দীপঙ্কর কঠোর সাধনার মাধ্যমে মানুষের দুঃখমুক্তির উপায় সম্পর্কে জানতে পারেন। তিনি তার ধর্ম প্রচারের সিদ্ধান্ত নিয়ে পাঁচ অনুসারীকে দীক্ষা দেন। এভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় 'ভিক্ষুসংঘ'। এরপর তিনি পথে পথে অনেককে তার কল্যাণধর্মে দীক্ষিত করেন। একটি পূর্ণিমা রাতে তিনি মৃত্যুর মধ্য দিয়ে পূর্ণ মুক্তি লাভ করেন।
উদ্দীপকের দীপঙ্কর পূর্ণিমা রাতে মৃত্যুর মধ্য দিয়ে পূর্ণ মুক্তি বা মহাপরিনির্বাণ লাভ করেন। গৌতম বুদ্ধও বৈশাখী পূর্ণিমা তিথিতে মহাপরিনির্বাণ লাভ করেন।
মহাকারুণিক গৌতম বুদ্ধ জগতের সকল প্রাণীর দুঃখমুক্তির পথ প্রদর্শন করেন। সুদীর্ঘ পঁয়তাল্লিশ বছর যাবৎ ধর্ম প্রচার করেন। তৎকালীন ভারতবর্ষের বিভিন্ন স্থান ও জনপদে ধর্ম প্রচার করেন। এক মাঘী পূর্ণিমার দিনে তিনি বৈশালীর চাপালচৈত্য নামক উদ্যানে অবস্থাকালে ঘোষণা করলেন, পরবর্তী বৈশাখী পূর্ণিমা তিথিতে তিনি মহাপরিনির্বাণ লাভ করবেন।
অতঃপর তিন মাস অতিক্রম করে বৈশাখী পূর্ণিমার প্রাক্কালে কুশীনগরে উপস্থিত হলেন। কুশীনগরের পাবা নামক স্থানে এসে তিনি স্বর্ণকার পুত্র চুন্দের আতিথ্য গ্রহণ করলেন। আহার শেষে তিনি অসুস্থতা বোধ করলেন। পাবা থেকে ফিরে বুদ্ধ মল্লদের শালবনে যমক শালগাছের নিচে বিশ্রামের জন্য শয়ন করলেন। আকাশে বৈশাখী পূর্ণিমার চাঁদ। বুদ্ধের সেবক প্রিয় আনন্দ ও অন্য ভিক্ষুরা বুদ্ধের চারপাশে উপবিষ্ট। বুদ্ধ শেষ বারের মতো উপদেশ দেন, হে ভিক্ষুগণ! সংস্কারসমূহ ব্যয় ধর্মশীল। অপ্রমাদের সাথে নিজ নিজ কর্তব্য পালনে তৎপর হও। শেষ বাণী উচ্চারণের সাথে সাথে বুদ্ধ ধ্যানে নিমগ্ন হলেন।
পরিশেষে একটির পর একটি ধ্যানের স্তর অতিক্রম করে তিনি নিরোধ সমাধিতে মগ্ন হলেন এবং রাত্রির তৃতীয় যামে পরম সুখময় মহাপরিনির্বাণ লাভ করলেন।