পটেনশিয়াল বা বিভব পার্থক্য এবং তড়িৎ প্রবাহের মাঝে সম্পর্ক দেখার জন্য আমরা একটা এক্সপেরিমেন্ট করতে পারি। বিভব মাপার জন্য যে বক্সটি ব্যবহার করা হয় তার নাম ভোল্টমিটার, বিদ্যুৎ প্রবাহ বা কারেন্ট মাপার জন্য যে যন্ত্র ব্যবহার করা হয় সেটার নাম অ্যামিটার। (আসলে একই যন্ত্রের সুইচ ঘুরিয়ে এটাকে কখনো ভোল্টমিটার বা কখনো অ্যামিটার হিসেবে ব্যবহার করা যায়) আমরা কয়েকটা ব্যাটারি সেল নিতে পারি, একটা ব্যাটারি সেলের জন্য বিভব 1.5 v হলে দুটি ব্যাটারি সেলের জন্য 2 x 1.5= 3 V, তিনটির জন্য 3 x 1.5 = 4.5v এভাবে ভিন্ন ভিন্ন বিভব পার্থক্য প্রয়োগ করতে পারি। শুধু তাই নয়, আমরা ব্যাটারিগুলো উল্টে দিয়ে বিভব পার্থক্যের দিকও পরিবর্তন করে দিতে পারি। কাজেই আমরা যদি একটা তার বা অন্য কোনো পরিবাহীর দুই পাশে একটা বিভিন্ন পজিটিভ এবং নেগেটিভ বিভব পার্থক্য প্রয়োগ করে কতখানি বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়েছে সেটা মাপার চেষ্টা করি তাহলে দেখব
(a) যত বেশি বিভব পার্থক্য তত বেশি বিদ্যুৎ প্রবাহ
(b) বিভব পার্থক্য নেগেটিভ হলে বিদ্যুৎ প্রবাহও দিক পরিবর্তন করছে।
অর্থাৎ
আমরা যদি অন্য কোনো উপাদানের তৈরি একটা তার দিয়ে একই পরীক্ষাটি করি তাহলে একই ধরনের ফলাফল পাব। তবে সরলরেখার ঢালটা হয়তো অন্য রকম হবে। এখন এই দুটি পরীক্ষার ফলাফল যদি বিশ্লেষণ করি তাহলে বুঝতে পারব প্রথমে একটা নির্দিষ্ট বিভব পার্থক্যে যতটুকু বিদ্যুৎ প্রবাহিত হয়েছে দ্বিতীয় বস্তুর জন্য সেই একই বিভব পার্থক্যে বিদ্যুৎ প্রবাহ হচ্ছে কম। প্রথমটিতে যেন বিদ্যুৎ প্রবাহ তুলনামূলকভাবে সহজ, দ্বিতীয়টিতে যেন বিদ্যুৎ প্রবাহের বাধা একটু বেশি। বিষয়টা ব্যাখ্যা করার জন্য বিদ্যুৎ প্রবাহের বাধা (Resistance) বা সত্যি সত্যি রোধ নামের একটা রাশি তৈরি করা হয়েছে। আমরা দেখতে পারি বিভব পার্থক্য এবং বিদ্যুৎ প্রবাহের সম্পর্কটি একটা সূত্র হিসেবে লেখা যায় যেটি ও'মের সূত্র (Ohm's Law) হিসেবে পরিচিত।
অর্থাৎ রোধ বেশি হলে বিদ্যুৎ প্রবাহ হবে কম। রোধ কম হলে বিদ্যুৎ প্রবাহ হবে বেশি।
এই রোধ বা Resistance এর একক হচ্ছে Ohm । এটাকে গ্রিক অক্ষর (সিগমা) দিয়ে প্রকাশ করা হয়। কোনো বৈদ্যুতিক সার্কিটে 1 v বিভব পার্থক্য দেওয়ার পর যদি দেখা যায় 1 A বিদ্যুৎ প্রবাহিত হচ্ছে তাহলে বুঝতে হবে সেই সার্কিটের রোধ 1।
আরও দেখুন...