বিজন তার বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান। তার জন্মের পর এক ঋষি তাকে দেখে প্রথমে উল্লাস প্রকাশ করলেও পরে কেঁদে ফেলেন। সৃজন বড় বড় পণ্ডিতের কাছে বিদ্যাশিক্ষা করে। সে বেদ, পুরাণ, ইতিহাস, যোগ, বৈশেষিক ন্যায় ও চৌষট্টি প্রকার লিপিবিদ্যায় পারদর্শিতা অর্জন করে। বাল্যকালেই বিকাশের অনন্য প্রতিভার পরিচয় পাওয়া যায়।
উদ্দীপকের বিষয়বস্তু থেকে পাঠ্যবইয়ের মহামানব গৌতম বুদ্ধের বাল্যকালের নানা বিষয়ের মিল পরিলক্ষিত হয়।
গৌতম বুদ্ধ হলেন বৌদ্ধধর্মের প্রবর্তক। বাল্যকালেই সিদ্ধার্থ গৌতম ছিলেন ধ্যানী প্রকৃতির। পোষা শশক ও মৃগশাবক, মরাল ও ময়ূর ছিল তাঁর খেলার সাথি। হলকর্ষণ উৎসবে চোখের সামনে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো সিদ্ধার্থকে উদ্বিগ্ন করে তুলল। ব্রাহ্মণপুত্র বিশ্বামিত্রের কাছে তাঁর প্রথম বিদ্যাশিক্ষা শুরু হয়। বর্ণ পরিচয়ের প্রারম্ভেই সিদ্ধার্থ তাঁর অতুলনীয় প্রতিভা প্রদর্শন করেন।
বাল্যকালেই সিদ্ধার্থ অসাধারণ প্রতিভার দ্বারা কপিলাবস্তু ও দেবদহ রাজ্যের মধ্যকার রোহিনী নদীর জল নিয়ে সৃষ্ট বিবাদ মীমাংসা করেন। রোহিনী নদীতে একটি প্রকাণ্ড বৃক্ষ পড়ে বাঁধের সৃষ্টি করে। ফলে সকল পানি কপিলাবস্তুর দিকে প্রবাহিত হতে থাকে এবং দেবদহ নদীর পানি থেকে বঞ্চিত হয়। উভয় নগরের অধিবাসীরা অনেক চেষ্টা করেও বৃক্ষটি স্থানচ্যুত করতে পারছিল না। তখন সিদ্ধার্থ গাছটির অগ্রভাগ ধরে স্রোতের অনুকূলে জোরে টান দিলেন, এতে গাছটির যে অংশ মাটিতে দেবে গিয়েছিল সে অংশ মাটিসহ আড়াআড়ি অবস্থান থেকে লম্বালম্বি অবস্থানে সরে গেলে জলের প্রবাহ উন্মুক্ত হয়। এভাবেই সিদ্ধার্থ তাঁর মেধা দিয়ে কপিলাবস্তু ও দেবদহ রাজ্যের মধ্যে প্রবাহিত রোহিনী নদীর পানি নিয়ে সৃষ্ট সংকটের সমাধান করেন।