ক বিভাগ—গদ্য
নিবেদিতা তার স্বামী প্লাবনসহ বইয়ের দোকানে এসে অবাক হলেন। ফোনে নিবেদিতা বই বিক্রেতাকে বইয়ের নাম, সংখ্যা, প্রকাশনী, কমিশন এবং সরবরাহের তারিখ প্রভৃতি বিষয়ে বিস্তারিত সব বলে দিয়েছিলেন। কিন্তু দোকানদার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বই সরবরাহের ন্যূনতম প্রস্তুতিও নেননি। এক পর্যায়ে দোকানদার প্রতিশ্রুতির কথা অস্বীকার করলে নিবেদিতা মোবাইল থেকে প্রমাণ উপস্থাপন করলেন। প্লাবনের অনুরোধে নিবেদিতা দোকানদারের সাথে আর তর্কে জড়ালেন না ।
গ্রিক দার্শনিক সক্রেটিস নিজেকে চেনার কথা বলেছিলেন; বলেছিলেন সত্য প্রকাশের কথা-যত কঠিনই হোক সে সত্য। সক্রেটিস ও তাঁর অনুসারীরা সত্য প্রকাশে যে অসঙ্কোচ দৃঢ়তা দেখিয়ে ছিলেন, প্রথাগত সমাজ ও রাষ্ট্রের চোখে তা চিহ্নিত হয়েছিলো ঔদ্ধত্য ও বিশৃঙ্খলার নিয়ামক হিসেবে। পরিণামে তাঁদের উপর নেমে এসেছিলো রাজদণ্ড। প্রবল পরাক্রমশালী রাজার ভয়ে না পালিয়ে যে অল্পসংখ্যক অনুসারী শেষ পর্যন্ত সক্রেটিসের অনুগামী হলেন, তাঁরাই ছিলেন প্রকৃত সত্যনিষ্ঠ। আর তাঁরা যেহেতু আত্মপ্রবঞ্চক ছিলেন না; তাই জেনেশুনেই বেছে নিয়েছিলেন রাজার দেয়া “সত্য বলার শাস্তি'। শাস্তিদাতা রাজাদের নাম-নিশানা মুছে গেলেও সক্রেটিসকে মহাকাল দিয়েছে ‘মহাজ্ঞানী' অভিধা ।
কোভিড-১৯ এর সময়ে ‘পদ্মরাগ' নামক সামাজিক সংগঠনটি ছিন্নমূল মানুষদের এক বেলা খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেছিল। প্রতিদিন শত শত মানুষকে খাবার দিয়েও প্রতিষ্ঠানটি তৃপ্ত হতে পারেনি। ইদানিং সংগঠনটির সদস্যদের নতুন উপলব্ধি হয়েছে যে, তাঁরা প্রতি মাসে একজন করে ছিন্নমূল মানুষকে আর্থিক সহায়তায় প্রতিষ্ঠিত করে পরাবলম্বন থেকে মুক্তি দিবেন ।
“বাজারে মিলিটারি ঢোকার পর থেকেই কলিমদ্দি দফাদারের ওপর বোর্ড অফিস খোলার ভার পড়েছে। অপেক্ষাকৃত কমবয়স্ক চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান মিলিটারির ভয়ে পারতপক্ষে এদিকে আসেন না। মেম্বারগণও আত্মগোপন করেছেন। কিন্তু বোর্ড অফিস নিয়মিত খোলা রাখার হুকুম জারি আছে। কলিমদ্দি এ কাজ করার জন্য বাজারে আসে। খান সেনারা ওকেই ওদের অভিযানে সঙ্গী করে নেয়। সে সরকারি লোক, নিয়মিত নামাজ পড়ে এবং যা হুকুম তা পালন করে। সুতরাং সন্দেহের কারণ নেই।” তাই এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পাক-ক্যাম্পের খবর মুক্তি বাহিনীর নিকট সরবরাহ করাসহ পাক হানাদারদের বিপথে চালিত করতে পারে কলিমদ্দি।