Academy

বাগভঙ্গির সাহায্যে কী কী ধরনের বাক্য গঠন করা যায়?

Created: 1 year ago | Updated: 5 months ago
Updated: 5 months ago

বাক্যের শ্রেণিবিভাগ

স্বরভঙ্গি ও বাগ্‌ভঙ্গি
১. অ-নে-ক অ-নে-ক দিন আগে বাংলাদেশে বিজয় সিংহ নামে খুব সাহসী এক রাজপুত্র ছিলেন ।
২. প্রকৃতি কী সুন্দর সাজেই না সেজেছে!
৩. তাজ্জব ব্যাপার!
৪. দুঃখ বিনা সুখ লাভ হয় কি মহীতে?
৫. “আমার মাথা নত করে দাও হে তোমার চরণধুলার তলে। '
৬. ‘দীর্ঘজীবী হও।'
৭. ‘সবারে বাস রে ভালো। ’
৮. উঠে বস ।
ওপরের প্রথম বাক্যটি বিবৃতিমূলক; দ্বিতীয় ও তৃতীয় বাক্য দুটি বিস্ময়সূচক; চতুর্থ বাক্যটি প্রশ্নসূচক; পঞ্চম বাক্যটি প্রার্থনামূলক; যষ্ঠ বাক্যটি আশীর্বাদবোধক; সপ্তম বাক্যটি অনুরোধমূলক; অষ্টম বাক্যটি আদেশসূচক।
হাসি-কান্না, সুখ-দুঃখ, আবেগ-উচ্ছ্বাস, অনুরোধ-প্রার্থনা, আদেশ-মিনতি, শাসন-তিরস্কার কণ্ঠস্বরের নানা ভঙ্গিতে উচ্চারণের মধ্যে প্রকাশিত হয় ।
বিশেষ জোর দিয়ে কথা বলা, কণ্ঠস্বরের ওঠা-নামা, কাঁপন, টেনে টেনে শব্দ উচ্চারণ ইত্যাদির দ্বারা বাক্যের বিশেষ বিশেষ অর্থ ও ভাব প্রকাশ করা সম্ভব। বিভিন্ন ভঙ্গিতে কণ্ঠধ্বনি উচ্চারণের ফলে যে ধ্বনি-তরঙ্গ সৃষ্টি হয়, তা নানা প্রকার ভাব ও অর্থ সৃষ্টি করে। এই ধ্বনি-তরঙ্গ বা স্বরতরঙ্গকে স্বরভঙ্গি বলে। এই স্বরভঙ্গিই বাভঙ্গির ভিত্তি ।
স্বরভঙ্গির দ্বারা যে শব্দ ও বাক্য সৃষ্ট ও উচ্চারিত হয়, তাকে লিখিত আকারে এবং উচ্চারিত অবস্থায় বাগ্‌ভঙ্গি
বলা যেতে পারে।
বাক্য নিম্নলিখিত কয়েকটি শ্রেণিতে বিভক্ত হতে পারে।
১. বিবৃতিমূলক বাক্য (Assertive sentence ) : সাধারণভাবে হ্যাঁ বা না বাচক বাক্য। বিবৃতিমূলক বাক্য দুই প্রকার হতে পারে : হ্যাঁ বাচক বাক্য (Affirmative sentence) এবং না বাচক বাক্য (Negative sentence)।
উদাহরণ-হ্যাঁ বাচক বাক্য : সে ঢাকা যাবে। আমি বলতে চাই ।
না বাচক বাক্য : সে ঢাকা যাবে না। আমি বলতে চাই না ।

২. প্রশ্নসূচক বাক্য (Interrogative sentence) : এ ধরনের বাক্যে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা হয় । যথা :
কোথায় যাচ্ছ? কী পড়ছ? কেন এসেছ? যাবে নাকি ?
৩. বিস্ময়সূচক বাক্য (Exclamatory sentence) : যে বাক্যে আশ্চর্যজনক কিছু বোঝায় তাকে বিস্ময়সূচক
বাক্য বলে। যথা : তাজ্জব ব্যাপার! সমুদ্রের সে কী ভীষণ গর্জন, ঢেউগুলো পাহাড়ের চূড়ার মতো উঁচু— আমি তো ভয়ে মরি! হুররে, , আমরা জিতেছি।
৪. ইচ্ছাসূচক বাক্য (Optative sentence) : এ ধরনের বাক্যে শুভজনক প্রার্থনা, আশিস, আকাঙ্ক্ষা করা হয়। যথা :
তোমার মঙ্গল হোক। ঈশ্বর তোমাকে জয়ী করুন। পরীক্ষায় সফল হও। দীর্ঘজীবী হও।
৫. আদেশ বাচক বাক্য (Imperative sentence) : এ ধরনের বাক্যে আদেশ করা হয়। যথা :
শিক্ষক মহোদয় শ্রেণিকক্ষে এলে উঠে দাঁড়াবে। চুপটি করে বস। উঠে দাঁড়াও । দেশের স্বাধীনতা রক্ষার জন্য যুদ্ধ কর।
স্বরভঙ্গি তথা বাভঙ্গির সাহায্যে ক্রোধ, আদর, আনন্দ, দুঃখ, বিরক্তি, বিস্ময়, লজ্জা, ঘৃণা প্রভৃতি বিভিন্ন
প্রকার অনুভূতি প্রকাশ করা যায়। যথা :

১. সাধারণ বিবৃতিতে     সে আজ যাবে ।
২. জিজ্ঞাসায়              সে আজ যাবে?
৩. বিস্ময় প্রকাশে        সে আজ যাবে!
৪. ক্রোধ প্রকাশে        আমি তোমাকে দেখে নেব।
৫. আদর বোঝাতে      বড্ড শুকিয়ে গেছিস রে।
৬. আনন্দ প্রকাশে      বেশ বেশ, খুব ভালো হয়েছে!
৭. দুঃখ প্রকাশে          আহা, গাছ থেকে পড়ে পা ভেঙেছে!
৮. বিরক্তি প্রকাশে       আঃ, ভালো লাগছে না, এখন এখান থেকে যাও তো।
৯. ভীতি প্রদর্শনে       যাবি কি না বল?
১০. লজ্জা প্রকাশে      ছিঃ ছিঃ, তার সঙ্গে পারলে না।
১১. ধিক্কার দিতে       ছিঃ, তোমার এই কাজ
১২. ঘৃণা প্রকাশে       তুমি এত নীচ।
১৩. অনুরোধ প্রকাশে  কাজটি করে দাও না ভাই ৷

 ১৪. প্ৰাৰ্থনা               ঈশ্বর তোমার মঙ্গল করুন ।


ছেদ ও বিরতিসূচক চিহ্নগুলো বাভঙ্গির লিখিত আকার প্রকাশে সাহায্য করে। দাঁড়ি, কমা, প্রশ্নবোধক ও বিস্ময়সূচক চিহ্ন বাক্যের ভাব ও অর্থবোধের জন্য উপকারক।

Content added By
Promotion