আযান আরবি শব্দ। এর অর্থ হলো ডাকা, আহবান করা, ঘোষণা করা। শরিয়তের পরিভাষায় নির্ধারিত আরবি বাক্যসমূহের মাধ্যমে নির্ধারিত সময়ে উচ্চকন্ঠে নামাযে আহবান করাকে আযান বলে। আযান ইসলামের প্রতীক। আযানের ধ্বনি শুনে মুসলমানেরা সালাতের প্রস্তুতি গ্রহণ করে থাকে। মুসলমানদের কাছে আযানের গুরুত্ব অপরিসীম। সালাতে আযান ও ইকামত দেওয়া সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। মুয়াক্কাদা অর্থ যা পালনের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
সালাত ফরয হওয়ার পর পবিত্র মক্কা নগরীতে আযান ছাড়াই সালাত পড়া হতো। প্রিয়নবি হযরত মুহাম্মাদ (সা.) মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করে তথায় মসজিদ নির্মাণ করেন। মসজিদে মুসলমানদের সালাতে অংশগ্রহণের জন্য একত্রিত করতে আযানের প্রচলন হয়। আযানের শব্দগুলো অহীর মাধ্যমে প্রাপ্ত। ইসলামের প্রথম মুয়াযযিন ছিলেন হযরত বেলাল (রা.)। আযানের বহু গুরুত্ব ও তাৎপর্য রয়েছে। মুয়াযযিনের মর্যাদা সম্পর্কে মহানবি (সা.) বলেন—
অর্থ: ‘কিয়ামতের দিন মুয়াযযিনের ঘাড় সবার চাইতে উঁচু হবে।' (মুসলিম) অর্থাৎ তাদেরকে বিশেষ মর্যাদায় ভূষিত করা হবে।
আযানের শব্দসমূহ
নামাযের সময় হলে পূতপবিত্র হয়ে কোনো উঁচু স্থানে কিবলার দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে (দুই কানের মধ্যে শাহাদাত আঙুলদ্বয় প্রবেশ করিয়ে) উঁচুস্বরে আযানের নিম্নোক্ত বাক্যগুলো থেমে থেমে উচ্চারণ করতে হয় :
ক্রমিক নং | আযানের বাক্যসমূহ | বাক্যসমূহের অর্থ | উচ্চারণ করতে হবে |
---|---|---|---|
১ | আল্লাহ মহান | ৪ বার | |
২ | আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই | ২ বার | |
৩ | আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (সা.) আল্লাহর রাসুল | ২ বার | |
৪ | এসো সালাতের দিকে | ২ বার | |
৫ | এসো সফলতার দিকে | ২ বার | |
৬ | আল্লাহ মহান | ২ বার | |
৭ | আল্লাহ ব্যতীত কোনো ইলাহ নেই | ১ বার |
আযান শেষ হলে নিম্নোক্ত দোয়া পাঠ করতে হয়:
অর্থ: “হে আল্লাহ! এই পরিপূর্ণ আহ্বান এবং এই শাশ্বত নামাযের তুমিই প্রভু। হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-কে দান করো সর্বোচ্চ সম্মানিত স্থান, সুমহান মর্যাদা এবং বেহেশতের শ্রেষ্ঠতম প্রশংসিত স্থানে তাঁকে অধিষ্ঠিত করো, যার প্রতিশ্রুতি তুমি তাঁকে দিয়েছ। কেয়ামত দিন আমাদেরকে তাঁর শাফাআত নসিব করো। নিশ্চয় তুমি ভঙ্গ কর না অঙ্গীকার।'
আরও দেখুন...