নিলয় টেলিভিশনে আফ্রিকার একটি দেশের প্রতিবেদন দেখছিল। সেখানে মানুষের জীবিকা, জীবনযাত্রায় সে লক্ষ করল তাদের দেশের মানুষের জীবিকা নির্বাহের উপায় কৃষি। তাই মৌসুমি বেকারত্বের প্রকোপ বেশি। তখন সে নিজের দেশের কথাও চিন্তা করল। কেননা তার দেশটিও কৃষিনির্ভর। এছাড়া আফ্রিকার দেশটিতে অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে দেশটি পিছিয়ে রয়েছে। কিন্তু নিলয়ের দেশ যোগাযোগে একটু উন্নত।
উদ্দীপকের নিলয়ের টেলিভিশনে দেখা আফ্রিকার দেশটি হলো অনুন্নত দেশ আর তার নিজের দেশটি হলো উন্নয়নশীল দেশ। নিচে উক্ত দুটি দেশের মধ্যে তুলনামূলক বিশ্লেষণ করা হলো-
অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের জাতীয় আয়ের একটি বড় অংশ আসে কৃষি
খাত হতে। এখানকার অধিকাংশ লোকই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষির
ওপর নির্ভরশীল। তবে অনুন্নত দেশের কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থা ও প্রযুক্তি
একেবারেই সনাতনী আর উন্নয়নশীল দেশে কম পরিমাণে হলেও আধুনিক
কৃষিব্যবস্থা গড়ে উঠছে। অনুন্নত দেশে মাথাপিছু আয় অনেক কম থাকে
কিন্তু উন্নয়নশীল দেশে অনুন্নত দেশের তুলনায় জনগণের মাথাপিছু আয়
বেশি থাকে। যার ফলে এখানকার জনগণের জীবনযাত্রার মান সামান্য উন্নত হয়।
অনুন্নত দেশে শিল্পকাঠামো সেকেলে এবং বৃহদায়তন মূলধনী শিল্প খুব কম। কিন্তু উন্নয়নশীল দেশগুলোতে শিল্প প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে এবং তা ধীরগতিতে হলেও বিকশিত হচ্ছে। তাছাড়া অনুন্নত দেশের পরিবহন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা একেবারেই অনুন্নত বলে উদ্যোক্তারা বিনিয়োগ উৎসাহিত হয় না। কিন্তু উন্নয়নশীল দেশের অর্থনৈতিক অবকাঠামো যেমন, যোগাযোগ ও পরিবহন, বিদ্যুৎ, ব্যাংক ও বীমা প্রভৃতি উন্নত দেশের মত ভালো না হলেও অনুন্নত দেশের তুলনায় যথেষ্ট ভালো।
সর্বোপরি অনুন্নত দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা অনেকটা স্থবির। এখানে দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র বিশেষভাবে কার্যকর। অপরদিকে, উন্নয়নশীল দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা উন্নত দেশের মতো উন্নত না হলেও স্থবির নয়, ধীরে ধীরে তারা অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে।