শ্রদ্ধেয় শরণঙ্কর ভিক্ষু কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠানে ধর্মালোচনা করতে গিয়ে বলেন, "বুদ্ধের প্রথম ধর্ম দেশনা 'ধর্মচক্র প্রবর্তন সূত্র' নামে খ্যাত। বুদ্ধ তাঁর পঞ্চবর্গীয় শিষ্যদের কাছে নব আবিষ্কৃত চতুরার্য সত্য, আর্য অষ্টাঙ্গিক মার্গ, প্রতীত্য সমুৎপদ তত্ত্ব, অনিত্য ও অনাত্মবাদ ইত্যাদি দেশনা করেন। পঞ্চশিষ্যরা বিমুগ্ধচিত্তে এই দেশনা শ্রবণ করেন।”
শ্রদ্ধেয় শরণঙ্কর ভিক্ষুর দেশনায় গৌতম বুদ্ধের ধর্ম প্রচারের ঘটনার ইঙ্গিত বহন করে।
বুদ্ধত্বলাভের পরে বুদ্ধ তাঁর নবলব্ধ ধর্মপ্রচারের সিদ্ধান্ত নিলেন। এ জন্যে তিনি আষাঢ়ী পূর্ণিমাতিথিতে সারনাথের ঋষি পতন মৃগদাবে উপস্থিত হলেন। ঐখানে তখন অবস্থান করছিলেন তাঁর পূর্বের পাঁচ সঙ্গী- কোন্ডিন্য, বপ্ন, ভদ্দিয়, মহানাম ও অশ্বজিৎ। এদের কাছে তিনি প্রথম নবলব্ধ ধর্মপ্রচার করলেন। এরাই বুদ্ধের কাছে প্রথম দীক্ষাপ্রাপ্ত ভিক্ষু। বৌদ্ধধর্মের ইতিহাসে এরা পঞ্চবর্গীয় শিষ্য নামে পরিচিত। তাদেঁর দীক্ষার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠা লাভ করলো 'ভিক্ষুসঙ্ঘ'।
বুদ্ধের প্রথম ধর্ম দেশনা 'ধর্মচক্র প্রবর্তন সূত্র' নামে খ্যাত। বুদ্ধ দেশনা করলেন, নব আবিষ্কৃত চতুরার্য সত্য, আর্য অষ্টাঙ্গিক মার্গ, প্রতীত্যসমুৎপাদ তত্ত্ব, অনিত্য ও অনাত্মবাদ ইত্যাদি। পঞ্চশিষ্যগণ বিমুগ্ধ চিত্তে সারারাত ধরে নবধর্মের অমৃতময় বাণী শ্রবণ করলেন। বুদ্ধ পঞ্চবর্গীয় শিষ্যদের নিয়ে ঐ তপোবনেই প্রথম বর্ষাবাস শুরু করলেন। এ সময়ে শ্রেষ্ঠিপুত্র যশ ও তাঁর চার বন্ধু সংসারের প্রতি বীতরাগ হয়ে বুদ্ধের নিকট প্রব্রজ্যা গ্রহণ করেন। এদের অনুসারী আরও পঞ্চাশ জন যুবকও ভিক্ষু হলেন। বুদ্ধ এই ভিক্ষুসংঘকে বর্ষাবাসশেষে দিকে দিকে অনন্য এই ধর্মপ্রচারে প্রেরণ করলেন।