Academy

এই নিষ্ঠুর অভিযোগে গফুর যেন বারোধ হইয়া গেল। ক্ষণেক পরে ধীরে ধীরে কহিল, কাহন খানেক খড় এবার ভাগে পেয়েছিলাম। কিন্তু গেল সনের বকেয়া বলে কর্তামশায় সব ধরে রাখলেন? কেঁদে কেটে হাতে পায়ে পড়ে বললাম, বাবু মশাই, হাকিম তুমি, তোমার রাজত্ব ছেড়ে আর পালাব কোথায়? আমাকে পণদশেক বিচুলি না হয় দাও। চালে খড় নেই। বাপ বেটিতে থাকি, তাও না হয় তালপাখার গোঁজাগাঁজা দিয়ে এ বর্ষা কাটিয়ে দেব, কিন্তু না খেতে পেয়ে আমার মহেশ যে মরে যাবে।

‘কাঙালীর সঙ্গে উদ্দীপকের গফুরের সাদৃশ্য থাকলেও কাঙালী সম্পূর্ণরূপে গফুরের প্রতিনিধিত্ব করে না।'- মন্তব্যটি, যথার্থতা নিরূপণ কর ।

Created: 2 years ago | Updated: 2 years ago
Updated: 2 years ago
Answer :

'কাঙালীর সঙ্গে উদ্দীপকের গফুরের সাদৃশ্য থাকলেও কাঙালী সম্পূর্ণরূপে গফুরের প্রতিনিধিত্ব করে না।'- মন্তব্যটি যথার্থ।

শোষক সব দেশে সব কালেই গরিব-দুঃখী মানুষের শ্রম শোষণ করে তাদের আধিপত্য বিস্তার করে চলে। দুর্বলের ওপর সবলের অত্যাচার নতুন কোনো ব্যাপার নয়। যুগ যুগ ধরেই তা চলে আসছে। সবল ব্যক্তিরা অত্যাচার করে আর দুর্বলরা মুখ বুজে সহ্য করে।

উদ্দীপকের গফুর দরিদ্র। সে জমিদারের জমি বর্গা নিয়ে চাষ করে। গত সনের বকেয়া হিসাব করে গফুরের ভাগের সব খড় নিয়ে যায় মালিক কর্তামশায়। অনেক অনুনয়, বিনয়, অশ্রুপাত করেও প্রিয় গরু মহেশের জন্য সামান্য খড়বিচুলিও পায় না সে। 'অভাগীর স্বর্গ' গল্পে কাঙালী তার মায়ের শেষ ইচ্ছা পূরণ করতে কাঠের জন্য অনেক কান্নাকাটি করেও জমিদারের গোমস্তা অধর রায়ের কাছ থেকে তা পায়নি। দরিদ্র বলে কেউ তাকে কাঠ দিতে রাজি হয়নি। বরং দুলে জাতের কাউকে পোড়ানো হয় না বলেও ভর্ৎসনা করেছে। এখানে গফুরের প্রত্যাশা এবং কাঙালীর প্রত্যাশায় মিল থাকলেও তা এক নয়।

উদ্দীপকে গফুর কর্তামশায়ের কাছে মহেশের জন্য বিচুলি চেয়েছিল। আর 'অভাগীর স্বর্গ' গল্পে কাঙালী তার মায়ের সৎকারের জন্য কাঠ চেয়েছিল। এই দুজনই হতদরিদ্র। কিন্তু তাদের চাওয়ার মধ্যে দুজনের বেদনাবোধ দুরকম। এ কারণেই মিল থাকলেও গফুর ও কাঙালী পরস্পরের সম্পূর্ণ প্রতিনিধি নয়। কারণ তাদের যন্ত্রণার গভীরতা এক রকম নয়, ভিন্ন ভিন্ন।

6 months ago

বাংলা সাহিত্য

**'Provide valuable content and get rewarded! 🏆✨**
Contribute high-quality content, help learners grow, and earn for your efforts! 💡💰'
Content
Promotion