খ্রীষ্টমণ্ডলীর একজন সক্রিয় সদস্যের খ্রীষ্টমণ্ডলী সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা থাকা আবশ্যক। আমাদের ভালো করে জানা দরকার যে, বিভিন্ন ছোটো ছোটো দলে বিভক্ত থাকলেও খ্রীষ্টমণ্ডলী মূলত এক ও সার্বজনীন। কারণ খ্রীষ্ট নিজেই এটি স্থাপন করেছেন। তিনি ঈশ্বর। তিনি সকল পবিত্রতার উৎস। তাই মণ্ডলী পবিত্র। খ্রীষ্ট তাঁর প্রেরিতশিষ্যদেরকে সারা জগতের সকল মানুষের কাছে বাণীপ্রচার করতে প্রেরণ করেছেন। তাই মণ্ডলী প্রৈরিতিক। কাজেই এক এবং পবিত্র খ্রীষ্টমন্ডলীর সদস্য হিসেবে আমরা সকলেই প্রেরণকর্মী। আমাদের সকলকেই এই দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে হবে। এই কারণে মণ্ডলী সম্পর্কে আমাদের আরও উত্তমরূপে জানা দরকার।
এ অধ্যায় শেষে আমরা-
আমাদের প্রত্যেকের চেহারা, আচার-আচরণ, কথা বলার ধরন, দৃষ্টিভঙ্গি ইত্যাদি অন্য সকলের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। অনেক ক্ষেত্রে এক ব্যক্তির সাথে অন্য এক ব্যক্তির কিছু কিছু মিল দেখা গেলেও পুরোপুরি মিল খুঁজে পাওয়া যাবে না। একজন থেকে অন্যজন আলাদা হলেও আমাদের প্রত্যেকের মধ্যে একটা সাধারণ মিল আছে। মিলটা হলো এই যে, আমরা প্রত্যেকেই মানুষ। আমাদের সবার মধ্যেই রক্ত-মাংস আছে। আমাদের সবারই হাত-পা, নাক-কান, চোখমুখ ইত্যাদি আছে। আমরা সকলেই বাতাস থেকে অক্সিজেন নিয়ে বেঁচে থাকি। আর একটি উদাহরণ দেওয়া যাক। এক গ্লাস পানিকে আমরা তরল অবস্থায় দেখি, আবার দেখি বরফ হলে জমাটবাঁধা অবস্থায়। একই পানি গরম করে বাষ্প করে উড়িয়েও দিতে পারি। কাজেই পানিকে তরল, কঠিন ও বাষ্প-এই তিন অবস্থায় দেখলেও তিনটাই পানি। একইভাবে খ্রীষ্টমণ্ডলীর মধ্যে আকারগত বা বৈশিষ্ট্যগত কিছু ভিন্নতা থাকলেও খ্রীষ্টমন্ডলী হিসেবে আমরা সবাই এক।
মানবজাতিকে তাঁর সাথে পুনর্মিলন এবং মানুষের সাথে মানুষের একতা প্রতিষ্ঠা করার জন্যই ঈশ্বর তাঁর একমাত্র পুত্রকে এ জগতে প্রেরণ করেছেন। খ্রীষ্ট চেয়েছেন, তিনি ও পিতা যেমন এক তেমনি সকল মানুষ যেন এক হয়। সকলেই যেন একই খ্রীষ্টীয় মিলনবন্ধন ও বিশ্বাসে একতাবদ্ধ থাকতে পারে। একতাবদ্ধ থাকার মধ্য দিয়েই খ্রীষ্টমণ্ডলীর সকলেই যেন মন্ডলীকে প্রসারিত করার কাজে অংশগ্রহণ করে।
কাজ: বিভিন্ন ব্যক্তির সমন্বয়ে গঠিত একটি দলের সদস্যের মধ্যে ঐক্য বা মিল গড়ে তোলার জন্য কী কী প্রয়োজন তা দলে আলোচনার মাধ্যমে লেখ ও উপস্থাপন করো। |
আমরা দলীয় আলোচনার মধ্য দিয়ে দেখলাম কোনো একটি দলের সদস্যদের একতাবদ্ধ থাকার জন্য কোন্ বিষয়গুলো বেশি প্রয়োজন। একইভাবে খ্রীষ্টমণ্ডলী শুরু থেকে আজ পর্যন্ত এক। এই একতা যুগে যুগে বিরাজ করবে।
১। প্রতিষ্ঠাতা: খ্রীষ্টমণ্ডলী তার একমাত্র প্রতিষ্ঠাতার কারণে এক। ঈশ্বরের পরিকল্পনায় ঈশ্বরপুত্র যীশু খ্রীষ্টের মধ্য দিয়ে মন্ডলীর সূচনা। প্রভু যীশু মন্ডলীর কর্ণধার। তিনি এই মণ্ডলীকে পরিচালনার জন্য শক্তি, সাহস ও মনোবল প্রতিনিয়ত দান করছেন। তাঁরই তত্ত্বাবধানে ও দিকনির্দেশনায় আমরা সবাই একতাবদ্ধ। তিনি তাঁর পিতার ইচ্ছাই মনোনীত ব্যক্তিদের মধ্য দিয়ে পূরণ করেছেন। গড়ে তুলেছেন এক পবিত্র জনসমাজ।
২। আত্মা: খ্রীষ্টমন্ডলী তাঁর আত্মার কারণে এক। প্রভু যীশু খ্রীষ্ট পঞ্চাশত্তমী দিনে তাঁর মন্ডলীর ওপর আত্মাকে দান করেছেন। এক আত্মার কারণেই মন্ডলীর সূচনা থেকে জগতের শেষ অবধি মন্ডলী একতার সন্ধানে পরিচালিত হচ্ছে এবং হবে। একই আত্মার আবেশে আবিষ্ট হয়ে খ্রীষ্টমণ্ডলীতে আত্মিকভাবে সবাই একই মণ্ডলীর অঙ্গপ্রতঙ্গ।
৩। ভালোবাসা: খ্রীষ্টমণ্ডলী তাঁর ভালোবাসার কারণে এক। পিতা-ঈশ্বর ও পুত্র-ঈশ্বরের ভালোবাসার মধ্য দিয়েই আত্মার প্রকাশ ঘটেছে এবং আত্মার বশবর্তী হয়েই মণ্ডলীর জন্ম বা সূচনা। একই ভালোবাসা খ্রীষ্টভক্তগণ একে অপরের প্রতি প্রদর্শন করার মধ্য দিয়ে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে একতাবদ্ধ।
৪। বিশ্বাস, সাক্রামেন্ত ও প্রৈরিতিক উত্তরাধিকার: খ্রীষ্টমণ্ডলী এক তার দৃশ্যমান মিলনবন্ধন বিশ্বাস, সংস্কার ও প্রৈরিতিক উত্তরাধিকারের মধ্য দিয়ে। খ্রীষ্টমণ্ডলীতে বিশ্বাস এক। একই সৃষ্টিকর্তায় আমরা বিশ্বাস করি। একই সংস্কারীয় অনুগ্রহে আমরা অনুগ্রহভাজন এবং পবিত্র আত্মার নেতৃত্বে খ্রীষ্টভক্ত হিসেবে আমরা সবাই পরিচালিত।
কাজ: মণ্ডলীতে ঐক্য থাকার প্রয়োজনীয়তা কেন তা দলে আলোচনার মাধ্যমে লিখ ও পরে সকলের সামনে উপস্থাপন করো। |
পৃথিবীতে বিভিন্ন দেশ ও জাতির কৃষ্টি এবং আচার-আচরণ ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। মন্ডলীর দিক থেকে খ্রীষ্টভক্তগণ কাথলিক অথবা বিভিন্ন প্রটেস্টান্ট মণ্ডলীর অন্তর্ভুক্ত। তথাপি মণ্ডলীর সূচনা থেকে আমরা সবাই সার্বজনীন। সার্বজনীন কথাটাকে অন্যকথায় বলা হয় কাথলিক। খ্রীষ্ট তাঁর অনুসারীদের মনোনীত, নিযুক্ত ও প্রেরণ করেছেন সকল জাতির সকল মানুষের কাছে। তিনি বলেছেন তোমরা জগতের সর্বত্র যাও। সবার কাছে ঘোষণা কর মঙ্গলসমাচার। তিনি আরও বলেছেন মৃত্যুলোকের কোনো শক্তি মন্ডলীকে কখনো পরাভূত করতে পারবে না। যীশু একথা বলেছেন, কারণ তিনি সবসময় পথপ্রদর্শক ও রক্ষাকর্তা হিসেবে মণ্ডলীর সাথে রয়েছেন। মণ্ডলীর সূচনাতে বিভিন্ন দেশের, বিভিন্ন ভাষাভাষির উপস্থিতি মণ্ডলীর সার্বজনীনতার প্রকাশ যা বিরাজ করবে খ্রীষ্টের পুনরাগমন পর্যন্ত।
খ্রীষ্টমন্ডলী কেন্দ্রের সাথে সংযুক্ত থাকার মধ্য দিয়ে সার্বজনীন হয়েছে। প্রভু যীশু খ্রীষ্ট নিজেই মন্ডলী স্থাপন করেছেন এবং তা তাঁর মনোনীত শিষ্যদের ওপর ন্যস্ত করেছেন। যীশু পিতরের নাম দিয়েছেন পাথর। এই পাথরের উপর তিনি তাঁর মন্ডলী স্থাপন করেছেন। পিতরের দৃঢ় বিশ্বাসের ভিত্তির কারণে পিতরের ওপরই মন্ডলীর দায়িত্বভার অর্পণ করেছেন। পিতরের উত্তরাধিকারী হিসেবে পরবর্তীতে অন্য পোপগণ মন্ডলীর দেখাশুনা করার দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ক্ষুদ্র মণ্ডলী ও বৃহত্তর মন্ডলী- দুই-ই রোমের সাথে যুক্ত হয়ে সবার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। ভালোবাসা হলো প্রেরণকর্মের প্রেরণা। মন্ডলী তাঁর নেতৃত্বের মধ্যে দিয়ে খ্রীষ্টের ভালোবাসা চারিদিকে ছড়িয়ে দিচ্ছে।
তাছাড়া একই খ্রীষ্ট যীশুতে বিশ্বাস ও সংস্কারীয় সেবা দায়িত্ব আমাদের সার্বজনীনতা দান করে। মন্ডলীতে বিভিন্ন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মন্ডলীর অবস্থান এবং কিছু ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান ভিন্ন। তথাপি সব খ্রীষ্টভক্তই একই খ্রীষ্ট যীশুতে দীক্ষিত। অনেক দিক দিয়ে সব মণ্ডলীর বিশ্বাসের অনেক মিল রয়েছে। সেই কারণে ঐক্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা সবসময় চলছে। এটা খ্রীষ্টমন্ডলীর জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ। যে-কোনো মুহূর্তে যে-কেউ এতে যুক্ত হতে পারবে। মণ্ডলী সবার জন্য সেবার হাত বাড়িয়ে রেখেছে এবং সবার মাঝে খ্রীষ্টীয় ভালোবাসা ও প্রেম বিলিয়ে দিচ্ছে।
কাজ: নিকটবর্তী একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে যাবে ও সেখানে গিয়ে বাস্তবে সবার জন্য সেবাকাজে অংশগ্রহণের মাধ্যমে মন্ডলীর সার্বজনীনতা প্রকাশ করবে। |
পবিত্র বলতে বোঝায় বিশুদ্ধ বা খাঁটি। এই কথার দ্বারা নিষ্পাপ বা পাপহীন এবং নির্মল অবস্থাকেও বোঝায়। ঈশ্বরপুত্র যীশু খ্রীষ্ট পবিত্র মণ্ডলী স্থাপন করার জন্য পৃথিবীতে এসেছেন। কারণ পিতা সকল মানুষকে পবিত্রতার পথে ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা করেছিলেন। ঈশ্বর মানুষকে তাঁর প্রতিমূর্তিতে সৃষ্টি করেছিলেন। অর্থাৎ তিনি মানুষকে তাঁরই মতো পবিত্র করে সৃষ্টি করেছিলেন। কিন্তু মানুষ পাপ দ্বারা সেই প্রতিমূর্তি অর্থাৎ তাঁর দেওয়া পবিত্রতা হারিয়ে ফেলেছে। তাই ঈশ্বর তাঁকে আবার সেই প্রতিমূর্তি অর্থাৎ পবিত্রতা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাঁর পুত্রকে পাঠিয়েছেন। । পুত্র এসে জীবন দিয়ে পবিত্রতা ফিরিয়ে এনেছেন। এই কাজটি জগতের শেষ দিন পর্যন্ত যেন চলতে থাকে সেজন্যে তিনি একটি মণ্ডলী স্থাপন করেছেন। এই কারণে খ্রীষ্টমণ্ডলী পবিত্র। প্রভু যীশু খ্রীষ্ট নিজেই পবিত্র। তাঁর দ্বারা স্থাপিত মন্ডলীও পবিত্র। তিনি মণ্ডলীকে পবিত্র আত্মার দানে ভূষিত করেছেন। মন্ডলীকে তাঁর বধুরূপে ও তাঁর দেহরূপে তুলনা করে তাঁর পবিত্রতা দান করেছেন। তাঁদেরকে আপন করে নিয়েছেন। ভ্রাতৃপ্রেম হচ্ছে পবিত্রতার প্রাণস্বরূপ যা অর্জন করার জন্য আমরা সবাই আহ্বান পেয়েছি। এই ভ্রাতৃপ্রেম মন্ডলীকে পবিত্রতার পথে পরিচালিত করে, অর্থপূর্ণ করে এবং পূর্ণতা দান করে।
আমাদের এই পৃথিবীটা একটা জমির মতো। এখানে ভালো ফসলের গাছ ও পাশাপাশি আগাছা রয়েছে। আমাদের নিশ্চয় মনে আছে যীশুর বলা সেই গমের দানা ও শ্যামাঘাসের উপমা কাহিনিটি। ঐ গল্পটিতে যীশু বলেছেন, এক জমির মালিক জমিতে গমের বীজ বুনেছেন। কিন্তু রাতের অন্ধকারে শত্রুপক্ষ সেই একই জমিতে শ্যামাঘাস অর্থাৎ আগাছার বীজ বুনে দিয়েছে। গমের গাছ ও শ্যামাঘাস দেখতে প্রায় একই রকম। তাই একই সাথে তারা বাড়তে লাগল। কিন্তু পার্থক্য বোঝা গেল যখন তা পূর্ণভাবে বড়ো হলো, ঠিক ফসল ফলাবার আগে। মালিকের কর্মচারীরা আগে শ্যামাঘাস তুলে ফেলতে চাইল। কিন্তু জমির মালিক তাতে রাজি হননি। কারণ তার ভয় ছিল, যদি শ্যামাঘাস তুলতে গিয়ে তারা গমের গাছ তুলে ফেলে। তাই তিনি দুইটাকেই এক সাথে বাড়তে দিলেন।
এর মধ্য দিয়ে প্রভু যীশু বুঝিয়েছিলেন মালিক হলেন স্বয়ং ঈশ্বর, গম হলো ভালো লোক, শ্যামাঘাস হলো মন্দ লোক, জমি হলো এই পৃথিবী, শত্রুপক্ষ হলো শয়তান। এই পৃথিবীতে ভালো ও মন্দ লোকের সহ-অবস্থান। ঈশ্বর পাপীর ধ্বংস চান না। বরং তিনি চান পাপী মন পরিবর্তন করে তাঁর পথে ফিরে আসুক। তাই তিনি অপেক্ষা করেন, সময়-সুযোগ দান করেন।
দেখা যায় এই জগতে অনেকেই পবিত্রভাবে জীবন যাপন করার মধ্য দিয়ে ঈশ্বরের সেই আহ্বানে পূর্ণভাবে সাড়া দান করেন। মণ্ডলী তাদের স্বীকৃতি দান করার মাধ্যমে সাধু-সাধ্বীর মর্যাদা দান করেন। খ্রীষ্ট আমাদের সেই একই আহ্বান জানান যেন আমরা তাঁদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে নিজেদেরকেও পবিত্র করে তুলতে পারি।
কাজ: পবিত্র থাকার অর্থ এবং কীভাবে পবিত্র থাকা যায় তা জোড়ায় জোড়ায় আলোচনা ও উপস্থাপন করো। |
আমাদের মা-বাবা বা গুরুজনেরা আমাদেরকে অনেক সময় বিভিন্ন জায়গায় কাজের উদ্দেশ্যে পাঠান। আমাদের মা-বাবা আমাদেরকে বিশেষ এই কাজটি করার জন্য নিযুক্ত করেন এবং পাঠান। এই অর্থে আমরা প্রেরিত।
খ্রীষ্টমন্ডলীও শুরু থেকে প্রৈরিতিক কাজের জন্য প্রেরিত হয়েছে কারণ খ্রীষ্ট নিজেই পিতার দ্বারা বিশেষ উদ্দেশ্যে প্রেরিত হয়েছেন। তিনটি বিশেষ অর্থে আমরা খ্রীষ্টমণ্ডলীকে প্রৈরিতিক বলতে পারি:
১। খ্রীষ্টমন্ডলী প্রেরিতদূতদের বিশ্বাসের ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত, তাঁরা সাক্ষ্যদানের জন্য বিশেষভাবে মনোনীত এবং প্রেরণকর্মের জন্য প্রেরিত।
২। আত্মার সহায়তায় খ্রীষ্টমণ্ডলী প্রেরিতদূতদের মুখ থেকে শিক্ষাগ্রহণ করেছে, তা সযত্নে রক্ষা করে চলছে এবং মানুষের মাঝে তা পৌঁছে দিচ্ছে।
৩। বিশপ, যাজক ও পালকদের সহায়তায় কেন্দ্রীয় পরিচালনার সঙ্গে একাত্ম হয়ে খ্রীষ্টের পুনরাগমন পর্যন্ত মণ্ডলীকে শিক্ষাদান, পবিত্রীকরণ ও পরিচালনার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রভু যীশু নিজে প্রেরিত হয়েছেন। কিন্তু তিনি একা একা কিছু করেন না। তিনি বলেন, নিজে থেকে আমি কিছুই করতে পারি না। পিতার কাছ থেকে যা পেয়েছি তাই প্রচার করি এবং অন্যকে সংযুক্ত করি। যীশু যেমন পিতা ছাড়া কিছু করতে পারেন না ঠিক তেমনি আমরাও প্রভু যীশুর শক্তি ছাড়া কিছুই করতে পারি না। পবিত্র আত্মার শক্তিতে প্রভু যীশুর পুনরুত্থানের সাক্ষী হওয়ার জন্য আমরা সবাই আহূত, মনোনীত ও প্রেরিত।
কাজ: নিজ পরিবার, বিদ্যালয় ও স্থানীয় সমাজে তুমি কী কী প্রৈরিতিক কাজ করতে পার তা লিখ। |
শূন্যস্থান পূরণ করো।
১. সকল পবিত্রতার উৎস ______।
২. খ্রীষ্টমণ্ডলীর মধ্যে আকার ও বৈশিষ্ট্যগত ভিন্নতা থাকলেও সবাই _______ ।
৩. শ্যামাঘাস হলো ______ লোক।
8. তিনটি বিশেষ অর্থে আমরা খ্রীষ্টমন্ডলীকে _______ বলতে পারি।
৫. তিনি চান পাপী ______ পরিবর্তন করে তাঁর পথে ফিরে আসুক।
বাম পাশের বাক্যাংশের সাথে ডান পাশের বাক্যাংশের মিল করো।
ডান পাশ | ডান পাশ |
১. খ্রীষ্টমণ্ডলী মূলত ২. প্রভু যীশু মন্ডলীর ৩. খ্রীষ্টমণ্ডলীতে বিশ্বাস ৪. যীশু পিতরের নাম দিয়েছেন ৫. ঈশ্বর মানুষকে তাঁর |
|
বহুনির্বাচনি প্রশ্ন
১. সকল পবিত্রতার উৎস কে?
ক. ঈশ্বর
খ. যীশু
গ. পবিত্র আত্মা
ঘ. স্বর্গদূত
২. মানুষ কীভাবে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে একতাবদ্ধ?
ক. সেবার মাধ্যমে
খ. ভালোবাসার মাধ্যমে
গ. সহভাগিতার মাধ্যমে
ঘ. বিশ্বাসের মাধ্যমে
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৩ ও ৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও।
মিলন খ্রীষ্টান সমাজের একজন প্রধান ব্যক্তি। খ্রীষ্টান সমাজের উন্নয়নের জন্য তিনি রাত-দিন কাজ করে যাচ্ছেন। ধীরে ধীরে মিলনের প্রচেষ্টা এবং সমাজের লোকদের ভালোবাসা, একতা ও বিশ্বাসে পবিত্র সমাজ গড়ে উঠল।
৩. কার অনুপ্রেরণায় মিলন উক্ত কাজটি করতে উৎসাহিত হয়েছিল?
ক. ফাদার
খ. খ্রীষ্টমণ্ডলী
গ. পবিত্র আত্মা
ঘ. যীশু খ্রীষ্ট
৪. মিলনের কর্মকাণ্ডে সমাজে যে প্রভাব পড়বে তা হলো-
i. প্রচেষ্টা
ii. ভালোবাসা
iii. বিশ্বাস
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i
খ. ii
গ. ii ও iii
ঘ. i, ii ও iii
১. পুরোহিত রূপম মন্ডলীকে ভালোবাসেন বলেই তাঁর অক্লান্ত পরিশ্রমে মন্ডলীকে আত্মিকভাবে বৃদ্ধি করে তুলেছেন। কিন্তু মন্ডলীর এক যুবক সীমান্ত পুরোহিতের অজান্তে অনেক খারাপ কাজ করে এবং মন্ডলীর কয়েকজন যুবককেও বিপথে নেওয়ার চেষ্টা করে। মন্ডলীর সম্পাদক সীমান্তের এ কাজ বুঝতে পেরে পুরোহিতকে জানায় এবং মন্ডলী থেকে বের করে দিতে বলে। কিন্তু পুরোহিত বললেন, 'না বের করার দরকার নেই। তার জন্য সুযোগ দান কর।' ধীরে ধীরে ভুল বুঝতে পেরে সীমান্ত সঠিক পথে ফিরে আসে।
ক. পবিত্র বলতে কী বোঝায়?
খ. ঈশ্বরপুত্র কেন পৃথিবীতে এসেছেন?
গ. পুরোহিতের কোন শিক্ষায় সীমান্ত সঠিক পথে ফিরে আসে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. সীমান্তের পবিত্র জীবনের ফলাফল কী হতে পারে বলে তুমি মনে করো।
২. মাদার তেরেজা ছিলেন একজন ইউরোপীয় ও খ্রীষ্টান। কিন্তু বিশ্বের সকল দেশের সকল ধর্মের মানুষের জন্য তাঁর সেবা ও ভালোবাসা উন্মুক্ত। ধর্ম, দেশ ও জাতির ভিন্নতা বা পার্থক্য তিনি কোনো দিনও বিবেচনায় নেননি। তাঁকে অনুসরণকারী ভগ্নিদের নিয়ে তিনি গঠন করেন মানবসেবা সংঘ 'মিশনারিজ অব চ্যারিটি'। রাস্তায় পড়ে থাকা সহায়-সম্বলহীন মানুষের আশ্রয়ের জন্য 'নির্মল হৃদয়' এতিম শিশুদের জন্য 'শিশু ভবন', মানসিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য 'নবজীবন আবাস' কুষ্ঠরোগীদের জন্য 'প্রেমনিবাস' প্রভৃতি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে অসীম মমতায় সেবা দান করেন। তাঁর সংঘের ভগ্নিদের নিয়ে তিনি একতার জীবন গড়ে তুলে সকলের মাঝে দায়িত্ব দেন এবং নিজে আদর্শস্বরূপ কাজ করেন।
ক. প্রেরণকর্মের প্রেরণা কী?
খ. খ্রীষ্টমণ্ডলী কেন পবিত্র?
গ. মাদার তেরেজা কোন শিক্ষায় অনুপ্রাণিত হয়ে উপরের কর্মকাণ্ডগুলো পরিচালনা করেছিলেন?
ঘ. 'খ্রীষ্টমণ্ডলী এবং মিশনারিজ অব চ্যারিটি' উভয়ই সার্বজনীন- উদ্দীপক পাঠের আলোকে মূল্যায়ন করো।
১. মন্ডলীর সূচনা হলো কীভাবে?
২. খ্রীষ্টমণ্ডলী কী কারণে পবিত্র?
৩. কী অর্থে আমরা খ্রীষ্টমণ্ডলীকে প্রৈরিতিক বলি?
১. খ্রীষ্টমণ্ডলীর প্রৈরিতিক বৈশিষ্ট্যগুলো ব্যাখ্যা করো।
২. কী কী কারণে খ্রীষ্টমণ্ডলী এক? ব্যাখ্যা করো।
৩. সমাজের ঐক্য প্রতিষ্ঠা ও বজায় রাখতে খ্রীষ্টমন্ডলীর ভূমিকা বর্ণনা করো।
শূন্যস্থান পূরণ করো।
১. সকল পবিত্রতার উৎস _________।
২. খ্রীষ্টমণ্ডলীর মধ্যে আকার ও বৈশিষ্ট্যগত ভিন্নতা থাকলেও সবাই _________।
৩. শ্যামাঘাস হলো _________ লোক।
8. তিনটি বিশেষ অর্থে আমরা খ্রীষ্টমণ্ডলীকে _________ বলতে পারি।
৫. তিনি চান পাপী _________ পরিবর্তন করে তাঁর পথে ফিরে আসুক।
বাম পাশের বাক্যাংশের সাথে ডান পাশের বাক্যাংশের মিল করো।
বাম পাশ | ডান পাশ |
১. খ্রীষ্টমণ্ডলী মূলত ২. প্রভু যীশু মণ্ডলীর ৩. খ্রীষ্টমণ্ডলীতে বিশ্বাস ৪. যীশু পিতরের নাম দিয়েছেন ৫. ঈশ্বর মানুষকে তাঁর |
|
বহুনির্বাচনি প্রশ্ন
১. সকল পবিত্রতার উৎস কে?
ক. ঈশ্বর
গ. পবিত্র আত্মা
খ. যীশু
ঘ. স্বর্গদূত
২. মানুষ কীভাবে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে একতাবদ্ধ?
ক. সেবার মাধ্যমে
খ. ভালোবাসার মাধ্যমে
গ. সহভাগিতার মাধ্যমে
ঘ. বিশ্বাসের মাধ্যমে
নিচের অনুচ্ছেদটি পড়ে ৩ ও ৪ নম্বর প্রশ্নের উত্তর দাও।
মিলন খ্রীষ্টান সমাজের একজন প্রধান ব্যক্তি। খ্রীষ্টান সমাজের উন্নয়নের জন্য তিনি রাত-দিন কাজ করে যাচ্ছেন। ধীরে ধীরে মিলনের প্রচেষ্টা এবং সমাজের লোকদের ভালোবাসা, একতা ও বিশ্বাসে পবিত্র সমাজ গড়ে উঠল।
৩. কার অনুপ্রেরণায় মিলন উক্ত কাজটি করতে উৎসাহিত হয়েছিল?
ক. ফাদার
খ. খ্রীষ্টমণ্ডলী
গ. পবিত্র আত্মা
ঘ. যীশু খ্রীষ্ট
৪. মিলনের কর্মকান্ডে সমাজে যে প্রভাব পড়বে তা হলো-
i. প্রচেষ্টা
ii. ভালোবাসা
iii. বিশ্বাস
নিচের কোনটি সঠিক?
ক. i
খ. ii
গ. ii ও iii
ঘ. i, ii ও iii
সৃজনশীল প্রশ্ন
১. পুরোহিত রূপম মণ্ডলীকে ভালোবাসেন বলেই তাঁর অক্লান্ত পরিশ্রমে মণ্ডলীকে আত্মিকভাবে বৃদ্ধি করে তুলেছেন। কিন্তু মন্ডলীর এক যুবক সীমান্ত পুরোহিতের অজান্তে অনেক খারাপ কাজ করে এবং মন্ডলীর কয়েকজন যুবককেও বিপথে নেওয়ার চেষ্টা করে। মন্ডলীর সম্পাদক সীমান্তের এ কাজ বুঝতে পেরে পুরোহিতকে জানায় এবং মন্ডলী থেকে বের করে দিতে বলে। কিন্তু পুরোহিত বললেন, 'না বের করার দরকার নেই। তার জন্য সুযোগ দান কর। ধীরে ধীরে ভুল বুঝতে পেরে সীমান্ত সঠিক পথে ফিরে আসে।
ক. পবিত্র বলতে কী বোঝায়?
খ. ঈশ্বরপুত্র কেন পৃথিবীতে এসেছেন?
গ. পুরোহিতের কোন শিক্ষায় সীমান্ত সঠিক পথে ফিরে আসে? ব্যাখ্যা করো।
ঘ. সীমান্তের পবিত্র জীবনের ফলাফল কী হতে পারে বলে তুমি মনে করো।
২. মাদার তেরেজা ছিলেন একজন ইউরোপীয় ও খ্রীষ্টান। কিন্তু বিশ্বের সকল দেশের সকল ধর্মের মানুষের জন্য তাঁর সেবা ও ভালোবাসা উন্মুক্ত। ধর্ম, দেশ ও জাতির ভিন্নতা বা পার্থক্য তিনি কোনো দিনও বিবেচনায় নেননি। তাঁকে অনুসরণকারী ভগ্নিদের নিয়ে তিনি গঠন করেন মানবসেবা সংঘ 'মিশনারিজ অব চ্যারিটি'। রাস্তায় পড়ে থাকা সহায়-সম্বলহীন মানুষের আশ্রয়ের জন্য 'নির্মল হৃদয়' এতিম শিশুদের জন্য 'শিশু ভবন', মানসিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য 'নবজীবন আবাস' কুষ্ঠরোগীদের জন্য 'প্রেমনিবাস' প্রভৃতি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে অসীম মমতায় সেবা দান করেন। তাঁর সংঘের ভগ্নিদের নিয়ে তিনি একতার জীবন গড়ে তুলে সকলের মাঝে দায়িত্ব দেন এবং নিজে আদর্শস্বরূপ কাজ করেন।
ক. প্রেরণকর্মের প্রেরণা কী?
খ. খ্রীষ্টমণ্ডলী কেন পবিত্র?
গ. মাদার তেরেজা কোন শিক্ষায় অনুপ্রাণিত হয়ে উপরের কর্মকাণ্ডগুলো পরিচালনা করেছিলেন?
ঘ. 'খ্রীষ্টমণ্ডলী এবং মিশনারিজ অব চ্যারিটি' উভয়ই সার্বজনীন- উদ্দীপক পাঠের আলোকে মূল্যায়ন করো।
সংক্ষিপ্ত-উত্তর প্রশ্ন
১. মন্ডলীর সূচনা হলো কীভাবে?
২. খ্রীষ্টমণ্ডলী কী কারণে পবিত্র?
৩. কী অর্থে আমরা খ্রীষ্টমণ্ডলীকে প্রৈরিতিক বলি?
বর্ণনামূলক প্রশ্ন :
১. খ্রীষ্টমণ্ডলীর প্রৈরিতিক বৈশিষ্ট্যগুলো ব্যাখ্যা করো।
২. কী কী কারণে খ্রীষ্টমণ্ডলী এক? ব্যাখ্যা করো।
৩. সমাজের ঐক্য প্রতিষ্ঠা ও বজায় রাখতে খ্রীষ্টমন্ডলীর ভূমিকা বর্ণনা করো।
Read more