একজন শিক্ষক আসলে একটা আলোক শিখার মতো। তিনি অন্ধকারে আলো জ্বেলে দেন, সেই আলোতে চারদিক আলোকিত হয়। শিক্ষার্থীরা সেই আলোতে সব কিছু দেখতে পায় এবং নিজেদের যেটুকু প্রয়োজন কিংবা যেটুকু শিখতে চায় সেটুকু শিখে নেয়। অন্যভাবে বলা যায় পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষকও আসলে কাউকে কিছু শেখাতে পারেন না- তারা শুধু সাহায্য করেন, শিক্ষার্থীকে নিজেরই সব কিছু শিখতে হয়।
শিক্ষার সাথে ইন্টারনেট শব্দটি জুড়ে দিয়েও একটি ব্যাপার মনে করিয়ে দিতে হবে, কেউ যেন মনে না করে ভালো ইন্টারনেট সংযোগ কিংবা ইন্টারনেটে খুব ভালো Content থাকলেই রাতারাতি ছাত্রছাত্রীরা লেখাপড়ায় খুব ভালো হয়ে যাবে। প্রকৃতপক্ষে ছাত্রছাত্রীদের এই সুযোগটা দিয়ে নতুন একটি জগৎ উন্মোচন করে দেওয়া হয়েছে মাত্র, সেই জগৎ থেকে কতটুকু গ্রহণ করবে সেটা পুরোপুরি একজন শিক্ষার্থীর ব্যাপার। তোমরা নিশ্চয়ই লক্ষ করেছ তোমাদের পরিচিত কোনো ছাত্র বা ছাত্রী কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট ব্যবহার করে শুধু কম্পিউটার গেম খেলে কিংবা সামাজিক যোগাযোগ সাইটে সময় নষ্ট করছে। আবার সেই সুযোগ গ্রহণ করে অন্য কেউ কম্পিউটার প্রোগ্রামিং শিখছে।
তোমরা জানো ইন্টারনেটে তোমাদের সকল পাঠ্যবইগুলো পাওয়া যায়। বছরের শুরুতে তোমাদের হাতে পাঠ্যবইগুলো পৌঁছে যায়। কোনো কারণে সেই বই যদি কেউ হারিয়ে ফেল, কিংবা নষ্ট হয়ে যায় তোমরা কিন্তু তখন ইচ্ছে করলে ইন্টারনেট থেকে বই ডাউনলোড করে নিতে পারবে। তোমরা শুনে খুশি হবে বাংলাদেশের শিক্ষা নিয়ে আগ্রহী মানুষেরা মিলে এই বইগুলোর সফ্ট কপি তৈরি করে সেগুলোতে কণ্ঠ দিয়ে বইগুলো সংরক্ষণ করতে শুরু করেছে ফলে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরাও এই বইগুলো থেকে উপকৃত হচ্ছে।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড থেকে তোমাদের
জন্যে সবগুলো বই প্রকাশ করা হয় এবং বিনামূল্যে
তোমাদের হাতে পৌঁছে দেওয়া হয়। তার বাইরেও
তোমাদের লেখাপড়ার কাজে লাগতে পারে এরকম
অনেক বই লেখা হয়। (এখানে কিন্তু মোটেও গাইড
বইয়ের কথা বলা হচ্ছে না- সেগুলো কখনোই কাউকে
শিখতে সাহায্য করে না।) যারা সেই বই লেখেন তাদের অনেকেই এ বইগুলো তোমাদের ব্যবহারের জন্যে ইন্টারনেটে দিয়ে দেন। বাজার থেকে টাকা দিয়ে বই না কিনে যেকেউ এ বইগুলো ইন্টারনেট থেকে সরাসরি নামিয়ে নিতে পারে। পৃথিবীর অনেক লেখকই আজকাল তাদের বইগুলো ইন্টারনেটে সবার জন্যে উন্মুক্ত করে দিতে শুরু করেছেন। তোমরা একটু খোঁজ করলেই তোমার পছন্দের অনেক বই একেবারে বিনামূল্যে ইন্টারনেটে পেয়ে যাবে। তবে তোমাকে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে যেন তুমি কপিরাইট আইন ভঙ্গ করে কারো রাখা বই বেআইনিভাবে নামিয়ে না ফেলো ।
আমরা সবাই জানি আমাদের পাঠ্যপুস্তকে যেটুকু থাকে সেটুকুতে ছাত্রছাত্রীরা সন্তুষ্ট থাকে না, তারা আরো বেশি জানতে চায়। সেজন্যে সব স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রীরা তাদের শখের বিষয় বিজ্ঞান, গণিত কিংবা সাহিত্যের ক্লাব তৈরি করে। এক সময় এধরনের ক্লাবে শুধু শারীরিকভাবে উপস্থিত ছেলেমেয়েরাই অংশ নিতে পারত। ইন্টারনেট হওয়ার কারণে বিষয়টা এখন পুরোপুরি উন্মুক্ত হয়ে গেছে। এখন সারা দেশের এমনকি সারা পৃথিবীর ছেলেমেয়েরা এই ক্লাবগুলোতে অংশ নিতে পারে। তারা সবাই মিলে পাঠজগতের বিষয়গুলোকে অন্য একটা পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে। আমাদের দেশেও এখন বিভিন্ন বিষয়ের অলিম্পিয়াড আয়োজন করা হচ্ছে এবং তোমরা তাতে অংশগ্রহণ করে দেশের সুনাম বৃদ্ধি করছো।
আরও দেখুন...