লতা আর রত্না দুই বান্ধবী। স্টাডি ট্যুরে ওরা রাঙামাটি
গেছে। সেখানে গিয়ে কিছু উপজাতিদের সাথে ওদের আলাপ হলো। ওদের জীবনের নানা সমস্যা, সম্ভাবনা সম্পর্কে ওরা ধারণা পেল। রেস্ট হাউজে ফিরে এসে লতা ও রত্না আলোচনায় বসল। লতা বলল, আমি সমাজকর্মে পড়াশোনা করছি তাই ওদের সমস্যার সমাধানে আমার অর্জিত জ্ঞানই সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখবে। রত্না বলল, না তোমার ধারণা ঠিক নয়। ওদের অর্থনৈতিক-সামাজিক সমস্যা মোকাবিলায় সম্পদের সদ্ব্যবহার, সুষম বণ্টন প্রভৃতি বিষয়ে তোমাকে জানতে হবে। আর এ জন্যে তোমাকে আমার সহায়তা নিতে হবে।
সম্পদ আহরণের উপায় নির্দেশ এবং সম্পদের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে সমাজকর্মীর অর্থনীতির জ্ঞান অত্যাবশ্যক।
সামাজিক কল্যাণের যে সুনির্দিষ্ট অংশ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অর্থের দ্বারা পরিমাপ করা যায় তার আলোচনাই অর্থনীতির মুখ্য বিষয় হিসেবে পরিচিত। আর সমাজকর্মও সীমিত সম্পদ ও সমাজের সদস্যদের নিজস্ব সম্পদের সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান ও প্রয়োজন পূরণের লক্ষ্যে কাজ করে। সুতরাং এটা স্পষ্ট হয় যে, সীমিত সম্পদ ও নিজস্ব সম্পদের সদ্ব্যবহার ও এই সম্পর্কিত সমাধানের মাধ্যমে সামাজিক কল্যাণ সাধন অর্থনীতির মাধ্যমে সুসম্পন্ন করা সম্ভব।
সমাজকর্ম ও অর্থনীতি উভয়ের লক্ষ্য হলো সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা। এ লক্ষ্যে সমাজকর্ম সীমিত সম্পদের সদ্ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব প্রদান করে যাতে সমস্যার যথোপযুক্ত ও স্থায়ী সমাধান সম্ভব হয়। অন্যদিকে অর্থনীতি প্রবৃদ্ধি আনয়নের জন্য সম্পদের উপযুক্ত ব্যবহার ও বরাদ্দের ওপর আলোচনা করে। সমাজের একজন নাগরিক হিসেবে মৌল মানবিক চাহিদা পূরণকল্পে সমাজকর্ম ও অর্থনীতি উভয়ই বিশেষ প্রয়াস চালায়। সমাজকর্মে সম্পদ ও অর্থনীতির জ্ঞানের কোনো বিকল্প নেই। সর্বোপরি, সমাজকর্ম ও অর্থনীতি উভয়ই মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে কাজ করে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ প্রভৃতি বিষয়ে নানা কর্মসূচি পরিচালনার মাধ্যমে মানুষের জীবনযাত্রার উন্নয়নে সমাজকর্ম যে প্রচেষ্টা চালায় অর্থনীতি ব্যক্তি ও সমষ্টির দক্ষতা উন্নয়ন ও সম্পদ বৃদ্ধির মাধ্যমে তা অর্জনে সচেষ্ট থাকে বিধায় যে কোনো সমাজকর্মীরই অর্থনীতি সম্পর্কে জ্ঞান রাখা অত্যাবশ্যক। উদ্দীপকে লতা ও রত্নার আলোচনায়ও সমাজকর্মীর অর্থনীতির জ্ঞানের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি ফুটে উঠেছে
পরিশেষে বলা যায়, সমাজকর্ম সমাজের মানুষের অর্থনৈতিক,
সামাজিক ও নৈতিকসহ সার্বিক দিকের কল্যাণ সাধনের মাধ্যমে সমাজের বৃহত্তর কল্যাণ সাধন করতে চায়। তাই এ কাজটি সম্পন্ন করতে সমাজকর্মকে অর্থনীতির ওপর নির্ভর করতে হয়।