দুই পুত্রসন্তানের পর কন্যাসন্তান পলাশ বাবুর পরিবারে আনন্দের বন্যা নিয়ে এল। নাম রাখা হলো ‘কল্যাণী’। সকলের চোখের মণি কল্যাণী বেড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে পলাশ বাবু বুঝতে পারলেন, বয়সের তুলনায় কল্যাণীর মানসিক বিকাশ ঘটেনি । কিছু বললে ফ্যালফ্যাল্ করে চেয়ে থাকে। কল্যাণীর বিয়ের কথাবার্তা চলছে। পলাশবাবু কল্যাণীর সবই বরপক্ষকে খুলে বললেন। সব শুনে বরের বাবা সুবোধ বাবু বললেন, ‘পলাশ বাবু কল্যাণীর মতো আমার ছেলেও তো হতে পারত, কাজেই কল্যাণীমাকে ঘরে নিতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।'
কল্যাণী ও সুভা একই পরিস্থিতির শিকার হলেও উভয়ের প্রেক্ষাপট ও পরিণতি ভিন্ন- মন্তব্যটি যথার্থ।
শারীরিক প্রতিবন্ধীরা আমাদের সমাজে বিভিন্নভাবে অবহেলার সম্মুখীন হয়। তারা আমাদের সমাজেরই অংশ, আমাদের মতোই মানুষ। তাই তাদের কল্যাণে এগিয়ে আসা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আমাদের সহানুভূতি পেলে তারা জীবনের পূর্ণতা লাভ করবে।
উদ্দীপকে কল্যাণীর মানসিক বিকাশ ঠিকভাবে ঘটেনি। বিয়ের কথাবার্তায় তার বাবা পলাশ বাবু বরপক্ষের কাছে সে সব কথা খুলে বলেন। তারা সব শুনে উদারতার পরিচয় দেন। বরের বাবা সুবোধ বাবু মহত্ত্বের পরিচয় দিয়ে কল্যাণীকে ঘরে নিয়ে যেতে চান। অন্যদিকে 'সুভা' গল্পের সুভা বাষ্প্রতিবন্ধী। সে কথা বলতে পারে না। সবার কাছ থেকে অবহেলা পেলেও সুভা তার বাবার ভালোবাসা পেয়েছে। সুভার সাথে কেউ মেশে না বলে সে পোষা প্রাণীদের মাঝে নিজের একটি বিশাল জগৎ তৈরি করেছে।
উদ্দীপকের কল্যাণী ও 'সুভা' গল্পের সুভা একই পরিস্থিতির শিকার হলেও উভয়ের প্রেক্ষাপট ও পরিণতি ভিন্ন। কল্যাণী সুবোধ বাবুর উদারতায় পেয়েছে সুন্দর ভবিষ্যতের সন্ধান। অথচ 'সুভা' গল্পের সুভার পরিণতি এতটা মানবিকতায় সিক্ত হয়নি। তাই বলা যায়, প্রশ্নোক্ত মন্তব্যটি যথার্থ।