‘ক' নামক সামাজিক সংগঠনটি সামাজিক চিরাচরিত নিয়ম কানুন অনুযায়ী পরিচালিত হয় এবং নিয়মগুলো কোথাও লিপিবদ্ধ করা হয়নি । সংগঠনের মাঝে কোনো সমস্যা দেখা দিলে তারা প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী আলাপ আলোচনার মাধ্যমে তা নিষ্পত্তি করে। পক্ষান্তরে 'খ' নামক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্কুল পরিচালনায় সুস্পষ্টভাবে লিখিত নিয়মকানুন মেনে স্কুল পরিচালনা করেন । যেকোনো নীতিমালা তৈরি বা শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে সক্ষম হন । মাঝে মাঝে লিখিত নিয়ম কানুনের ব্যাখ্যা নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়।
“ক' ও ‘খ’ প্রতিষ্ঠান দুটির পরিচালনার নিয়মাবলির মধ্যে তুমি কোনটিকে উত্তম বলে মনে কর তার পক্ষে যুক্তি প্রদর্শন কর ।
(উচ্চতর দক্ষতা)'খ' প্রতিষ্ঠানের নিয়মাবলির সাথে লিখিত সংবিধানের সাদৃশ্য রয়েছে। 'ক' ও 'খ' প্রতিষ্ঠান দুটির পরিচালনার নিয়মাবলির মধ্যে আমি 'খ' প্রতিষ্ঠানের নিয়মাবলি উত্তম বলে মনে করি।
লিখিত সংবিধানের অধিকাংশ ধারা লিখিত থাকে বলে এটি জনগণের নিকট সুস্পষ্ট ও বোধগম্য হয়। এতে সাধারণত সংশোধন পদ্ধতি উল্লেখ থাকে বিধায় খুব সহজে পরিবর্তন বা সংশোধন করা যায় না। আবার লিখিত সংবিধান স্থিতিশীল বিধায় শাসক তার ইচ্ছামতো এটি পরিবর্তন বা সংশোধন করতে পারে না। লিখিত সংবিধানের সকল ধারা জনগণ ও শাসক মেনে চলতে বাধ্য হয়। সংবিধান লিখিত থাকায় জনগণের মৌলিক অধিকার সংরক্ষিত হয়।
অন্যদিকে অলিখিত সংবিধান অস্পষ্টতা দোষে দুষ্ট। শাসক-শাসিতের সম্পর্ক বা অন্যান্য বিষয়গুলো এ সংবিধানে লিখিত থাকে না। সে কারণে শাসক ও শাসিত তাদের সুনির্দিষ্ট অধিকার, কর্তব্য ইত্যাদি বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা গ্রহণ করতে পারে না। ফলে শাসনব্যবস্থায় জটিলতা সৃষ্টি হয়। আবার অধিক পরিবর্তনশীলতার কারণে সংবিধানে স্থায়ী নীতি ও দীর্ঘমেয়াদি কার্যক্রম বাস্তবায়নে প্রতিকূলতা সৃষ্টি হয়। তাছাড়া অলিখিত সংবিধানে জনগণের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হবার আশঙ্কা থাকে।
উদ্দীপকের 'খ' নামক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকও স্কুল পরিচালনায় সুস্পষ্টভাবে লিখিত নিয়মকানুন মেনে চলেন এবং যেকোনো ক্ষেত্রে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে সক্ষম হন। তাই আমি মনে করি 'ক' ও 'খ' প্রতিষ্ঠান দুটির নিয়মাবলির মধ্যে 'খ' প্রতিষ্ঠানের নিয়মাবলি উত্তম।