দ্বিতীয় অধ্যায়
ঈশ্বরের সৃষ্টির লালন
ঈশ্বর তাঁর নিপুণ হাতে মহাবিশ্বের সমস্ত কিছু অত্যন্ত সুন্দর করে সৃষ্টি করেছেন। তাঁর সকল সৃষ্টিই অতি উত্তম। আর মানুষকে তিনি সৃষ্টি করেছেন শ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে। মানুষকে দিয়েছেন সকল সৃষ্টির উপর কর্তৃত্ব ও প্রভুত্ব করার অধিকার ঈশ্বরের প্রতি অনুগত থেকে সৃষ্টিকে ভালোবেসে তার যত্ন নেওয়া মানুষের দায়িত্ব। দায়িত্ব পালনই ঈশ্বরের প্রতি তার আনুগত্য ও বিশ্বস্ততা প্রকাশ করে। এভাবেই তার মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটে এবং সে ঈশ্বরের আহ্বানে সাড়া দিতে পারে।
ঈশ্বর সবকিছু অত্যন্ত নিখুঁতভাবে সৃষ্টি করেছেন
এই অধ্যায় পাঠ শেষে আমরা
• ঈশ্বরের সৃষ্টির সেবাযত্ন ও সংরক্ষণ করার প্রয়োজনীয়তা ও উপার বর্ণনা করতে পারব
• সৃষ্টিকে ভালোবাসা ও যত্ন করার মাধ্যমে কীভাবে ঈশ্বরকে ভালোবাসা ও সেবা করা যায় তা ব্যাখ্যা করতে পারব;
• দূষণের হাত থেকে পরিবেশকে রক্ষা করার প্রয়োজনীয়তা ধর্মীর দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা করতে পারব;
• ঈশ্বরের সৃষ্টিকর্মকে দূষণের হাত থেকে রক্ষা করতে আগ্রহী হব।
ঈশ্বরের সৃষ্টির লালন
১৩
পাঠ ১ : সৃষ্টির লালন ও সংরক্ষণ
মানবজাতির পরিত্রাণের জন্য ঈশ্বরের সৃষ্টির রহস্য গুরুত্বপূর্ণ। আগে আমরা ঈশ্বরের সৃষ্টিকর্মের উদ্দেশ্য সম্পর্কে জেনেছি। ঈশ্বর মহাবিশ্বের সমস্ত কিছু সৃষ্টি করে জগতে পূর্ণতা দিয়েছেন। তিনি সৃষ্টিকর্তা এবং সর্বশক্তিমান। তাঁর সমকক্ষ আর কেউ নেই। তাঁর সৃষ্টিকর্মের পিছনে ছিল। মানুষের প্রতি তাঁর অগাধ ভালোবাসা।
তাঁর সকল সৃষ্টিই উত্তম। আমরা এই বিষয়ে আগে বিশদভাবে জানতে পেরেছি। মানুষ হলো সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব, অতি উত্তম। মানুষকে তিনি দিয়েছেন সমস্ত সৃষ্টির উপর আধিপত্য করার ক্ষমতা। ঈশ্বর যখন মানুষের জন্য সবকিছু উত্তম করে সৃষ্টি করলেন তখন সেগুলোর যত্ন তো আমাদের অবশ্যই নিতে হবে। কারণ এটা আমাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব
বর্তমান বাস্তবতায় আমরা সৃষ্টির সেই উত্তমতাকে হারিয়ে ফেলছি। তাই ঈশ্বরের সৃষ্টিকে যত্ন ও রক্ষা করার উপায় জানার পূর্বে আমাদের জানা দরকার কীভাবে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে এবং কীভাবে ঈশ্বরের সৃষ্টির উত্তমতা ধ্বংস হচ্ছে।
কাজ : ঈশ্বরের সৃষ্টি দূষিত হওয়ার ৫টি কারণ লেখ
পাঠ ২ : পরিবেশ দূষণ
ঈশ্বরের সৃষ্টির উত্তমতা দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। সৃষ্টি প্রতিনিয়ত ধ্বংস হচ্ছে। ফলে সৃষ্টির সৌন্দর্য বিনষ্ট হচ্ছে। তার একটি অন্যতম কারণ হলো মানুষের পাপ। বিশেষত মানুষের স্বার্থপরতার ফলে সৃষ্টির সৌন্দর্য কলুষিত হচ্ছে। সেই মানুষেরই জন্য আজ দূষিত হচ্ছে সৃষ্ট প্রকৃতি ও ধরিত্রী। আমাদের আলোচনা থেকে এর অনেক কারণ আমরা খুঁজে পাই
নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী কেনিয়ার ওয়ানপারি বলেছেন, “ঈশ্বর যদি মানুষকে প্রথম দিনই সৃষ্টি করতেন, অন্যান্য সৃষ্টির সেবা-যত্ন না পেয়ে সে পরের দিনই মরে যেত।” এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ উক্তি আমরা অনেক সময় এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দেই না। এর কারণ হলো, আমরা উপলব্ধি করতে পারি না কীভাবে সৃষ্টি আমাদের যত্ন নিচ্ছে। তাই সৃষ্টিকে যেমন খুশি তেমনভাবে ব্যবহার করছি। নিজের স্বার্থে সৃষ্টির অপব্যবহার করছি।
সৃষ্টির সেই প্রথম যুগে ঈশ্বর ও মানুষের সাথে এবং মানুষ ও সৃষ্টির সমস্ত কিছুর সাথে সুন্দর সম্পর্ক বিদ্যমান ছিল। মানুষের পাপের কারণে সেই মিলনে বিচ্ছিন্নতা এসেছে (আদি ৩:১৪-২৩)। অবাধ্যতা ও স্বেচ্ছাচারিতার ফলে মানুষ এদেন উদ্যান থেকে বিতাড়িত হয়েছে; মানুষের জীবনে পাপ নেমে এসেছে। এক ভাই আর এক ভাইকে হত্যার ফলে ঈশ্বরের সৃষ্টি কলুষিত হয়েছে । ফলে সৃষ্ট ভূমি হয়েছে রক্তসিক্ত ও অভিশপ্ত।
১৪
খ্রিষ্টধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা
যুগ যুগ ধরে ভোগ-বিলাসিতা, লোভ-লালসা, কামনা-বাসনা, ব্যক্তিকেন্দ্রিকতা ও স্বার্থপর মনোভাবের জন্য মানুষের মধ্যে দ্বন্দ্বকলহ লেগেই আছে। ধর্মের অপব্যবহার ও জাতিগত দ্বন্দ্বের ফলে যুদ্ধ-বিগ্রহ বর্তমান যুগের নিত্য ঘটনা। ফলে ঝরে যাচ্ছে অগণিত তাজা প্রাণ, ধরিত্রী আর সমগ্র বিশ্বের শান্তি বিঘ্নিত হচ্ছে।
ঈশ্বর সপ্তম দিনে বিশ্রাম নিয়েছেন। অথচ শিল্পায়নের ফলে প্রকৃতির আজ কোনো বিশ্রাম নেই বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রকৃতির রূপ-সৌন্দর্যের উপর অবর্ণনীয় হস্তক্ষেপ। ভূমি, জল, বায়ু প্রতিনিয়ত শোষিত। ও নির্যাতিত হচ্ছে। এগুলোর অপব্যবহার ও অবৈধ নিয়ন্ত্রণের ফলে দূষিত হচ্ছে প্রকৃতি। পরিবেশ হচ্ছে অপরিচ্ছন্ন ও নোংরা। দূষিত হচ্ছে আবহাওয়া পরিবর্তিত হচ্ছে বিশ্বের জলবায়ু ও আবহাওয়া। উত্তপ্ত হচ্ছে বিশ্ব, উষ্ণ আবহাওয়া হচ্ছে অসহনীয়। ফলে প্রকৃতিতে তার বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়ছে। শীতের সময় তাপমাত্রা সহনীয় মাত্রা থেকে অতি নিচে আবার গরমের সময় অতি ঊর্ধ্বে বিরাজ করছে।
নির্বিচারে বৃক্ষ নিধনের ফলে বন হয়ে যাচ্ছে পশুপাখির বসবাসের অযোগ্য। নদনদী ভরাট ও নদীতে বিষাক্ত পদার্থ নিক্ষেপে মাছ ও জলজ প্রাণী ধ্বংস হচ্ছে আণবিক বোমা ও বিষাক্ত গ্যাস দূষিত করছে বাতাস। ফলে বাতাস ভারী হয়ে আসছে। এর ফলে প্রতিনিয়ত আসছে প্রলয় ও ভয়ঙ্কর প্রাকৃতিক দুর্যোগ। মানুষের উপর নেমে আসছে প্রাকৃতিক দুর্দশা ও শাস্তি। মানুষ পতিত হচ্ছে মৃত্যুমুখে ।
বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে তাপমাত্রা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। কার্বন ডাইঅক্সাইড বেড়ে গিয়েছে। ফলে বিগত কয়েক বছরে চীন ও পাকিস্তানে ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধস হয়েছে, রাশিয়ায় খরা হয়েছে, ব্রাজিলে দাবানল হয়েছে, জাপান ও ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিকম্প ও সুনামি হয়েছে। এসব প্রাকৃতিক বৈরিতা কেড়ে নিয়েছে অগণিত মানুষের প্রাণ ।
পরিবেশবাদীদের মতে বাংলাদেশ সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল সমুদ্র গভীরে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ইতিমধ্যে বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বিভিন্নভাবে বাংলাদেশে পরিলক্ষিত হচ্ছে। যেমন, অসময়ে খরা, অসময়ে বন্যা, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া, লবণাক্ততা বৃদ্ধি, ঝড় ও জলোচ্ছ্বাস বৃদ্ধি, ক্ষতিকর পোকামাকড়ের সংখ্যা বৃদ্ধি, ভূমিধস ইত্যাদি। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশে খাবার পানির সংকট দেখা দিচ্ছে পুষ্টিহীনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে বিভিন্ন রোগ দেখা দিচ্ছে এসব প্রাকৃতিক বৈরিতা ও দুর্যোগের ফলে বাংলাদেশে দরিদ্রতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কেনিয়ার ওয়ানগারির কথাটিতে আমরা আবার ফিরে যেতে পারি, “ঈশ্বর যদি মানুষকে প্রথম দিনই সৃষ্টি করতেন, তবে অন্যান্য সৃষ্টির সেবা-যত্ন না পেয়ে মানুষ পরের দিনই মরে যেত।” সৃষ্টিকে যত্ন নেওয়া মানুষের একটি দায়িত্ব। কারণ সৃষ্টিও মানুষের যত্ন নেওয়ার জন্যই সৃষ্ট। সৃষ্টির সেই সেবা পাওয়ার কারণেই মানুষকে সৃষ্ট সমস্ত কিছুর প্রতি ভালোবাসা পোষণ করা ও কৃতজ্ঞ থাকা এবং তার যত্ন নেওয়া প্রয়োজন ।
ঈশ্বরের সৃষ্টির লালন
১৫
কাজ : ঈশ্বরের সৃষ্টিকে তুমি কীভাবে যত্ন করতে পার, তার ৫টি উপায় লেখ ।
পাঠ ৩: পরিবেশ দূষণমুক্ত রাখা
পরিবেশ দূষণের ফলে ঈশ্বরের অপরূপ সৃষ্টি প্রতিনিয়ত ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এর জন্যে মানুষ নিজেই দায়ী। মানুষকে বেঁচে থাকতে হলে পরিবেশকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। তাই ঈশ্বরের সৃষ্টির উত্তমতাকে ঝুঁকিমুক্ত করতে হবে, টিকিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করতে হবে। আর এই কাজটি করা প্রতিটি মানুষের নৈতিক দায়িত্ব। সৃষ্টিকে যত্ন ও সংরক্ষণ করে পরিবেশকে দূষণমুক্ত করতে হবে। এর কয়েকটি উপায় আমরা নিজেরাও খুঁজে পেতে পারি। সৃষ্টিকে যত্ন ও রক্ষা করার কয়েকটি উপায় বর্ণনা করা হলো।
১। প্রকৃতির জ্ঞান-বিজ্ঞান মানুষের জ্ঞান-বিজ্ঞানের মূল শক্তি। বিজ্ঞানের আশীর্বাদে মানুষ আজ অনেক দূর অগ্রসর হয়েছে। অনেক নতুন নতুন বিষয় মানুষ আবিষ্কার করছে। কিন্তু গভীরভাবে বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে এই উদ্ভাবনের পিছনে প্রকৃতিই মানুষকে অনুপ্রেরণা দিয়েছে । প্রকৃতিই মানুষকে তথ্য-উপাত্ত যুগিয়েছে। প্রকৃতিই মানুষকে জ্ঞান ও শক্তি দিয়েছে। প্রকৃতি থেকে জ্ঞান নিয়েই মানুষ নতুন নতুন সৃষ্টি করতে পেরেছে। মানুষের এই জ্ঞান প্রকৃতিরই জ্ঞান । মানুষ যখন এই সত্য উপলব্ধি করতে পারবে তখনই তারা প্রকৃতিকে ভালোবাসতে ও রক্ষা করতে শিখবে ।
২। এরূপ প্রতিনিয়ত শিল্প কারখানা নির্মান করে বন-বাদার উজাড় করে মানুষ প্রকৃতিকে ক্ষত বিক্ষত করছে। শিল্পায়নের ফলে প্রকৃতির বিশ্রাম নেই। সুতরাং সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে প্রকৃতি। শিল্পায়নের জন্য সমস্ত কাঁচামাল যোগান দিতে হচ্ছে, প্রকৃতি থেকেই। ফলে ভূমি, জল ও বায়ু দূষিত হচ্ছে। পরিবেশ হচ্ছে অপরিচ্ছন্ন ও কলুষিত। আবহাওয়া হচ্ছে উত্তপ্ত ও অসহনীয় । এই বাস্তবতা যখন মানুষ উপলব্ধি করতে পারবে তখনই সৃষ্টির প্রতি অত্যাচার ও অবিচার বন্ধ করা সম্ভব হবে।
৩। বর্তমান বাস্তবতায় মানুষ স্বার্থপর ও ব্যক্তিকেন্দ্রিক হয়ে পড়ছে। নিজ স্বার্থ উদ্ধারের জন্য তারা যে কোনো মন্দ কাজ করতেও কুন্ঠাবোধ করছে না। অন্যের ক্ষতি হচ্ছে, সম্মানহানি হচ্ছে সেদিকে তাকাবার সময় মানুষের নেই। জায়গা-জমি নিয়ে মামলা-মোকদ্দমা চলছে। নিরীহ মানুষ বিভিন্নভাবে হয়রানি হচ্ছে। দুর্বলের উপর সবলের অত্যাচার বৃদ্ধি পাচ্ছে। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, বোমাবাজি ও খুন-খারাবি বৃদ্ধি পাচ্ছে। একান্নবর্তী পরিবার ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে যাচ্ছে। ছোট পরিবার আরও ছোট হচ্ছে। আবার ছোট পরিবারও ভেঙে মানুষ একাকী জীবন যাপন করছে। পারিবারিক বন্ধন, স্নেহ-মায়া, দরদ ও ভালোবাসা হারিয়ে যাচ্ছে। সমাজ ও পরিবারে পরস্পরের প্রতি ন্যায্যতা, মর্যাদা, আস্থা, দয়া ও ভালোবাসা ফিরিয়ে আনতে হবে। ধর্ম, বৃষ্টি ও সংস্কৃতির সঠিক ব্যবহার করতে হবে। তবেই সৃষ্টির সৌন্দর্য সুন্দরতর হয়ে উঠবে ।
খ্রিষ্টধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা
৪। প্রকৃতি-নির্ভর দরিদ্রদের প্রতি সাহায্যের মনোভাব বৃদ্ধি করতে হবে। পৃথিবীতে এখনও অনেক মানুষ আছে যারা প্রকৃতির উপর নির্ভর করে বেঁচে থাকে। প্রকৃতি থেকেই তারা খাদ্য আহরণ করে প্রকৃতির উপর নির্ভর করেই কৃষিকাজ করে। আবার এই প্রকৃতির উপর নির্ভর করেই জীবিকা নির্বাহ করে কিন্তু ধনী ও লোভী শিল্পপতিদের ব্যক্তিস্বার্থে আজকাল প্রকৃতিকে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। দখল হয়ে যাচ্ছে দরিদ্রদের শেষ সম্বলটুকু। বিতাড়িত হচ্ছে তারা প্রকৃতি থেকে। প্রকৃতিও আর স্বাভাবিক গতিতে নেই । জলবায়ু ও আবহাওয়া পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। ফলে এ সমস্ত প্রকৃতি নির্ভর দরিদ্র জনগণ বঞ্চিত ও অবহেলিত হচ্ছে। তাদের কথা আমাদের চিন্তা করতে হবে সবার জন্য সুষম ও পর্যাপ্ত খাদ্যের নিশ্চয়তা দিতে হবে। বনায়ন ও বৃক্ষরোপণ করে পতিত জমি চাষাবাদ করে আবাদি জমির উপর আবাসন তৈরি না করে তা সংরক্ষণ করা, দেশীয় গাছ রোপণ, বন ও পাহাড় পর্বত সংরক্ষণ, মৎস্য চাষ ও পশুপালন করে প্রকৃতিকে সংরক্ষণ করতে হবে।
৫। জলবায়ু পরিবর্তন, বিশ্ব উষ্ণায়ন, পরিবেশ রক্ষা, ন্যায্যতা ও নৈতিকতা বিষয়ে সকল স্তরের মানুষের মাঝে জাগরণ ঘটাতে হবে। এর জন্য সচেতনতামূলক শিক্ষা সেমিনারের আয়োজন করতে হবে। পাঠ্যপুস্তক ব্যতীতও বিভিন্ন পর্যায়ে শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। গণমাধ্যম ব্যবহার করে মানুষের মাঝে গণ-চেতনা জাগাতে হবে। প্রাণের অধিকার, শিশুর যত্ন ও শিক্ষা, প্রকৃতির যত্ন, পানির অপচয় রোধ, নদী খনন, বর্জ্য নিঃসরণ আইন, সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার, বৃক্ষরোপণ ও সংরক্ষণ বিষয়ে শিক্ষা জোরালো করতে হবে। পরিবেশ দূষণ রোধ করার উপায় জানতে হবে এবং সবাইকে সে বিষয়ে শিক্ষা দিতে হবে।
কাজ ১: পরিবেশ সংরক্ষণে তুমি তোমার এলাকায় কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পার তা লেখ।
কাজ ২: পরিবার, বিদ্যালয় ও সমাজে মানুষকে কীভাবে যথাযথ মর্যাদা দেওয়া যায় তা দু'জন দু'জন আলোচনা কর এবং পরে কয়েকজন মিলে উপস্থাপন কর।
পাঠ ৪ : সৃষ্টিকে ভালোবাসার মাধ্যমে ঈশ্বরকে ভালোবাসা
আমরা পূর্বেই জেনেছি সৃষ্টি মুক্তি স্বয়ং ঈশ্বরের। “আদিতে পরমেশ্বর আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করলেন ।" (আদি ১:১)। তিনি দৃশ্য ও অদৃশ্য সব কিছুরই সৃষ্টিকর্তা
আরও দেখুন...