খাদ্য আমাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কিন্তু সব ধরনের খাদ্যই কি এই বিকাশে সমানভাবে সহায়ক? না, তা নয়, নিরাপদ ও সুষম খাদ্য শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য অত্যন্ত সহায়ক। ইতোমধ্যে আমরা জেনেছি বয়স উপযোগী, নিরাপদ, সুষম খাদ্যের পরিকল্পিত অভ্যাস কীভাবে আমাদের সুস্থ ও সবল জীবন গড়ায় সাহায্য করে। আবার এর অভাবে আমাদের শরীর ও মনে কী ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে এবং রোগব্যাধি হয়।
আমাদের দেশের নাগরিকদের জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার লক্ষ্যে 'বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ' নামে একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান নিয়োজিত রয়েছে। এই প্রতিষ্ঠান খাদ্য নিরাপদ রাখার জন্য খাদ্যে ভেজাল ও দূষণরোধে যা করণীয় তার নেতৃত্ব দেন। এবারের এই অভিজ্ঞতাটিতে আমরা প্রত্যেকে তেমনি করে নিজেদের পরিবারের খাদ্য নিরাপদ রাখার কাজে নেতৃত্বে দেবো। এক্ষেত্রে আমরা সবাই নিজেদের পরিবারের ক্যাপ্টেন হয়ে নিজেদের ভূমিকা পালন করব।
এর জন্য বিভিন্ন কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাস, প্রস্তুতি ও সংরক্ষণের ধরন পর্যবেক্ষণ করে নিরাপদ ও পরিচ্ছন্ন খাদ্যের ঝুঁকিসমূহ শনাক্ত করব। খাদ্য প্রস্তুতি, পরিবেশন ও সংরক্ষণের স্বাস্থ্যসম্মত উপায় সম্বন্ধে জানব। খাদ্য নিরাপদ রাখতে খাদ্যে ভেজাল ও দূষণরোধে করণীয় সম্পর্কেও ধারণা লাভ করব। এরপর আমরা নিরাপদ খাদ্য সম্পর্কিত ঝুঁকি মোকাবিলা করে সুস্থভাবে জীবনযাপনের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণে ভূমিকা রাখব। এভাবে প্রচলিত জীবনধারায় প্রয়োজনীয় পরিবর্তন এনে তা অনুশীলন করব এবং নিজেদেরকে একটি সুস্থ, পরিচ্ছন্ন, নিরাপদ ও উৎফুল্ল জীবনধারায় সম্পৃক্ত করতে পারব।
তাহলে চলো শুরু করি পরিবারের ক্যাপ্টেনের ভূমিকায় নিজের অভিযাত্রা।
ক্যাপ্টেন হয়ে শুরুতেই আমাদের পরিবারে খাবার প্রস্তুতি, পরিবেশন, খাবার সংরক্ষণ, অপচয় ও দূষণরোধের ক্ষেত্রে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয় তা পর্যবেক্ষণ করে তথ্য সংগ্রহ করেছি। এ ক্ষেত্রগুলোতে আমি ও আমার পরিবারের অন্যান্য সদস্য কীভাবে অংশগ্রহণ করে সে সম্পর্কেও তথ্য সংগ্রহ করে লিখে রেখেছি। এবার সহপাঠীদের সাথে নিজেদের এবং তাদের সংগ্রহ করা তথ্য নিয়ে আলোচনা করব।
তাহলে চলো আলোচনা করে আমরা যে বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করলাম তা দিয়ে 'আমার পর্যবেক্ষণ' ছকটি পূরণ করি।
আমার পর্যবেক্ষণ
খাবার প্রস্তুত কীভাবে করা হয় এবং এতে কে কে অংশগ্রহণ করেন? |
|
পরিবেশন কীভাবে করা হয় এবং কে করেন? |
|
খাবার সংরক্ষণ কীভাবে করা হয় এবং কে করেন? |
|
খাবারের পুষ্টিমান বজায় রাখতে কী করা হয়? |
|
পরিবারের উদ্বৃত্ত খাবার কী করা হয়? |
|
খাবার প্রস্তুত করা ও সংরক্ষণ প্রক্রিয়ায় আমি কী ভূমিকা পালন |
|
আমাদের এই 'আমার পর্যবেক্ষণ' ছকের কাজগুলো খাবার নিরাপদ রাখতে কী ধরনের প্রভাব ফেলে তা নিয়ে দলগতভাবে আলোচনা করেছি। এরপর লটারি করে এক একদল এক এক বিষয়ে উপস্থাপন করেছি এবং ফিডব্যাক দিয়েছি।
এবার আমাদের প্রাপ্ত মতামতগুলো আমরা নিচের 'আমাদের কাজ এবং খাবার নিরাপদ রাখতে এর প্রভাব' ছকটিতে লিখি।
আমাদের কাজ এবং খাবার নিরাপদ রাখতে এর প্রভাব
আমাদের কাজ | খাবার নিরাপদ রাখতে এ কাজের প্রভাব | |
উৎপাদন ও প্রক্রিয়াকরণ | ||
প্রস্তুতি
| ||
পরিবেশন
| ||
খাবার সংরক্ষণ |
পুষ্টিগুণে পরিপূর্ণ হলেও খাবারের প্রস্তুতি, পরিবেশন, খাবার সংরক্ষণ পদ্ধতি সঠিক না হলে তা আর নিরাপদ থাকে না। স্বাস্থ্যরক্ষায় খাবার পুষ্টিকর হওয়ার পাশাপাশি নিরাপদ হওয়া খুবই জরুরি। অন্যথায় যে খাবার আমাদের জীবন বাঁচায় সেই খাবারই হতে পারে আমাদের রোগব্যাধির অন্যতম কারণ। দূষণের কারণে খাবার অনিরাপদ হয়ে থাকে। অনিরাপদ খাবারের স্বল্পমেয়াদি প্রভাবে ডায়রিয়া, বমি, পেট ব্যথা, বা এলার্জি জাতীয় সমস্যা এবং দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, কিডনিসংক্রান্ত জটিলতা এমনকি ক্যানসারও হতে পারে।
খাবার যে সকল কারণে অনিরাপদ হয়
আমরা নিজেদের অভিজ্ঞতা থেকে এবং বিভিন্ন তথ্যসূত্র ব্যবহার করে খাবার অনিরাপদ হওয়ার কারণ খুঁজে বের করেছি। এবার খাবার নিরাপদ রাখতে আমাদের করণীয় খুঁজে বের করার পালা। আবারও আমরা আগে
নিরাপদ খাবার নিশ্চিত করার জন্য সচেতনভাবে সবার অংশগ্রহণ জরুরি। আমরা প্রায়ই দেখতে পাই পরিবারের এক/দুইজন এই দায়িত্বগুলো পালন করে থাকেন। অন্যদের অংশগ্রহণ অনেকাংশে কম থাকে। আমাদের সামাজিক প্রেক্ষাপটে সাধারণত খাবার প্রস্তুতকরণ যেমন শাকসবজি, মাছ, মাংস কাটা-ধোয়া, রান্নার কাজে নারীদের এবং বাজার করার কাজে পুরুষদের বেশি অংশগ্রহণ লক্ষ করা যায়। এতে করে কারও কারও উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে যায়। আর এর ফলে খাবার নিরাপদ রাখার প্রক্রিয়া অনেক ক্ষেত্রে ব্যাহত হয়। সেজন্যই এ প্রক্রিয়ায় সবার অংশগ্রহণ পরিবারের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় গুণগত পরিবর্তন আনতে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।
খাদ্যের গুণগত মান হারানো বা ফুড লস ও প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাদ্য নষ্ট করা বা ফুড ওয়েন্ট খাদ্য অপচয়ের কারণ। এই অভিজ্ঞতার শুরুতে নিজেদের পরিবারের তথ্য সংগ্রহ করেছি এবং প্রস্তুতি ও সংরক্ষণের ফলে খাদ্যের গুণগত মান এবং উদ্বৃত্ত খাবারের ব্যবহার বিষয়ক তথ্য পর্যালোচনা করেছি। এবার আরও অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য আমরা আশেপাশে রেস্টুরেন্ট/ হোটেল/কমিউনিটি সেন্টারের ম্যানেজার বা বাবুচী বা রাঁধুনি অথবা প্রতিবেশীদের মধ্য থেকে যে কোনো দুজনের সাক্ষাৎকার নেবো এবং জানব সে সব জায়গায় খাদ্য প্রস্তুতির আগে, রান্নার সময় ও পরিবেশনের সময় খাবারের গুণগত মান ঠিক রাখতে তারা কী করেন এবং উদ্বৃত্ত খাবারের ব্যবহার কীভাবে করেন।
খাবারের গুণগত মান ঠিক রাখা এবং উদ্বৃত্ত খাবারের ব্যবহার বিষয়ক তথ্য সংগ্রহের ছক
তথ্য প্রদানকারী | খাদ্যের গুণগত মান বজায় রাখতে যা করেন এবং করা যায় বলে মনে করেন | উদ্বৃত্ত খাবার যেভাবে ব্যবহার করেন এবং করা যায় বলে মনে করেন |
| যা করেন:
যা করা যায় বলে মনে করেন/জানেন কিন্তু করেন না: | যা করেন: যা করা যায় বলে মনে করেন/ জানেন কিন্তু করেন না: |
| যা করেন:
যা করা যায় বলে মনে করেন/জানেন কিন্তু করেন না: | যা করেন:
যা করা যায় বলে মনে করেন। জানেন কিন্তু করেন না: |
নষ্ট বা পচে যাওয়া খাবার থেকে মিথেন গ্যাস উৎপন্ন হয় যা আমাদের পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়াতে ক্রমাগত সাহায্য করছে। খাদ্য অপচয় রোধ করতে পারলে মিথেন গ্যাসের বিস্তার কমে গিয়ে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে। এবার আমরা কী কী উপায়ে খাদ্য অপচয় রোধ করতে পারি তা নিচের 'খাদ্য অপচয় রোধ করার উপায়' ছকটিতে লিখি:
খাদ্য অপচয় রোধ করার উপায় |
|
আন্তরিক প্রচেষ্টার মাধ্যমেই আমরা খাদ্য অপচয় বহুলাংশে রোধ করতে পারি এবং এতে আর্থিক সাশ্রয়ের পাশাপাশি পরিবেশের দূষণও রোধ করতে পারি।
নিরাপদ খাবারের অভ্যাস গঠনের সাথে সাথে এর সম্পূর্ণ পুষ্টিগুণ বজায় রেখে খাওয়া জরুরি। আমরা অনেক সময় স্বাস্থ্যকর পদ্ধতিতে খাবার তৈরি বা সংরক্ষণ না করার কারণে খাদ্যের সম্পূর্ণ পুষ্টিগুণ থেকে বঞ্চিত হই। অথচ একটু সচেতন হলেই যে কোনো খাদ্যের পরিপূর্ণ পুষ্টি বজায় রেখে আমরা সেটা খেতে পারি। স্বাস্থ্যকর পদ্ধতিতে খাবার খাওয়া ও খাবার রান্নার কিছু উপায় হলো:
ক) লাল চাল বা আছাঁটা চালের ভাত খাওয়া: সাদা এবং বারংবার ছাটাই করা চালের দানার উপরিভাগে অবস্থিত প্রোটিন, ভিটামিন এবং মিনারেলের মতো খাদ্য উপাদানের বেশ কিছু অংশ চলে যায়। খ) বসা ভাত বা ভাতের মাড় না ফেলে রান্না করা: মাড় ফেলে দিয়ে ভাত রান্না করা হলে পানিতে দ্রবণীয় পুষ্টি উপাদান মাড়ের সাথে অপচয় হয়। বসাভাত পদ্ধতিতে রান্না করলে সকল পুষ্টি সমৃদ্ধ উপাদান ভাতের মধ্যেই থেকে যায়। গ) শাকসবজি আগে ধুয়ে পরে কেটে নেওয়া: শাকসবজি আগে কেটে পরে ধুয়ে নিলে এ থেকে মিনারেল জাতীয় খাদ্যের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বেরিয়ে যায়, ফলে খাদ্যের পুষ্টিমান কমে যায়। ) মাছ-মাংস বা শাকসবজি সঠিক তাপমাত্রায় সম্পূর্ণ সিদ্ধ করে রান্না করা: এতে জীবাণু মরে যায় এবং খাদ্যের পুষ্টিগুণ বজায় খাকে।
|
এবার আমরা দলগতভাবে নিরাপদ খাদ্যবিষয়ক কয়েকটি স্লোগান তৈরি করব। নিচে এ সংক্রান্ত কয়েকটি স্লোগান দেওয়া আছে।
'বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ' এর ব্যবহৃত স্লোগান সুস্থ
নিরাপদ খাদ্যবিষয়ক কয়েকটি স্লোগান
|
এগুলোর মতো করে আমরা নতুন আরও কতগুলো স্লোগান তৈরি করব এবং সেগুলো এর সাথে যুক্ত করব।
এরপর এসব স্লোগান ব্যবহার করে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ে পরিবার ও প্রতিবেশীদের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তুলব এবং খাবার নিরাপদ রাখতে কাজ করার জন্য তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করব।
এই অভিজ্ঞতার বিভিন্ন কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে আমরা খাবার নিরাপদ রাখার উপায় এবং এ বিষয়ে আমাদের কী করণীয় তা শিখেছি। খাবারের গুণগত মান ও পুষ্টিগুণ কীভাবে বজায় রাখতে হয় তাও শিখেছি। খাদ্য অপচয়ের কারণ ও তা রোধ করার কৌশল শিখেছি। এবার আমার পরিকল্পনা করার পালা। খাদ্য নিরাপদ রাখতে পরিবারে ক্যাপ্টেন হিসেবে আমার ভূমিকা কী হবে এবং পরিবার ও সমাজে এ বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতে আমি কী পদক্ষেপ নিতে চাই এ সংক্রান্ত তথ্য দিয়ে পরিকল্পনাটি তৈরি করব। এ সব নিয়ে আমার পরিকল্পনাটি 'খাদ্য নিরাপদ রাখতে পরিবারের কাজে আমার অংশগ্রহণ ও সচেতনতায় আমার পরিকল্পনা' ছকে লিখি।
খাদ্য নিরাপদ রাখতে পরিবারের কাজে আমার অংশগ্রহণ ও সচেতনতায় আমার পরিকল্পনা
পরিবারের কাজে অংশগ্রহণ ও সচেতনতার জন্য আমার পদক্ষেপ | সামাজিক সচেতনতার জন্য আমাদের পদক্ষেপ |
|
আমার অগ্রগতি, আমার অর্জন
নিচের ছকটি আমার অভিভাবক ও শিক্ষক পূরণ করবেন। আমি নিজেও পূরণ করব। এর মাধ্যমে আমি আমার অগ্রগতি সম্পর্কে জানব, কোথায় আরও ভালো করার সুযোগ আছে তা খুঁজে বের করব। দলগত কাজের অভিজ্ঞতা থেকে আমার অংশগ্রহণের বিষয়ে সহপাঠীদের মতামত জেনে নিয়ে আমি সংশ্লিষ্ট অংশে লিখে নেবো। আমার অভিভাবক বইয়ে সম্পাদিত কাজ দেখে মন্তব্য লিখবেন। সমস্ত কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে শিক্ষক আমাকে স্বীকৃতি দিবেন। কী ভালো করেছি, কীভাবে আরও ভালো করতে পারি, সে উপায় জানাবেন। শিক্ষাবর্ষ
মূল্যায়ন ছক ১: আমার অংশগ্রহণ ও পাঠ্যপুস্তকে করা কাজ
নিজের মন্তব্য | সহপাঠীর মন্তব্য | অভিভাবকের মন্তব্য | শিক্ষকের মন্তব্য | |
স্বতঃস্ফূর্ত উদ্যোগ গ্রহণ | ||||
শ্রদ্ধাশীল আচরণ
| ||||
সহযোগিতামূলক মনোভাব | ||||
পাঠ্যপুস্তকে সম্পাদিত কাজের মান |
মূল্যায়ন ছক ২: খাদ্য নিরাপদ রাখা ও অপচয় রোধ করার কৌশলগুলোর চর্চার মাধ্যমে অর্জিত যোগ্যতা প্রয়োগের মূল্যায়ন
শিক্ষার্থীর নাম: | খাদ্য দূষণ ও অপচয় রোধের কৌশল চর্চা সংক্রান্ত ব্যক্তিগত পরিকল্পনার যথার্থতা | পরিকল্পনার আলোকে করা চর্চা সংক্রান্ত কাজগুলো পাঠ্যপুস্তক এবং খাতা/ডায়েরি/ জার্নালে লিপিবদ্ধ করা | পাঠ্যপুস্তক ডায়েরি/ খাতা/ জার্নালে লিপিবদ্ধ করা কাজগুলোতে খাদ্য দূষণ ও অপচয় রোধের ধারণাগুলোর সঠিক প্রতিফলন |
বর্ণনামূলক ফিডব্যাক
|
Read more
আমাদের অল-ইন-ওয়ান মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে সীমাহীন শেখার সুযোগ উপভোগ করুন।
Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.
1 hour ago
Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.
1 hour ago
Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.
1 hour ago
Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.
1 hour ago
Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.
1 hour ago
Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.
1 hour ago
Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.
1 hour ago
Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.
1 hour ago
Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.
1 hour ago
Lorem ipsum dolor, sit amet consectetur adipisicing elit. Ducimus nihil, quo, quis minus aspernatur expedita, incidunt facilis aliquid inventore voluptate dolores accusantium laborum labore a dolorum dolore omnis qui? Consequuntur sed facilis repellendus corrupti amet in quibusdam ducimus illo autem, a praesentium.
1 hour ago