আমাদের পরিবেশ
১ ) প্রাকৃতিক ও সামাজিক পরিবেশের বৈচিত্র্য
ক) ছবিটি পর্যবেক্ষণ করে প্রাকৃতিক ও সামাজিক উপাদান চিহ্নিত করি এবং নিচের ছকে তালিকা তৈরি করি-
প্রাকৃতিক পরিবেশের উপাদান | সামাজিক পরিবেশের উপাদান |
সূর্য | ঘর-বাড়ি |
প্রাকৃতিক পরিবেশের উপাদানগুলোর মধ্যে বৈচিত্র্য রয়েছে। কোথাও রয়েছে উঁচু-নিচু পাহাড়, কোথাও পর্বত, কোথাও সাগর-মহাসাগর। নদ-নদী, খাল-বিল, হাওড়-বাঁওড় ইত্যাদি প্রকৃতিকে করেছে বৈচিত্র্যপূর্ণ।
কীটপতঙ্গ থেকে শুরু করে হাতির মতো বিশাল প্রাণী এবং বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদ নিয়ে গঠিত বৈচিত্র্যপূর্ণ জীবজগৎ। কোনো অঞ্চল বৃষ্টিপ্রবণ, আবার কোনো অঞ্চল শুষ্ক মরুভূমি। কোনো অঞ্চলের আবহাওয়া উষ্ণ, আবার কোথাও শীতল। বাংলাদেশে গ্রীষ্মকালে গরম ও শীতকালে ঠান্ডা অনুভূত হয়। এদেশে বর্ষাকালে প্রচুর বৃষ্টিপাত হয়। অতি বৃষ্টির কারণে কখনো কখনো বন্যা হয়। আবার অনাবৃষ্টির কারণে খরাও হয়। এভাবেই গড়ে উঠেছে বৈচিত্র্যপূর্ণ প্রাকৃতিক পরিবেশ।
সামাজিক পরিবেশের বিভিন্ন উপাদানের মধ্যেও বৈচিত্র্য রয়েছে। দেশের বিভিন্ন ধর্মের মানুষ ঈদ, পূজা, বুদ্ধপূর্ণিমা, বড়দিন ইত্যাদি বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও উৎসব পালন করে। মানুষের প্রয়োজনে গড়ে উঠেছে স্কুল, মাদ্রাসা, কলেজের মতো বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আমাদের সমাজে রয়েছে কৃষক, মৎস্যজীবী, ব্যবসায়ী, রিকশাচালক, শিক্ষক, ডাক্তার ইত্যাদি বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষ। যাতায়াতের জন্য আমরা ব্যবহার করি বিভিন্ন ধরনের যানবাহন যেমন- রিকশা, গাড়ি, ট্রেন, লঞ্চ, বিমান ইত্যাদি। একেক অঞ্চলের মানুষের ঘরবাড়ি, ভাষা, খাদ্যাভ্যাস ইত্যাদি একেকরকম। গ্রাম ও শহরের ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, বাজার, জীবনযাত্রা ইত্যাদির মধ্যে রয়েছে ভিন্নতা। এদেশে বেশিরভাগ অফিস-আদালত ও কলকারখানা শহরে অবস্থিত। আবার কৃষি খামারগুলো গ্রামে অবস্থিত। এভাবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রাকৃতিক ও সামাজিক পরিবেশে ভিন্নতা রয়েছে।
খ) বিষয়বস্তু পড়ি এবং প্রাকৃতিক ও সামাজিক পরিবেশের বৈচিত্র্য নিচের ছকগুলোতে লিখি-
প্রাকৃতিক পরিবেশের বৈচিত্র্য | |
ভূমিরূপ | কোথাও সমতল, কোথাও উঁচু-নিচু পাহাড় ও পর্বত |
প্রাণী | |
আবহাওয়া | |
জলাশয় | |
উদ্ভিদ |
সামাজিক পরিবেশের বৈচিত্র্য | |
পেশা | কৃষক, জেলে |
যানবাহন | |
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান | |
ধর্মীয় অনুষ্ঠান | |
ঘরবাড়ি |
গ) এসাইনমেন্ট
১. আমার নিজ এলাকার প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য বর্ণনা করি।
২. গ্রাম ও শহরের আবাসিক এলাকার বৈচিত্র্য বর্ণনা করি।
ঘ) পরিবেশের উপাদানের বৈচিত্র্য নিয়ে নিচের ধারণাচিত্রটি সম্পূর্ণ করি-
২) প্রাকৃতিক ও সামাজিক পরিবেশের বৈচিত্র্যের গুরুত্ব
ক) ছবিগুলো পর্যবেক্ষণ করে নিচের ছকে তথ্য লিখি-
প্রাকৃতিক ও সামাজিক উপাদান | কীভাবে ব্যবহার করা হয় |
নদী | নদী থেকে মাছ পাই; নদীতে নৌকা চলে |
সমতল ভূমি | |
রিকশা | |
নৌকা | |
গরু | |
মুরগি |
বাংলাদেশ ছয় ঋতুর দেশ। বিভিন্ন ঋতুতে বিভিন্ন ধরনের ফসল, ফলমূল ও শাকসবজি পাওয়া যায়। যেমন- গ্রীষ্মকালে আম, কাঁঠাল, বর্ষাকালে জামরুল, আমড়া ও শীতকালে কমলা, বরই ইত্যাদি পাওয়া যায়। কলা ও পেঁপে সারা বছর পাওয়া যায়। পরিবেশের বৈচিত্র্যের কারণে বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদ ও প্রাণী পাওয়া যায়। পাহাড় ও বনভূমিতে থাকা গাছপালা আমাদেরকে কাঠ ও অক্সিজেন দেয়। বিস্তীর্ণ সমতল ভূমিতে আমরা নানা ফসল ফলাই। নদ-নদী, হাওড়-বাঁওড়, খাল বিল থেকে মাছ পাই। এছাড়াও এগুলো যাতায়াত, মালামাল পরিবহণ ও সেচ কাজে ব্যবহার করা হয়। পরিবেশের এসব বৈচিত্র্যপূর্ণ উপাদান মিলিতভাবে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন জাতি, ধর্ম ও গোষ্ঠীর লোক মিলেমিশে বসবাস করে। এর ফলে তাদের মধ্যে সম্প্রীতি ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠে। প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যের কারণে সড়কপথ, নৌপথ, রেলপথ ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠে। আমাদের জীবনে প্রাকৃতিক পরিবেশের ন্যায় সামাজিক পরিবেশের বৈচিত্র্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
খ) কোন ঋতুতে কোন ফল পাওয়া যায় তা নিচের শব্দ-ছক থেকে খুঁজে বের করে লিখি-
গ্রীষ্ম ঋতু | শীত ঋতু | সকল ঋতু |
গ) যানবাহনের ধরন অনুযায়ী নিচের ছকে গুরুত্ব লিখি-
যানবাহন | যানবাহনের গুরুত্ব |
নৌকা
| |
রিকশা
| |
বাস
| |
ট্রাক
|
ঘ) আমাদের পরিবেশে বিভিন্ন ধরনের প্রাণী থাকার গুরুত্ব সম্পর্কে ৩টি বাক্য লিখি-
৩ ) পরিবেশ সংরক্ষণের গুরুত্ব
|
|
ক) উপরের ছবিগুলো পর্যবেক্ষণ করি। কোন ছবিতে কী ঘটছে তা পাশের ঘরে লিখি- ২০২৪
মানুষের জীবনে বৈচিত্র্যময় পরিবেশের গুরুত্ব অপরিসীম। পরিবেশ সংরক্ষণে আমাদের সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হয়। এজন্য বাড়ির চারপাশ, বিদ্যালয়ের আঙিনা, খেলার মাঠ, রাস্তাঘাট পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে আমরা সব সময় সচেষ্ট থাকব। আমরা নির্দিষ্ট স্থানে প্লাস্টিক, পলিথিন ব্যাগ ও ময়লা-আবর্জনা ফেলব।
গাছপালা আমাদেরকে অক্সিজেন দেয়, কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে এবং পরিবেশকে সুন্দর রাখে। আমাদের বাড়ির চারপাশে, বিদ্যালয়ের আঙিনায়, রাস্তার ধারে গাছ লাগিয়ে আমরা প্রাকৃতিক ও সামাজিক পরিবেশ সংরক্ষণ করতে পারি। এ কারণে গাছপালা ও পাহাড় ইচ্ছেমতো কাটা যাবে না। নদ-নদী, খাল-বিল ও জলাশয়ে ময়লা-আবর্জনা ফেলে ভরাট করা হলে জলজ প্রাণীর আবাসস্থল বিনষ্ট হয়, পরিবেশ দূষিত হয় এবং জীববৈচিত্র্য হুমকির সম্মুখীন হয়। পরিবেশের বৈচিত্র্য সংরক্ষণ করা আমাদের সবার দায়িত্ব।
খ) পরিবেশের বৈচিত্র্য নষ্ট হওয়ার কারণগুলো নিচের চিত্রে লিখি-
গ) পরিবেশের বৈচিত্র্য সংরক্ষণে আমার করণীয়গুলো নিচের ছকে লিখি-
ক্রমিক নং | পরিবেশের বৈচিত্র্য সংরক্ষণে আমার করণীয় |
১ | |
২ | |
৩ | |
৪ |
আরও দেখুন...