সময়ের বিবর্তনে কীভাবে ইতিহাসের পরিসর বিস্তৃত হচ্ছে?
সময়ের পরিবর্তনের সাথে ইতিহাসের ক্ষেত্র উল্লেখযোগ্যভাবে প্রসারিত হয়েছে। প্রাথমিক অবস্থায়, ইতিহাস মূলত রাজা-রাজড়াদের, যুদ্ধ-বিগ্রহের এবং বিজয়ের কাহিনীর মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু কালক্রমে এটি আরো গভীরতা পেয়েছে এবং রাজনৈতিক ঘটনার পাশাপাশি সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং বৈজ্ঞানিক উন্নতির দিকগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করেছে।
আধুনিক ইতিহাস এখন কেবল শাসকদের কর্মকাণ্ডের প্রতিবেদন নয়, বরং সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে সংঘটিত সংগ্রাম ও অগ্রগতির গল্পকেও বিশেষভাবে তুলে ধরে। শিল্পবিপ্লব, বৈজ্ঞানিক গবেষণা, সামাজিক পরিবর্তন এবং প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের মতো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার ইতিহাসে স্থান রয়েছে। এর পাশাপাশি, ইতিহাসের গবেষণায় এখন বিভিন্ন ধরনের উপাদান অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে, যেমন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন, দাপ্তরিক নথিপত্র এবং বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণের ফলাফল। ফলে, ইতিহাস এখন সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের অবদান ও পরিবর্তনের সামগ্রিক প্রতিচ্ছবি উপস্থাপন করছে।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশে মহান মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়। নয় মাস পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রাণপণ লড়াই করে ১৬ ডিসেম্বর আমাদের দেশ শত্রুমুক্ত হয়। মুক্তিযুদ্ধ আমাদের গর্বের, গৌরবের কাহিনি। বাঙালি জাতির এমন অনেক গৌরবের কাহিনি আছে। সেসব জানতে হলে ইতিহাস পড়তে হবে, চর্চা করতে হবে। ইতিহাস সত্য ঘটনা উপস্থাপন করে। ইতিহাস সম্পর্কে গভীর অনুসন্ধান করতে হলে ইতিহাসের উপাদান, প্রকারভেদ সম্পর্কে অবহিত হতে হবে।
এজন্য আগে আমাদের নামতে হবে ইতিহাস কী? জানতে হবে কত ধরনের ইতিহাস লেখা যার যা ইতিহাস কত ধরনের হয়। ইতিহাস পাঠের প্রয়োজনীয়তাই বা কী? এই অধ্যায়ে এসব বিষয় নিয়েই আলোচনা করা হয়েছে। সুতরাং
এই অধ্যায় শেষে আমরা -
• ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ধারণা, স্বরূপ ও পরিসর ব্যাখ্যা করতে পারব;
• ইতিহাসের উপাদান ও প্রকার বর্ণনা করতে পারব;
• ইতিহাস পাঠের প্রজোজনীয়তা আলোচনা করতে পারব;
• ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রতি আগ্রহী হব ।