প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর সামাজিক পরিবর্তনের প্রভাব
আজ মুষলধারে বৃষ্টি পড়ছে। রনি, মিলি ও ক্লাসের অনেক বন্ধু স্কুলের বারান্দায় দাঁড়িয়ে মজা করে কাগজের তৈরি নৌকা বানিয়ে বৃষ্টির পানিতে ভাসাচ্ছে।
খুশি আপা সেটি দেখে ওদের সাথে নৌকা ভাসানোর খেলায় যোগ দিলেন।
নৌকা ভাসানো শেষে ওরা সবাই ক্লাসে ফিরে এলো। খুশি আপা সবাইকে বৃষ্টিভেজা দিনের শুভেচ্ছা জানালেন।
আনোয়ার বলল আপা আজ খুব মজা হলো, অনেকদিন পর বৃষ্টির পানিতে নৌকা ভাসালাম।
খুশি আপা বললেন, আমারও খুব মজা লেগেছে, ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল। একবার ভেবে দেখোতো প্রকৃতি কত রুপেই না আমাদের মন ভালো করে চলেছে অবিরাম!
শিহান বলল হ্যাঁ আপা আর আমাদের সব কাজেই আমরা প্রকৃতির থেকে পাওয়া সম্পদকে ব্যবহার করে চলেছি।
রনি বলল, হ্যাঁ ঠিক বলেছ শিহান, যেমন আজ নৌকা ভাসানোতে বৃষ্টির পানিকে ব্যবহার করেছি।
আনুচিং মগিনী বলল শুধু কি তাই! কাগজ ব্যবহার করেছি সেটাও তো গাছ থেকে তৈরি হয়। সেটাও প্রকৃতি থেকেই তো এসেছে।
খুশি আপা বললেন, চলো আমরা এখন কিছু সম্পদের ছবি দেখি।
ছবিতে আমরা যে যে জিনিজগুলো দেখতে পাচ্ছি সেগুলো সম্পর্কে আমরা কী কী জানি?
মিলি বলল, আপা, এখানে যে যে জিনিসের ছবি দেওয়া হয়েছে এগুলো সবই আমাদের বেঁচে থাকার প্রয়োজনে লাগে।
শিহান বলল আর এসব জিনিস আমরা প্রকৃতি থেকেই পাচ্ছি। তাই এগুলো সবই প্রাকৃতিক সম্পদ।
প্রাচীন ও বর্তমান মানুষের সম্পদের ব্যবহার অনুসন্ধান
সময়ের সাথে মানুষের প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহারের পরিবর্তন অনুসন্ধান
সালমা বলল আচ্ছা আপা, এসব সম্পদের ব্যবহার তো মানবসভ্যতার শুরু থেকেই হয়ে আসছে তাই না! তখনও কি মানুষ আমাদের মতো করেই প্রকৃতিকে ব্যবহার করেছে?
খুশি আপা বললেন, খুব ভালো প্রশ্ন সালমা, চলো তাহলে আমরা খুঁজে বের করি প্রাচীন সভ্যতার মানুষ কীভাবে প্রাকৃতিক সম্পদকে ব্যবহার করেছে।
মিলি বলল, আপা এই অনুসন্ধান কাজে তো আমরা আমাদের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ের অনুসন্ধানী পাঠ এর সাহায্য নিতে পারব তাই না?
রনি বলল, এছাড়া ইন্টারনেটের সাহায্যও নিতে পারি।
খুশি আপা বললেন, নিশ্চয়।
তখন ওরা দলে ভাগ হয়ে প্রত্যেক দল একটি করে সভ্যতা বেছে নিলো এবং সেই সভ্যতার মানুষ কী কী এবং কীভাবে প্রাকৃতিক সম্পদ কে ব্যবহার করেছে সেটি অনুসন্ধান করে বের করল।
কাজটি শেষ হলে রনি বলল, আপা আমরা যা অনুসন্ধান করে পেয়েছি তা যদি মানচিত্রে বিভিন্ন সাংকেতিক চিহ্ন ব্যবহার করে উপস্থাপন করি তাহলে কেমন হবে?
মিলি বলল, হ্যাঁ আমরা তো জানি পৃথিবীতে কোথায় কোন সভ্যতা ছিল।
খুশি আপা বললেন, এতো খুবই ভালো প্রস্তাব
তখন ওরা ওদের প্রাপ্ত তথ্য হতে বিভিন্ন প্রাকৃতিক সম্পদকে ভিন্ন ভিন্ন সাংকেতিক চিহ্ন ব্যবহার করে বিশ্ব মানচিত্রে উপস্থাপন করল।
চলো আমরাও ওদের মতো করে প্রাচীন সভ্যতার মানুষের প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহার খুঁজে বের করি | এবং ওপরের মানচিত্রে বিভিন্ন সাংকেতিক চিহ্ন ব্যবহার করে তা উপস্থাপন করি।
কাজটি শেষ হলে খুশি আপা বললেন, আমরা তো দেখলাম প্রাচীন মানুষরা তাদের প্রয়োজনে কীভাবে প্রকৃতিকে ব্যবহার করেছে। আমরাও তো প্রতিনিয়ত আমাদের প্রয়োজনে প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহার করে চলেছি তাই না?
রনি বলল, হ্যাঁ আপা কিন্তু কতটুকু ব্যবহার করছি তা বুঝতে পারছি না।
তখন খুশি আপা বললেন, বেশ তাহলে চলো এটা বের করার জন্য আমরা একটা মজার কাজ করি।
আমরা আমাদের প্রতিদিন কে ৩টি ভাগে ভাগ করি। যেখানে সকাল দুপুর ও রাত এ আমরা আমাদের প্রয়োজনে কীভাবে প্রকৃতিকে ব্যবহার করছি তা লিখে ফেলি।
মামুন বলল যেমন সকালে ঘুম থেকে উঠে আমরা পানি খাই, পানি তো একটি প্রাকৃতিক সম্পদ তাই না!
রনি বলল, শুধু কি তাই আমরা রাতে ঘুমাতে যায় যে খাটে সেটাও তৈরি হয়েছে প্রকৃকির সম্পদ গাছ ব্যবহার করে অথবা লোহা কে ব্যবহার করে তাই না!
খুশি আপা বললেন, একদম ঠিক ধরেছ তোমরা। চলো তাহলে কাজটি করে ফেলি।
সময় | প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহার |
সকাল | |
দুপুর | |
রাত |
সময়ের সাথে মানুষের প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহারের পরিবর্তন ও পরিবেশ
কাজটি শেষ হওয়ার পর সুমন বলল, আপা সেই মানব সভ্যতা শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত আমরা প্রতিনিয়ত আমাদের প্রয়োজনে প্রকৃতিকে ব্যবহার করে চলেছি।
রনি বলল, পৃথিবীতে মানুষের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে, সেই সাথে তো প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহারের মাত্রা ও বাড়ছে তাই না!
মিলি বলল, আর এটার প্রভাব আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশে ও তো পড়ছে তাই না!
খুশি আপা বললেন, তাহলে চলো সময়ের সাথে মানুষের প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহারের যে পরিবর্তন তা আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশের ওপর কী কী প্রভাব ফেলছে তা দলে আলোচনা করে খুঁজে বের করি।
তখন ওরা দলে ভাগ হয়ে মানুষের সম্পদের ব্যবহারের মাত্রার সাথে প্রাকৃতিক পরিবেশের প্রভাব আলোচনা করে খুঁজে বের করল এবং ক্লাসে সবার সামনে তা উপস্থাপন করল।
চলো আমরাও দলে ভাগ হয়ে সময়ের সাথে মানুষের প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহারের ধরন এবং প্রাকৃতিক পরিবেশের উপর তার প্রভাব খুঁজে বের করি।
সামাজিক জীবনে প্রাকৃতিক সম্পদের পরিবর্তনের প্রভাব
অনুসন্ধানের কাজ শেষে মিলি বলল, আপা দিন দিন প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যবহার যে হারে বাড়ছে তাতে এসব সম্পদ কি এক দিন শেষ হয়ে যাবে না?
খুশি আপা বললেন, তা তো যেতেই পারে।
আনুচিং বলল কিন্তু আপা আমরা যদি কোনো সম্পদ যে পরিমান ব্যবহার করব ঠিক সেই পরিমান আবার পূরণ করতে পারি তাহলে তো আর শেষ হওয়ার সম্ভবনা নেই! তাই না?
খুশি আপা বললেন, ঠিকই বলেছ আনুচিং, কিন্তু কিছু সম্পদ আছে যা একবার ব্যবহার করে ফেললে তা পূরণ হতে কয়েক মিলিয়ন বছর লেগে যায়। যেমন- জীবাশ্ম জ্বালানী।
পৃথিবী ও বাংলাদেশে সুপেয় পানির অবস্থা
সালমা বলল আপা আমাদের বেঁচে থাকতে যেসব উপাদান লাগে সেগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে পানি। পৃথিবীতে তো অনেক পানি, তাহলে তো আমরা পানির সমস্যায় কখনও পড়বো না তাই!
মিলি বলল, হ্যাঁ পানি আছে তবে সুপেয় পানি খুব বেশি নেই।
খুশি আপা বললেন, ঠিক বলেছ তোমরা। চলো এখন আমরা একটা মজার কাজ করি। প্রথমে আমরা একটি পৃথিবীর মানচিত্র দেখে পৃথিবীর মহাদেশগুলোর মধ্যে কোন কোন দেশে সুপেয় পানির প্রাচুর্য্য আছে এবং কোথায় কোথায় স্বল্পতা আছে তা খুঁজে বের করব এবং পরে নিচের ছকে গ্লোবের সাহায্যে মহাদেশ অনুযায়ী দেশগুলোর নাম লিখে ছকটি পূরণ করব।
চরম পানি সংকট পূর্ণ দেশ | সংকট পূর্ণ দেশ | পানির সমস্যা হতে যাচ্ছে যে যে দেশে | পর্যাপ্ত পানি আছে | প্রচুর পানি আছে | উদ্বৃত্ত পানি আছে |
---|---|---|---|---|---|
চলো ওদের মতো করে আমরা ছকটি পূরণ করে ফেলি।
কাজটি শেষ করার পর শিহান বলল কি সর্বনাশ, বাংলাদেশে তো পানিসম্পদের অবস্থা খুবই খারাপ দিকে চলেছে।
খুশি আপা বললেন, ঠিকই বলেছ শিহান। আমরা সতিই খুব বিপদের মাঝেই আছি।
মিলি বলল, কিন্তু আপা আমাদের দেশ তো নদীমাতৃক দেশ। তাহলে আমরা কেন পানির অভাবে আছি?
আনুচিং বলল আপা আমরা ষষ্ঠ শ্রেণিতে জেনেছিলাম বাংলাদেশ একটি বদ্বীপ যা গঠিত হয় নদীর দ্বারা, তাহলে তো আমাদের পানির প্রাচুর্য থাকার কথা ছিল কিন্তু তা না হয়ে সংকটপূর্ণ হয়ে গেল কেন?
খুশি আপা বললেন, তোমাদের সব প্রশ্নের উত্তর খোঁজার জন্য আমাদের আগে জানতে হবে কীভাবে বদ্বীপ গঠিত হয়! চলো আমরা কিছু কাজের মাধ্যমে দেখে নিই কীভাবে বদ্বীপ গড়ে ওঠে এবং বাংলাদেশ নামক বদ্বীপ কী কী সমস্যায় পড়তে চলেছে।
প্রথমে আমরা একটি পরীক্ষণ এর মাধ্যমে বদ্বীপ কীভাবে গড়ে ওঠে সেটা দেখব।
উপকরণ
বালি, পানি, টেবিল/অ্যালুমিনিয়াম ট্রে
পদ্ধতি
একটি টেবিলে/অ্যালুমিনিয়াম ট্রে তে বালুর স্তূপ তৈরি করব এবং পানি দিয়ে ভিজিয়ে দেব যেন বালুর দানাগুলি একসাথে লেগে থাকে। বালুর স্তরটি কোথাও উঁচু এবং কোথাও সমতলভাবে তৈরি করব। (এখানে বালি পলি মাটিকে নির্দেশ করে। )
এখন বালুর স্তূপের উপর থেকে পানি ঢালবো এমনভাবে যেন পানি টেবিলের/অ্যালুমিনিয়াম ট্রে ওপর দিয়ে বয়ে যায়।
এখন স্তূপ থেকে পলি ক্ষয়প্রাপ্ত হওয়া এবং স্তূপের সমতল প্রান্ত বরাবর পানি দ্বারা পলির পরিবহন লক্ষ্য করব।
একইভাবে পরীক্ষার পুনরাবৃত্তি করব। কম পানি ঢেলে এবং বেশি পানি ঢেলে পরীক্ষা করতে থাকব এবং লক্ষ রাখব কীভাবে বালুর তৈরি ভূমিরূপটির পরিবর্তন হয়।
ট্রের পানি পড়ার শুরুর স্থান ও শেষ স্থানের বালুর অবস্থা পর্যবেক্ষণ করব।
এরপর বালুর সাথে কিছু নুড়িপাথর যুক্ত করে পানির প্রবাহ দিয়ে দেখব কী কী পরিবর্তন হয়।
এরপর পরীক্ষণের ফলাফল আমরা নিচের ছকে ছবি এঁকে পূরণ করব।
চলো ওদের মতো করে আমাদের বদ্বীপ তৈরি প্রক্রিয়ার পরীক্ষণ টি করে ফেলি।
তথ্য এবং পর্যবেক্ষণ
পানির প্রবাহ হার | পরীক্ষণ ট্রের অবস্থার চিত্র |
বালুতে কম পানির প্রবাহ | |
বালুতে বেশি পানির প্রবাহ | |
নুড়ি যুক্ত বালুতে পানির প্রবাহ |
মিলি বলল, এখন বুঝতে পারলাম আপা এভাবে নদীর দ্বারা পলি এসে জমে জমেই বাংলাদেশ নামক বদ্বীপের জন্ম হয়েছে।
খুশি আপা বললেন, ঠিক তাই মিলি। তবে এটা তৈরি হওয়ার প্রক্রিয়া কিন্তু অনেক দিন ধরেই চলতে থাকে। চলো এখন আমরা আমাদের বাংলাদেশ নামক বদ্বীপের একটি মানচিত্র দেখে এই বদ্বীপে প্রবেশ করা নদীগুলো খুঁজে বের করি এবং এই নদীগুলো কোন কোন দেশের মধ্য দিয়ে এসেছে তা খুঁজে বের করে লিখে ফেলি।
নদীর নাম | যে যে দেশ হয়ে বাংলাদেশে এসেছে |
---|---|
সবার কাজ শেষ হলে খুশি আপা সবাইকে অভিনন্দন জানিয়ে বললেন, তোমরা সবাই খুব সুন্দর করে বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশে আসা নদীগুলো খুঁজে বের করেছ।
শিহান বলল আপা আমার ভাবতেই অবাক লাগছে একই নদীর পানি কিন্তু আমরা কতগুলো দেশের মানুষ সেটা ব্যবহার করছি।
খুশি আপা বললেন, ঠিক শিহান এখন ভাবো তো যদি এই নদীগুলোর ওপর বাঁধ দিয়ে দেওয়া হয় তাহলে কেমন হবে?
শফিক বলল আপা তাহলে তো আমাদের অনেক রকম সমস্যা হতে পারে। কারণ আমাদের দেশের অবস্থান বদ্বীপের নিচের দিকে আর উজান বা ওপরের দিকে যদি বাঁধ দেওয়া হয়, তাহলে তো আমাদের দেশের নদীগুলো ঠিকমতো পানি পাবে না।
মিলি বলল, কিন্তু রনি কর্ণফুলি নদীর ওপর বাঁধ দিয়ে তো জলবিদ্যুৎ প্রকল্পও তৈরি করা হয়েছে এবং জন্ম হয়েছে কাপ্তাই হৃদের।
খুশি আপা বললেন, তোমাদের দুজনেরই কথা সঠিক। তাহলে চলো আমরা বাঁধ নিয়ে একটা অনুসন্ধান কার্যক্রম সম্পন্ন করি।
বাঁধ বলতে এমন একটি প্রতিবন্ধক দেওয়ালকে বোঝানো হয় যেটি জলের প্রবাহকে বাধা দান করে। এটি মূলত কোন স্থানে কৃত্রিম উপায়ে পানি ধরে রেখে এর নিকট বা দূরবর্তী এলাকায় সেচ বা পানীয় জলের কৃত্রিম উৎস এবং বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে ব্যবহার করা হয়।
জামাল বলল খুব ভালো হবে। তাহলে আমরা সবাই বুঝতে পারব বাঁধ নির্মাণের ফলে নদীর বা আশপাশের মানুষের জীবনে এটি কী ধরনের প্রভাব ফেলছে।
খুশি আপা বললেন, ঠিক বলেছ জামাল।
মিলি বলল, আমরা ষষ্ঠ শ্রেণিতে অনুসন্ধানমূলক কাজ করেছি। তাহলে আমাদের সবার প্রথমে সমস্যা/প্রশ্ন তৈরি করতে হবে, যার সমাধান বা উত্তর আমরা খুঁজতে চাই। খুশি আপা বললেন, একদম ঠিক বলেছ মিলি। চলো তাহলে আমরা অনুসন্ধান প্রক্রিয়ার ধাপ অনুসরণ করে আমাদের অনুসন্ধানের কাজ শুরু করি।
চলো আমরাও বন্ধুরা মিলে জলবিদ্যুৎ বাঁধ এবং প্রকল্পগুলো কীভাবে ব-দ্বীপকে প্রভাবিত করতে পারে সেই সম্পর্কিত একটি অনুসন্ধানমূলক কাজ করি। কাজটি করার জন্যে আমরা আমাদের কাছাকাছি কোনো জলবিদ্যুৎ প্রকল্প এলাকা (যদি থাকে) অথবা কোনো বাঁধ এলাকা পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ করব। প্রশ্ন তৈরি করে এলাকার মানুষের সাথে কথা বলব এবং প্রকল্প/বাঁধের ইতিবাচক ও নেতিবাচক প্রভাব অনুসন্ধান করব।
এরপর ওরা সবাই যা জানতে চায় সেই বিষয়ে প্রশ্ন তৈরি করে খুশি আপার সহযোগিতায় এলাকার কাছাকাছি একটি বাঁধ দেওয়া জায়গা পরিদর্শন করল এবং বাঁধের প্রভাব নিয়ে এলাকার বয়স্ক মানুষের সাথে কথা বলল। এরপর আরো কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য তারা ইন্টারনেট ও বিভিন্ন বাঁধ নিয়ে লেখা কিছু বই পড়ে সংগ্রহ করল এবং সবশেষে তথ্য বিশ্লেষন করে ফলাফল তৈরি করল।
অনুসন্ধান কাজের শেষে রনি বলল, আপা আমরা যদি আমাদের অনুসন্ধানের ফলাফল একটি বিতর্ক আকারে উপস্থাপন করি তাহলে কেমন হবে?
খুশি আপা বললেন, এতো খুবই ভালো প্রস্তাব। তাহলে চলো একটি বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করি।
মিলি বলল, কিন্তু বিতর্কের তো একটি বিষয় থাকে এবং কিছু নিয়মও থাকে। আর নিয়ম ছাড়া তো কোনো কিছুই ভালোভাবে করা যায় না।
খুশি আপা বললেন, ঠিক বলেছ মিলি চলো তাহলে প্রথমে আমরা আমাদের বিতর্ক প্রতিযোগিতার কিছু নিয়ম ঠিক করে নিই।
নিয়মাবলি
* প্রথমে আমরা ৫-৬ জনের ৬টি দল গঠন করে ৩ ধাপে বিতর্ক আয়োজন করব। প্রথম ধাপে ২ দল এভাবে পর্যায়ক্রমে ৬টি দল বিতর্কে অংশ নেবে।
* আমরা আমাদের অনুসন্ধান হতে প্রাপ্ত তথ্য এবং ফারাক্কা বাঁধ, টিপাইমুখ বাঁধ, তিস্তা বাঁধ ও কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প এর জন্য কিছু তথ্য ইন্টারনেট/বইয়ের সাহায্যে সংগ্রহ করে একটি লিখিত প্রতিবেদন তৈরি করব
* এরপর বাঁধ নির্মান এবং এর প্রভাবকে কেন্দ্র করে কয়েকটি বিষয় নির্ধারন করে বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করব।
* প্রতিটি দল তাদের প্রাথমিক যুক্তিগুলো উপস্থাপন করার সুযোগ পাবে [৮ মিনিট]।
* যুক্তি খণ্ডন [৬ মিনিট]
* প্রতিটি বিতর্কের উপসংহারে, গ্রুপের বাকিরা তাদের মতামত » প্রদান করতে পারবে।
* নিয়ম তৈরির পর ওরা বিতর্কের জন্য কিছু বিষয় নির্ধারন করল এবং সব শেষে প্রাপ্ত ফলাফলগুলো বিশ্লেষন করে একটি সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর চেষ্টা করল।
বাঁধ বিতর্ক শেষে খুশি আপা সবাইকে অভিবাদন জানালেন এবং বললেন আমরা তো অনেক ধরনের কাজের মাধ্যমে দেখলাম প্রাকৃতিক সম্পদ হিসেবে সুপেয় পানি আমাদের কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এই সুপেয় পানির বাইরে আমাদের আছে এক বিশাল সমুদ্র তাই না!
রনি বলল, হ্যাঁ আপা সমুদ্রেও তো অনেক ধরনের সম্পদ আছে।
খুশি আপা বললেন, ঠিক বলেছ রনি। তোমরা জেনে অবাক হবে যে ২০৫০ সালে পৃথিবীর জনসংখ্যা হবে প্রায় ৯০০ কোটি। এই বিপুল জনগোষ্ঠীর খাবার যোগান দিতে গিয়ে আমাদের সমুদ্রের মুখাপেক্ষী হতেই হবে। সম্প্রতি আমাদের জন্য একটা বিশেষ খুশির কারণ হয়ে উঠেছে এই সমুদ্র। আর এই সমুদ্র সম্পদ নির্ভর অর্থনীতিই হচ্ছে ব্লু-ইকোনমি বা সুনীল অর্থনীতি ।
সবাই আগ্রহ ভরে জানতে চাইল সেটা কী আপা!
খুশি আপা বললেন ঠিক বলেছো রনি। তোমরা জেনে অবাক হবে যে ২০৫০ সালে পৃথিবীর জনসংখ্যা হবে প্রায় ৯০০ কোটি। এই বিপুল জনগোষ্ঠীর খাবার যোগান দিতে গিয়ে আমাদের সমুদ্রের মুখাপেক্ষী হতেই হবে।সম্প্রতি আমাদের জন্য একটা বিশেষ খুশির কারণ হয়ে উঠেছে এই সমুদ্র। আর এই সমুদ্র সম্পদ নির্ভর অর্থনীতিই হচ্ছে ব্লু-ইকোনমি বা সুনীল অর্থনীতি ।
সবাই আগ্রহ ভরে জানতে চাইলো সেটা কি আপা!
খুশি আপা বললেন, তাহলে চল আমরা বাংলাদেশের সমুদ্র জয় এবং সুনীল অর্থনীতি সম্পর্ক জেনে নিই
১৯৮২ সালে আন্তর্জাতিক সমুদ্র আইন United Nation Convention on the Law of the Sea (UNCLOS) -১৯৮২ প্রণীত হয়। এর ৮ বছর পূর্বেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বঙ্গোপসাগরের অপার সম্ভাবনার কথা বিবেচনা করে স্বাধীনতার মাত্র ৩ বছরের মধ্যে 'The Territorial Waters and Maritime Zones Act, ১৯৭৪' প্রণয়ন করেন। সে আইনে বাংলাদেশের উপকূলের বেজলাইন (Baseline) থেকে দক্ষিণে ১২ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত অঞ্চলকে টেরিটোরিয়াল ওয়াটার এবং ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত অঞ্চলকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে দাবি করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশের এ দাবির বিরুদ্ধে ভারত ও মিয়ানমার আপত্তি জানায়। ফলে ৩৮ বছর যাবৎ পার্শ্ববর্তী দুই দেশের সাথে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা অমীমাংসিত রয়ে যায়। পরবর্তীতে ২০০৯ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক আদালতের মাধ্যমে প্রতিবেশী দেশসমূহের মধ্যকার সমুদ্রসীমা বিরোধ মীমাংসার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এর ফলে ২০১২ সালের ১৪ মার্চ International Tribunal for the Law of the Sea-এর রায়ে মিয়ানমারের সাথে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা সংক্রান্ত বিরোধ নিস্পত্তি হয়। এরপর ২০১৪ সালের ৭ জুলাই Arbitral Tribunal-এর রায়ে ভারতের সাথেও বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা বিরোধ মীমাংসা হয়। এ রায়সমূহের ফলে ১,১৮,৮১৩ বর্গকিলোমিটার সমুদ্র এলাকার প্রাণিজ ও খনিজ সম্পদের উপর বাংলাদেশের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। এ বিশাল সমুদ্র জয়ের ফলে বাংলাদেশের সুনীল অর্থনীতির নব দিগন্ত উন্মোচিত হয়। উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক আদালতে মামলাসমূহ পরিচালনায় বাংলাদেশের পক্ষে পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিট এর সচিব রিয়ার এ্যাডমিরাল (অবঃ) খুরশেদ আলম উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন। এ অর্জনে সাচিবিক দায়িত্ব পালনসহ সবরকম কাজে সহযোগিতা করেছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সকল স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী।
সন্নিহিত অঞ্চলে বাংলাদেশের আর্থিক, অভিবাসন, দূষণ, শুল্ক ও কর সংক্রান্ত বিধিবিধান প্রয়োগের অধিকার লাভ করে। বেজলাইন থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত অঞ্চলকে “একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল” (Exclusive Economic Zone) বলা হয়। এ অঞ্চলে বাংলাদেশ সকল প্রকার প্রাণিজ ও খনিজ সম্পদ আহরণ করার অধিকার রাখে। বেজলাইন থেকে ৩৫৪ নটিক্যাল মাইল অঞ্চলকে “মহীসোপান' (Continental Shelf) বলা হয়। মহীসোপান অঞ্চলে বাংলাদেশ সকল প্রকার খনিজ সম্পদ আহরণের সার্বভৌম অধিকার রাখে। ফলে বাংলাদেশের পর্যটন, সামুদ্রিক মৎস্য আহরণ, প্রাকৃতিক সম্পদের খোঁজ, বাণিজ্য এবং জ্বালানি সম্ভাবনা অনেকাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। স্বাধীন বাংলাদেশের স্থলসীমার মোট ক্ষেত্রফল ১ লাখ ৪৮ হাজার ৪৬০ বর্গকিলোমিটার। পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ে বাংলাদেশের অর্জিত সমুদ্রসীমার ক্ষেত্রফল বিদ্যমান স্থলসীমার প্রায় সমআকৃতির।
সবাই আনন্দিত হয়ে হাততালি দিয়ে উঠলো। মিলি বললো আপা তাহলে তো আমাদের বাংলাদেশের মানচিত্রে ও কিছু পরিবর্তন আসবে তাই না!
খুশি আপা বললেন চলো তাহলে দেখি কেমন হয়েছে নতুন সমুদ্র সীমা সহ কেমন হবে বাংলাদেশের মানচিত্র, এবং ছকে আমরা আমাদের সমুদ্রের কোন কোন অঞ্চলে কি কি অধিকার পেলাম তার একটি তালিকা তৈরি করি।
অঞ্চল | কি কি অধিকার পেলাম |
---|---|
ওরা সবাই বাংলাদেশের নতুন সমুদ্রসীমাসহ মানচিত্র দেখে খুবই আনন্দ পেল। খুশি আপা বললেন, চলো এই আনন্দে এখন আমরা একটা মজার কাজ করি। একটি পানির ফোঁটা কে বাঁধের কাছে পৌঁছে দিই যেন সে বাঁধ অতিক্রম করে ওপারে চলে যেতে পারে।
পরের দিন ক্লাসে খুশি আপা এসে সবাইকে শুভেচ্ছা জানালেন।
তখন রনি বলল, আপা আমরা আমাদের পৃথিবীর উপরি ভাগের পানির উৎসগুলো দেখলাম, কিন্তু আমরা যে পানি পান করি তার অধিকাংশই তো আসে মাটির নিচ থেকে। তাহলে মাটির নিচের পানির জন্যেও কি কোনো সমস্যা তৈরি হচ্ছে?
মিলি বলল, রনি আমরা যদি যেকোনো সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার করি তাহলে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয় তাই না আপা?
খুশি আপা বললেন, ঠিক তাই মিলি, যেকোনো সম্পদের পরিমিত ব্যবহারই সেই সম্পদের স্থায়িত্ব বাড়াতে পারে।
চলো আমরা কিছু ছবি দেখি:
উপরে দেখানো ছবিতে পানির উৎসগুলো কোথায়?
এই পানি সাধারণত আমরা কোন কোন কাজে ব্যবহার করি?
মেহবুব বলল আপা এগুলো তো সবই মাটির নিচের পানি যা আমরা সাধারণত পানীয় হিসেবে বা কৃষিকাজে ব্যবহার করে থাকি। তাই এগুলো তো কোনোভাবে বাঁধ দিয়ে আটকে রাখা সম্ভব নয়।
মিলি বলল, তা হয়তো নয় কিন্তু বেশি বেশি তুলে নিলে আর নাও পেতে পারি ।
আনুচিং বলল আপা আমাদের গ্রামের বাড়ি অর্থ্যাৎ বান্দরবানে খাবার পানির খুব সংকট, অনেক দূরের ছড়া থেকে আনতে হয়, কিন্তু যখন বৃষ্টি কম হয় তখন ছড়াগুলো শুকিয়ে যায়, আমাদের তখন অনেক কষ্ট হয়।
খুশি আপা বললেন, আসলে আনুচিং তোমরা যেখানে থাকো সেটা পাহাড়ি এলাকা, ওখানে মাটির নিচে পানির স্তর অনেক নিচে থাকে যার কারণে বৃষ্টি কম হলে বা শুষ্ক মৌসুমে ওখানে অনেক পানির কষ্ট পেতে হয়।
রনি বলল, কিন্তু আপা আমার মামার বাড়ি তো সাতক্ষীরাতে, ওখানে তো পাহাড় নেই কিন্তু ওখানেও খাবার পানির অনেক কষ্ট। আর নলকূপের পানি এত লবনাক্ত যে খাওয়াই যায় না।
মিলি বলল, আমার মনে হয় রনি সাতক্ষীরা তো সমুদ্রের অনেক কাছাকাছি আর আমরা আগেই জেনেছি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যাচ্ছে। তাই হয়তো মাটির নিচের পানির সাথে সমুদ্রের পানি মিশে যাচ্ছে আর নলকূপ দিয়ে লবণাক্ত পানি আসছে।
খুশি আপা বললেন, তোমাদের ধারণা অনেকটাই সঠিক। আচ্ছা চলো আমরা একটা মজার পরীক্ষার সাহায্যে দেখি মাটির নিচে পানির স্তর কেমনভাবে থাকে আর কী কী কারণে কী কী সমস্যা হতে পারে।
ভূপৃষ্ঠের পানি এবং ভূগর্ভস্থ পানির সম্পর্কের পরীক্ষণ:
প্রয়োজনীয় উপকরণ: ১. স্বচ্ছ প্লাস্টিক কাপ ২. বরফ চূর্ণ ৩. ভ্যানিলা আইসক্রিম ৪. স্প্রাইট/সেভেন আপ লিটার (এসব পানীয় দ্রব্য কে কার্বনেটেড পানিও বলা হয় ) ৫. মিনি চকলেট চিপস/বিস্কুটের চূর্ণ ৬. ড্রিংকিং স্ট্র ৭. ফুড কালার
পদ্ধতি:
১. প্রথমে কিছু বরফের টুকরো দিয়ে একটি পরিষ্কার প্লাস্টিকের কাপ এর অর্ধেক পূর্ণ করে আমরা একটি মাটির নিচের জলাভূমি তৈরি করব। বরফের টুকরোগুলো ভূগর্ভস্থ পানি ধরে থাকা নুড়ি গুলোকে বোঝায়।
২. শুধু বরফ ঢেকে কার্বনেটেড পানি যোগ করি। কার্বনেটেড পানি দ্বারা আমরা ভূগর্ভস্থ পানিকে বোঝাব।
৩. এরপর আইসক্রিমের একটি স্তর যুক্ত করি (এটি বেশ শক্তভাবে জলজভূমির উপরে একটি স্তর» হিসাবে দেখাতে হবে)। বাস্তবে বা প্রকৃতিতে, স্তরটি কাদামাটি বা চুনাপাথর এর মতো দুর্ভেদ্য পদার্থ দিয়ে তৈরি যা অভ্যন্তরে ও বাইরে পানির চলাচলে বাধা দেয়।
8. আইসক্রিমের ওপরে মিনি চিপস বা বিস্কুটের চূর্ণ যোগ করি। এটি দ্বারা আমরা মাটির স্তর কে বোঝাব।
৫ . মাটির স্তরের শীর্ষে বা উপরে খাবার রঙের কয়েক ফোঁটা যোগ করি। এই খাদ্য রং দ্বারা আমরা ভূপৃষ্ঠের যেকোনো দূষিত পানি কীভাবে ভূগর্ভস্থ পানিকে দূষিত করতে পারে সেটা দেখব। ভূপৃষ্ঠের পানি দূষণের সম্ভাব্য উৎসগুলো নিয়ে বন্ধুরা আলোচনা করি।
৬. একটি স্ট্র ব্যবহার করে আমাদের জলাভূমির কেন্দ্রে একটি «কূপ» খনন করি। ধীরে ধীরে স্ট্র মুখে নিয়ে তরল টেনে তুলতে শুরু করি। ভূ-জলতল এর পতন খেয়াল করি। খাবারের রঙ কূপের মধ্যে চুইয়ে যাওয়ার এবং শেষ পর্যন্ত ভূগর্ভস্থ পানিতে মিশে যাওয়ার সময় নোট করে রাখি। এছাড়াও লক্ষ্য করি কীভাবে কূপের চারপাশের এলাকা ডেবে যেতে শুরু করে, যা ভূগর্ভস্থ পানির হ্রাসের প্রভাবকে প্রতিনিধিত্ব করে।
৭. ধীরে ধীরে আরও কার্বনেটেড পানি যোগ করে আমাদের জলজভূমিকে পুনরায় ভর্তি করি, যা বৃষ্টির পানির সাথে ভূগর্ভস্থ পানির মিশে যাওয়াকে প্রতিনিধিত্ব করে।
৮. কিছু জায়গায় কৃত্রিম রিচার্জ ব্যবহার করে জলাধারগুলোকে পূরণ করতে পারি। যেমন কূপে ইনজেকশনের মাধ্যমে বা ভূমিপৃষ্ঠের উপর পানি ছড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে যেখানে এটি মাটিতে প্রবেশ করতে পারে। প্রকৃতিতে যখন ভারী বৃষ্টি হয় তখন এভাবে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নতুন করে ভর্তি হয়।
৯. এবার আমরা যা এতক্ষণ পর্যবেক্ষণ করেছি তার সাহায্যে নিচের ছকটি পূরণ করি। ছকে ১, ২, ৩.... সংখ্যাগুলো দ্বারা মাটির নিচে ভূগর্ভস্থ পানির স্তরগুলোকে বোঝানো হয়েছে।
পরীক্ষণ শেষে খুশি আপা বললেন, চলো এবার আমরা আমাদের ভোজ্য জলাশয়টি মজা করে খেয়ে ফেলি।
ক্রম | স্তরের বিবরণ |
---|---|
১ | |
২ | |
৩ | |
৪ | |
৫ | |
৬ | |
৭ | |
৮ |
চলো আমরাও উপরোক্ত পরীক্ষণের মতো করে আমাদের ভূগর্ভস্থ পানির জলাশয়টি বানিয়ে ছকটি পূরণ করে ফেলি এবং সবশেষে সবাই মিলে মজা করে আমাদের জলাভূমিটি খেয়ে ফেলি।
পরীক্ষণ শেষে মিলি বলল, আপা আমরা তো দেখলাম যখন মাটির নিচের পানি আমরা অতিরিক্ত টেনে তুলছিলাম তখন মাটির নিচে ও ওপরে বেশ কিছু পরিবর্তন দেখা যাচ্ছিল।
খুশি আপা বললেন, হ্যাঁ মিলি আমরা যদি আমাদের পরীক্ষণের সাথে প্রকৃতির উপাদানগুলো মিলিয়ে দেখি তাহলে খুব সহজেই আমরা ধরতে পারব কী কী সমস্যা হতে পারে যদি আমরা অনেক বেশি পানি মাটির নিচ থেকে উত্তোলন করি।
শিহান বলল আপা দিনদিন পৃথিবীতে মানুষের সংখ্যা বেড়ে চলেছে, আর এই বেশি মানুষের চাহিদা পূরণের জন্য গড়ে উঠছে বেশি বেশি কলকারখানা।
আনুচিং বলল হ্যাঁ আর কলকারখানায় তো অনেক পানি লাগে। যার ফলে বেশি পানি তোলার প্রয়োজন হবে এবং পানির স্তর ক্রমাগত নেমে যাবে এবং পানি তোলার ব্যয় ও বেড়ে যেতে পারে।
রনি বলল, পানির প্রাপ্যতা কমে পেতে পারে এমনকি ভূগর্ভস্থ পানিতে দূষণের ঝুঁকিও দেখা দিতে পারে।
মিলি বলল, মাটির নিচ থেকে অতিরিক্ত পানি তোলা চলতে থাকলে ভূমিধ্বসের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
খুশি আপা বললেন, চমৎকার তোমরা সবাই যদি এভাবেই সমস্যা চিহ্নিত করতে পারো নিশ্চয় আমাদের দায়িত্ব কী কী হবে সেগুলোও তোমরা খুঁজে বের করতে পারবে তাই না?
ওরা সবাই একসাথে বলে উঠল অবশ্যই আপা।
তখন ওরা দলে ভাগ হয়ে ওদের এলাকার ভূগর্ভস্থ পানি টেকসই ব্যবস্থাপনায় কী কী কর্মসূচী নেওয়া যায় তা ঠিক করল এবং কাজটি শেষ হলে কেউ কেউ লিখে আবার কেউ কেউ ছবি এঁকে তা উপস্থাপন করল।
মিলি ও তার বন্ধুদের তৈরি ভূগর্ভস্থ পানি রক্ষার উপায় সম্পর্কিত পোস্টার
চলো আমরাও আমাদের এলাকায় ভূগর্ভস্থ পানি রক্ষায় কী কী কর্মসূচী নেওয়া যেতে পারে তা বন্ধুরা মিলে ঠিক করি এবং বন্য প্রাণী সংরক্ষণ ক্লাবের সহযোগিতায় তা বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করি।
সালমা আজ ক্লাসে এসে বলল ও আজ স্কুলে আসার সময় শুধু শুকনো খাবার খেয়ে এসেছে কারণ ওদের বাসায় আজ সকাল থেকে রান্নার গ্যাস নেই। [সবাই মিলে কথা বলছে এমন একটি ছবি}
রনি বলল, তাদের বাসায়ও একই অবস্থা।
আনুচিং বলল এই যে আমরা রান্না বা কলকারখানায় গ্যাস ব্যবহার করি বা গাড়িতে যে গ্যাস ব্যবহার করা হয় এই এত এত গ্যাস কোন জায়গা থেকে আসে?
মিলি বলল, কেন আমরা ষষ্ঠ শ্রেণিতে তো জেনেছিলাম প্রাকৃতিক গ্যাস ও একটি সম্পদ।
শিহান বলল হ্যাঁ আর এটি একটি অনবায়ন যোগ্য সম্পদ।
রনি বলল, ও হ্যাঁ কিন্তু যেহেতু এটা অনবায়নযোগ্য সম্পদ তাহলে তো এটা ফুরিয়ে গেলে আর পাওয়া যাবে না!
মিলি বলল, তাহলে তো খুব বিপদ হবে।
এই সময় খুশি আপা ক্লাসে প্রবেশ করে সবাইকে শুভেচ্ছা জানালেন এবং জানতে চাইলেন ওরা কোন বিষয় নিয়ে কথা বলছে।
মিলি বলল, আপা আমরা প্রাকৃতিক গ্যাস নিয়ে কথা বলছিলাম এবং আমাদের খুব দুশ্চিন্তা হচ্ছে যদি প্রাকৃতিক গ্যাস একসময় শেষ হয়ে যায় তাহলে তো আমাদের খুব সমস্যায় পড়তে হবে।
খুশি আপা বললেন, এটা আসলেই চিন্তার বিষয়, তবে যেকোনো সমস্যারই তো কোনো না কোনো সমাধান থাকে তাই না!
রবিন বলল ঠিক তাই আপা এবং আমাদের উচিত দুশ্চিন্তা না করে সেই সমাধানের পথ খুঁজে বের করা।
খুশি আপা বললেন, চমৎকার প্রস্তাব চলো তাহলে আমরা আগে একটি ফ্লো-ডায়াগ্রামের সাহায্যে দেখে নিই প্রাকৃতিক গ্যাস বা এ ধরনের জীবাশ্ম জ্বালানি কীভাবে তৈরি হয়।
১. কোটি কোটি বছর আগে, পৃথিবীর বড় একটা অংশ জলাভূমি দ্বারা আচ্ছাদিত ছিল। যখন জলাভূমির উদ্ভিদগুলো প্রাকৃতিক/অন্য কোনো অজানা কারনে মারা গেল তখন তারা নীচে ডুবে গেল। | |
২. ক্ষয়প্রাপ্ত উদ্ভিদ একটি নরম স্তর তৈরি করল যাকে পিট বলে। সময়ের সাথে সাথে এই পিট কাদা এবং বালুর নিচে চাপা পড়ে গেল। | ৩. সময়ের সাথে ধীরে ধীরে এই কাদা ও বালু পাথরে পরিণত হলো এবং পিট কয়লায় পরিবর্তিত হয়ে গেল। |
জীবাশ্ম জ্বালানি হলো এক প্রকার জ্বালানি যা মৃত উদ্ভিদ ও প্রাণী মাটির নিচে উচ্চ তাপ ও চাপে হাজার হাজার বছর ধরে বায়ুর অনুপস্থিতিতে পচন প্রক্রিয়ায় তৈরি হয়। জীবাশ্ম জ্বালানির উদাহরণ: কয়লা,প্ৰাকৃতিক গ্যাস ও খনিজ তেল।
ডায়াগ্রাম দেখা শেষ হলে রনি বলল, আপা তাহলে তো যেকোনো জীবাশ্ম জ্বালানী তৈরি হতে অনেক অনেক বছর সময় লাগে!
খুশি আপা বললেন, হ্যাঁ রনি ঠিক বলেছ।
আনুচিং বলল আপা আমরা তো জানি যে জীবাশ্ম জ্বালানী একপ্রকার খনিজ সম্পদ। আমাদের দেশেও যেমন নানা ধরনের খনিজ সম্পদ আছে তেমন পৃথিবীর অন্যান্য জায়গাতেও তো আছে তাই না?
খুশি আপা বললেন, আমরা সেটা কিসের সাহায্য নিয়ে বের করতে পারি?
সবাই একসাথে বলে উঠল মানচিত্র ......
তখন খুশি আপা বললেন, চলো তাহলে পৃথিবীর মানচিত্র ও বাংলাদেশের মানচিত্রের সাহায্যে খুঁজে বের করি পৃথিবীর ও বাংলাদেশের কোথায় কোথায় কী কী ধরনের খনিজ সম্পদ আছে এবং তা ছকে পূরণ করে ফেলি।
পৃথিবীর মানচিত্র হতে প্রাপ্ত তথ্য পূরণের ছক
খনিজ সম্পদের নাম | বিদ্যমান মহাদেশের নাম |
---|---|
বাংলাদেশের মানচিত্র হতে প্রাপ্ত তথ্য পূরণের ছক
খনিজ সম্পদের নাম | বিদ্যমান স্থানের নাম |
---|---|
ছক পূরণের কাজটি শেষ হলে সালমা বলল আপা আমরা অনেক ধরনের খনিজ সম্পদ দেখলাম, আবার আমাদের বাংলাদেশেও অনেক ধরনের খনিজ সম্পদ আছে। এখন যদি আমরা একটি প্রকল্পভিত্তিক কাজ এর মাধ্যমে এসব সম্পদ কী অবস্থায় আছে, কোন সম্পদ কী কী কাজে লাগে অথবা এসব সম্পদ উত্তোলনের সময় কী কী পরিবেশ গত সমস্যা হতে পারে এবং এসব সম্পদ ব্যবস্থাপনার উপায় বের করে আনতে পারি তাই না আপা!
খুশি আপা বললেন, খুব ভালো প্রস্তাব তোমরা প্রকল্পভিত্তিক কাজ ষষ্ঠ শ্রেণিতে করেছ। তাহলে তোমরা তোমাদের কাজ শুরু করে দাও।
তখন ওরা প্রথমে দলে ভাগ হয়ে প্রত্যেক দল একটি করে খনিজ সম্পদ বেছে নিল। তারপর ওরা যা যা জানতে চায় সেসব বিষয়ের ওপর প্রশ্ন তৈরি করল।
প্রশ্ন:
|
প্রশ্ন তৈরি করা হলে সাফিন ওর বন্ধুদের বলল এখন তথ্য সংগ্রহ করার কাজটি আমরা কীভাবে করতে পারি?
রনি বলল, সব থেকে ভালো উপায় আমরা যদি সরাসরি একটি খনি এলাকা দেখতে যায়, আর আমাদের দেশে তো অনেক বড় বড় কয়লাখনি আছেই।
রবিন বলল খুব ভালো প্রস্তাব।
শিহান বলল আমার এক চাচা আছেন যিনি বড়পুকুরিয়া কয়লাখনিতে কাজ করেন। আমরা তার সাহায্য নিতে পারি।
মিলি বলল, এতো অনেক ভালো প্রস্তাব এছাড়া আমরা ইন্টারনেট থেকে ভিডিও, তথ্য অথবা এই বিষয়ের ওপর লেখা বইয়ের সাহায্য নিতে পারি।
রনি বলল, অবশ্যই তা করতে হবে। কারণ এটি প্রকল্পভিত্তিক কাজ আর এ কাজে বিদ্যমান তথ্য পর্যালোচনা একটি ধাপ আছে তাই না?
শিহান বলল ঠিক বলেছ রনি, আর এবার আমাদের প্রকল্পের ফলাফল আমরা ইলেকট্রনিক পত্রিকা/হাতে তৈরি পত্রিকা তৈরি করে প্রকাশ করব কেমন হবে?
মিলি বলল, এটা অনেক ভালো প্রস্তাব, কারণ আমরা ডিজিটাল প্রযুক্তি ক্লাসে তো এটা শিখেছি। আর ই-পত্রিকার মাধ্যমে আমরা আমাদের বিদ্যালয়ের বাইরেও অনেককে খুব সহজেই আমাদের কাজ সম্পর্কে জানাতে পারব।
এরপর ওরা সবাই খুশি আপার সহযোগিতায় ওদের এলাকার কাছাকাছি একটি কয়লাখনিতে ভ্রমণের নিয়মাবলি মেনে পরিদর্শন করল। পরে প্রকল্পের কাজটি শেষ করে ওদের প্রাপ্ত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে একটি ইলেকট্রনিক পত্রিকা তৈরি করল।
পত্রিকার কাজ শেষ হলে খুশি আপা বললেন, তোমরা অনেক সুন্দরভাবে বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক সম্পদকে কীভাবে আমরা আমাদের সুষ্ঠু ব্যবহারের মাধ্যমে টিকিয়ে রাখতে পারি তা দেখিয়েছো।
সম্পদের ব্যবহার ও টেকসই উন্নয়ন
কাজটি শেষ হলে আনুচিং বলল আপা আমরা তো দেখলাম পৃথিবী এবং বাংলাদেশে কী কী ধরনের প্রাকৃতিক সম্পদ আছে আর মানুষ নিজেদের প্রয়োজনে কীভাবে এসব সম্পদ দিন দিন ব্যবহারের হার বাড়িয়ে দিচ্ছে। এসব দেখে আমার খুব দুশ্চিন্তা হচ্ছে ।
খুশি আপা বললেন, কী ধরনের দুশ্চিন্তা আনুচিৎ ?
আনুচিং বলল আপা দিন দিন তো মানুষের সংখ্যা বাড়ছে কিন্তু এসব সম্পদের পরিমাণ তো দিন দিন কমছে, আর একবার শেষ হয়ে গেলে তো আর এটা সহজে পাওয়া যাবে না! তাহলে আমাদের কি এসব সম্পদ ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়া উচিত?
মিলি বলল, কিন্তু ব্যবহার বন্ধ করে দিলে তো আমাদেরও অনেক অসুবিধায় পড়তে হবে! পানি ছাড়া বেঁচে থাকব কি করে! এক দিন বাসায় গ্যাস নেই সে জন্যই খাবারের কত কষ্ট পেলাম !
রনি বলল, তাহলে উপায়!
শিহান বলল আমরা যদি এসব সম্পদের ব্যবহারে যত্নবান হই অর্থ্যাৎ অপচয় না করি তাহলে নিশ্চয় কিছুটা খরচ কম হবে তাই না?
রনি বলল, আবার যদি অন্য কোনো উৎস খুঁজে পাই! যেমন- সৌরশক্তিকে তো কাজে লাগানো যেতে পারে, এটা তো সহজে শেষ হবে না তাই না?
মিলি বলল, বাতাসের শক্তিকে আবার বৃষ্টির পানিকে ও কাজে লাগাতে পারি !
খুশি আপা বললেন, অর্থ্যাৎ তোমরা বলতে চাইছ আমরা যদি সম্পদের সুষ্ঠু ও পরিমিত ব্যবহার করতে পারি তাহলে কিছুটা সমস্যা কম হতে পারে তাই তো?
সবাই একসাথে বলল ঠিক তাই আপা।
খুশি আপা বললেন, আমরা এতক্ষণ যেভাবে সম্পদ ব্যবস্থাপনার কথা বলছি এটাকে বলে টেকসই ব্যবস্থাপনা। আর কোনো কিছুর ব্যবস্থাপনা টেকসই করতে গেলে প্রথমে সেটি সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হবে।
উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের মাধ্যমে বর্তমান প্রজন্মের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি সেসব উন্নয়ন কর্মকান্ড যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের চাহিদা মেটানোর ক্ষেত্রে ঘাটতি বা বাঁধার কোন কারণ হয়ে না দাঁড়ায়, সেদিকে বিশেষভাবে লক্ষ্য রেখে পরিকল্পিত উন্নয়নই হলো টেকসই উন্নয়ন বা Sustainable Development |
রনি বলল, আপা এই পৃথিবী আমাদের বেঁচে থাকার সবকিছুই দিয়েছে। এখন আমাদের সময়, আমাদের এমন কিছু কাজের দায়িত্ব নিতে হবে যে কাজের মাধ্যমে পৃথিবীর সকল সম্পদ যেমন আমরা ব্যবহার করে বেঁচে আছি তেমনিভাবে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মও ব্যবহার করে বেঁচে থাকতে পারে।
মিলি বলল, ঠিক তাই নাহলে তো এই পৃথিবীতে মানবসভ্যতা আর টিকে থাকতে পারেনা।
খুশি আপা বললেন, তোমাদের কথা একদম সঠিক। তাহলে এখন আমাদের করণীয় কি হতে পারে?
মিলি বলল, আপা আমরা যদি আমাদের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ক্লাব ও সক্রিয় নাগরিক ক্লাবের মাধ্যমে এমন কিছু কাজের তালিকা তৈরি করে বাস্তবায়নের চেষ্টা করি, যা এসব সম্পদের টেকসই ব্যবহার নিশ্চিত করবে তাহলে কেমন হবে?
রনি বলল, খুবই ভালো প্রস্তাব
চলো তাহলে আমরা কীভাবে সম্পদের ব্যবহার টেকসই করা যায় এবং আমাদের সবার পরিবারে, আমাদের বিদ্যালয় অথবা আমাদের এলাকায় সেসব কাজ বাস্তবায়নের উপায়সমূহ আলোচনা করে বের করি।
তখন ওরা দলে ভাগ হয়ে পরিবার, বিদ্যালয় ও নিজেদের এলাকায় সম্পদের টেকসই ব্যবহারে ভূমিকা রাখে এমন কিছু কাজের তালিকা তৈরি করল যা তারা বছরব্যাপী নানা কার্যক্রমের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করবে।
পরিবারে সম্পদের টেকসই ব্যবহারমূলক কাজ :
১. ব্যবহারের সময় ছাড়া পানির কল বন্ধ রাখা
২. ঘর থেকে বের হওয়ার সময় বিদ্যুতের সুইচ বন্ধ করা
৩. বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করা।
8. ………………………………………………………………………………
৫. ………………………………………………………………………………
৬. ………………………………………………………………………………
বিদ্যালয়ে সম্পদের টেকসই ব্যবহারমূলক কাজ :
১. বিদ্যালয়ে যেখানে বর্জ্য উৎপন্ন হয় তা পর্যবেক্ষণ করা এবং যেখানে পুনর্ব্যবহার হতে পারে তা নোট করা।
২. শ্রেণিকক্ষ এবং বিদ্যালয়ের অন্যান্য এলাকায় আলো বন্ধ করে রাখা যখন সেগুলি ব্যবহার করা হয় না।
৩. শক্তি সংরক্ষণের জন্য ব্যবহার না করার সময় কম্পিউটারগুলোকে স্লিপ মোডে রাখতে সবাই কে অনুরোধ করা।
8. ………………………………………………………………………………
৫. ………………………………………………………………………………
৬. ………………………………………………………………………………
সমাজে সম্পদের টেকসই ব্যবহারমূলক কাজ:
১. বর্জ্য ব্যবস্থাপনার অংশ হিসেবে পচনশীল ও অপচনশীল এই দুই ধরনের বর্জ্য আলাদা করে সংগ্রহ করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদ/পৌরসভায় অনুরোধ পত্র প্রেরণা।
২. এলাকায় পুকুর, খাল বা অন্যান্য পানির উৎস যা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে তা পুনরায় ব্যবহার যোগ্য করে তোলার জন্য ইউনিয়ন পরিষদ/পৌরসভায় অনুরোধ পত্র প্রেরণ।
৩. এলাকায় পানি, গ্যাস, বিদ্যুৎসহ সব ধরনের প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহারে সচেতনতামূলক পোস্টার বিলি করা।
8. ………………………………………………………………………………
৫. ………………………………………………………………………………
৬. ………………………………………………………………………………
শেষে ওরা পরিবার ও বিদ্যালয়ের যে যে কাজ এর তালিকা করেছিল সেগুলো বাস্তবায়ন শুরু করল আর এলাকার টেকসই উন্নয়নমূলক কাজগুলো এলাকার অবসরপ্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তা ও বয়স্ক ব্যক্তিদের সহযোগিতায় বাস্তবায়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করল।
খুশি আপা ওদের কাজ দেখে খুব খুশি হলেন, বললেন তোমরাই পারবে এক দিন এই পৃথিবীটাকে বদলে দিতে।
আরও দেখুন...