তরঙ্গ নিয়ে আলোচনা করার সময় তার কয়েক ধরনের বৈশিষ্ট্যের কথা উঠে এসেছে, এখানে আমরা তরঙ্গের, বিশেষ করে যান্ত্রিক তরঙ্গের সব বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা করব।
(i) যান্ত্রিক তরঙ্গের জন্য মাধ্যমের দরকার হয়। পানিতে ঢেউ হয়, একটা স্প্রিংয়ে তরঙ্গ পাঠানো যায়, একটা দড়িতে তরঙ্গ সৃষ্টি করা যায়। আমরা যে শব্দ শুনি সেটাও একটা তরঙ্গ এবং তার মাধ্যম হচ্ছে বাতাস।
(ii) একটা মাধ্যমের ভেতর দিয়ে যখন তরঙ্গ যেতে থাকে তখন কণাগুলো নিজ অবস্থানে থেকে স্পন্দিত হয় (কাঁপে কিংবা ওপর-নিচে যায়) কিন্তু কণাগুলো নিজে তরঙ্গের সাথে সাথে সরে যায় না।
( iii) তরঙ্গের ভেতর দিয়ে শক্তি এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে পারে। শক্তি যত বেশি হয় তরঙ্গের বিস্তার তত বেশি হয়। শক্তি তরঙ্গের বিস্তারের বর্গের সমানুপাতিক। অর্থাৎ বিস্তার বদি দ্বিগুণ হয় শক্তি হয় চার গুণ।
(iv) সব তরঙ্গেই একটা বেগ থাকে সেই বেগ তার মাধ্যমের প্রকৃতির ওপর নির্ভর করে। বাতাসে শব্দের বেগ 330 m/s পানিতে এই বেগ 1493m/s। ঢিলে একটা দড়িতে একটা তরঙ্গের যত বেগ হবে টান টান করে রাখা দড়িতে হবে তার থেকে বেশি।
(v) তরঙ্গের প্রতিফলন কিংবা প্রতিসরণ হয়, পরের অধ্যায়ে আলোর জন্য এটি অনেক বড় করে আলোচনা করা হয়েছে। আপাতত জেনে রাখ এক মাধ্যম থেকে অন্য মাধ্যমে যাবার সময় তরঙ্গের খানিকটা যদি প্রথম মাধ্যমে ফিরে আসে সেটা হচ্ছে প্রতিফলন।তরঙ্গ যখন প্রথম মাধ্যম থেকে দ্বিতীয় মাধ্যমে যায় সেটা হচ্ছে প্রতিসরণ। আমরা যখন শব্দের প্রতিধ্বনি শুনি সেটা হচ্ছে শব্দের প্রতিফলন। পানিতে ডুবে থাকা অবস্থায় যদি বাইরের শব্দ শুনি সেটা হচ্ছে প্রতিসরণ।
(vi) তরঙ্গের যতগুলো বৈশিষ্ট্য আছে, তার মাঝে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে উপরিপাতন, যদিও আমাদের দৈনন্দিন জীবনে সেটা আমাদের খুব বেশি চোখে পড়ে না। ধরা যাক দুটি ভিন্ন ভিন্ন জায়গা থেকে এক জায়গার দুটি তরঙ্গ এসে হাজির হয়েছে। একটি তরঙ্গ যখন মাধ্যমটিকে উপরে তুলতে চেষ্টা করছে অন্যটি তখন তাকে নামানোর চেষ্টা করছে, তখন কী হবে? এগুলো হচ্ছে উপরিপাতনের বিষয়, যখন তরঙ্গের আরো গভীরে যাবে তখন বিষয়গুলো আরো ভালোভাবে জেনে যাবেদুটো তরঙ্গ একটি আরেকটিকে বড় করে দিতে পারে আবার একটি আরেকটিকে ধ্বংসও করে দিতে পারে।
আরও দেখুন...