি শাস্ত্রও আয়ত্ত করলেন। একই সঙ্গে রাজনীতি, মৃগয়া, অশ্বচালনা, ধনুর্বিদ্যা, রথচালনা ইত্যাদি ক্ষত্রিয়চিত দক্ষতাও সাফল্যের সঙ্গে আয়ত্ত করেন। যা উদ্দীপকের বিজন চরিত্রের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।