আমরা প্রত্যেক বাড়িতেই দৈনন্দিন কাজে বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে থাকি। আমাদের আশেপাশের ওয়েভিং সপে বিভিন্ন ধরনের জানালার গ্রিল, লোহার ফার্নিচার ইত্যাদি ওয়েল্ডিং করার কাজে বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এসব যন্ত্রপাতির মধ্যে কিছু আমাদের পরিচিত আর কিছু অপরিচিত। আমরা পর্যায়ক্রমে এ যন্ত্রপাতিগুলোর যথাযথ ব্যবহারের দক্ষতা অর্জন করে আমাদের পছন্দের জিনিস তৈরি করব। এগুলো ব্যবহারে সতর্কতাসমুহ এবং এগুলো যথাযথ সংরক্ষণের পদ্ধতিসমূহ শিখবো। এই অধ্যায় পাঠ শেষে আমরা-
পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা অনুশীলন করতে পারব;
হ্যান্ড টুলস ব্যবহার করতে পারব;
পাওয়ার টুল'স ব্যবহার করতে পারব;
টুল'স সমূহ যথাযথভাবে পরিষ্কার ও সংরক্ষণ করতে পারব।
ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে ওয়েল্ডিং কাজে টুলস ও ইকুপমেন্ট দুই প্রকারের হয়ে থাকে। যেমন-
১। হ্যান্ড টুল' (Hand Tools)
২। পাওয়ার 'টুল'স (Power Tools)
যে সমস্ত টুলস হাতে চালনা করে ব্যবহার করা হয় সেগুলোই হ্যান্ড টুলস। ওয়েস্তারগণ যে সমস্ত টুলস ওয়েল্ডিং করার সময়, আগে ও পরে হাতে চালনা করে ওয়েল্ডিং কাজসমূহ সম্পন্ন করে থাকে, সেগুলোকে 'ওয়েডিং হ্যান্ড টুন'স বলে। যেমন-বল দিন হ্যাগার, চিপিং হ্যামার, ফাইল, হ্যাকস, কোষ্ণ চিজেল ইত্যাদি। সাধারণত এ ধরনের টুল'স বিদ্যুৎ শক্তি চালিত হয় না। এ ধরনের টুল'স ওজনে হালকা ও খুব সহজে ও নিরাপদে ব্যবহার করা যায়।
একজন ওয়েন্ডার ওয়েল্ডিং এর আগে বা পরের কাজগুলো করার জন্য পাওয়ার বা বিদ্যুৎ শক্তি ব্যবহার করে যে সমস্ত টুলস ব্যবহার করে থাকে সেগুলোকেই মূলত পাওয়ার টুলস বলে। সাধারণত এ ধরনের টুলস ওজনে অপেক্ষাকৃত তারি ও অধিক সতর্কতার সাথে এগুলো ব্যবহার করতে হয়। যেমন-হ্যান্ড গ্রাইন্ডার, পাওয়ার ছিল ইত্যাদি।
একজন ওয়েল্ডার যে সমস্ত যন্ত্রপাতি হাতে চালনা করে সেইগুলি হল একজন ওয়েল্ডারের হ্যান্ডটুল। ওয়েল্ডার ওয়েল্ডিং কাজের পূর্বে জোড়াস্থান তৈরির জন্য স্থান চিহ্নিত করে, ধাতু কাটে, ক্ষয় করে, মাপ নেয়, পিটিয়ে ধাতুর আকৃতি পরিবর্তন করে এইরূপ বিভিন্ন রকমের কাজ করে, এই কাজগুলি করার জন্য যে টুলসগুলি ব্যবহৃত হয় সেগুলি হলো-
এটি এক ধরনের ছোট ছোট দাঁতসম্বলিত করাত। হ্যাকস বিভিন্ন ধাতব শক্ত কাটার জন্য ডিজাইন করা হলেও এর সাহায্যে প্লাস্টিক ও কাঠ জাতীয় বস্তুও বেশ আয়াশেই কাটতে পারা যায়। C-আকৃতির একটি ফ্রেমের দুই প্রান্তে ছোট দু'টি পিন বা স্টাড (Stud) আছে, যেখানে নতুন নতুন ব্ৰেড লাগানো যায়। হাতে ধরার জন্য এক প্রান্তে একটি হাতল (Handle) আছে।
হ্যাক'স ফ্লেম দুই প্রকার। যথা-
১) সলিড ফ্রেম (Solid Frame)
এ ধরনের ফ্রেমের দৈর্ঘ্য কম বেশি বা ছোট বড় করা যায় না। ফলে এ ফ্রেমে কেবলমাত্র একই দৈর্ঘ্য মাপের ব্লেড লাগানো যায়। নিচের চিত্র-১.১৬ এবং চিত্র-১.১৭-এ দুই ধরনের হাতলওয়ালা সদিড ফ্রেম হ্যাকস দেখানো হলো।
২) অ্যাডজাস্টেবল ফ্রেম (Adjustable Frame):
এ ধরনের ফ্রেমের দৈর্ঘ্য প্রয়োজনে ছোট বড় করা যায়। ফলে এ ফ্রেমে বিভিন্ন দৈর্ঘ্য মাপের রেড লাগানো যায়। নিচের চিত্র-১.১৮ (ক) ও ১.১৮ (খ) তে দু'ধরনের এডজাস্টেবল হ্যাক'স ফ্রেম দেখানো হলো। প্রথম ধরনের ফ্রেমকে ভেঙ্গে নিয়ে এবং দ্বিতীয় ধরনের ফ্রেমের [চিত্র. ১.১৮(খ)] অ্যাডজাস্টিং পিনখুলে ব্রেডের মাগ মোতাবেক সমন্বয় করে লাগানো যায়।
হ্যাক'স ব্লেড (Hacksaw Blade):
হ্যাকস ব্ৰেডই সুলভ হ্যাকস এর কাটার কাজ সম্পন্ন করে। এ ব্রেডের দুই প্রান্তে দু'টি ছিদ্র থাকে- এ ছিদ্র দুটির কেন্দ্রের মধ্যবর্তী দূরত্বকেই ব্রেডের দৈর্ঘ্য বলে (চিত্র ১.১৯)। বাজারে প্রচলিত রেডগুলির দৈর্ঘ্য ২৫০ মিলিমিটার হতে ৩০০ মিলিমিটার, তবে ১৫০ মিলিমিটার দৈর্ঘ্যরে ব্রেডও পাওয়া যায়। এগুলো চওড়া ১২ মিলিমিটার হতে ১৬ মিলিমিটার এবং পুরুত্ব ০.৭৫ মিলিমিটার হতে ১.৬ মিলিমিটার হয়ে থাকে; তবে ০.৬৩ মিলিমিটার পুরুত্বের ব্রেডই সচরাচর ব্যবহৃত হয়। প্রতি ইঞ্চিতে দাঁতের সংখ্যা বিভিন্ন হলেও, ওয়ার্কশপে সাধারণত কাজের জন্য প্রতি ইঞ্চিতে ১৪ দাঁতের ব্রেড ব্যবহৃত হয়। মোটা বা বেশি পুরুত্বের ধাতু কাটার জন্য প্রতি ইঞ্চি অল্প দাঁত সংখ্যা বিশিষ্ট ব্রেড ব্যবহৃত হয়। কোন একটি ধাতু কাটার সময় লক্ষ্য করা উচিত যে স্থানটি কাটা হচ্ছে সেই স্থানের উপর কমপক্ষে দুই বা তিনটি দাঁতের সংকুলান হতে হবে নতুবা ব্লেড ভেদে যাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে।
কাঠিন্যতার উপর নির্ভর করে হ্যাকস ব্লেড দুই ধরনের হয়ে থাকে। যথা- ১) জন হার্ড হ্যাকস ব্রেড (All Hard Hacksaw Blade): এটি অপেক্ষাকৃত হার্ড বা কঠিন, তবে দাঁত ভাঙ্গার পূর্ব মুহুর্ত পর্যন্ত এর ধার বজায় থাকে (চিত্র-১.১৮)। এ ধরনের রেড অত্যন্ত সতর্কতার সাথে ব্যবহার করতে হয়; কারণ একটু বেশি চাপ পড়লেই ব্লেড ভেঙ্গে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
২) ফ্লেক্সিবল ব্যাক হ্যাকস ব্রেড (Flexible Back Hacksaw Blade ) :
এ ব্লেডের কেবলমাত্র দাঁতগুলো হার্ড এবং ব্লেডের ব্যাকিং (Backing) ফ্লেক্সিবল যাতুর পাত দিয়ে গঠিত হওয়ায় এটি অলহার্ড ব্লেড অপেক্ষা কম ভঙ্গুর (Less Brittle) হয়; তবে এর ধার অতি দ্রুত ভোতা হয়ে যায়। একটু বেশি চাপ পড়লেও ব্রেড সহজে ভেঙ্গে যায় না। অস্বাভাবিক পরিস্থিতি ও অল্প স্পেসে কাজ করার জন্য এ ধরনের ব্রেড খুবই উপযোগি। এ ব্লেড গুলো আবার একদিকে দাঁতবিশিষ্ট (চিত্র-১.২১ (ক)] ও উভয়দিকে দাঁত বিশিষ্ট (চিত্র 1.21 (7) } হয়ে থাকে।
হ্যাকস রেডের গীত সংখ্যা
হ্যাকস ব্রেডের প্রতি ইঞ্চিতে দাঁতের সংখ্যা (Tooth Per Inch) কে সংক্ষেপে TPI বলে (চিত্র-১.২২)।
দাঁত (Teeth) সংখ্যার উপর নির্ভর করে হ্যাকস ব্লেড চার ধরনের হয়ে থাকে। যথা- ১. কোর্স গ্রেড হ্যাক'স ব্লেড (Course Grade Hacksaw Blade) এ ব্লেড নরম ধাতু যেমন-মাইল্ড স্টিল (Mild Steel), অ্যালুমিনিয়াম (Aluminium), পিতল (Brass) ইত্যাদি ধাতু কাটার কাজে ব্যবহৃত হয়। এ ধরনের ব্লেড প্রতি ইঞ্চিতে ১৪ হতে ১৮ টি দাঁত ( ১৪ to ১৮ TPI) থাকে।
২. মিডিয়াম গ্রেড হ্যাক'স ব্লেড (Medium Grade Hacksaw Blade)
এ ব্লেড সব ধরনের ধাতু যেমন-ঢালাই লোহা (Cas Iron), টুল স্টিল (Tool Steel), অ্যালুমিনিয়াম, পিতল, হাই কার্বন স্টিল (High Carbon Steel) ইত্যাদি ধাতু কাটার কাজে ব্যবহৃত হয়। এ ধরনের ব্লেডে প্রতি ইঞ্চিতে ২০ হতে ২৪ টি দাঁত (20 to 24 TPI) থাকে।
৩. ফাইন গ্রেড হ্যাক’স ব্লেড (Fine Grade Hacksaw Blade )
এ ব্লেডে প্রধানত পাতলা পাইপ (Thin pipe), শিট (Sheet), টিউব (Tube) ইত্যাদি ধাতু কাটার কাজে ব্যবহৃত হয়। এ ধরনের ব্লেডে প্রতি ইঞ্চিতে ২৪ হতে ৩০ টি দাঁত (24 to 30 TPI) থাকে। ৪. সুপার ফাইন গ্রেড হ্যাকস ব্লেড (Super Grade Hacksaw Blade )
সব ধরনের অস্বাভাবিক শক্ত ধাতু ও পাতলা ধাতব শিট (Thin Metal Sheet) কাটতে এক ধরনের পাতলা ব্লেড ব্যবহৃত হয়। এ ধরনের ব্লেডে প্রতি ইঞ্চিতে ৩০ হতে ৩২ টি দাঁত থাকে। উপর্যুক্ত চার ধরনের ব্লেডেরই এক অথবা উভয় পাশে দাঁত কাটা থাকে।
হ্যাক'স দিয়ে ধাতু কাটার সময় ধাপগুলো অনুসরণ করতে হবে:
১. যে ধাতু কাটতে হবে, সে ধাতুর উপযোগী হ্যাকস ব্লেড নির্বাচন করতে হবে।
২. হ্যাক'স ফ্রেমে ব্লেড আটকানোর সময় নিশ্চিত হতে হবে যেন এর দাঁতগুলো এমনভাবে থাকে যাতে সামনের দিকে চালনার সময় ধাতু কাটে (চিত্র-১.২৩)।
৩. কার্যবস্তুটি এষনভাবে বেঞ্চ তাইসে আটকাতে হবে যাতে কাটিং লাইন (Cutting Line) স্পষ্টভাবে দেখা যায় (চিত্র-১.২৪)।
৪. হ্যাকস ব্লেড দিয়ে ধাতু কাটা শুরু করার আগে ব্লেডটি চিত্র অনুযায়ী মার্কিং লাইনের উপর এমনভাবে রাখতে হবে যাতে বাম হাতের বুড়া আঙ্গুল চিত্র-১.২২ অনুযায়ী রেডকে সাপোর্ট (Suport) দিয়ে রাখে। এটা নিশ্চিত করতে হবে যে ব্লেডটি কেবলমাত্র লাইন বরাবরই চলবে এবং কোন অবস্থাতেই পিছলে যাওয়ার ঝুঁকি থাকবে না।
৫. বাম হাতের বুড়া আঙ্গুলের সাপোর্ট দিয়ে মার্কিং করার পর চিত্র-১.২৫ অনুযায়ী ডান হাতের তালু এবং আঙ্গুলগুলো দিয়ে হ্যাকস এর হাতল এবং বাম হাতের তালু এবং আঙ্গুলগুলো দিয়ে হ্যাকস এর সামনের দিকে ধরতে হবে।
৬. ভাইসের বামদিকে দাঁড়িয়ে ডান পা পিছনে এবং বাম পা ডান পা থেকে একটু সামনের দিকে এগিয়ে রাখতে হবে।
৭. কাৰ্যবস্তু এমনভাবে সংযোগ করতে হবে যাতে কমপক্ষে ব্লেডের তিনটি দাঁত কার্যবস্তু ভলের সংস্পর্শে থাকে (চিত্র ১.২৭)।
৮. হ্যাক'স চালনা করার গতি (Stroke) প্রতি মিনিটে ৪০ হতে ৫০ হওয়া উচিত (চিত্র-১.২৬)।
৯. ফরোয়ার্ড স্ট্রোক (Forward Stroke) এ চাপ দিতে হবে আর ব্যাকওয়ার্ড স্ট্রোক (Backward Stroke) বা রিভার্স গ্লোকে (Reverse Stroke) এ চাপ প্রত্যাহার করতে হৰে (চিত্র-১.২৯)
একটি ফাইলের ট্যাং অংশটি বাদ দিলে, উহার যাহা অবশিষ্ট থাকে তাহা ফাইল দৈর্ঘ্য হিসাবে পরিচিত। এই দৈর্ঘ্য ৫০ মিলিমিটার হতে বর্ধিত হয়ে ১০০ মিলিমিটার এবং ১০০ মিলিমিটার হতে বর্ধিত হয়ে ৪৫০ মিলিমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। অর্থাৎ ২ ইঞ্চি হতে ক্রমে বৃদ্ধি পেয়ে ৪ ইঞ্চি এবং ৪ ইঞ্চি হতে ক্রমে বৃদ্ধি পেয়ে ১৮ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়।
কোন বস্তুর উপরিভাগ বা কোন নালীর ভিতরের অংশ হতে অল্প পরিমাণ ম্যাটেরিয়াল ক্ষয় করতে ইহা অত্যন্ত উপযুক্ত। আপত দৃষ্টিতে ফাইল চালানো কাজ খুব স্বাভাবিক বলে মনে হলেও সুন্দর করে ফাইল চালানো বা ফাইলিং করা শেখার জন্য অনেক সময় এবং মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন।
একটি ফাইলের প্রতি সেন্টিমিটারে বা প্রতি ইঞ্চিতে কয়টি দাঁত রয়েছে সেই সংখ্যার উপর ভিত্তি করে ফাইলের স্তর বা গ্রেড নির্ধারণ করা হয়। যে স্থানে বেশী ধাতু ক্ষয় করতে হয় তথায় প্রতি সেন্টিমিটারে অল্প দাঁতের ফাইল অর্থাৎ মোটা দাঁতের ফাইল ব্যবহার করা হয় প্রতি সেন্টিমিটারে বা ইঞ্চিতে দাঁত সংখ্যার ভিত্তিতে ফাইল এর গ্রেড সমূহের নাম এবং উহাদের ব্যবহার ছকে দেখান হল। সঠিক কাজ পাওয়ার জন্য সঠিক গ্রেডের ফাইল নির্বাচন করা অতি প্রয়োজন।
দাঁতের সংখ্যার উপর ভিত্তি করে যেমন ফাইলের গ্রেড নির্ধারণ করা যায়, তেমনি ফাইলের আকৃতির উপর ভিত্তি করে উহার শ্রেণী বিভাগ করা যায়। বিভিন্ন জবের জন্য বিভিন্ন প্রকার ফাইলের দরকার হয়।
বিভিন্ন শ্রেণির ফাইলগুলো যেমন-
ফ্লাট অর্থ সমতল বা চেপ্টা সুতরাং এই ফাইলের উপরিভাগসমতল বা চেপ্টা স্তবে অগ্রভাগ ক্রমশ: চিকন ইহার দৈর্ঘ্য সাধারণত ৫ সেন্টিমিটার হতে ১৫ সেন্টিমিটার এবং ১৫ সেন্টিমিটার হতে ৪৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়। ওয়ার্কশপের অধিকাংশ কাজ এই ফাইল দ্বারা করা হয়। রাফ, ৰাষ্ট্ৰাৰ্ড, সেকেন্ড কার্ট, সুখ এবং ভেড স্মথ সকল গ্রেডের ফ্লাট ফাইল বাজারে পাওয়া যায়।
হ্যান্ড ফাইল
এটির পৃষ্ঠাদেশ সমতল এবং আয়তাকার, দেখতে ফ্লাট ফাইলের মত হলেও একপার্ধে দাঁত থাকে না, অর্থাৎ এক পাশ সমতল থাকে ফলে ৯০ ডিগ্রী কোলে খৃষ্ট ক্ষয় করার সময় একটি পার্শ্ব কে অক্ষুন্ন রাখা প্রয়োজন হলে এই প্রকারের ফাইল দরকার হয়।
পিলার ফাইল
এই শ্রেণির ফাইল হ্যান্ড ফাইলের অনুরূপ হয়ে থাকে, তবে এদের পুরুত্ব হ্যান্স ফাইলের চেয়ে বেশি হয়ে থাকে । এই ধরনের ফাইল ২০ সেন্টিমিটার হতে ৩০ হ্যান্ড ফাইলের চেয়ে বেশী হয়। এই ধরনের ফাইল ২০ সেন্টিমিটার হতে ৩০ সেন্টিমিটার (৮ ইঞ্চি হতে ১২ ইঞ্চি) পর্যন্ত লম্বা কোনো আয়তাকার খাচে অধিক পরিমাণ খাতু ক্ষয় করার কাজে এই ফাইল অতি উপযুক্ত।
মিল ফাইল
এই প্রকারের ফাইলের পৃষ্ঠদেশও চ্যাপটা বা সমতল তবে বিশেষত্ব এই যে, এই শ্রেণীর ফাইল সিংগেল কার্ট বিশিষ্ট হয়। অধিক পরিমাণ ধাতু ক্ষয় করতে এটি ব্যবহৃত হয়।
হাফ রাউন্ড ফাইন
নাম হতে বোঝা যায় যে, এই ধরনের ফাইল এর উপরিভাগ অর্থ গোলাকার হবে তবে প্রকৃত পক্ষে এটি সম্পূর্ণরূপে অর্থ গোলাকার নহে, খানিকটা অর্থ গোলাকারে এবং ইহার একটি পৃষ্ট সমস্তল থাকে ফলে সমতল পৃষ্ঠটি দিয়ে অনায়াসে ফ্লাট ফাইলের কাজও চালানো যায় এবং বক্রপৃষ্ঠ দিয়ে কোন পৃষ্ঠকে অবতল আকৃতি দেওয়া যায়। এই শ্রেণির ফাইলের দৈর্ঘ্য ১০ সেন্টিমিটার হতে ৪৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়।
স্লাইট ফাইল
এই শ্রেণির ফাইল গোলাকার এবং টেপার হয় অর্থাৎ ফাইলের ব্যাস সুষমহারে ক্রমশঃ কমে যায়। রাউন্ড ফাইলের দৈর্ঘ্য সাধারণত ১০ সেন্টিমিটার হতে ৪৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়। কোনো গোলকার ছিদ্রকে বড় করতে, অসম আকৃতির ছোলের আকৃতি ঠিক করতে এই শ্রেণির ফাইল অতি উপযুক্ত বলে বিবেচিত হয়।
টাংগুলার ফাইল বা থ্রি স্কয়্যার ফাইল
ভিন কোন বিশিষ্ট এই ফাইল টেগার হয়, অর্থাৎ ক্রমশ চিকন হয়। তিন কোণা এই ফাইলের প্রতিটি কোশের মান ৬০ ডিগ্রী। এই প্রকারের ফাইল ১০ সেন্টিমিটার হতে ৪০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত দীর্ঘ হয়। ইহা সিঙ্গেল কাট এবং ডবল কাট উভয় প্রকারের হয়। যে সমস্ত কৌণিক স্থানের মান ১০ ডিগ্রী অপেক্ষা কম সেই সকল স্থানে ফাইলিং করতে এই প্রকারের ফাইল অধিক উপযুক্ত। করাতের দাঁত, ট্যাপ, কার্টার ইত্যাদি ধার দিতে এই ফাইল খুব উপযুক্ত।
স্কয়্যার ফাইল
এই ফাইল বর্গাকার অর্থাৎ ইহার চারটি কোণ থাকে, প্রতিটি কোণের মান ৯০ ডিগ্রী। ইহা ডবল কাট বিশিষ্ট হয়। এই শ্রেণীর ফাইন অধিকাংশ ক্ষেত্রে ১০ সেন্টিমিটার হতে ৪০ সেন্টিমিটার (প্রায় ৪ ইঞ্চি হতে ১৬ ইঞ্চি) পর্যন্ত লম্বা হয়। কোন নালীর বা গ্রুপের তলা পরিষ্কার করতে অথবা গোলাকার গর্তকে চৌকোনা করতে এই শ্রেপির ফাইল ব্যবহৃত হয়।
চিজেল
এটি কটি ধাতু কর্তনকারী টুল বাংলায় একে হেনি বলে। একটি চিজেলের প্রধান প্রধান অংশগুলি হল:-
(ক) হেড
(গ) শ্যা
(গ) কাটিং এজ
হেড অংশে হাতুড়ির আঘাত দিয়ে ধাতু কাটা হয়, চিজেল টুল-স্টিল দিয়ে তৈরি করা হয়। বিভিন্ন রকম কাজের জন্য চিজেলের মুখের আকৃতি ভিন্ন হয় এবং এদের নামও ভিন্ন ভিন্ন হয়।
(ক) ফ্লাট চিজেল
(খ) ক্রস কাট চিজেল
(গ) রাউন্ড নোজ চিজেল
(ঘ) ডায়মন্ড পয়েন্ট চিজেল এবং
(ঙ) সাইড চিজেল।
কোনো চিজেলের মাপ বলতে ইহার কাটিং এজের দৈর্ঘ্যকে বোঝায়। এই যান ৬ মিলিমিটার হতে ৩২ মিলিমিটার পর্যন্ত হয় এবং সমগ্র চিজেল এর দৈর্ঘ্য সাধারণত ১০ সেন্টিমিটার হতে ৪০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে।
(১) প্রয়োজনের অতিরিক্ত মেটাল কোনো বস্তুর উপর হতে দ্রুত সরিয়ে ফেলতে,
(২) কোনো অসমতল স্থান তাড়াতাড়ি মোটামোটি সমান করতে,
(৩) কোনো বস্তুর উপরিভাগে নালী বা ঘাট কাটতে,
(৪) কোনো মেটালকে দ্বিখন্ডিত করতে,
(৫) রিভেটকে কেটে কোনো জোড় খুলতে,
(৬) ওয়েন্ড জোড়া প্রস্তুত করার সময় এবং
(৭) ওয়েল্ড মেটালের মাঝে আটকে পড়া ধাতুমল বা গাদ সরাতে।
ওয়েল্ডিং কাজে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হ্যান্ড টপস এর মধ্যে বল পিন হ্যামার একটি। ইহার হেডটি বলের মত অর্থাৎ গোল ভাই এই প্রেপির হাতুড়ির নাম হয়েছে বলপিন হ্যামার।
একটি বলপিন হ্যামারে বিভিন্ন অংশের নাম হল:
ক) হেড বা পিন
খ) ফেস
গ) আই
ঘ) হেড বা পিন
ঙ) হাতল
বলপিন হ্যামার সাধারণত ০.১১ হতে ০.১১ কিলোগ্রাম ওজনের হয়। ওয়ার্কশপে সাধারণত নিম্নোক্ত বিভিন্ন ধরনের কাজে এই হ্যামার ব্যবহার করা হয়-
১। চিজেন দিয়ে চিপিং করে ধাতু কাটার সময় চিত্রেলের হেডে আঘাত করতে,
২। জবে লে-আউট করার সময় সেন্টার পাঞ্চের মাথায় আঘাত করতে
৩। কোন ক্ষরকে পিটিয়ে সোজা বা বাঁকা করতে।
এটি ওয়েন্ডিং শপে এবং কামারশালায় ফোর্জ ওয়েল্ডিং কাজে বয়হৃত হয়। অধিক ভারী এবং দুই হাতে ব্যবহার করার উপযোগী। এই হ্যামার সাধারণত ০৩ হতে ০৫ কিলোগ্রাম ওজনের হয় এবং হাতলের দৈর্ঘ্য ২৪ থেকে ৩২ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়।
এই ধরনের হাতুড়ির এক মাথা ফ্লাট বা সমতল এবং অন্য মাথা বাটালি বা ছেনির মত হয়ে থাকে। এই হাতুড়ি কজন ওয়েন্ডারের জন্য অতি প্রয়োজনীয় একটি হ্যান্ড টুল।
ক) ওয়েন্ডিং করার পর ওয়েন্ড মেটালের উপর যে সকল স্লাগের আবরণ থাকে সেইগুলি পরিষ্কার করতে এই হাতুড়ি প্রয়োজন হয়।
খ) স্প্যাটার ত্রুটির কারনে ছিটকে পড়া ধাতু কলাগুলি পরিষ্কার করতেও ইহা ব্যবহৃত হয় ।
গ) যেস্থানে সমতল অংশ দিয়ে পরিষ্কার হয় না, ময়লা শক্তভাবে লেগে থাকে সেখানে চিজেলের মত অংশ ব্যবহৃত হয়।
ঘ) সমতল অংশকে সাধারণ হাতুড়ির মত ব্যবহার করে কোন কিছুকে পেটাতে ব্যবহার করা হয়।
মাথাটি হাডেনিং করে শক্ত করা এবং বডি হাত হতে যেন পিছলির না যায় তাই নারলিং করা থাকে। ইহা লম্বায় প্রায় ১০০ মিলিমিটার হয়।
পেন্সিল দিয়ে যেমন কাগজের উপর দাগ টানা হয় অনুরুপভাবে জবের উপর দাগ দেওয়ার জন্য ফাইবার নব্যবহৃত হয়। ওয়েল্ডিং জোড়ার পার্শ্বদেশ তৈরি করার সময় এটি ব্যবহৃত হয়।
এটি মিডিয়াম কার্বন স্টিলের হাতন অংশে গোলাকার তবে চোয়ান গোলাকার এবং চ্যাপটা উভয় রকমই হয়।
গরম অথকে ধরতে ও নাড়াচাড়া করতে জবকে সঠিক অবস্থানে ধরে ওয়েন্ডিং করতে এটি অতি প্রয়োজনীয়।
কাঠের হাতলের উপর শক্ত চিকন চিকন তার বসায়ে এই হ্রাস তৈরি করা হয়। চিপিং হাতুড়ির সাহায্যে জোড়া স্থানের স্লাগের আবরণ ভোলার পর উক্ত স্থানকে ভালভাবে পরিষ্কার করার জন্য ইহা ব্যবহৃত হয়। তাছাড়াও বেস মেটাল বা প্যারেন্ট মেটাল যখন অপরিষ্কার থাকে তখনও এ ব্রাসের সাহায্যে উহা পরিষ্কার করা যায়।
সি ফ্ল্যাম্প: ইহা দেখতে ইংরেজি সি অক্ষরের মত তাই এর এরূপ নাম হয়েছে। ভারী এবং হালকা উভয় ধরনের কাজের আবস্থান অনুযায়ী ধরে রাখার কাজে এটি ব্যবহার করা হয়।
এ ধরনের ক্ল্যাম্প দুইটি জব চোয়াল সমান্তরাল বা প্যারালাল অবস্থায় থাকে তাই এর নাম প্যারালাল ক্যাম্প হয়েছে। জবকে সঠিক স্থানে ধরে রেখে ওয়েন্ডিং করতে এটি ব্যবহার করা হয়।
এটি একটি জনপ্রিয় ও বহুল ব্যবহৃত রেফ। এটির ওয়ার্স স্কুকে ঘুরিয়ে যে কোনো নাটে বা বোল্টে অ্যাডজাস্ট করা যায়৷ একজন ওয়েল্ডারের বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও ইকুইপমেন্ট (Equipment) এর বিভিন্ন মাগের নাট টাইট ও লুজ দিতে এটি সবসময় প্রয়োজন হয়। এ রেঞ্চ ১১০ মিমি হতে ৬৯০ মিমি মাপের হয়ে থাকে। সাধারণ কাজে ২৫০ মিমি মাপের রেঞ্চই বেশি ব্যবহৃত হয়।
ওপেন এন্ডেড রেঞ্জ (Open Ended Wrench) এ রেঞ্চের প্রাঙ্ক বা এন্ড খোলা থাকে। এ ব্রেঞ্চের সুবিধা হলো প্রতিটি মাপের নাট বা বোশের জন্য আলাদা আলাদা রেঞ্চ আছে। এ ব্রেক ব্যবহার করলে নাটের মধ্যে এটি টাইট হয়ে লেগে থাকে, ফলে পিছলিয়ে যায় না। চিত্র-১.৫৩ এ দেখানো রেফটির একমাত্রা ১৬ মিমি এবং অন্য মাথা ১৭ মিমি নাট বা বোল্ট এর জন্য নির্ধারিত। এ রেঞ্চ একমাথা খোলা ( Single Ended) ও দু'মাথা খোলা (Double Ended) উভয় প্রকারের হয়ে যাকে।
এটি দেখতে L আকৃতির (চিত্র-১.৫৪) হয়ে থাকে। ষড়ভূজ আকৃতি (Hexagonal) বিশিষ্ট 'অ্যালেন লেন কী বোল্ট' (চিত্র-১.৫৫), অ্যালেন স্ক্রু, 'কাউন্টার শ্যাংক মেশিন স্ক্রু ইত্যাদি লুজ ও টাইট দিতে এই রেঞ্চ বা কী ব্যবহৃত হয় (চিত্র-১.৫৬)।
১) অ্যান্জেল গ্রাইন্ডার (Angle Grinder) এই প্রাইভারকে সাইড (Ride Grinder) গ্রাইন্ডারও বলে এবং এটি দিয়ে ধাতব খন্ডের উপরিতল ঘর্ষণ করে মসৃণ এবং পলিশ (Polish) করা যায়। অ্যাঙ্গেল গ্রাইন্ডার বৈদ্যুতিক মটর চালিত। ধাতু ক্ষয় করার জন্য এতে একটি ধর্ষণকারী ডিঙ্ক (Abrasive Disc), একটি এডজাস্টেবল পার্ট (Adjustable Guard) এবং একটি প্রধান হাতল ছাড়াও ধরার সুবিধার জন্য আরও একটি পার্শ্ব হাতল (Side Handle) চ্ছ। ফলে দু'হাতে ধরে সুবিধাজনকভাবে কাজ করা যায়।
বিভিন্ন ধাতুতে বিভিন্ন প্রকার কাজের জন্য বাজারে অনেক রকম ঘর্ষণকারী ভিঙ্ক পাওয়া যায়। এ প্লাইভার এ 'কাটিং ডিস্ক' সেট করে ধাতু কাটার কাজও করা যায়। চিত্র-১.৫৮ তে সাধারণ কাজে ব্যবহৃত ১১৫ সিমি ব্যাসের একটি কাটিং ডিস্ক দেখানো হলো।
ধাতুর জলে বিভিন্ন প্রকার অপারেশন যেমন- প্রাইভিং, স্যান্ডিং, ব্রাশিং এবং পলিশিং অপারেশন সম্পন্ন করার জন্য বিভিন্ন প্রকার ডিস্ক ও হুইল ব্যবহৃত হয়। চিত্র-১.৫৯ তে বহুল ব্যবহৃত কিছু প্রাইভিং হুইল, ডিস্ক ও এটাচমেন্ট দেখানো হলো। গ্রাইন্ডিং হুইলগুলো সাধারণত ১১৫ মিমি., ১২৫ মিমি, এবং ২৩০ মিমি ব্যাসের হয়। গুড ওয়েন্ডিং এ গুড কাটার জন্য এ প্রাইন্ডার বিশেষ উপযোগী।
২) বেঞ্চ গ্রাইন্ডার (Bench Grinder)
টেবিল বা ওয়ার্কিং বেঞ্চের উপর স্থাপন করে এ গ্রাইন্ডার দিয়ে বিভিন্ন অপারেশন সম্পন্ন করা হয় বলে এর এরূপ নামকরণ (চিত্র-১.৬১/ বেঞ্চ প্রাইভারে দু'টি গ্রাইন্ডিং হুইল সেট করার ব্যবস্থা আছে। বিভিন্ন ধাতু এবং বিভিন্ন গ্রেডের মসৃণতা পেতে এখানে বিভিন্ন প্রকার হইল সেট করা যায়। এটি দিয়ে টুল বিট, ড্রিল বিট, চিজেল ইত্যাদি ধার দেওয়া যায়। নিরাপত্তার জন্য হইল গার্ড, স্পার্ক জ্যারেস্টার ও জবকে সাপোর্ট দিতে টুম রেস্ট আছে। ওয়েন্ডিং ফিটিং কাজের পূর্বে রাফ আকৃতি প্রদান করতে এটি অধিক উপযোগী।
৩) হ্যান্ড ড্রিল মেশিন (Hand Drill Machine)
যখন কোনো জবকে পেডেন্টাল ড্রিল এ ছিল করার সুযোগ থাকে না তখন এই ড্রিল অধিক উপযোগী (চিত্র-২.৬২)। এ ড্রিল বৈদ্যুতিক মোটর চানিত ও অপেক্ষাকৃত হালকা হওয়ায় এটিকে সহজেই স্থানান্তর করে বিভিন্ন স্থানে বহন করে প্রয়োজনে ব্যবহার করা যায়। এর তিন চাক (Drill Chuck) এ বিভিন্ন ধরনের मি বিচ (Drill bit) সেট করে মাতু, প্লাস্টিক কংক্রিটের উপর সহজেই ছিন্ন করা যায়।
এটি একটি ঘূর্ণায়মান ও চোখা ৰিট সংযুক্ত যন্ত্র হওয়ায় এর ব্যবহারে যথেষ্ট সতর্কতা লম্ব করা প্রয়োজন। ঘরের দেওয়ালে বা অন্য কোন অজানা স্থানে ড্রিল করার সময় উক্ত স্থানের নিচে কোনো কনসিদ্ধ বিদ্যুৎ লাইন আছে কি না তা নিশ্চিত হতে হবে। না হলে বৈদ্যুতিক শক লেগে মূর্ঘটনা ঘটতে পারে, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
৪) সার্কুলার 'স' মেশিন (Circular Saw Machine)
বিভিন্ন ধরনের রেড ব্যবহার করে এ 'স' দিয়ে (চিত্র-২.৬৩) কাঠ, ধাতু, প্লাস্টিক এর স্ট্রেইট কাট, ক্রস কাট ও বিলে কাট সম্পন্ন করা যায়। চিত্র-২.৬৪ অনুযায়ী 'ডেপথ্ অ্যাডজাস্টমেন্ট ডিভাইস' এ 'কাটিং ডেপথ্ অ্যাডজাস্ট করে বেজ প্লেটেটি কার্যবস্তুর উপর রেখে ট্রিগার সুইচ অন করতে হবে। এবার হাতল দু'টি ধরে নিচের দিকে চাপ দিয়ে সামনে চালনা করলে কাটা সম্পন্ন হবে। 'বিকেল অ্যাডজাস্টমেন্ট অ্যাডজাস্ট করে এ 'স' দিয়ে ৰিতেল কৰ্তনও করা যায়।
কোনো ধাতৰ ৰঘুকে কাটতে (Cut Across A মেশিন ব্যবহৃত হয়। বৈদ্যুতিক মটর চালিত হওয়ায় মেশিনটির সাহায্যে যে সকল খাতব খণ্ডের ন্যাস বা পুরুত্ব অনেক বেশি এবং ধাতু অনেক শক্ত এ সব ধাতুগুলোকে স্লাইস (Slice) আকারে সহজে কাটতে পারা যায়। টাংস্টেন স্টিল বা হাই স্পিড লি ধাতু দিয়ে তৈরি একটি ব্রেড ধাতু কর্তনের কাজটি সম্পন্ন করে। উক্ত গ্রেডের ধার নষ্ট হলে বা ভেঙে গেলে নতুন ব্ৰেড প্রতিস্থাপন করা যায়।
৬) পেডেস্টাল গ্রাইন্ডার (Pedestal Grinder) :
এটির কাজও বেঞ্চ গ্রাইন্ডারের অনুরূপ, পার্থক্য শুধু বেঞ্চ গ্রাইন্ডার ওয়ার্কিং বেঞ্চের উপর আর পেডেন্টাল গ্রাইন্ডার এর ফুটিং ( Footing) ওয়ার্কশপের মেঝেতে নাট বোল্টের মাধ্যমে আটকানো থাকে। পেডেস্টাল গ্রাইন্ডার সাধারণত ভারি কাজের জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এটি দিয়েও টুল বিট, ড্রিল বিট, চিজেল ইত্যাদি যার দেওয়া যায়। নিরাপত্তার জন্য হুইল গার্ড (Wheel Cruard), স্পার্ক অ্যারেস্টার (Spark Arrester) ও ক্ষাকে সাপোর্ট দিতে টুল রেস্ট (Tool Rest) বা ওয়ার্ক টেবিল আছে (Work Table )। ওয়েন্ডিং ও ফিটিং কাজের পূর্বে রাফ আকৃতি প্রদান করতে এটিও অধিক উপযোগী।
(৭) পেডেস্টাল ড্রিল (Pedestal Drill)
পেডেন্টাল ড্রিল প্রধানত বিভিন্ন ধাতু, প্লাস্টিক, কাঠ ইত্যাদি এর উপর ফিল হোল করার জন্য ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও সিলিন্ডিক্যান হোলকে অপেক্ষাকৃত বড় (Enlarge) করতে এবং কাউন্টার বোরিং (Counter Baring), কাউন্টার সিংকিং (Counter Sinking) অথবা রিমিং (Reaming) করতে এ ছিল বিশেষ উপযোগী। এ ড্রিলকে পিলার চিল (Piller Drill) বা কলাম ডিন (Colum Drill) ও বলা হয়ে থাকে, কারণ এর একটি পিলার আছে যেটি বরাবর এর জন বাঁধার জন্য নির্ধারিত টেবিলকে উপরে নিচে উঠানামা করিয়ে বিভিন্ন মাপের জবকে ড্রিল করা যায় |
৮) কাট অফ 'স' (Cut off Saw)
এ 'স' দিয়ে বিভিন্ন রত (Rod), ফ্লাট ৰাৱ (Flat Bar), অ্যাঙ্গেলবার (Angle Bar), চ্যানেল বার (Channel Bar), (Square Bar), কম ্যাসের পাইপ ইত্যাদি করা যায় (চিত্র-২.৬৭)। এ মেশিনে একটি সার্কুলার শ্রেষ থাকে যেটি একটি বৈদ্যুতিক মোটরের সাহাে চাণিত হয়। জনকে ডাইসে রেখে মোটর চালু করলে সার্কুলার রেডটি ঘুরতে থাকে। এ অবস্থার হাতনকে ধরে নিচের দিকে এনে জনের উপর আে আতে চাপ প্রদান করলে পুরষ ব্রেডের বর্ষণে বটি দ্বিখন্ধিত হয়।
কোনো কিছু তৈরি করতে হলে প্রথমেই ভাবতে হবে জোড়া নেওয়ার কথা, কারণ জোড়া ছাড়া অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোন যন্ত্র বা যন্ত্রাংশ তৈরি করা যায় না। শিল্পক্ষেত্রে যত প্রকারের জোড়া দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। ওয়েন্ডিং তাদের মধ্যে অন্যতম। এমন কোন শিল্প কারখানা নেই যেখানে ধাতুকে স্থায়ীভাবে জোড়া লাগানোর জন্য ওয়েন্ডিং এর ব্যবস্থা নেই। সকল প্রকার নির্মাণ এবং মেরামত কারখানায় ওরেঙ্কিং এর প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। শিল্প কারখানায় দক্ষ ওয়েল্ডারদের দেশের শিল্পায়নে যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে।
ওয়েল্ডিং হলো স্থায়ীভাবে জোড়া দেয়ার প্রণালী। পূর্বে যে সকল ছোড়া রিভেটের সাহায্যে দেয়া হত এখন উহা ওয়েল্ডিং এর সাহায্যে দেয়া হয়। জাহাজ, পুল, সেতু, ষ্টীলের কাঠামো, ট্যাংক, পাইপ লাইন, বিমান, মহাশূন্যযান, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজে ওয়েল্ডিং প্রায় অবিচ্ছেদ্য অঙ্গরূপে ব্যবহৃত হচ্ছে। ২.১.১ ওয়েভিং এর পদ্ধতি:
গ্রীল তৈরির দোকানে হরেক রকমের গ্রীল তৈরি হয়, সেখানে একাধিক ধাতুষভকে জোড়া লাগনো হয়। আবার কামারশালার ধাতুখণ্ডকে উত্তর করে অর্ধগলিত অবস্থায় এনে হাতুড়ির সাহায্যে পিটিয়ে শিকল বানানো হয়। উভয়ক্ষেত্রে জোড়া হয় স্থায়ী, তবে গ্রীল তৈরির দোকানে জোড়া লাগানোর জন্য জোড়াস্থানে চা প্রয়োগ করতে হয় না, কিন্তু কামারশালায় শিকল বানাতে জোড়াস্থানে হাতুড়ির আঘাত বা চাপ প্রয়োগ করতে হয়। আমরা এরূপ জোড়া দেওয়াকে ওয়েল্ডিং করা বলি। সুতরাং ওয়েল্ডিং এর সংজ্ঞা হলো- দুই বা ততোধিক ধাতব খণ্ডকে ( একই জাতীয় ধাতু কিংবা ভিন্ন জাতীয় ধাতু) অনেক ক্ষেত্রে অধাতব খন্ডে তাপ প্রয়োগ করে পূর্ণগলিত অথবা অর্ধগলিত অবস্থায় এনে জোড়া স্থানে পরিপুরক ধাতু যুক্ত করে অথবা না করে চাপ প্রয়োগ করে অথবা বিনা চাপে স্থায়ীভাবে জোড়া দেয়ার পদ্ধতিকে ওয়েল্ডিং বলে।
বিহুল প্রচলিত ওয়েল্ডিং পদ্ধতিগুলি হলো:
• ফোর্স ওয়েল্ডিং
• গ্যাস ওয়েন্ডিং
• আর্ক ওয়েন্ডিং
• থারমিট ওয়েন্ডিং
• টিগ ওয়েল্ডিং
• মিগ ওয়েন্ডিং
• ইলেকট্রিক রেজিষ্ট্যাল ওয়েল্ডিং
অনুসন্ধানমূলক কাজ ১: তোমার শ্রেণিকক্ষের জ্বালালার গ্রীল তৈরি করতে ধাতুর খন্ড গুলোকে কোন পদ্ধতিতে জোড়া দেওয়া হয়েছে খুঁজে বের করা।
বহুল প্রচলিত ওয়েল্ডিং পদ্ধতির শ্রেণিবিন্যাস নিচে উল্লেখ করা হলো-
১ প্রেসার ওয়েল্ডিং বা ননফিউশন ওয়েল্ডিং (Pressure Welding or Nonfusion Welding )
২ নন প্রেসার ওয়েল্ডিং বা ফিউশন ওয়েল্ডিং (Nonpressure Welding or Fusion Welding)
উপরের প্রধান শ্রেণি দু'টিকে আবার বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যেমন-
১. প্রেসার ওয়েল্ডিং বা ননফিউশন ওয়েল্ডিং
(ক) ফোর্স ওয়েল্ডিং (Forge Welding )
হ্যামার ওয়েল্ডিং (Hammer Welding )
ডাই ওয়েল্ডিং (Die Welding )
রোল ওয়েল্ডিং (Roll Welding )
(খ) ইলেকট্রিক রেজিস্ট্যান্স ওয়েল্ডিং
বাট ওয়েল্ডিং (Butt Welding)
সিম ওয়েল্ডিং (Seam Welding )
স্পট ওয়েল্ডিং (Spot Welding)
প্রজেকশন ওয়েল্ডিং (Projection Welding)
পারকাশন ওয়েল্ডিং (Percussion Welding)
ফ্লাশ ওয়েল্ডিং (Flush Welding)
২. নন প্রেসার ওয়েল্ডিং বা ফিউশন ওয়েল্ডিং
(ক) আর্ক ওয়েল্ডিং (Are Welding )
• শিল্ডেড মেটাল আর্ক ওয়েল্ডিং (SMAW)
টিগ ওয়েল্ডিং (TIG / GTAW)
মিগ ওয়েল্ডিং (MIG / GMAW)
(খ) গ্যাস ওয়েল্ডিং (Gas Welding )
অক্সি অ্যাসিটিলিন ওয়েল্ডিং (Oxy Acetylene Welding
অক্সি হাইড্রোজেন ওয়েল্ডিং (Oxy Hydrogen Welding )
এয়ার অ্যাসিটিলিন ওয়েল্ডিং (Air Acetylene Welding)
(গ) থারমিট ওয়েল্ডিং (Thermit Welding)
২.২.১ শিল্টেড মেটাল আর্ক ওয়েল্ডিং- এ প্রক্রিয়ায় ইলেকট্রোড এবং কার্ষবস্তুর মধ্যে বৈদ্যুতিক আর্ক সৃষ্টির মাধ্যমে তাপ সৃষ্টি করে ধাতুকে পূর্ণ পলিত জবস্থায় এনে জোড়া দেয়ার কাজ সম্পাদিত হয়। এক্ষেত্রে ইলেকট্রোড নিজে গলে জোড়ার স্থানে পরিপুরক ধাতু সরবরাহ করে অথবা আলাদা পরিপুরক ধাতু সরবরাহ করা হয়।
২.২.২ স্পট ওয়েন্ডিং-এর কার্যনীতি- স্পট ওয়েন্ডিং মেশিনে দুটি আমার তৈরী রকার আর্মস বা ইলেকট্রোড থাকে। একটি পজেটিভ (+) টারমিনাল অপরটি নিগেটিভ (-) টারমিনাল। এই দু'টি ইলেক্ট্রোডের মধ্যে একটি চলনশীল আর অন্যটি স্থির (Fixed)। বিদ্যুৎ প্রবাহ এই দু'টি ইলেকট্রোডের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়।
যে অংশটি জোড়া দেওয়া হবে সেই খাছু পাতের দুটি একটির উপর অন্যটি অর্থাৎ ওভারল্যাপিং (Overlapping) অবস্থায় রেখে নিগেটিভ (-) পজিটিভ (+) ইলেকট্রোডের বা রকারের কিদুটিতে রেখে হালকা চাপ দিলে ইলেকট্রোডের দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহ ৰাধা পেয়ে সামান্য উত্তাপে স্থানটি স্পটেড বা একটি বিন্দুতে আটকে যায়।
বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হলে গলিত উপাদানের 'নাপেট' (Nugget) সংযোগস্থলকে শক্ত করে দেয়। তাপ উৎপাদনের জন্য ভাসার ইলেকট্রো উপকরণসমূহের মধ্য দিয়ে তড়িৎ প্রেরণ করে। তাল উৎপাদন নির্ভর করে বৈদ্যুতিক রোধ, ধাতুর ভাগ পরিবাহকত্ব এবং ভড়িৎ প্রবাহ চলার সময়ের উপর।
বিজ্ঞানী জুল (Joule) এর তাপীয় সূত্র অনুসারে, উৎপন্ন তাপ নিচের সমীকরণ দ্বারা প্রকাশ করা হয়-
H=I2xRxT
এখানে, H = উৎপাদিত মোট ভাগ (ভুল)
I = তড়িৎ প্রবাহ (জ্যাম্পিয়ার)
R = তড়িৎ রোধ (ওহম) এবং
T – তড়িৎ প্রবাহের সময় (সেকেন্ড)
অন্যান্য ধাতুর তুলনায় কপারের রোধ কম ও ভাল পরিবাহী ক্ষমতা বেশি হওয়ায় স্পট ওয়েল্ডিং এ একে ইলেকট্রোড হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ফলে যে ভাগ উৎপন্ন হয়, তা ইলেকট্রোড এ না হয়ে বেশি রোধবিশিষ্ট কার্যবস্তুর মধ্যেই হয়।
• এটি দ্বারা উচ্চ গতিতে ওয়েন্ডিং সম্পন্ন করা যায়।
• এর দ্বারা সহজেই উচ্চ হারে উৎপাদন করা যায়।
• উপযুক্ত বা স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করা যায়।
• স্পট ওয়েন্ডিং এ নির্দিষ্ট স্পট ছাড়া অন্য জায়গায় শিট এর কোন ক্ষতি হয় না।
• স্পট ওয়েস্টিং অন্যান্য ওয়েল্ডিং এর চেয়ে দুর্বল ওয়েল্ভিং হয়।
গ্যাস টাংস্টেন আর্ক ওয়েন্ডিং এবং মার্ক ওয়েন্ডিং- একই নীতিতে কাজ করে। টাংস্টেন ইলেকট্রোড এবং ওয়ার্কপিলের মধ্যে ইলেকট্রিক আর্ক সৃষ্টি করে তা উপর করা হয়। পার্ক, ইলেকট্রোড এবং ে নিচ্ছিন্ন গ্যাসের আবরণে ঢাকা থাকে যা সহজে অন্য উপাদানের সাথে মিশ্রিত হয় না ফলে ওয়েঙ্ক এলাকা বায়ুস্থিত অক্সিজেন দ্বারা কলুষিত হওয়া থেকে প্রতিরোধিত হয়। টাংস্টেন ইলে প্রকৃত সম্ম ভবে পুড়ে ধীরে ধীরে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়। প্রয়োজনবোধে অক্সি অ্যাসিটিলিন ওয়েল্ডিং -এর ন্যায় পৃথকভাবে ফিলার ওয়্যার ব্যবহৃত হয়।
২.৩.১ গ্যাস টাংস্টেন পার্ক ওয়েল্ডিং এর ধারনা (Definition of Gas Tungsten Arc Welding): গ্যাস টাংস্টেন জার্ক ওয়ে (GTAW) বা (TIG) টাংস্টেন ইনাট গ্যাস। এটি একটি বিশেষ ধরনের ওয়েজিং পদ্ধতি। এতে বিশেষ ধরনের টর্চে ক্ষীন (Non Consumable) ইলেকট্রোড ব্যবহৃত হয়। তি অক্সিজেনের দূষণ হতে জোড় স্থানকে রক্ষা করার জন্য নিচ্ছিন্ন গ্যাস যেমন: আর্গন, হিলিয়াম ইত্যাদি হয় । প্রয়োজনবোধে আলাদাভাবে ফিলার মেটাল ব্যবহার করা হয়। এই বিশেষ পদ্ধতির ওয়েল্ডিং ই গ্যাস টাংস্টেন আর্ক।
২.৩.২ গ্যাস টাংস্টেন আর্ক ওয়েল্ডিং এর বৈশিষ্ট্যসমূহ
• ওয়েল্ড মেটালের পুর্ণতা উচ্চমান সম্পন্ন
• কোন স্প্যাটার না।।
• স্লাগ সৃষ্টি হয় না।
• ধোঁয়া উৎপন্ন হয় না।
যে সব ধাতু অন্যান্য পদ্ধতিতে ওয়েল্ডিং করা সুবিধাজনক নয় সে ক্ষেত্রে গ্যাস টাংষ্টেন আর্ক ওয়েল্ডিং সুবিধাজনক।
২.৩.৩ গ্যাস টাংস্টেন আর্ক ওয়েল্ডিংয়ের সুবিধা ও অসুবিধাসমূহ (Advantages and Disadvantages of GasTungsten Arc Welding)
১) এ পদ্ধতিতে মূল ধাতুর গুণাগুণ অক্ষুন্ন থাকে।
২) অ্যালুমিনিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, কপার, নিকেল, স্টেইনলেস স্টিল, মাইল্ড স্টিলসহ প্রায় সব শংকর ধাতু ওয়েল্ডিং করা যায়।
৩) জোড়া স্থান মসৃণ ও সমতল পাওয়া যায়।
৪) কোনো প্রকার স্প্যাটার (Spatier) বা স্লাগ জাতীয় ত্রুটি থাকে না।
৫) ছিদ্রময়তা বা ধাতব বিকৃতি হয়না।
৬) অধিক দ্রুত ওয়েল্ডিং করা যায়।
৭) হস্তচালিত/স্বয়ংক্রিয় উভয়ভাবেই কাজ করা যায়।
৮) অধিকাংশ ক্ষেত্রে ফিলার রড ছাড়া আবার প্রয়োজন ফিলার রড ব্যবহার করে কাজ করা যায়।
১০) খুবই পাতলা সেকশনে ওয়েল্ডিং উপযোগী ।
১) ওয়েল্ডিং সরঞ্জামাদি জটিল থাকায় স্থানান্তরযোগ্যতা কম।
২) সরঞ্জামাদি ব্যয়বহুল এবং বাহিরের কাজের জন্য উপযোগী কম।
৩) কারেন্ট, ভোল্টেজ, ওয়েল্ডের গতি ও সঠিক ইলেকট্রোড নির্বাচন জটিল বিষয় তবে এ গুলো সঠিক নির্বাচন না হলে ওয়েল্ড দুর্বল হবে।
৪) ৬ মিমি. এর অধিক পুরুত্বের পাতের জন্য ব্যবহার করা হয় না।
৫) দক্ষ ওয়েল্ডার প্রয়োজন।
৬) অপারেটরের অধিক নিরাপত্তা প্রয়োজন হয়।
৭) অতিবেগুনি রশ্মি ওয়েল্ডারের জন্য ক্ষতিকর।
গ্যাস মেটাল আর্ক ওয়েন্ডিং, আর্ক ওয়েল্ডিং এর মতো একই নীতিতে কাজ করে। এটি H=KIRT এ মূল নীতিতে কাজ করে। এখানে, বৈদ্যুতিক চাপ কমিয়ে বৈদ্যুতিক প্রবাহ বৃদ্ধি করা হয় ফলে অধিক পরিমান তাপ সৃষ্টি হয়। এতে ফ্লাক্স এর আবরণবিহীন ফিলার মেটালের একটি তারের কুলী (Spool) থেকে যথাযথ হোল্ডারের মধ্য দিয়ে অবিরত ফিলার মেটাল সরবরাহ করা হয়। উক্ত ফিলার মেটাল ইলেকট্রোড হিসাবে কাজ করে, যা বিদ্যুৎ প্রবাহিত করার মাধ্যমে তারের প্রান্ত ও কার্যবস্তুর মধ্যে আর্ক উৎপন্ন করে প্রয়োজনীয় তাপ সৃষ্টি করে এবং পূর্ণগলিত অবস্থায় জোড়া স্থানে পরিপুরক ধাতু সরবরাহ করে। হোল্ডারের নজলের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় নিস্ক্রিয় গ্যাস সরবরাহেরর মাধ্যমে আর্ক ও ওয়েল্ড এলাকা আচ্ছাদিত করে রাখে। এ কার্যাদি অর্ধ স্বয়ংক্রিয় (Semi - Automatic) বা স্বয়ংক্রিয় (Automatic) পদ্ধতিতে সম্পন্ন হয়।
২.৪.১ গ্যাস মেটাল আর্ক ওয়েল্ডিং যে আর্ক ওয়েন্ডিং পদ্ধতিতে অবিরতভাবে সরবরাহকৃত ধাতব ক্ষয়িষ্ণু ইলেকট্রোড ও কার্যবস্তুর মধ্যে উৎপন্ন আর্কের মাধ্যমে উত্তপ্ত করে, আর্ক, ইলেকট্রোড ও গলিত ধাতুকে নিষ্ক্রিয় গ্যাস (Inert Gas) যেমন- আর্গন, হিলিয়ন, কার্বন-ডাই-অক্সাইড অথবা এদের মিশ্রিত গ্যাস দ্বারা আচ্ছাদিত রেখে কোন ফ্লাক্স (Flux) ব্যবহার না করে ওয়েন্ডিং করা হয়, তাকে গ্যাস মেটাল আর্ক ওয়েল্ডিং বা মেটাল ইনার্ট গ্যাস ওয়েন্ডিং (মি) বলা হয়। গ্যাস মেটাল আর্ক ওয়েন্ডিং প্রক্রিয়ায় প্রায় 7000°C তাপমাত্রায় ওয়েন্ডিং করা হয়।
প্রথমে এটা আগর্ন গ্যাসের আবরণীর সাহায্যে কেবলমাত্র অ্যালুমিনিয়াম ওয়েল্ডিং এর জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল। কার্বন-ডাই-অক্সাইড কার্বন ষ্টীলের জন্য অধিকতর সম্ভা শিল্ডিং গ্যাস হিসাবে আবিস্কার না হওয়া পর্যন্ত আর্গনের অধিক ক্রয়মূল্যের দরুন এর ব্যবহার সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু উন্মুক্ত স্থান ছাড়া আবদ্ধ স্থানে কার্বন-ডাই-অক্সাইড (CO2) গ্যাস দ্বারা ওয়েল্ডিং করতে গ্যাস এক্সট্র্যাক্টর (Gas Extractor) ব্যবহার করা উচিত নতুবা ওজনের কারণে CO কার্বন মনোঅক্সাইড গ্যাস ৭% থেকে ১২% (শতকরা ৭ থেকে ১২ ভাগ) নীচে বসে থাকে, এবং পরে আস্তে আস্তে উপরের দিকে উঠার সময় শ্বাস প্রশ্বাসে মানুষের শরীরের ঢুকে কর্মরত Welder এর মৃত্যু ঘটা অস্বাভাবিক নয়। উন্মুক্ত স্থানে কার্বন-ডাই-অক্সাইড (CO2) গ্যাস ব্যবহার ব্যয় সংকোচন করে বলে এর ব্যবহার এখন পর্যন্ত নিষিদ্ধ করা হয়নি।
গ্যাস মেটাল আর্ক ওয়েন্ডিং প্রক্রিয়া অন্যান্য ওয়েন্ডিং প্রক্রিয়ার চেয়ে অধিক দ্রুততর।
গভীর অনুপ্রবেশ বিশিষ্ট ওয়েন্ডিং জোড়া পাওয়া যায়। পাতলা এবং পুরু উভয় প্রকার কার্যবস্তুকে সফলভাবে ওয়েল্ডিং করা যায়।
• সহজেই যান্ত্রিকভাবে পরিচালিত করা যায়।
গ্যাস মেটাল আর্ক ওয়েল্ডিং প্রক্রিয়ায় ওয়েস্তে ধাতু অবক্ষেপ (Deposit) হার অধিক পাওয়া
সম্ভব।
• সকল পজিশনে নিখুত ও অধিক দ্রুতিতে অবিরত ওয়েল্ডিং করা যায়।
ফ্রান্স ব্যবহারের প্রয়োজন হয় না।
অপারেটরের দক্ষতা কম হলেও চলে।
কার্বন ডাই-অক্সাইড ওয়েন্ডিংয়ে খরচ কম হ
• গভীর অনুপ্রবেশযুক্ত (Good Penetration) উন্নত মানের ওয়েল্ডিং পাওয়া যায়।
অন্যান্য ওয়েন্ডিং প্রক্রিয়ার তুলনায় মিল ওয়েন্ডিং পদ্ধতি অনেকটা জটিল। মেকানিজম বা যন্ত্রপাতিসমূহের খরচ বেশি।
• আর্কের স্থায়িত্ব কম।
যে কোন একটি দাহ্য গ্যাস ও অক্সিজেনের জ্বলন্ত মিশ্রণ হতে সরবরাহকৃত উত্তাপের মাধ্যমে যে ওয়েন্ডিং করা হয় তাকে গ্যাস ওয়েল্ডিং বলে। এই পদ্ধতিতে ওয়েল্ডিং টর্চের মাধ্যমে অক্সিজেন ও এসিটিলিন বা অন্য যে কোন দাহ্য গ্যাস প্রয়োজনীয় অনুপাতে মিশ্রিত করে নজেলের মাধ্যমে উচ্চ বেগে প্রবাহিত করে স্পার্ক লাইটারের সাহায্যে জ্বালিয়ে শিখা তৈরি করা হয়, উক্ত শিখার উত্তাপে ওয়েষ্টিং করা হয়। গ্যাস ওয়েল্ডিং এ অক্সিজেন ও এসিটিলিন গ্যাস সবচাইতে বেশি ব্যবহৃত হয় ।
যে সকল গ্যাস অক্সিজেন সহযোগে প্রথমিত হয়ে প্রচুর পরিমান তাপ ও আলোক শক্তি উৎপন্ন করে সেই সকল পাসিকে দাহ্য গ্যাস বলে। দাহ্য গ্যাস সমূহের মান এদের ক্যালরিফিক ভ্যালুর উপর নির্ভর করে। সাধারনত প্রজ্জ্বলন কালে দূর্গন্ধ ও ধোঁয়া তৈরী করে না এবং দামে সস্তা এমন গ্যাস সমূহকে গ্যাস ওয়েডিং এর জন্য উত্তম মনেকরা হয়। নিম্নে কয়েকটি দাহ্য গ্যাসের নাম উল্লেখ করা হল।
এসিটিলিন (Acetylene), হাইড্রোজেন (Hydrogen), মিথেন (Methane), ইথেন (Ethen), প্রোপেন (Propane), বিউটেন (Butane), LPG ও বেনজন (Benzol) ইত্যাদি।
২.৫.২ সাহায্যকারী গ্যাস
যে সকল গ্যাস প্রজ্জ্বলনের সময় নিজে জ্বলে না কিন্তু অন্যকে জ্বলতে সাহায্য করে সেই সকল গ্যাসকে সাহায্যকারী গ্যাস বলা হয়। গ্যাস ওয়েল্ডিং এর ক্ষেত্রে একমাত্র সাহায্যকারী গ্যাস অক্সিজেন গ্যাস। মুক্ত অবস্থায় অক্সিজেন রঙ, গন্ধ ও স্বাদহীন একটি গ্যাস। অক্সিজেনের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য হল সে নিজে জ্বলে না কিন্তু অন্যকে জ্বলতে সাহায্য করে। অক্সিজেনের এই বৈশিষ্ট্যের কারণে একে সাহায্যকারী গ্যাস হিসেবে নামকরণ করা হয়েছে।
২.৫.৩ গ্যাস ওয়েল্ডিং ফ্রেম
অক্সিজেন ও এসিটিলিন গ্যাসের জালনের ফলে যে ফ্লেম তৈরি হয় সেটাই অক্সি এসিটিলিন ফ্লেম। অক্সি- এসিটিলিন ফ্রেম তিন প্রকার, যথা-
ক) কার্বুরাইজিং ফ্লেম (Carburizing Flame ) যে অক্সি-এসিটিলিন ফ্লেমে অক্সিজেনের চেয়ে এসিটিলিনের পরিমাণ বেশি থাকে তাকে কার্বুরাইজিং ফ্লেম বলে। ইনার হোয়াইট কোন ও আউটার ইনভেলপ এর মধ্যবর্তী পালক আকৃতির ফ্লেম দেখে কার্বুরাইজিং ফ্লেম চেনা যায়। এই ফ্লেমে অক্সিজেন ও এসিটিলিন গ্যাসের অনুপাত ০.৯:১। কার্বুরাইজিং ফ্রেমের আরেক নাম রিডিউসিং ফ্লেম। কার্বুরাইজিং ফ্লেমের সর্বাধিক তাপমাত্রা প্রায় ২৭০০-২৯০০ ডিগ্রী সে.। এটি প্রজ্জ্বলন কালে পত পত শব্দ করে। ধাতব পৃষ্ঠ হাড়েনিং করার কাজে এটির ব্যবহার ব্যাপক। ব্রেজিং, এলুমিনিয়াম ও মোনেল মেটাল ওয়েল্ডিং-এ এটি ভাল ফল দেয়।
খ) নিউট্রাল ফ্রেম (Neutral Flame ) যে অক্সি-এসিটিলিন ফ্লেমে অক্সিজেন ও এসিটিলিনের পরিমাণ সমান থাকে, তাকে নিউট্রাল ফ্লেম বলে। এই ফ্লেমের ইনার হোয়াইট কোন ছোট ও তীক্ষ্ণ শিখার রং হালকা বেগুনী হয়। পরিমাণ সমান হওয়ায় কোন গ্যাস এককভাবে কোন ধাতুর উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে না। গ্যাস ওয়েল্ডিং কাজে নিউট্রাল ফ্লেম সর্বাধিক ব্যবহৃত হয়। নিউট্রাল ফ্লেমের সর্বাধিক তাপমাত্রা ৩১০০-৩২৫০ ডিগ্রী সে.। গ্যাস ওয়েল্ডিং-এ সময় এটি মৃদু শব্দ সহকারে জ্বলে। নিউট্রাল ফ্লেম দিয়ে সকল ধরনের ধাতু ওয়েল্ডি করা যায়।
গ) অক্সিডাইজিং ফ্লেম (Oxidizing Flame )
যে অক্সি-এসিটিলিন ফ্রেমে এসিটিলিনের চেয়ে অক্সিজেনের পরিমাণ বেশী থাকে তাকে অক্সিডাইজিং ফ্লেম বলে। স্টীলের ক্ষেত্রে এটি খুব বেশি ব্যবহৃিত হয়না। এই ফ্রেমের ইনার হোয়াইট কোন খুব ছোট ও তীক্ষ্ণ শিখার রং হালকা বেগুনী হয়। এই ফ্লেমে অক্সিজেন ও এসিটিলিন গ্যাসের অনুপাত ১.৫:১ এবং ফ্রেমের সর্বাধিক তাপমাত্রা ৩৩০০-৩৪৮০ ডিগ্রী সে.। গ্যাস ওয়েল্ডিং-এ সময় এটি হিস হিস ফ্লেম পিতল ও কাশা ওয়েল্ডিং এর ক্ষেত্রে বেশি ব্যবহৃত হয়। শব্দ সহকারে জ্বলে। অক্সিডাইজিং।
ওয়েল্ডিং এর কাজ শিখতে এসে একজন শিক্ষানবিস বা নবীন ওয়েন্ডারকে কতিপয় শব্দ বার বার শুনতে হয়। উক্ত শব্দগুলির পরিভাষা জানা এবং বুঝতে পারা তার জন্য অতি প্রয়োজন। এ দিক বিবেচনা করে নিচে কতিপয় বহুল প্রচলিত ওয়েন্ডিং পরিভাষা সম্পর্কে লিখা হয়।
বেস মেটাল বা প্যারেন্ট মেটাল (Base Metal):
যে ধাতুকে ওয়েন্ডিং করা হচ্ছে তাকে বেস মেটাল বা প্যারেন্ট মেটাল বলে ।
ফিলার মেটাল (Filler Metal) : পরিপুরক ধাতু হিসেবে ওয়েল্ডিং এর সময় জোড়া স্থানে এটা প্রয়োগ করা হয়।
রান (Run ) : ইলেকট্রোড বা রোপাইপকে একবার মূলধাতুর উপর দিয়ে টেনে নেয়ার পর, বেসমেটালের উপর যে ধাতু জমা হয় তাকে রান বলে। একে অনেক সময় বিডও বলা হয়।
রুট (Route): ওয়েল্ডিং করার জন্য প্রস্তুতকৃত ধাতু খন্ডদ্বয়ের মুখোমুখি মিলন স্থলকে রুট বলে।
ফিলেট ওয়েল্ড (Fillet Weld): ত্রিকোণাকৃতি প্রস্থচ্ছেদ বিশিষ্ট ওয়েল্ডিংকে ফিলেট বলে।
লেগলেংথ (Leg Length): ফিলেটের রুট হতে টো পর্যন্ত দূরত্ব।
ছোট থিকনেস (Throat Thickness) : রুট হতে ‘টো’দ্বয়ের মধ্যবর্তী বিন্দুদ্বয়ের লম্ব দূরত্ব।
ট্যাক ওয়েল্ড (Tack Weld): যে ধাতব খন্ড দুটির উপর ওয়েন্ডিং করা হবে সে খন্ড দুটি যেন তাপের প্রভাবে বা অন্য কোনো বস্তুর ধাক্কা লেগে সরে যেতে বা বাঁকা হতে না পারে সেজন্য পাত দু'টিতে ছোট ছোট রানের ওয়েল্ডিং করা হয় তাকে ট্যাক ওয়েল্ডিং বলে।
আর্ক (Arc): ইলেকট্রোড এবং জবের কারেন্ট বাহিত ধাতব বাষ্পের একটি স্রোত। লং আর্ক (Long Arc): আর্ক এর দৈর্ঘ্য বেশি হলে তাকে লং আর্ক বলে। শর্ট আর্ক (Short Arc): যে আর্কের দৈর্ঘ্য কম তাকে শর্ট আর্ক বলে, এটি সাধারণত ইলেকট্রোডের কোরের ব্যাসের সমান হয়।
হিট অ্যাফেকটেড জোন (Heat Affected Zone)
ওয়েন্ডিং বা কাটিং কাজের সময় তাপের প্রভাবে জবের যে অংশটুকু ধাতুর ভিতরের গঠনের পরিবর্তন হয় তাকে হিট অ্যাফেকটেড জোন বলে।
ফিউশান জোন (Fusion Zone): মূল ধাতুর যে অংশটুকু উত্তাপের প্রভাবে গলে ওয়েল্ড মেটালের সাথে
মিশে যায় সে অংশটুকুকে ফিউশান জোন বলে ।
ফ্রান্স (Flux): এটা এক প্রকার রাসায়নিক যৌগিক পদার্থ যা ওয়েল্ডিং, সোল্ডারিং বা ব্রেজিং এর সময় প্রয়োগ করা হয়। এটা জোড়াস্থানে বায়ুর অক্সিজেনের সাথে ক্রিয়া করে অক্সাইড তৈরিতে বাধা দেয় ও জোড়াকে শক্ত করে দ্রুত গলন কাজ সমাধা করে।
প্রিহিটিং (Pre Heating): ওয়েল্ডিং করার পূর্বে মূল ধাতুকে তাপ প্রয়োগ করাকে প্রিহিটিং বলে।
পোষ্ট হিটিং (Post Heating): ওয়েল্ডিং করার পর জবে তাপ প্রয়োগ করাকে পোষ্ট হিটিং বলে।
যখন ধাতবপাতের বা জবের গুরুত্ববৃদ্ধি পায় তখন উহার পার্শ্বদেশ প্রস্তুত না করলে ভাল পেনিষ্ট্রেশন হয় না ১.৫ মিলিমিটার হতে ৬ মিলিমিটার পুরুত্বের ধাতুকে ওয়েল্ডিং করতে জোড়ার পার্শ্বদেশ প্রস্তুত না করলেও কাজ চলতে পারে, তবে ৬ মিলিমিটার গুরুত্বের বেশী সকল জবের পার্শ্বদেশ অবশ্যই প্রস্তুত করতে হবে। উপযুক্তভাবে পার্শ্বদেশ প্রস্তুত না করলে জোড়ার শক্তি সন্তোষজনক হবে না এবং জোড়া বেঁকে যাওয়ার সম্ভাবনাও থাকবে।
কোনো জোড়ের পার্শ্বদেশ প্রযুক্তির পূর্বে বিবেচনা করতে হবে তা কোন পদার্থের তৈরি, কি প্রকারের জোড়া হবে কোন পদ্ধতির ওয়েল্ডিং করা হবে ইত্যাদি।
জোড়ার পার্শ্বদেশ প্রস্তুতির পদ্ধতিগুলি হল:
• গ্রাইন্ডিং করে (Grinding )
ফাইলিং করে (Filing)
• চিপিং করে (Chipping)
• আর্ক কাটিং প্রক্রিয়ায় (Are Cutting)
গ্যাস কাটিং প্রক্রিয়া (Gas Cutting)
প্লাজমা কাটিং (Plasma Cutting)
শিয়ার মেশিনে কেটে (Shearing)
কখনও কখনও জোড়ার পার্শ্বদেশ প্রস্তুতির কাজ একাধিক পদ্ধতির সমন্বয়ে করা হয়। যেমন চিপিং করার পর গ্রাইন্ডিং করে, অথবা চিপিং করার পর ফাইলিং করে।
(ক) ছোট আকৃতির জবগুলিকে হাতে ধরে গ্রাইন্ডিং মেশিনে গ্রাইন্ডিং করে নিলেই চলে। কিন্তু বড় জৰ অৰ্থাৎ যে জবকে নাড়ানো, চড়ানো অসুবিধাজনক সেখানে পোর্টেবল হ্যান্ড গ্রাইন্ডার ব্যবহার করে কাজ করতে হয়।
(খ) ফাইলিং করে জোড়ার পার্শ্বদেশ প্রস্তুতিতে ইহা অত্যন্ত উপযুক্ত পদ্ধতি। যে ক্ষৰকে ভাইসে ৰাখা সম্ভ সেটিকে ভাইসে ৰেখে ফাইল দিয়ে ধাতুর করে পার্শ্বদেশ প্রস্তুত করা হয়।
কিন্তু ভাইস রাখা না গেলে জবকে সুবিধাজনক অবস্থায় নিয়ে ফাইলিং করে পার্শ্বদেশ প্রভুত করা যায়।
(গ) চিপিং করে মোটা জব অর্থাৎ বেশ খানিকটা ধাতু যেখানে। কেটে জোড়ার পার্শ্বদেশ প্রস্তুত করতে হবে সেখানে চিপিং করে পার্শ্বদেশ প্রস্তুত করতে হয়। এই পদ্ধতিতে কোন চিজেলের মাথায় হাতুড়ী দিয়ে আঘাত করে ধাতু কর্তন করতে হৰে হয়। কর্তনের পূর্বে অবশ্যই যে স্থানের মেটাল কাটতে হবে সে স্থানে ভালভাবে মার্কিং করে নিতে হবে। চিপিং করার পর অধিকাংশ ক্ষেত্রে গ্রাইন্ডিং অথবা ফাইলিং করার প্রয়োজন হয়।
(ঘ) আর্ক কাটিং পদ্ধতি
(১) মেটাল আর্ক কাটিং পদ্ধতি
আর্ক ওয়েল্ডিং এ যেমন ধাতু জোড়া দেওয়া হয় তেমনি কাটাও যায়। এই পদ্ধতিতে কাটার সময় কারেন্টের পরিমাণ ওয়েন্ডিং করার সময়ের চেয়ে বেশী লাগে এবং কাটার কাজে ইলেকট্রোড ব্যবহৃত হয় তার ব্যাস ৪ মিলিমিটার এর কম হওয়া উচিত নয়। ওয়েল্ডিং পদ্ধতির মত আর্ক কাটিং পদ্ধতিতেও মোটা ধাতু কাটতে বেশী কারেন্ট ও বেশী ব্যাসের ইলেকট্রোন্ড এবং চিকন বা অল্প গুরুত্বের ধাতু কাটতে কম কারেন্ট ও খানিকটা চিকন ইলেকট্রোড ব্যবহার করতে হয়।
(২) অগ্নি আর্ক কাটিং পদ্ধতি
যে সমস্ত জবের পার্শ্বদেশ সাধারণ মেটালিক আর্ক কাটিং অথবা গ্যাস কাটিং পদ্ধতিতে কাটা অসুবিধাজনক যেমন হাই ক্রোমিয়াম ভীল, ক্রোমিয়াম নিকেল ষ্টীল, স্টেইনলেস ষ্টীল, ব্রোঞ্জ, কপার, এলুমিনিয়াম, ইত্যাদি সেই সকল ধাতুকে সুবিধাজনকভাবে এই পদ্ধতিতে কাটা যায়। এই পদ্ধতিতে ব্যবহৃত ইলেকট্রোভটির মাঝে একটি ছিদ্র থাকে ঐ ছিদ্র পথে ধাতু কাটার জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়। ছিদ্র বিশিষ্ট ইলেকট্রোভটি আর্ক সৃষ্টি করে এবং আর্কের উত্তাপে ধাতু গলে। হলো ইলেকট্রোডের মাঝ দিয়ে যে অক্সিজেন সরবরাহ করা হয় সেই অক্সিজেনের চাপে ধাতু কাটার কাজ সম্পন্ন হয়।
(ঙ) স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে গ্যাস কাটিং প্রক্রিয়া:
স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে অক্সিজেন এবং অ্যাসিটিলিন গ্রাসের শিখার সাহায্যে ধাতুকে উত্তপ্ত করে তখন অর্ধগলিত ধাতু অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে দ্রুত অক্সাইড তৈরি করে, অক্সাইডের গলন তাপমাত্র মূলধাতুর চেয়ে কম লাগে তাই ঐ সময় উচ্চচাপে বিশুদ্ধ অক্সিজেন সরবরাহ করলে অক্সাইড যুক্ত ধাতু ছিটকে পড়ে এবং ধাতু কর্তন সম্পন্ন হয়। এই পদ্ধতিতে জবের পার্শ্বদেশ প্রভুত করতে সময় কম লাগে।
(চ) প্লাজমা কাটিং
সাধারণত পদার্থ যখন ঠান্ডা থাকে তখন কঠিন, এটিকে উত্তপ্ত করলে তরুল, এটিকে আরো উত্তপ্ত করলে এটি গ্যাসীয়/বায়বীয় এবং এটিকে যখন ভীষন ভাবে উত্তপ্ত করা হয় তখন এটি প্লাজমাতে পরিণত হয়। তাপমাত্রা বৃদ্ধি পদার্থের অণু, পরমাণু সমূহকে পরস্পর হতে বিচ্ছিন্ন হতে বা দূরে সরে যেতে চাপ দেয়। আর এই ভাবেই অত্যধিক ভাপ গ্যাসকে প্লাজমাতে রূপান্তর করে।
প্লাজমা আর্ক কাটিং এর সময়, প্লাজমা টর্চের ভেতরে একটি টাংস্টেন ইলেকট্রোডের মাধ্যমে প্রচন্ড উত্ত একটি আর্ক সৃষ্টি হয়। এই উষপ্ত আর্কের সংস্পর্শে উচ্চ চাপে বাভাসকে নজেলের মাধ্যমে প্রবাহিত করা হলে এটি উচ্চ তাপের সংস্পর্শে এসে আয়োনাইজড হয়ে প্লাজমাতে রূপ নেয়। আর এই উত্তপ্ত প্লাজমা একটি সংকীর্ণ পথ/নজেল দিয়ে ধাতু কাটার স্থানে প্রবাহিত করা হয়। এই উচ্চ ভাগে (প্রায় ২০০০০ডিগ্রী সে:) ও চাপযুক্ত আয়োনাইজড গ্যাস বা প্লাজমা অতি সহজেই ধাতু কর্তন করতে সক্ষম হয়। প্লাজমা আর্ক কাটিং এ টর্চ টিপকে ঠান্ডা রাখার জন্য ওয়াটার কুলির ব্যবস্থা রাখা হয়।
(ছ) শিয়ার মেশিনে কেটে
অল্প গুরুত্বের ধাতুকে ব্রেঞ্চ শিয়ার মেশিনে কেটেও জোড়া স্থানের পার্শ্বদেশ প্রস্তুত করা যায়,
তবে ওয়েল্ডিং ওয়ার্কশপে জোড়া পার্শ্বদেশ প্রস্তুতির জন্য চিপিং ফাইলিং এবং গ্রাইন্ডিং পদ্ধতি খুব বেশী ব্যবহৃত করা হয়। জোড়ার পার্শ্বদেশ প্রস্তুতির চিত্র নিচে দেখান হল । অ্যাঙ্গেল অৰ বিভেল (Angle of bevel)
V- Preparation for SMAW on MS Plates 30° to 35°
U- Preparation for SMAW on MS Plates 80 to 12°
V- Single bevel-50" J-Preparation 10° to 20°
আমেরিকান সোসাইটি অব মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং (ASME) এবং আমেরিকান ওয়েংি সোসাইটি (AWS) ওয়েল্ডিং জোড়াকে ০৫ (পাঁচ) ভাগে বিভক্ত করেন। যেমন:-
আমেরিকান সোসাইটি অব মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং (ASME) এবং আমেরিকান ওয়েন্ডিং সোসাইটি (AWS) ওয়েল্ডিং পজিশনগুলোকে সংখ্যা ও বর্ণ একত্রিত করে প্রকাশ করে, যেমন- 1F, 1G, 2F, 2G ইত্যাদি। এখানে, সংখ্যা দিয়ে ওয়েন্ডিং পজিশন এবং বর্ণ দিয়ে ওরেন্স এর আকৃতি, প্রকৃতি এবং জোড়ার প্রস্তুতির ধরনকে নির্দেশ করে। যেমন-
ফিলেট ওয়েল্ড সাধারণত চারটি অবস্থানে ওয়েল্ডিং করা যায়। যথা-
1F = সমতল অবস্থানে জোড়া দেওয়া (Flat position )
2F = অনুভূমিক অবস্থানে জোড়া দেওয়া (Horizontal position) 3F = উলম্ব অবস্থানে জোড়া দেওয়া (Vertical position)
4F = ওভার হেড অবস্থানে (Overhead Position) জোড়া দেওয়া অর্থাৎ জবের তলদেশে জোড়া দেওয়া
অনুরূপ ভাবে, খুঁত বা বিভেল আকৃতির ওয়েভ চারটি অবস্থানে ওয়েল্ডিং করা যায়। যথা-
1G = সমতল অবস্থানে জোড়া দেওয়া (Flat position)
2G = আনুভূমিক অবস্থানে জোড়া দেওয়া (Horizontal position) 3G = উলম্ব অবস্থানে জোড়া দেওয়া (Vertical position)
4G = ওভার হেড অবস্থানে জোড়া দেওয়া অর্থাৎ জবের তলদেশে জোড়া দেওয়া (Overhead position)
চারটি পজিশনে গুড ও ফিলেট ওয়েল্ড পাশাপাশি রেখে বিভিন্ন ধরনের ওয়েল্ডিং জোড়া দেখানো হলো-
পাইপ এর ক্ষেত্রে নিখুঁত জোড়ার গুরুত্ব সর্বাধিক। কারণ, পাইপের মাধ্যমে জ্বালানী গ্যাস, জ্বালানী তেল ও রাসায়নিক পদার্থ উচ্চ চাপে পরিবহন বা সঞ্চালন করা হয়। তাই এক্ষেত্রে অধিক নিশ্চয়তা ও নিরাপত্তার জন্য ত্রুটিমুক্ত ওয়েল্ডিং জোড়া প্রয়োজন। এক্ষেত্রে পাইপের জোড়া ওয়েন্ডিং করতে ওয়েল্ডারের অধিক দক্ষতার প্রয়োজন হয়। তবে পাইপের ওয়েল্ডিং পজিশন জেনে ওয়েন্ডিং অনুশীলন করলে দ্রুত দক্ষতা অর্জন সম্ভব। ৩জি ও ৪জি অবস্থানে পাইপ ওয়েল্ডিং করার প্রয়োজন পড়ে না। সাধারণত পাইপ ওয়েল্ডিং এ ভ ওয়েষ্ট হয় তবে বিশেষ ক্ষেত্রে ফিলেট ওয়েল্ড করার দরকার পড়ে।
• ১জি অনুভূমিক পাইপের অবস্থান (Horzontal Pipe Position) : যখন পাইপটি ধারাবাহিকভাবে ঘুরানো হয় যাতে পাইপের অবস্থান অনুভূমিক থাকে এবং ০ থেকে ১৫° মধ্যে থেকে ওয়েল্ডিং সম্পাদিত হয়।
• ২জি উলম্ব পাইপের অবস্থান (Vertical pipe position): পাইপটি উপর অবস্থানে থাকে, ওয়েল্ডারকে পাইপের চারিদিকে ঘুরে অনুভূমিক অবস্থানে থেকে ওরেস্টিং করতে যায়।
• ৫জি- অনুভূমিক পাইপের অবস্থান (পাইল ফিক্সড) (Horizontal pipe position, fixed): পাইল অনুহুমিকের সাথে সমান্তরাল থাকে এবং ওয়েন্ডারকে পাইপের চারিদিকে অবস্থানে থেকে ওয়েন্ডিং করতে হয় ।
• ৬জি- ৪৫০ ঢালু অবস্থানে পাইপ (পাইপ ফিক্সড) ( 45° Inclined pipe position, fixed): 880 ঢালু অবস্থানে পাইপ ফিক্সড রেখে ওয়েন্ডিং করতে হয়।
• ৬ জি আর - ৪৫° ঢালু অবস্থানে পাইলে রিং ওয়েল্ডিং ( 45° Inclined pipe position with a Restriction Ring (fixed): ৪৫* ঢালু অবস্থানে পাইল ফিক্সড রেখে পাইপে বিভেল করে রিং স্থাপন করে ওয়েন্ডিং করতে হয়।
আমরা দৈনন্দিন নানাবিধ প্রয়োজনে বিভিন্ন দ্রব্য সামগ্রী বা কার্যবস্তুকে প্রয়োজনীয় আকার ও আকৃতি প্রদানের জন্য নানাবিধ যন্ত্রপাতি /সরঞ্জাম ব্যবহার করে থাকি। জাসরা বাসা-বাড়িতে মাছ, সাংস, স ইত্যাদি প্রক্রিয়া করতে ছুরি, চাকু, ধসুয়া, দা ইত্যাদি ব্যবহার করি। আসবাবপত্র তৈরি ও মেরামত করতে করাত, বাটালী, মাটাস, পলিশ ইত্যাদি ব্যবহার করি আবার দালান-কোঠা ও রাস্তাঘাট নির্মাণে- কোনাল, ৰেলচা, চিচ্ছেল, গ্রাইন্ডার ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। তাছাড়াও বিভিন্ন শিল্প-কলকারখানা ও ওয়ার্কশপে- কোন কার্যবস্তুকে হোল বা গর্ত করতে এবং কোন কিছুকে ক্ষয় করে আকৃতি প্রদানের জন্য ড্রিলিং, গ্রাইন্ডিং হইল ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়। বিভিন্ন শিল্প-কলকারখানা ও ওয়ার্কশপে বিভিন্ন দ্রব্য সামগ্ৰী বা কার্যবস্তুকে হোল/ধর্ষণের মাধ্যমে ক্ষর করে প্রয়োজনীয় আকার ও আকৃতি প্রদানের লক্ষ্যে ড্রিলিং, গ্রাইন্ডিং এর ব্যবহার ও বিভিন্ন বন্ধু ক্ষয় ও মসৃন করার কৌশল সম্পর্কে শিখতে পারব।
কোন কিছুকে ক্ষয় করার একটি প্রক্রিয়ার নাম প্রাইন্ডিং; ক্ষয়কারী টুল হিসাবে গ্রাইন্ডিং হুইল ব্যবহার করা হয়। হইল ক্ষয়কারী ও নিজে ক্ষয়রোধী বৈশিষ্ট্য পদার্থ দিয়ে তৈরী হয়। ইহ সাধারনত শক্ত পাথর কণা, কার্বন, কার্বাইড, সংকর ধাতু ইত্যাদি পদার্থ দিয়ে তৈরি হয়। গ্রাইন্ডিং হইলের ধরন অনুযায়ী কোন বন্ধু হতে ধর্ষনের মাধ্যমে অপ্রয়োজনীয় পাদার্থ দ্রুত অপসারন করা বার, ঠিক তেমনি কোন অমসৃন তলকে বিভিন্ন মানে মসৃনও করা যায় ।
গ্রাইন্ডিং হুইল সাধারনত কার্যবস্তুর উপাদানের মসৃনতার উপর নির্ভর করে বিভিন্ন সংকর পদার্থের মিশ্রনে তৈরী হয়ে থাকে। গ্রাইন্ডিং হুইলের পরিমাপের ক্ষেত্রে বাহিরের ব্যাস, হুইলের পুরত্ব ও ছিদ্রের ব্যাস দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। যেমন-১৫০ মিমি x ২৫ মিমি x ৩০ মিমি হুইল বলতে বোঝায়- বাহিরের ব্যাস ১৫০ মিমি, পুরুত্ব ২৫ মিমি ও ছিদ্রের ব্যাস ৩০ মিমি ।
গ্রাইন্ডিং কাজে ব্যবহৃত গ্রাইন্ডিং মেশিন ও হুইলের নিরাপদ অবস্থান দরকার। যে গ্রাইন্ডিং করবে তাকে যেমন ব্যক্তিগত সুরক্ষা ও নিরাপত্তামূলক সরঞ্জাম ব্যবহার করতে হবে, ঠিক তেমনি গ্রাইন্ডিং মেশিনেরও নিরাপত্তা সরঞ্জাম থাকা দরকার। সচরাচর গ্রাইন্ডিং মেশিনের সাথে নিম্নে বর্ণিত সেফটি সামগ্রী সংযুক্ত করা থাকে।
• আই শীল্ড (Eye Shield) ৰা ফেস গাৰ্ড (Face Guard)
• হুই পা (Wheel Guard)
• টুল রেস্ট (Tool Rest )
আই শীল্ড অপারেটরের চক্ষুকে হুইলের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অ্যারোসিড (Abrasive) কণা এবং ধাতুচূর্ণ হতে রক্ষা করে। আই শীল্ড স্বচ্ছ ও নিখুঁত হওয়া প্রয়োজন। কার্যবস্তুকে উত্তমরূপে দেখার জন্য অনেক ক্ষেত্রে আই শীল্ডের নিচের দিকে বৈদ্যুতিক বাল্ব লাগানোর ব্যবস্থা থাকে। আই শীল্ডের অবস্থান সবসময় কার্যবস্তু এবং অপারেটরের চক্ষুর মধ্যবর্তী স্থানে নিশ্চিত রাখতে হয়।
হইল পার্ড কোন বস্তুকে ঘুরন্ত প্রাইন্ডিং হুইলের সংস্পর্শে আসতে বাধা দেয় এবং হুইলকে বাহ্যিক আঘাত পাওয়া থেকে রক্ষা করে। এ ছাড়া কোন দুর্ঘটনার কারণে ঘুরন্ত হুইল ভেঙ্গে গেলে উহার ভগ্নাংশ যাতে চারদিকে ছিটে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটাতে না পারে সে ব্যাপারে হুইল গার্ড সাহায্য করে।
কার্যবস্তুকে টুল রেন্টের উপর রেখে নিরাপদে গ্রাইন্ডিং করা হয়। ইহা কাটিং টুল বা কার্যবস্তুকে নিরাপত্তার সাথে কাজ করতে সাহায্য করে। টুল রেন্ট এবং হুইলের মধ্যে সম্ভাব্য সবচেয়ে কম ফাঁক থাকে; ফলে গ্রাইন্ডিং হুইল টুল রেস্টকে প্রায় স্পর্শ করে ঘুরে কিন্তু কোন রিস্ক থাকেনা।
১.১.৩ গ্রাইন্ডিং হুইল তৈরির উপাদানসমূহ গ্রাইন্ডিং হুইল তৈরিতে বন্ডিং পদার্থের সাথে ক্ষয়কারী পদার্থের (Abrasive Material) কণা (Grain) ব্যবহার করা হয়। যেমন-
• অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড (Aluminum Oxide)
সিলিকন কার্বাইড (Silicon Carbide)
ডায়মন্ড (Diamond) ইত্যাদি।
গ্রাইন্ডিং হুইল তৈরিতে ব্যবহৃত বন্ডিং পদার্থ যেমন-
• ভিটরিফাইড (Vitrified)
• রেজিনয়েড (Resinoid)
• সিলিকেট (Silicate)
• লোক (Shellac)
• রাবার (Rubber) ইত্যাদি।
অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড একটি মজবুত ধারালো বিশিষ্ট অ্যারোসিভ পদার্থ। ইহা দিয়ে তৈরি গ্রাইন্ডিং হুইল উচ্চ টেনসাইল স্ট্রেংথ (Tensile Strength) বিশিষ্ট ধাতুকে ক্ষয় করতে ব্যবহৃত হয়। যেমন-কার্বন কি, অ্যালয় স্টিল, শক্ত ও নরম স্টিল, রট আয়রন, ব্রোঞ্জ ইত্যাদি। অ্যাব্রোসিভ এর আকার বড় হলে ধাতুকে যত কাটিং বা ক্ষয় করা যায় এবং ছোট হলে ধীরে ধীরে ক্ষয় হয়। ফলে কার্যবস্তুর পৃষ্ঠতল অপেক্ষাকৃত বেশি মসৃন ও সুন্দর করা যায়।
সিলিকন কার্বাইড (Silicon Carbide)
সিলিকন কার্বাইড অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড থেকে অনেক শক্ত এবং ভঙ্গুর হয়। এর সাহায্যে অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইডকেও কাটা যায়। ইহা কম টানা বল (লো টেনসাইল স্ট্রেংথ) বিশিষ্ট খাত; যেমন-ঢালাই লোহা, অ্যালুমিনিয়াম, তামা, রাবার, টাংস্টেন কার্যাইড, মার্বেল, সিরামিক, ম্যাগনেসিয়াম, প্লাস্টিক, ফাইবার ইত্যাদি গ্রাইন্ডিং করার জন্য ব্যবহৃত হয়।
ডায়মন্ড (Diamond)
তারমন্ত সাধারণত দুই প্রকারের হয়-
• কৃত্রিম ডায়মন্ড (Artificial Diamond)
• প্রাকৃতিক ডায়মন্ড (Natural Diamond) প্রাকৃতিক ডায়মন্ড খনি থেকে পাওয়া যায় এবং ইহার মূল্য খুব বেশি হয়। এর সাহায্যে বিভিন্ন প্রকার মুল্যবান এবং আকর্ষণীয় অলংকার সামগ্রী প্রস্তুত করা হয়। কৃত্রিম ডায়মন্ড শিল্প কারখানায় তৈরি করা হয় ফলে এর মূল্য কম। এর গুণগত মান প্রায়ই একই রূপ বিধায় গ্রাইন্ডিং হইল উৎপাদন শিল্পে প্রাকৃতিক ডায়মন্ডের তুলনায় কৃত্রিম ডায়মন্ডের ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে এবং বেশি সমাদৃত হচ্ছে। ডায়মন্ড সবচেয়ে শক্ত পদার্থ । মিতব্যয়িতার জন্য ডায়মস্ত হুইল সম্পূর্ণরূপে কৃত্রিম ডায়মন্ড কণা ও বন্ডিং মেটেরিয়্যালের সাহায্যে তৈরি করা হয়।
দুইটি অংশক অস্থায়ীভাবে যুক্ত করতে নাট ও বোল্ট এর ব্যবহার বশি দেখতে পাই যমেন বাসাবাড়িতে ব্যবহৃত টিউবয়েলের হ্যান্ডেল, রিকশা বা সাইকেলের চাকা, মোটরগাড়ির চাকা, ষ্টীল স্ট্রাকচার তৈরিতে নাট ও বোল্ট ব্যবহৃত হয়। এই নাট ও বোস্টে পাঁচ কাটা থাকে যার সাহায্যে কার্যবস্তুকে সংযোজন করা হয়। এই প্যাঁচকে গ্রেভ বলে, আর ভিতরের প্যাঁচকে ইন্টানাল প্লেড (অভ্যন্তরীণ প্যাঁচ) এবং বাইরের ট্রেডকে এক্সটার্নাল ব্লেড (বাহ্যিক পাঁচ) বলে। লেদ মেশিনের অন্যতম একটি কাজ হল প্যাঁচ কাটা।
আরও দেখুন...