অধ্যায় ৭ ও ৮-এ আমরা মানুষের সমানাধিকার সম্পর্কে জেনেছি। সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতি আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে এ অধ্যায়ে জানব ।
সমাজকে সুন্দর ও সুশৃঙ্খল রাখতে আমাদের কিছু দায়িত্ব আছে, যেমন :
• ছোটদের ভালোবাসা ও দেখাশোনা করব
• কারও ক্ষতি করব না - সবার উপকার করার চেষ্টা করব
• সমাজের বিভিন্ন নিয়মকানুন মেনে চলব
• সুবিধাবঞ্চিতদের সহযোগিতা করব
• বয়স্কদের শ্রদ্ধা করব
• সমাজের বিভিন্ন ধরনের সম্পদ যেমন পার্ক, খেলার মাঠ ইত্যাদি সংরক্ষণ করব
• রাস্তায় নিরাপদ থাক
• অপরিচিত মানুষদের কাছ থেকে সাবধান থাক
রকিবকে নিয়ে লেখা নিচের ঘটনাটি পড়ি :
রকিব বন্ধুদের সাথে খেলার জন্য একা ঘরের বাইরে গিয়েছিল। সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হলো, কিন্তু সে ফিরল না। রকিবের মা-বাবা পুলিশকে জানালেন। দশদিন পর পুলিশ রকিবকে একটি গ্রাম থেকে উদ্ধার করল। জানা গেল দুইজন অপরিচিত লোক তাকে দোকানে ডেকে নিয়ে আইসক্রিম খেতে দিয়ে অজ্ঞান করে আটকে রেখেছিল। তারা রকিবের পরিবারের কাছে ১০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছিল।
অপরিচিত দুইজন লোক কীভাবে রকিবের বিপদের কারণ হলো শিক্ষকের সহায়তায় আলোচনা কর। অপরিচিত মানুষদের কাছ থেকে যেকোনো ধরনের বিপদের হাত থেকে কীভাবে রক্ষা পাওয়া যায় শ্রেণিতে সবাই আলোচনা কর।
তোমার বিদ্যালয়ে বা এলাকার খেলার মাঠ ও পার্কের পরিবেশ কীভাবে পরিচ্ছন্ন ও দূষণমুক্ত রাখা যায় সে বিষয়ে একটি নোটিশ তৈরি কর। এরপর তা বিদ্যালয়ে খেলার মাঠ ও পার্কে ঝুলিয়ে রাখ। নোটিশে বিশেষভাবে উল্লেখ কর কোথায় কোথায় ময়লা ফেলতে হবে।
তোমাদের পরিবারের বয়স্কদের কীভাবে সাহায্য করা যায় ছোট দলে আলোচনা কর। খাবারের ক্ষেত্রে তাঁদের কী ধরনের সহযোগিতা প্রয়োজন। তুমি কি তাঁদের কিছু পড়ে শোনাতে পার? তুমি কি তাঁদের বেড়াতে নিয়ে যেতে পার?
অল্প কথায় উত্তর দাও :
অপরিচিত কেউ যদি তোমার কাছে আসে, তখন ভূমি কী করবে?
বাড়িতে দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার কিছু উপায় আছে :
• ছুরি, কাঁচি জাতীয় ধারালো জিনিস সাবধানে ব্যবহার করা
• খালি পায়ে বা ভেজা হাতে বৈদ্যুতিক সুইচ না ধরা
• ঔষধ ও কীটনাশকের পায়ে স্পষ্ট করে লিখে রাখা, যেন ভুলবশত কেউ খেয়ে না ফেলে
• গ্যাসের চুলা ও বিদ্যুত ব্যবহারের পর বন্ধ রাখা
• আগুনের ব্যবহারে সতর্ক থাকা
• অপরিচিতদের পরিচয় জেনে ঘরের দরজা খোলা
• বাড়িতে প্রাথমিক চিকিৎসার বাক্স রাখা
ঘরের বাইরে নিরাপদ থাকার উপায় :
• দেয়াল বা গাছ বেয়ে না ওঠা বা লাফালাফি না করা
• জলাশয়ের আশেপাশে খেলার সময় সতর্ক থাকা
• রাস্তায় খেলাধুলা না করা
• রাস্তা পারাপারে সতর্ক থাকা।
তুমি কি কখনো পরিচিত কারও কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে দেখেছ? অথবা তোমার বাড়িতে কি কখনো কোনো দুর্ঘটনা ঘটেছিল? দুর্ঘটনাটি কী ধরনের ছিল? কেন ঘটেছিল? দুর্ঘটনাটি এড়ানোর কোন কোন উপায় ছিল? ছোট দলে আলোচনা কর।
এমন একটি দুর্ঘটনা বর্ণনা কর যে দুর্ঘটনার কবলে ভূমি বা তোমার পরিচিত কেউ পড়েছিল । ভবিষ্যতে এই দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য তুমি বা করবে তা লেখ।
প্রাথমিক চিকিৎসার বাক্সে যে উপকরণগুলো থাকে সেগুলোর কোনটি কোন প্রয়োজনে আসে তা তালিকার আকারে লেখ।
বাক্যটি সম্পূর্ণ কর :
প্রাথমিক চিকিৎসার বাক্স আমাদের যে উপকারে আসে তা হলো--------------------------------।
আমরা কখনো কখনো রাস্তায় দুর্ঘটনায় পড়ি। এজন্য পথ চলায় সতর্ক থাকতে হবে। এতে দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব। রাস্তা পার হওয়ার সময় অনুসরণ করতে হয় এমন তিনটি সাধারণ নিয়ম জেনে নিই ।
অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের তুলনার বাংলাদেশের সড়ক দুর্ঘটনার পরিমাণ অনেক বেশি। অনেক সময় গাড়ি, বাস ও ট্রাক বিপজ্জনকভাবে চালানো হয়। তাই রাস্তা পারাপারের সময় বিভিন্ন যানবাহন বিশেষ করে ট্রাক, বাস ও গাড়ির বিষয়ে সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। রাস্তায় পথ চলার সময় আমাদের নিরাপত্তা সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে।
নিচে উল্লিখিত সড়ক নিরাপত্তা কোড শিক্ষকের সহায়তার আলোচনা কর :
১. রাস্তা পারাপারের জন্য সবচেয়ে নিরাপদ জায়গাটি খোঁজ।
২. রাস্তার বাঁকে বা শেষ প্রান্তে পৌঁছানোর আগেই থামো।
৩. যানবাহন আসছে কিনা তা দেখ এবং শোনো।
৪. যানবাহন আসতে দেখলে, এটিকে পার হতে দাও।
৫. রাস্তা নিরাপদ হলে সোজাসুজি রাস্তা পার হও, দৌড়াদৌড়ি করবে না।
স্থানীয় সংবাদপত্রে রাস্তা পারাপারের সময় চালকদের আরও বেশি সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে একটি চিঠি লেখ ।
পাঁচটি দলে (পথচারী, ব্যক্তিগত গাড়ির যাত্রী, মোটর সাইকেল চালক, বাসযাত্রী, সাইকেল চালক) ভাগ হয়ে প্রতি দল সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাসের দুইটি করে উপায় নিয়ে আলোচনা কর।
ছবি থেকে বিভিন্ন ধরনের রাজা ব্যবহারকারীর নাম লেখ
১…………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………….
২……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………
৩……………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………………
নাগরিক হিসাবে রাষ্ট্রের প্রতি আমাদের অনেক দায়িত্ব ও কর্তব্য আছে। শিশুদেরও রাষ্ট্রের প্রতি কিছু কর্তব্য আছে, কিন্তু প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদের জন্য সে কর্তব্য আরও বেশি। নিচে রাষ্ট্রের প্রতি নাগরিকদের কিছু কর্তব্য উল্লেখ করা হলো।
রাষ্ট্র প্রদত্ত শিক্ষা লাভ | রাষ্ট্র প্রদত্ত শিক্ষা গ্রহণ করা আমাদের কর্তব্য। |
---|---|
রাষ্ট্রের প্রতি অনুগত থাকা | রাষ্ট্রের শাসন মেনে চলব। দেশের স্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেব। |
আইন মেনে চলা | দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য আমাদের দেশের সকল আইন মেনে চলতে হয়। আইন অমান্য করলে শাস্তি ভোগ করতে হয়। |
নিয়মিত কর প্রদান | নিয়মিত কর দেওয়া নাগরিক হিসেবে আমাদের কর্তব্য। এই কর থেকে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে রাষ্ট্র বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে এবং নাগরিকদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেয়। |
ভোটদান | আমরা গণতান্ত্রিক দেশে বাস করি। তাই ১৮ বছর বয়স হলে আমাদের অবশ্যই ভোটদানে অংশগ্রহণ করা উচিত। ভোট দেওয়া নাগরিকের দায়িত্ব । |
রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষা করা | রাষ্ট্রের বিভিন্ন সম্পদ যাতে নষ্ট না হয় সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। একই সঙ্গে রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষার গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। |
প্রতিটি মানুষ কীভাবে সরকারের কাজে অংশগ্রহণ করতে পারে তা শিক্ষকের সহায়তায় আলোচনা কর। আমাদের এই অংশগ্রহণ কি সরকারকে রাষ্ট্র পরিচালনায় সাহায্য করে?
তোমাকে যদি দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয় তাহলে তুমি কী কী কাজ করবে? তোমার পরিকল্পনার কথা ৫০ থেকে ১০০ শব্দের মধ্যে লেখ।
আমাদের দেশে কোন কোন ক্ষেত্রে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
অল্প কথায় উত্তর দাও :
তোমার যখন ভোট দেওয়ার বয়স হবে, তখন তুমি কেমন ব্যক্তিকে ভোট দেবে সেই সিদ্ধান্ত কীভাবে নিবে?
আরও দেখুন...