শ্রদ্ধেয় শরণঙ্কর ভিক্ষু কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠানে ধর্মালোচনা করতে গিয়ে বলেন, "বুদ্ধের প্রথম ধর্ম দেশনা 'ধর্মচক্র প্রবর্তন সূত্র' নামে খ্যাত। বুদ্ধ তাঁর পঞ্চবর্গীয় শিষ্যদের কাছে নব আবিষ্কৃত চতুরার্য সত্য, আর্য অষ্টাঙ্গিক মার্গ, প্রতীত্য সমুৎপদ তত্ত্ব, অনিত্য ও অনাত্মবাদ ইত্যাদি দেশনা করেন। পঞ্চশিষ্যরা বিমুগ্ধচিত্তে এই দেশনা শ্রবণ করেন।”
উক্ত প্রচারে অর্থাৎ বৌদ্ধ ধর্মে নারীদের অধিকার পুরুষের সমকক্ষ ছিল। যদিও বুদ্ধ প্রথমে নারীদের সংঘে প্রবেশের অনুমতি দেননি। কিন্তু পরে আনন্দ থেরের অনুরোধে নারীদেরও সংঘভুক্ত করা হয়।
বুদ্ধত্ব লাভের পর মানব কল্যাণের জন্য পঞ্চবর্গীয় শিষ্যের কাছে 'ধর্মচক্র প্রবর্তন সূত্র' দেশনার মাধ্যমে গৌতম বুদ্ধ তাঁর নবলব্ধ ধর্ম প্রচার করেন। ক্রমান্বয়ে নানা ধর্ম-বর্ণের অনেক যুবক তাঁর কল্যাণ ধর্মে দীক্ষা নিয়ে সংসারধর্ম ত্যাগ করে প্রব্রজ্যা ধর্ম গ্রহণ করেন।
একবার বুদ্ধ শাক্য ও কোলিয়দের বিবাদ মীমাংসার জন্য কপিলাবস্তু গেলে পাঁচশত শাক্য কুমার ভিক্ষুসংঘে যোগ দেন। রানি মহাপ্রজাপতি গৌতমীর নেতৃত্বে গোপাদেবীসহ পাঁচশত শাক্য কুমারের স্ত্রীগণ বুদ্ধের কাছে প্রব্রজ্যা প্রার্থনা করেন। বুদ্ধ প্রথমে তাঁদের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করলেও পরে তাঁদের দৃঢ় প্রত্যয় দেখে এবং আনন্দ থের অনুরোধে ভিক্ষুণীসংঘ প্রতিষ্ঠা করেন। এর মাধ্যমে নারীরা বৌদ্ধধর্মে পুরুষের সমকক্ষতা অর্জন করে। এ প্রসঙ্গে বুদ্ধ প্রিয় শিষ্য আনন্দকে বলেন যে, পুরুষের ন্যায় নারীরাও শ্রামণ্য ফলের অধিকারী হতে পারে এবং ক্ষেমা, উৎপলবর্ণা, ধর্মদিন্না, ভদ্দকপিলানীর ন্যায় ভিক্ষুণীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে বুদ্ধ শাসনের মঙ্গল ব্যতীত অমঙ্গল হবে না। তিনি আরো বলেন মার্গফললাভে নারী পুরুষের সমকক্ষ, কোনো তারতম্য নেই।
পরিশেষে বলা যায়, বুদ্ধের উপর্যুক্ত বক্তব্য বৌদ্ধধর্মে নারী-পুরুষের সমতা নির্দেশ করে।