গলদা চিংড়ির বাণিজ্যিক উৎপাদনে হ্যাচারিতে উৎপাদিত গুনগত মানসম্পন্ন পি.এল এর কোন বিকল্প নেই। চিংড়ি হ্যাচারি সুষ্ঠু ও সাফল্যজনকভাবে পরিচালনা এবং ব্যবস্থাপনায় গুণগত মানসম্পন্ন প্রয়োজনীয় সংখ্যক ব্রুড চিংড়ি নির্ধারিত সময় পাওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। হ্যাচারিতে ব্যবহারের জন্য ব্রুড চিংড়ি সরাসরি নদী বা ঘের বা পুকুর থেকেও সংগ্রহ করা যায়। তবে নির্ধারিত সময়ে প্রাপ্তির বিষয়টি অধিকতর নিশ্চিতকরণের জন্য হ্যাচারি চত্বরে পরিণত রুড চিংড়ি প্রতিপালন করা অতীব জরুরি।
এ অধ্যায় পাঠ শেষে আমরা-
কৃত্রিমভাবে গলদা চিংড়ির পোনা বা পোস্ট লার্ভা উৎপাদনের ক্ষেত্রে ব্রুড চিংড়ির গুণগতমান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ব্রুড চিংড়ি আহরণের পর অতি যত্ন সহকারে পরিবহন করতে হবে যেন ডিমওয়ালা চিংড়ি কোনোক্রমেই আঘাত প্রাপ্ত না হয়। ঝাঁকি জাল দিয়েও ডিমওয়ালা চিংড়ি সংগ্রহ করা যেতে পারে। সকাল অথবা সন্ধ্যা, যখন দিনের তাপমাত্রা তুলনামূলকভাবে কম থাকে এমন সময় চিংড়ি আহরণ ও পরিবহণ করা উত্তম। এতে ব্রুড চিংড়ির উপর বাড়তি পরিবেশ গত কোনো পীড়ন (stress) পড়ে না। সাধারণত ৩ ধরনের চিংড়ি সংগ্রহ করা হয়। ধূসর বর্ণের ডিমওয়ালা চিংড়ি, কমলা রঙের ডিমওয়ালা চিংড়ি ও মাথায় অবস্থিত ডিমওয়ালা চিংড়ি। ধূসর বা কমলা বর্ণের ডিমওয়ালা চিংড়ি পর্যাপ্ত পরিমাণে না থাকলে সেক্ষেত্রে মাথায় ডিমওয়ালা কমলা রঙের চিংড়ি সংগ্রহ করে ২-৩টি স্ত্রী চিংড়ির জন্য ১টি পুরুষ চিংড়ি একত্রে মজুদ করতে হবে। এভাবে সংগৃহীত চিংড়ি সংগ্রহ করে পরিশোধন পূর্বক হোল্ডিং ট্যাংকের পরিবেশে মিলনের জন্য রাখতে হবে।
সাধারণত প্রাকৃতিক উৎস থেকে সংগৃহীত ব্রুড চিংড়ির গুণগত মান ভালো হয়। গলদা চিংড়ি উপকূল থেকে বহুদুরে সমুদ্রের তলদেশ থেকে শুরু করে লবণাক্ততা আছে এমন মোহনা বা উপকূলীয় নদীতে বসবাস করে।
ব্রুড চিংড়ি বা পরিপক্ক চিংড়ি সহজেই পাওয়া যায় এমন জায়গায় হ্যাচারি স্থাপন করা উচিত। বাংলাদেশের সকল ধরনের জলাশয়ে, অর্থাৎ নদী, খাল-বিল, হাওর-বাঁওড় ও পুকুরে পরিপক্ব গলদা চিংড়ি পাওয়া যায়। এছাড়া হ্যাচারির নিজস্ব পুকুরেও ব্রুড চিংড়ি বা ডিমওয়ালা চিংড়ি উৎপাদন করে হ্যাচারিতে ব্যবহার করা যায়। সাধারণত মার্চ-এপ্রিল মাস থেকে পুকুরের চিংড়ির ডিম আসতে শুরু করে। এ সময় পুকুর থেকে ডিমওয়ালা চিংড়ি আহরণ করতে হবে। ডিমওয়ালা চিংড়ি আহরণের জন্য সাধারণত মই জাল বা বেড় জাল ব্যবহার করা হয়।
যদি একটি পিকআপ ভ্যানের ধারণ ক্ষমতা ১ টন পিভিসি ট্যাংক বা এর সমপরিমাণ হয় তাহলে ১ ঘন্টা বা তার কম সময়ের জন্য ৪০০টি ব্রুড চিংড়ি পরিবহণ করা যেতে পারে। যদি পরিবহণ দূরত্ব ৪ ঘন্টা বা তার অধিক হয়ে থাকে তাহলে ২০০ টির বেশি ব্রুড চিংড়ি পরিবহণ করা যাবে না। এ ছাড়া ৩০ সেমি লম্বা এবং ৬ থেকে ৮ সেমি ব্যাস বিশিষ্ট প্লাস্টিক পাইপের মধ্যে ব্রুড চিংড়ি প্রবেশ করিয়ে পরিবহণ করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে পাইপের গায়ে অবশ্যই ৪০ থেকে ৫০ টি ছিদ্র থাকতে হবে এবং পাইপের মুখ মশারির কাপড় দিয়ে আটকানোর ব্যবস্থা রাখতে হবে।
চিত্র-১.১: ব্রুড চিংড়ি পরিবহণ
নূরু চিংড়ি পরিবহণের সময় পানির তাপমাত্রা অনুকুল অবস্থায় রাখার জন্য পিক আপ ভ্যানে পানি ঠাণ্ডা রাখার ব্যবস্থা থাকতে হবে। ব্রুড চিংড়িকে পরিবহণের সময় প্লাস্টিক ভালে অক্সিজেন যুক্ত পানি পূর্ণ করে পরিবহণ করা যেতে পারে। প্লাস্টিক ব্যাগের পানির তাপমাত্র অনুকূল অবস্থায় রাখার জন্য প্রতি ২ মিটার পানির জন্য ১০০ গ্রাম ওজনের বরফের টুকরা প্লাস্টিক ব্যাগের মঞ্চে নিয়ে পানির মঞ্চে ভাসিয়ে দিতে হবে। বরফ সংরক্ষণের জন্য পিক আপ ভ্যানের মঞ্চে আইস বক্স অথবা ছোট ডেফিল্ডারেটর রাখা যেতে পারে। বরফের টুকরা ব্যবহারের সময় চিংড়ির রোস্টামটিকে স্পর্শ জাতীয় পদার্থ লাগিয়ে দিতে হবে যেন আধাতজনিত কারনে রোস্ট্রামটি ভেঙ্গে না যায়।
পুরুষ চিংড়ি পুরুষ চিংড়ির আকার সাধারণ স্ত্রী চিংড়ির চেয়ে বড় হয়। পুরুষ চিংড়ির শিরোৰক মোটা ও আকারে বড়ো হয় এবং নিম্নোনর অপেক্ষাকৃত সরু দেখায়। আর একটি বৈশিষ্ট্য ফল পুরুষ চিংড়ির মোটা লম্বা गानী প্রসনপন। অন্যান্য বৈশিষ্ট্যের মধ্যে দ্বিতীয় সম্ভারনপদের ভেতরের দিকের পদের (Endopodite) গোড়ার সংলগ্ন লোমশ এপেন্ডিকস কালকুলিনা দেখা যায়। এছাড়া প্রথম উপর খন্ডের ডলার খোলসের মাঝখানে একটা ছোট শক্ত কাঁটার মত দেখা যায়। জুভেনাইল বা একমাত্র পেক্ষি ম্যাসলিনা দেখেই গুৰুৰ চিংড়ি সদায় করতে হয়। কারন তখন অন্যান্য বৈশিষ্ট্যগুলি দেখা যায় না।
স্ত্রী চিংড়ি চিংড়ির মাথা ও দ্বিতীয় বাহু অপেক্ষাকৃত অনেকটা ছোট থাকে এবং নিয়োগরের নীচের দিকে ভিম ধারনের জন্য নিষেদর কৃত চা হয়। পিঠের মৌলস বড় হয় এবং উত্তর দিকে নেমে এসে ডিমগুলি ঢেকে রাখতে সাহায্য করে ।
চিত্র-১.২.৪ পুরুষ ও স্ত্রী চিংড়ি
হ্যাচারিতে রুড চিংড়ি ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস, ছত্রাক ও এককোষী প্রাণী দ্বারা ভাক্রান্ত হতে পারে যা চিংড়ি শোনায় সংক্রমিত হয়ে থাকে। হ্যাচারি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও জীবাণুমুক্ত না রালে হ্যাচারিতে রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে। হ্যাচারি জীবাণুমুক্ত রাখার জন্য নিম্নলিখিত বিষয়সমূহের ওপর গুরুত্ব দিলে সাধারণত পোনা রোগাক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে না। বিষয়গুলো নিম্নরূপ:
ক) হ্যাচারিতে ব্যবহৃত পানি ও পাত্তি নিয়মিত জীবাণুমুক্ত রাখতে হবে :
গ) প্রতিটি ট্যাংক হতে সঠিক পরিমাণে পানি পরিবর্তন করতে হবে :
গ) প্রতিটি ট্যাংকের তলদেশ নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে;
ঘ) ট্যাংকে গুনপুতমান সম্পন্ন খাদ্য সঠিক মাত্রায় ব্যবহার করতে হবে;
ঙ) পোনা উৎপাদন কার্যক্রম শেষে ট্যাংকসমূহ ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি জীবাণুমুক্তকরণ করতে হবে;
চ) পানিতে সবসময় বায়ু সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে, এবং
্ছ) পানির তাপমাত্র সঠিক পর্যায়ে রাখতে হবে।
সারণিঃ প্রজনন ট্যাংকে রুড চিংড়ির স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও শনাক্তকরণ বৈশিষ্ট্য।
পরীক্ষণীয় বিষয় | সনাক্তকরণ বৈশিষ্ট্য |
---|---|
সংগৃহীত ব্রুড চিংড়ি আক্রান্ত কি-না? | চিংড়ির বিপাকীয় বর্জ্য পদার্থের ইনক্লুসন বডি দেখা যায়। |
চিংড়ির ফুলকা বিকৃত, নোংরা বা অপরিচ্ছন্ন কি-না? | চিংড়ির খোলস পরিবর্তন এবং বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয় না। |
চিংড়ির ত্বকের উপর রক্তের দাগ বা সাদা দাগ আছে কি-না? | চিংড়ির খোলস পরিবর্তনে পীড়নের সৃষ্টি হয় এবং খোলস পরিবর্তনের মাধ্যমে দুর্বল চিংড়ির রূপান্তর হয় । |
সাঁতারের উপাঙ্গগুলো ফোলা আছে কি-না? | চিংড়ির দেহের বিভিন্ন স্থানে আক্রমন লক্ষ্য করা যায় এবং আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়। |
সঠিকভাবে চিংড়ি খোলস পরিবর্তন করছে কি-না? | চিংড়ির দেহাবরণীর উপর শেওলা বিদ্যমান থাকে। |
চিংড়ির দেহাবরণীর উপর কালো দাগ বিদ্যমান কি-না? | স্থানীয়ভাবে ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত। |
চিংড়ির উপাঙ্গ বা অ্যান্টেনা ভেঙ্গে গেছে কি-না? | ত্রুটিপূর্ণ পরিবহন পদ্ধতি বা ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত। |
দেহের আকৃতি অস্বাভাবিক কি-না? | ডিম দেয়ার উপযুক্ত ছোট আকৃতির রুড শ্রিম্প সাধারণত কম ডিম দিয়ে থাকে। |
দেহের বর্ণ স্বাভাবিক কি-না? | উজ্জ্বল বর্ণের চিংড়ি সাধারণত রোগমুক্ত হয়। |
প্রাকৃতিক উৎস থেকে সংগ্রহ করে ব্রুড চিংড়ি হ্যাচারিতে এনে ২৫ পিপিএম মাত্রার ফরমালিনে ১৫-২০ মিনিট রেখে জীবাণুমুক্তকরণ করে নিতে হবে। যদি স্ত্রী রুড চিংড়িতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিক পিগমেন্টেশন অথবা ক্ষত দেখা দেয় তাহলে ৫০ পিপিএম মাত্রায় অক্সিটেট্রাসাইক্লিন অথবা এরিথ্রোমাইসিনে ১০ মিনিট গোসল করাতে হবে। ব্রুড চিংড়িকে ব্রিডিং গ্রাউন্ডে ৩-৪ দিন পরিচর্যা করা হয়। এরপর স্বাস্থ্যবান ব্রুডকে ম্যাচুরেশন ট্যাংকে স্থানান্তর করা হয়।
গলদা চিংড়ির দৈহিক বৃদ্ধি প্রক্রিয়া ভিন্নতর পদ্ধতিতে অর্থাৎ চিংড়ি খোলস বদলানোর মাধ্যমে বৃদ্ধি পায়। খোলস পাল্টানোর সময় চিংড়ি অত্যন্ত দুর্বল থাকে। তখন তাদের আশ্রয়স্থলের প্রয়োজন হয়। তবে সকল চিংড়ি একই সময় খোলস পাল্টায় না। এ সময় সবল চিংড়ি দুর্বল চিংড়ি গুলোকে খেয়ে ফেলতে পারে। এজন্য চিংড়ি রুড পুকুর ব্যবস্থাপনায় আশ্রয়স্থল স্থাপনের বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন যাতে অন্য প্রাণী বা চিংড়ি দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা না থাকে। এ জন্য নারিকেল/খেজুর গাছের শুকনো পাতা/বাঁশের কঞ্চি, ভাঙ্গা প্লাস্টিক পাইপ, গাছের ডালপালা ইত্যাদি দিয়ে আশ্রয়স্থল নির্মাণ করা যায়। এক্ষেত্রে শতকে কমপক্ষে ১টি আশ্রয়স্থল স্থাপন করা উচিত।
ডালপালা হতে পাতা পড়ে পানি যেন নষ্ট না হয় সে বিষয়ে নজর রাখতে হবে।
তাল বা নারিকেলের পাতা এমনভাবে পুকুরের তলদেশে পুঁতে দিতে হবে যাতে পাতার অংশ পুকুরের তলদেশ থেকে একটু উপরে থাকে। এ ক্ষেত্রে তাল বা নারিকেলের পাতা কোণাকোনি (৪৫) পুঁতে নিলে আশ্রয়স্থল হিসেবে বেশি জায়গা পাওয়া যায় এবং পাতাগুলো পুকুরের তলদেশের উপর থাকলে সহজে পচবে না। বাঁশের কঞ্চি আটি বেঁধে অথবা প্লাস্টিকের পাইপ পৃথক পৃথকভাবে পুকুরের তলায় মাটির ওপর রেখে দিতে হবে। খেজুরের পাতাও আটি বেঁধে দেয়া যায়।
চিংড়ি মজুদের ২/১ দিন পূর্বে তাল বা নারিকেলের পাতা প্রতি শতাংশ জলায়তনে ১-২ টি স্থাপন করতে হবে। তাল বা নারিকেলের ডাল মাটিতে এমনভাবে পুঁতে দিতে হবে যেন পাতার অংশ মাটি থেকে একটু উপরে কোপকোনি অবস্থায় থাকে। প্লাস্টিক পাইপ, ভাঙা কলসি, পুকুরের তলায় রেখে দিতে হবে। অন্যান্য উপকরণগুলো আনুপাতিক হারে ব্যবহার করতে হবে।
যে কোনো উৎস থেকে সংগৃহীত ব্রুড চিংড়ি পুকুরে মজুদের পূর্বে উক্ত পুকুরের পানির পরিবেশ ও তাপমাত্রার সাথে অভ্যস্থ করে নিতে হবে। যে পাত্রে চিংড়ি পরিবহন করে আনা হবে সেই পাত্রের ৫০% পানি ফেলে দিয়ে উক্ত পাত্রে পুকুর থেকে ১৫-২০ মিনিট ধরে পানি ছিটিয়ে ৫০% পানি পূর্ণ করতে হবে। পরিবহন পাত্রের পানির তাপমাত্রা এবং পুকুরের পানির তাপমাত্রায় সমতা না আসা পর্যন্ত এ প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে হবে। অভ্যস্থকরণ ব্যতিরেকে কোনো অবস্থাতেই চিংড়ি পুকুরে ছাড়া যাবে না।
ব্রুড বা পরিণত চিংড়ির খাদ্য প্রস্তুত প্রণালী নিচে দেয়া হলো:
উপাদান - মিশ্রণের হার
খৈল - ৪০%
কুঁড়া - ২০%
ফিসমিল - ২৫%
পম/ভুট্টার ভূষি - ১৫%
মোট - ১০০%
এছাড়াও প্রতি কেজি খাবারের সাথে ৫০-১০০ মিলিগ্রাম ভিটামিন প্রিমিক্স মিশিয়ে দেয়া যেতে পারে। সাধারণত এ জাতীয় খাদ্যে প্রায় ৩০% প্রোটিন থাকে।
মজুদকৃত চিংড়ির দৈহিক ওজনের ৩-৪% হারে দৈনিক খাদ্যের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়। পরবর্তীতে প্রতি দিনের খাদ্যকে দুভাগে ভাগ করে সকাল ও সন্ধ্যায় প্রয়োগ করতে হবে। তৈরিকৃত ও মিশ্র খাদ্যের পরিবর্তে চিংড়ির উপযোগী তৈরি পিলেট খাবার চিংড়ির দৈহিক ওজনের ৪% হারে প্রয়োগ করা যেতে পারে। চিংড়ি নিশাচর বিধায় সন্ধ্যায় কিছুটা বেশি খাবার প্রয়োগ করতে হবে। চিংড়ি খাবার ঠিকমত গ্রহণ করছে কি না তা মাঝে মধ্যে পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
পুকুরে চিংড়ির বৃদ্ধি যথাযথভাবে হচ্ছে কি না এবং তাদের দেহে রোগের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে কি না তা মাঝে মধ্যে পর্যবেক্ষণ করা প্রয়োজন। গলদা চিংড়ির দৈনিক গড় দৈহিক বৃদ্ধি ০.৪.৭৫% হয়ে থাকে। চিংড়ির দ্রুত বৃদ্ধির সময়কাল হচ্ছে মার্চ থেকে নভেম্বর এবং কম বৃদ্ধির সময়কাল ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস।
বৈদ্যুতিক মোটরের সাহায্যে বাহিরের অক্সিজেন মিশ্রিত বাতাস পানির গভীরে প্রবেশ করিয়ে পানির ভিতরে অক্সিজেনের মাত্রা ঠিক রাখার যন্ত্রের নামই হচ্ছে এ্যারেটর। এ্যারেটর পুকুরের পরিবেশগত সামগ্রিক উন্নতির জন্য বৃহৎ ভুমিকা পালন করে থাকে।
একটি ভালো গুণসম্পন্ন এ্যারেটর নির্বাচনের জন্য যেসব সাধারণ বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য রাখতে হবে সেগুলো নিম্নরূপ:
মাছ বা চিংড়ির খামার ব্যবস্থা উন্নয়ন বা অগ্রগতির সাথে সাথে খামারে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতিও উন্নত হচ্ছে। একটি এয়ার পাম্প ট্যাংকের বাইরে থেকে বাতাস শুষে ট্যাংকের ভিতরে নিমজ্জিত যন্ত্রপাতিতে পাম্প করে। তাই সঠিক দিক এবং সঠিক চাপে বায়ু প্রবাহকে নিয়ন্ত্রণ করতে নিম্নে একটি এয়ার পাম্পের আনুষাঙ্গিক সরঞ্জামাদির কাজের বর্ণনা দেওয়া হলো-
এয়ারলাইন টিউবিং- এয়ার পাম্প থেকে ট্যাংকের পানিতে নিমজ্জিত সরঞ্জামে বায়ু প্রবাহকে চালু রাখে। নিয়মিত ভালভ চেক করতে হবে। পাম্প যদি বন্ধ হয়ে যায় বা শক্তি হারায় তবে চিংড়ির ট্যাংক থেকে পানি বের হওয়াকে বাঁধা দেয়।
এয়ার ভালভ- এয়ার পাম্প থেকে ট্যাংকে আসা বায়ু প্রবাহের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে।
টি স্প্রিটার-একটি এয়ারলাইনকে দুইটি গতিপথে বিভক্ত করে, এ ক্ষেত্রে একটি এয়ার পাম্পকে দুইটি ডিভাইস চালানোর অনুমতি দেয়। গ্যাং ভালভ একটি এয়ার পাম্প থেকে চারটি ভিন্ন ট্যাংকে বায়ু প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে।
এয়ারলাইন হোল্ডার- ট্যাংকের ভিতরে বা বাইরে এয়ারলাইন টিউবিংকে নির্দিষ্ট জায়গায় রাখতে একটি সাকশন কাপ ব্যবহার করে।
এয়ারলাইন সংযোগকারী- দীর্ঘ দূরত্বে পৌঁছানোর জন্য এয়ারলাইন টিউবিংয়ের দুইটি টুকরো একসাথে সংযুক্ত করে।
এয়ার পাম্প, ট্যাংক ডিভাইস এবং প্রয়োজনীয় আনুষাঙ্গিক উপকরণ কিনতে এবং এয়ার পাম্প স্থাপন করতে নিম্নের মৌলিক নির্দেশাবলী অনুসরণ করা অত্যন্ত জরুরী-
১। এয়ার পাম্পটিকে ট্যাংকের বাইরে রাখা উচিত এবং তারপরে এয়ারলাইন টিউবিংটি সঠিক দৈর্ঘ্যে কেটে দিতে হবে, যাতে এটি ট্যাংকের ভিতরে এর আনুষাঙ্গিক সরঞ্জামের সাথে বায়ু পাম্প সংযোগ করার জন্য যথেষ্ট দীর্ঘ হয়।
২। এয়ারলাইন টিউবিংয়ের এক প্রান্ত ট্যাংকের ভিতরের সরঞ্জামের সাথে সংযুক্ত করতে হবে এবং ডিভাইসটিকে ট্যাঙ্কের ভিতরে রাখতে হবে। তারপর এয়ারলাইন টিউবিংয়ের অন্য প্রান্তটি এয়ার পাম্পের সাথে সংযুক্ত করতে হবে।
৩। স্পঞ্জ ফিল্টার এবং ট্যাংক ডিভাইসের মাঝখানে কোনো নির্দিষ্ট জায়গায় এয়ারলাইন টিউবিংটি কেটে এর মধ্যে চেক ভালভটি সংযুক্ত করতে হবে যাতে ফ্ল্যাপারসহ চেক ভালভের শেষ অংশ বায়ু পাম্পের মুখোমুখি হয়।
৪। যদি চেক ভালভটি পিছনের দিকে স্থাপন করা হয়, তবে এয়ার পাম্প চালু করার সময় কোনও বায়ু প্রবাহিত হবে না, তাই চেক ভালভটির চারপাশ পরীক্ষা করে নিতে হবে।
৫। এয়ার পাম্পের পাওয়ার ক্যাবল দিয়ে একটি ড্রিপ লুপ তৈরি করতে হবে এবং তারপর বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে হবে। অতঃপর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ট্যাংকের ডিভাইস থেকে বুদবুদ পরিলক্ষিত হবে
এ্যারেটর হল বায়ু চলাচলের যন্ত্র, যা পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে ব্যবহৃত হয়। এটি দ্রবীভূত গ্যাস (যেমন- কার্বন ডাই অক্সাইড) অপসারণের জন্য পানি এবং বায়ুকে ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে নিয়ে আসে এবং লোহা, হাইড্রোজেন সালফাইড এবং উদ্বায়ী জৈব রাসায়নিকের মতো দ্রবীভূত ধাতুগুলিকে জারিত করে। চিংড়ি চাষিদের লক্ষ্য হল ঝুঁকি কমিয়ে সর্বোচ্চ উৎপাদন এবং মুনাফা অর্জন করা। এ্যারেটর হলো পানির গুণগত মানের ব্যবস্থাপনা এবং অক্সিজেন ঘাটতি হ্রাসের জন্য সবচেয়ে দ্রুত সমাধান প্রক্রিয়া। এটি অ্যামোনিয়া, ক্লোরিন, কার্বন ডাই অক্সাইড, মিথেন, হাইড্রোজেন সালফাইড, আয়রন এবং ম্যাঙ্গানিজের মতো রাসায়নিক পদার্থগুলিকে অপসারণ করে যা চিংড়ি চাষের পানির গুণগত মানের ওপর প্রভাব ফেলে।
এ্যারেটরের মূল উদ্দেশ্য হল অক্সিজেন সরবরাহ করা এবং পানিতে অক্সিজেন ছড়িয়ে দেওয়া। এ্যারেটর নির্বাচন করার সময় খুবই গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল এর অক্সিজেন বিচ্ছুরণ ক্ষমতা। এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি গলদা চিংড়ির বৃদ্ধি, বেঁচে থাকার হার এবং উৎপাদন বৃদ্ধি করে। এ্যারেটর অক্সিজেন সরবরাহের মাধ্যমে পানির প্রাথমিক খাদ্যের ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করে। পুকুরের তলদেশে বসবাসকারী চিংড়ির মতো প্রজাতির জন্য পানির নীচের স্তরে অক্সিজেন সরবরাহ করা আবশ্যক। এ্যারেটর ব্যবহারের ফলে স্রোতের বিপরীতে চিংড়ি সাঁতার কাটে। ফলে চিংড়ির শরীরে কোনো ময়লা বা ক্ষতিকর প্রাণী লেগে থাকতে পারে না। অক্সিজেন মেশানো ও সরবরাহের ফলে খাদ্যের অপচয় কম হয়, পানির তলদেশ পরিষ্কার হয় এবং চিংড়ি রোগমুক্ত থাকে।
বিভিন্ন ধরনের এ্যারেটর এর কাজ ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। বাজারে বিভিন্ন ধরনের এ্যারেটর পাওয়া যায়। সেগুলো হল:
১. প্যাডেল হুইল এ্যারেটর,
২. ফিস পন্ড এ্যারেটর,
৩. টারবাইন এ্যারেটর,
৪. ডিফিউজার এ্যারেটর, এবং
৫. সাবমারসিবল পাম্প
প্যাডেল হইল এ্যারেটর পুকুরের উপরের স্তরে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। মোটর এর শক্তি ভেদে ২ ইঞ্চি থেকে ৬ ইঞ্চি পর্যন্ত পানির নিচে ডুবানো থাকে। সাধারণত ২০ থেকে ৩০ আরপিএম এ এই হুইলগুলো ঘুরে থাকে। তবে বাণিজ্যিক প্যাডেলগুলো ৯০ আরপিএম এর মতো ঘুরে থাকে যেখান থেকে প্রতি অশ্বক্ষমতার (HP) জন্য ঘণ্টায় ৩ কেজি পর্যন্ত অক্সিজেন তৈরী হতে পারে।
প্যাডেল হুইল এ্যারেটর এর অসুবিধা হল এই ধরনের এ্যারেটর পুকুরের তলদেশে তেমন কাজ করতে পারে না। আমাদের দেশের পুকুরের পরিবেশগত দিক বিবেচনা করলে সাবমারসিবল পাম্প সব থেকে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। কারণ এটি পানির তলদেশ থেকে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে যখন উপরের স্তরে আসে তখন প্রচুর পরিমানে অক্সিজেন পানিতে মেশাতে মেশাতে আসে এবং অধিক অক্সিজেনের কারণে পুকুরের সমগ্র পরিবেশের উন্নতি ঘটে।
বর্তমানে বেশিরভাগ চিংড়ি চাষীদের কাছে কম বিদ্যুৎ খরচের অত্যন্ত দক্ষ বৈদ্যুতিক মোটরসহ এ্যারেটর রয়েছে। এ সমস্ত এ্যারেটর সিস্টেম এর জন্য একটি নির্দিষ্ট শক্তির উৎস প্রয়োজন। হ্যাচারি বিদ্যুতের লাইনের কাছাকাছি থাকলে খুব ভালো হয়। প্রতি ৩০০-৫০০ কেজি অক্সিজেন উৎপাদনের জন্য ১ অশ্বক্ষমতার (HP) এ্যারেটর প্রয়োজন। এক অশ্বক্ষমতা বিশিষ্ট একটি এ্যারেটর এক ঘন্টা চালু থাকলে প্রায় ১ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ খরচ হয়। হেক্টর প্রতি চিংড়ির উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য প্রতি হেক্টরে বিদ্যুৎ খরচের পরিমাণও বৃদ্ধি পাবে।
চিংড়ির ব্রুডস্টক ব্যবস্থাপনার জন্য অভ্যস্তকরণ অত্যন্ত জরুরী। ব্রুড চিংড়ি পরিবহণের পর যে পরিবেশে রাখা হবে তার নিয়ামকগুলোকে সর্বোত্তম রাখা উচিত যাতে গলদা চিংড়ির সর্বোচ্চ বেঁচে থাকার হার নিশ্চিত করা যায়। এর ফলে চিংড়ির পরিপক্ককরণ এবং উর্বরতা বৃদ্ধি পায়। এই ধরনের অভ্যস্তকরণের ফলে চিংড়ির টেকসই উৎপাদন, উৎপাদিত ডিমের সংখ্যা ও গুণগতমান বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও চিংড়ির পরিপক্কতা ও প্রজননের সময় নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। যদি অভ্যস্তকরণ ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠুভাবে পালন না করা হয় তাহলে চিংড়ির উর্বরতার হার হ্রাস পেতে পারে।
তোমার প্রতিষ্ঠানের কাছাকাছি যে কোন চিংড়ি খামার বা ঘের পরিদর্শন কর। এর কর্ম পরিবেশ ও উৎপাদন সংক্রান্ত বিষয়ে নিন্মোক্ত ছকটি পূরণ করো।
পরিদর্শনকৃত চিংড়ি খামারের নাম | |
ঠিকানা | |
কী কী চিংড়ি ব্রুড উৎপাদন করা হয় | |
ব্রুড চিংড়ি উৎপাদনে কী কী উপকরণ ব্যবহার করা হয় | |
খামারে কর্মী সংখ্যা কত? | |
কর্মীগণ কাজের সময় কী কী ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম ব্যবহার করে | |
মৎস্য খামারে কর্মপরিবেশ সম্পর্কে লেখ | |
তোমার নাম শ্রেণি রোল নং প্রতিষ্ঠানের নাম শ্রেণি শিক্ষকের নাম | |
প্রতিবেদন জমাদানের তারিখ | শিক্ষকের স্বাক্ষর |
চিংড়ি খামারে নিরাপদ কাজ করতে কী ধরণের নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিবে তা ছকে লিখ।
ক্রম | কাজের নাম | নিরাপত্তামূলক গৃহীত ব্যবস্থাসমূহ |
---|---|---|
ভালো ফল লাভে প্রতি ১৫ দিন অন্তর জীবাণু নাশক প্রয়োগ করতে হবে | ||
পারদর্শিতার মানদন্ড
ক) ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম
০১. মাস্ক
০২. গ্লাভস্
০৩. স্যানিটাইজার
০৪. অ্যাপ্রন
খ) প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও উপকরণ।
০১. ডিসেক্টিং বক্স
০২. ওয়াক্স টে
০৩ স্পেসিমেন জার
গ) প্রয়োজনীয় মালামাল
০১. স্কুপ নেট/ঝাঁকি জাল
০২. স্বচ্ছ পানি সহ গামলা
০৩. পেনসিল
০৪. রাবার
০৫. খাতা
(ঘ) কাজের ধারা
১. নিকটবর্তী কোনো হ্যাচারি বা গলদা চিংড়ির খামারে গমন করো।
২. হ্যাচারির ব্রুড ট্যাংক থেকে স্কুপ নেট দিয়ে গলদা চিংড়ি সংগ্রহ করো।
৩. ধৃত চিংড়ি গামলার পরিষ্কার পানিতে রাখো।
৪. গামলা থেকে পুরুষ চিংড়িগুলো সরিয়ে ফেলো।
৫. স্ত্রী ডিমওয়ালা চিংড়ি সাবধানে ট্রেতে রাখো।
৬. ডিমওয়ালা চিংড়ি সাবধানে পর্যবেক্ষণ করো।
৭. চিংড়ির দেহের ডিমের অবস্থান, ডিমের বর্ণ, ডিমের আকার ইত্যাদি পর্যবেক্ষণ করো।
৮. অনুশীলনকৃত কার্যক্রমটি ধারাবাহিকভাবে ব্যবহারিক খাতায় লিপিবদ্ধ করো।
কাজের সতর্কতা:
ডিমওয়ালা চিংড়ি খুব সাবধানে নড়াচড়া করতে হবে।
আত্মপ্রতিফলন:
ডিমওয়ালা গলদা চিংড়ি পর্যবেক্ষণ করার দক্ষতা অর্জিত হয়েছে /হয় নাই/আবার অনুশীলন করতে হবে।
পারদর্শিতার মানদন্ড
(ক) ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম
০১. মাক্ষ
০২. গ্লাভস্
০৩. স্যানিটাইজার
০৪. অ্যাপ্রন
(খ) প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি (টুলস, ইকুপমেন্টস, মেশিন)
০১. ডিসেক্টিং বক্স
০২. ওয়াক্স টে
০৩. স্পেসিমেন জার
(গ) প্রয়োজনীয় মালামাল
০১. স্কুপ নেট/ঝাঁকি জাল
০২. স্বচ্ছ পানি সহ গামলা
০৩. পেন্সিল
০৪. রাবার
০৫. খাতা
(ঘ) কাজের ধারা
১. নিকটবর্তী কোনো হ্যাচারি বা গলদা চিংড়ির খামারে গমন করো।
২. হ্যাচারির ব্রুড ট্যাংক থেকে স্কুপ নেট দিয়ে গলদা চিংড়ি সংগ্রহ করো।
৩. ধৃত চিংড়ি গামলার পরিষ্কার পানিতে রাখো।
৪. গামলা থেকে স্ত্রী চিংড়িগুলো সরিয়ে ফেলো।
৫, পুরুষ চিংড়ি সাবধানে ট্রেতে রাখো।
৬. পুরুষ চিংড়ি সাবধানে পর্যবেক্ষণ করো।
৭. চিংড়ির দেহের বিভিন্ন অংশের পর্যবেক্ষণ করো।
৮. অনুশীলনকৃত কার্যক্রমটি ধারাবাহিকভাবে ব্যবহারিক খাতায় লিপিবদ্ধ করো।
কাজের সতর্কতা:
পুরুষ গলদা চিংড়ি খুব সাবধানে নড়াচড়া করতে হবে।
আত্মপ্রতিফলন:
ডিমওয়ালা গলদা চিংড়ি পর্যবেক্ষণ করার দক্ষতা অর্জিত হয়েছে / হয় নাই/আবার অনুশীলন করতে হবে।
পারদর্শিতার মানদন্ড:
(ক) ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম
(খ) প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি (টুলস, ইকুপমেন্টস, মেশিন)
(গ) প্রয়োজনীয় মালামাল
(ঘ) কাজের ধারাঃ
১। ব্রুড চিংড়ি সংগ্রহ করে হ্যাচারিতে এনে একটি পাত্রে ২৫ পিপিএম মাত্রার ফরমালিন দিয়ে জীবাণুমুক্ত করো।
২। এছাড়াও ফরমালিনের পরিবর্তে মা চিংড়িকে হ্যাচারিতে এনে ৫ পিপিএম মাত্রার জীবাণুনাশক দ্রবণে নিয়ে জীবাণুমুক্ত করো।
৩। এক্ষেত্রে চিংড়িকে জীবাণুনাশক দ্রবণে ১ ঘন্টা রেখে দাও।
৪। ব্লুড চিংড়িকে শোধন এর সময় কোনো ধরনের অস্বাভাবিক ক্ষত দেখা গেলে ৫০ পিপিএম মাত্রার অক্সিটেট্রাসাইক্লিন অথবা এজিথ্রোমাইসিন দ্রবনে ১০ মিনিট রাখো।
৫। চিংড়ি শোধন এর পর প্রজননক্ষম চিংড়িকে ৩-৪ দিন ব্রিডিং গ্রাউন্ড এ পরিচর্যা করো।
৬। গৃহীত কার্যপ্রণালী ব্যবহারিক খাতায় লিপিবদ্ধ করো।
কাজের সতর্কতা
১। ব্রুড চিংড়ি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নির্দিষ্ট মাত্রার রাসায়নিক দ্রবণে গোসল করাতে হবে।
২। কাজের সময় গ্লাভস্ ব্যবহার করতে হবে। ৩। কাজের সময় রাসায়নিক দ্রবনের মাত্রা যেন কোন ক্রমেই প্রয়োজনের থেকে বেশি না হয় এ বিষয়ে সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে।
৪। ব্রুড শোধন এর সময় পানির তাপমাত্রা সঠিক পরিমাণে রাখার জন্য সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে।
আত্মপ্রতিফলন
ব্রুড শোধন করার কৌশল অনুশীলন করার বিষয়ে দক্ষতা অর্জিত হয়েছে/হয় নাই/আবার অনুশীলন করতে হবে
পারদর্শিতার মানদন্ড
স্বাস্থ্যবিধি মেনে সুরক্ষা পোশাক পরিধান করা।
কাজের উপযুক্ত স্থান ও কর্মপরিবেশ তৈরি করা
কাজের জন্য উপযুক্ত উপকরণ নির্বাচন ও সংগ্রহ করা।
ব্রুড গলদা চিংড়ির খাদ্য প্রস্তুত করা।
প্রস্তুতকৃত খাদ্য পুকুরে প্রয়োগ করা।
দক্ষতা অর্জনের জন্য জবগুলো বারবার অনুশীলন করা।
(ক) ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরজ্ঞাম
০১. মাক্ষ
০২. গ্লাভস্
০৩. স্যানিটাইজার
০৪. অ্যাপ্রন
০৫. গামবুট
(গ) প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি (টুলস, ইকুপমেন্টস, মেশিন)
০১. ডিজিটাল ব্যালেন্স
০২. গামলা
০৩. বালতি
০৪. মগ
০৫. মিক্সিং মেশিন
০৬. চাটাই
(গ) প্রয়োজনীয় মালামাল
০১. চালের কুড়াঁ গমের ভুষি
০২. চিংড়ির মাথা চূর্ণ
০৩. সরিষার খৈল
০৪. ফিসমিল
০৫. সাবুদানা
০৬. মাছের তৈল
০৭. লবণ
০৮. ভিটামিন
(ঘ) কাজের ধারা
১. উপরে বর্ণিত খাদ্য উপাদানগুলোর নিকটস্থ বাজার থেকে বাজারদর যাচাই করে সংগ্রহ করো।
২. অতঃপর খাদ্য উপাদানগুলোর পরীক্ষাগার কক্ষে নিয়ে এসে শুকনা অবস্থায় ড্রামে ভালোভাবে মিশিয়ে ফেল।
৩. উপাদানগুলোকে উত্তমরূপে মেশানোর পর মগে করে অল্প অল্প পানি দিয়ে সমগ্র মিশ্রণটি ভালোভাবে নেড়ে আঠালো পেস্ট বা মন্ডে পরিণত করো।
৪. এবার এই মন্ডে কিছু অংশ হাতে নিয়ে ছোট ছোট বল তৈরি কর এবং অবশিষ্ট অংশ সেমাই বা মিকিং মেশিন দিয়ে পিলেট খাদ্য তৈরি করো।
৫. পিলেট খাদ্যগুলোকে এবার চাটাই এর উপর ছড়িয়ে দিয়ে রৌদ্রে ভালো করে শুকিয়ে নাও এবং বলগুলোকে ভেজা খাদ্য হিসেবে সরাসরি পুকুরে প্রয়োগ করো।
৬. এবার কাজগুলো ধারাবাহিকভাবে ব্যবহারিক খাতায় লেখ।
কাজের সতর্কতা:
আত্মপ্রতিফলন:
ব্রুড গলদা চিংড়ির খাদ্য প্রস্তুত ও প্রয়োগের দক্ষতা অর্জিত হয়েছে /হয় নাই/আবার অনুশীলন করতে হবে
অতিসংক্ষিপ্ত উত্তর প্রশ্ন:
১. গলদা ব্রুড চিংড়ি মজুদ পুকুরের আয়তন কত ?
২. গলদা ব্রুড চিংড়ি মজুদ পুকুরের গভীরতা কত ?
৩. রাক্ষুসে মাছ দমনে রোটেনন পাউডারের প্রয়োগমাত্রা কত ?
৪. পুকুরে চুন প্রয়োগের মাত্রা কিসের উপর নির্ভরশীল?
৫. পুকুরে সাধারণত কয় ধরনের সার ব্যবহার করা হয়?
৬. পুকুর প্রস্তুতকালীন সময়ে প্রতি শতাংশ পুকুরে কী পরিমাণ গোবর সার প্রয়োগ করা হয়?
৭. মজুদকৃত চিংড়ির দৈহিক ওজনের শতকরা কত ভাগ খাদ্য পুকুরে প্রয়োগ করা হয়?
৮. গলদা চিংড়ির দৈনিক গড় দৈহিক বৃদ্ধি কত?
সংক্ষিপ্ত উত্তর প্রশ্ন:
১. গলদা চিংড়ির ব্রুড মজুদ পুকুরের পাড় কেমন হতে হয়?
২. ব্রুড পুকুরে রোটেনন প্রস্তুতকালীন সময়ে পাউডারের ব্যবহার পদ্ধতি লেখ।
৩. ব্রড পুকুর প্রস্তুতকালীন সময়ে চুন প্রয়োগ পদ্ধতি লেখ।
৪. গলদা চিংড়ির পুকুরে আশ্রয়স্থল স্থাপন করা হয় কেন ?
৫. গলদা চিংড়ির পুকুরে খাদ্য প্রয়োগ পদ্ধতি লেখ।
রচনামূলক প্রশ্ন:
১. গলদা চিংড়ির ব্রুড সংগ্রহ পদ্ধতি বর্ণনা করো।
২. মজুদ পুকুরে গলদা চিংড়ি মজুদ পদ্ধতি বর্ণনা করো।
৩. পলদা ব্রুড পুকুরে এ্যায়ারেটর স্থাপন পদ্ধতি বর্ণনা করো।
আরও দেখুন...