শিল্প কারখানায় উৎপাদন করতে হলে প্রয়োজন ধাতুকে জোড়া দেওয়া। এতে অত্যন্ত সহজ ও মজবুত জোড়ের সৃষ্টি হয়। ওয়েল্ডিং আবিষ্কারের পূর্বে রিভেটের সাহায্যে এ জোড়া দেওয়া হতো। বর্তমানে প্রায় সকল ধাতু এমন কী প্লাস্টিক ও ওয়েল্ডিং করে জোড়া দেওয়া হচ্ছে। যে ওয়েল্ডিং করে তাকে বলা হয় ওয়েল্ডার। দেশ এবং বিদেশের সকল শিল্প কারখানাতে ওয়েল্ডারের ভালো চাহিদা আছে। ওয়েল্ডিং ট্রেডের মূল উদ্দেশ্য হলো ওয়েন্ডার তৈরি করা। এই ট্রেডের কিছু সংখ্যক মেধাবী শিক্ষার্থী উচ্চতর শিক্ষা লাভ করে শিল্প কারখানায় দক্ষ কারিগর এমনকি প্রকৌশলী হিসেবে দেশের শিল্পায়নে যথাযথ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।
চিত্র : ১.১ (ক) ওয়েল্ডিং ট্রেড
চিত্র : ১.১ (খ) ওয়েল্ডিং পদ্ধতি
ওরেন্ডার-এর সম্ভাব্য কর্মক্ষোে হলো :
চিত্র ১.২ (ক) স্ট্রাকচারাল শিল্প
চিত্র : ১.২ (খ) ধাতব আসবাবপত্র তৈরি শিল্প
চিত্র ১.২ (গ) ঘটর গাড়ি তৈরির শিল্প
চিত্র: ১.২ (ঘ) পাইপ লাইন তৈরির কাজ
চিত্র: ১.২ (ঙ) উড়োজাহাজ তৈরির শিল্প
চিত্র : ১.২ (চ) নভোযান তৈরির শিল্প
চিত্র : ১.২ (ছ) জাহাজ শিল্প
চিত্র : ১.২ (জ) রেলওয়ে প্রতিষ্ঠান
চিত্র : ১.২ (ঝ) ভারী যন্ত্রপাতি তৈরির শিল্প
এছাড়াও ওয়েল্ডার-এর সম্ভাব্য নিম্নরূপ কর্মক্ষেত্রগুলো হয়ে থাকে। যেমন :
ওয়েল্ডিং পদ্ধতি যেহেতু নির্মাণ ছাড়াও মেরামতির জন্য ও প্রয়োজনীয়, সুতরাং সকল ধরনের শিল্প প্রতিষ্ঠানই একজন ওয়েল্ডারের কর্মক্ষেত্র হতে পারে, তবে স্ব-উদ্যোগে কর্মসংস্থানের সুযোগ ওয়েল্ডিং ট্রেড সম্পন্নকারী শিক্ষার্থীদের খুব বেশি, কারণ এতে পুঁজি কম লাগে এবং এটি একটি লাভজনক ব্যবসাও বটে। শুধু আত্মকর্মসংস্থান এর ব্রত নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।
কোন কিছু তৈরি করতে হলে প্রথমেই ভাবতে হবে তার জোড়া দেওয়ার কথা, কারণ জোড়া ছাড়া অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোনো যন্ত্র বা যন্ত্রাংশ উৎপাদন করা যায় না। শিল্পক্ষেত্রে যত প্রকারের জোড়া দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে ওয়েল্ডিং তাদের মধ্যে অন্যতম। এমন কোনো শিল্প কারখানা নেই যেখানে ধাতুকে স্থায়ী ভাবে জোড়া লাগানোর জন্য ওয়েন্ডিং ব্যবস্থা নেই। সকল প্রকার নির্মাণ এবং মেরামতের কারখানায় এট্রেডের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য বিধায় এ সম্পর্কে তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক কাজের ধারণা ও কাজগুলো সম্পাদনের নিয়ম জানা থাকা অতীব প্রয়োজন ।
যেমন :
ফাইলিং করা (ফাইল বা রেড দিয়ে ধাতু ক্ষয় করা)
হ্যাকস দিয়ে ধাতু কর্তন করা
উপরিউক্ত কাজগুলোর উপর গুরেন্ডারের দক্ষতা থাকা অতি প্রয়োজন কারণ ওয়ার্কশপে একজন ওয়েন্ডারকে ওয়েন্ডিং করা ছাড়াও এই কাজগুলো বিভিন্ন প্রয়োজনে করতে হয়।
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১। ওয়েল্ডিং কী?
২। ওয়েন্ডার কাকে বলে ?
৩। কোন বস্তু নির্মাণ ছাড়াও ওয়েল্ডিং আর কোন কাজে ব্যবহৃত হয় ?
৪। স্ট্রাকাচারাল শিল্পে কী কাজ করা হয় ?
৫। স্ব-উদ্যোগে কর্মসংস্থানে ওয়েল্ডিং টেড্রের ছাত্রদের সুযোগ বেশি কেন?
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
৬। ওয়েল্ডিং ট্রেড সম্পন্ন করার পর একজন নবীন ওয়েল্ডার কী কী কাজ করতে পারবে?
৭। একজন ভালো ওয়েল্ডারের কোন কোন তাত্ত্বিক বিষয়ে জ্ঞান থাকা প্রয়োজন?
৮। একজন ভালো ওয়েল্ডারের কোন কোন ব্যবহারিক বিষয়ে জ্ঞান থাকা প্রয়োজন?
৯। ওয়েল্ডিং করে তৈরি করা যায় এমন ০৪ (চার)টি গৃহে ব্যবহৃত আসবাবপত্রের নাম লেখ।
১০। ওয়েল্ডিং ট্রেডের গুরুত্ব এত বেশি কেন ?
রচনামূলক প্রশ্ন
১১। ওয়েল্ডিং ট্রেড শেষ করার পর একজন নবীন ওয়েল্ডার কোন কোন শিল্প কারখানায় চাকুরি পেতে
১২। ওয়েল্ডিং ট্রেডের গুরুত্ব বর্ণনা কর।
১৩। ওয়েল্ডার-এর সম্ভাব্য কর্মক্ষেত্রগুলো বিবৃত কর।
১৪। ওয়েল্ডিং ট্রেডের উদ্দেশ্য উল্লেখ কর।
সম জাতীয় বা ভিন্ন জাতীয় ধাতব খন্ডকে পাশাপাশি অবস্থানে রেখে উত্তাপের সাহায্যে গলিত বা অর্ধগলিত অবস্থায় এনে চাপ প্রয়োগ করে বা বিনা চাপে ফিলার মেটাল প্রয়োগ করে বা না করে স্থায়ীভাবে জোড়া দেওয়ার কৌশলকে ওয়েল্ডিং বলে।
চিত্র : ২১ ওয়েল্ডিং পদ্ধতি
গ্রিল তৈরির দোকানে হরেক রকমের গ্রিল তৈরি হয়, সেখানে একাধিক ধাতু খণ্ডকে জোড়া লাগানো হয়। আবার কামার শালায় ধাতুখণ্ডকে উত্তপ্ত করে অর্ধগলিত অবস্থায় এনে হাতুড়ির সাহায্যে পিটিয়ে শিকল বানানো হয়। উভয়ক্ষেত্রে জোড়া হয় স্থায়ী, তবে গ্রিল তৈরির দোকানে জোড়া লাগানোর জন্য জোড়াস্থানে চাপ প্রয়োগ করতে হয় না, কিন্তু কামার শালায় শিকল বানাতে জোড়াস্থানে হাতুড়ির আঘাত বা চাপ প্রয়োগ করতে হয় আমরা এরূপ জোড়া দেওয়াকে ওয়েল্ডিং করা বলি। সুতরাং ওয়েল্ডিং এর সংজ্ঞা হলো দুইখণ্ড ধাতুকে উত্তাপের সাহায্যে গণিত বা অর্ধ গলিত অবস্থায় এনে, চাপে অথবা বিনা চাপে স্থায়ীভাবে জোড়া দেওয়াকে ওয়েল্ডিং বলে।
বহুল প্রচলিত ওয়েন্ডিং পদ্ধতিগুলো হলোঃ
(ক) ফোর্স ওয়েল্ডিং
(খ) আর্ক ওয়েল্ডিং
(গ) গ্যাস ওয়েল্ডিং
(খ) ইলেকট্রিক রেজিস্ট্যান্স ওয়েন্ডিং
(ঙ) পারমিট ওয়েল্ডিং
চিত্র : ২.২ (খ) গ্যাস ওয়েল্ডিং
চিত্র : ২.২ (৩) পারমিট ওয়েন্ডিং
নিচে বহুল প্রচলিত ওয়েন্ডিং পদ্ধতিগুলোর শ্রেণি বিন্যাস উল্লেখ করা হলো। ওয়েন্ডিং প্রধানত দুই প্রকার, যথাঃ
১। প্রেসার ওয়েন্ডিং বা মনফিউশন ওয়েন্ডিং
২। নন প্রেসার বা ফিউশন ওয়েল্ডিং।
তাপ ও চাপের সাহায্যে সম জাতীয় ধাতু অর্ধগলিত অবস্থায় চাপ প্রয়োগ করে যে জোড় সৃষ্টি হয় তাই প্রেসার বা ননফিউশন ওয়েন্ডিং। আর তাপ বা চাপের সাহায্যে সম জাতীয় ধাতু গণিত অবস্থায় তৃতীয় ধাতু ব্যবহার করে বা ব্যবহার ছাড়া যে জোড় সৃষ্টি হয় তাই নন প্রেসার বা ফিউশন ওয়েন্ডিং।
উপরের প্রধান শ্রেণি দুইটিকে আবার বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যেমনঃ
১। প্রেসার ওয়েল্ডিং বা ননফিউশন ওয়েডিং
(ক) ফোর্স ওয়েল্ডিং (Farge Welding)
(i) হ্যামার ওয়েল্ডিং (Hammer welding
(ii) ভাই ওয়েল্ডিং (Die welding)
(iii) রোগ ওয়েল্ডিং (Roll welding)
(খ) ইলেকট্রিক রেজিস্ট্যান্স ওয়েন্ডিং (Electric Resistance Welding )
(i) বাট ওয়েল্ডিং (Butt Welding)
(ii) সিম ওয়েল্ডিং (Scam Welding )
(iii) স্পর্ট ওয়েল্ডিং (Spot Welding)
(iv) প্রজেকশন ওয়েল্ডিং (Projection Welding)
(v) পারকাশন ওয়েল্ডিং (Percussion Welding )
(vi) ফ্লাশ ওয়েল্ডিং (Flush Welding)
(vii) থারমিট ওয়েল্ডিং (Thermit Welding)
২। নন প্রেসার বা ফিউশন ওয়েল্ডিং
(ক) আর্ক ওয়েল্ডিং (Are Welding)
(i) কার্বন আর্ক ওয়েল্ডিং (Carbon Are Welding)
(ii) মেটাল আর্ক ওয়েল্ডিং (Metal Arc Welding)
(খ) গ্যাস ওয়েন্ডিং (Gas Welding)
(i) অক্সি অ্যাসিটিলিন ওয়েল্ডিং (Oxy Acetylene Welding)
(ii) অক্সি হাইড্রোজেন ওয়েল্ডিং (Oxy Hydrozen Welding)
(iii) এয়ার অ্যাসিটিলিন ওয়েল্ডিং (Air Acetylene Welding)
(গ) থারমিট ওয়েল্ডিং (বিনা চাপে) (Thermit Welding)
বিজ্ঞানের উন্নতির সাথে সাথে, নতুন নতুন ওয়েল্ডিং পদ্ধতি আবিষ্কৃত হয়েছে, ফলে ওয়েল্ডিং এর শ্রেণি বিভাগও অনেক জটিল হয়েছে। আমেরিকান ওয়েন্ডিং সোসাইটি (AWS) নামক একটি সংস্থা ওয়েন্ডিং এর বিভিন্ন প্রক্রিয়ার একটি মাস্টার চার্ট তৈরি করেছে, উক্ত চার্টটি এই পুস্তকে সংযোজিত হলো।
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১। ওয়েন্ডিং বলতে কী বুঝায়?
২। ইলেকট্রিক রেজিস্ট্যান্স ওয়েল্ডিং কোন শ্রেণির ওয়েল্ডিং?
৩। কামার শালাতে শিকল বানাতে যে জোড়া দেওয়া হয় তা কোন শ্রেণির ওয়েল্ডিং?
৪। গ্যাস ওয়েল্ডিং কোন শ্রেণির ওয়েল্ডিং? ৫। ওয়েন্ডিং প্রসেসর এর মাস্টার চার্টটি কোন সংস্থা তৈরী করেছে?
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
৬। আর্ক ওয়েল্ডিং কত প্রকার ও কী কী?
৭। বহুল প্রচলিত ওয়েন্ডিং পদ্ধতিগুলোর নাম লেখ।
৮। ফোর্ড ওয়েন্ডিং কত প্রকার ও কী কী?
রচনামূলক প্রশ্ন
৯। ওয়েল্ডিং-এর শ্রেণি বিন্যাস কর।
১০। ওয়েল্ডিং এর সময় চাপ প্রয়োগ করতে হয় এইরূপ ওয়েল্ডিং পদ্ধতিগুলোর নাম লেখ।
১১। ওয়েল্ডিং এর সময় চাপ প্রয়োগ করতে হয় না এইরূপ ওয়েন্ডিং পদ্ধতিগুলোর নাম লেখ।
সাধারণত ওয়েন্ডিং হলো আগুন, বিদ্যুৎ ও অর্ধগলিত বা পলিত ধাতু নিয়ে কাজ-কারবার। এরূপ তিনটি বিষয়ই শরীরের পক্ষে বিশেষ ক্ষতিকারক। কাজেই ওয়েন্ডারকে খুবই সতর্কতার সাথে কাজ করতে হয়। আর যিনি ওরেন্ডিং করেন তাঁকেই ওরেন্ডার বলে। একজন ওরেন্ডারকে যেমন অনেক কিছু জানতে হবে তেমনি তাঁকে সাবধানও থাকতে হবে অনেক বেশি। সাবধান না থাকলে ওয়েল্ডিং-এর কাজে দেহের সম্মুখ ভাগটা রক্ষা করবার জন্য বিশেষভাবে তৈরি আবরণ কাজে লাগবে না।
চিত্র : ৩.১ বৈদ্যুতিক শক
ওয়েন্ডিং প্রযুক্তি বিদ্যায় একটি প্রচলিত উক্তি "Safety is the best policy, No safety no work" একজন দক্ষ কারিগর তার যদি সেফটি বা সাবধানতা সম্বন্ধে কোনো ব্যবহারিক জ্ঞান না থাকে, তাহলে সে শিল্প উৎপাদনের ক্ষেত্রে একজন অযোগ্য ব্যক্তি। কথায় আছে 'সাবধানের মার নেই'। সাবধানতা নিয়ে কাজ করলে কখনও বিপদ আসে না বা হয় না। এ কারণে সকল শিক্ষার্থী বা কর্মীকে কারখানার নিয়ম মেনে চলতে হয়। একজনের ভুলের মাশুল অন্য জনকেও কখনও কখনও দিতে হয়। কারখানায় অনেক শ্রমিক একত্রে কাজ করে, এর মধ্যে একজনও যদি অসাবধানভাবে কাজ করে, তবে তার মাশুল বাকি শ্রমিকদের দিতে হয়। এ জন্য আমাদের জানা প্রয়োজন বৈদ্যুতিক শক (Shock) কী? এবং কী কারণে এ শক (Shock) প্রাপ্ত হয় তা জানারঃ কোন কারণে ফেজ এর সাথে নিউট্রাল বা মাটির সাথে সংযোগ হলে বৈদ্যুতিক শক এর সৃষ্টি হয়। আবার কোন মেশিনের বড়িতে যদি বৈদ্যুতিক সংযোগ বা কোন কারণে মেশিনটি বিদ্যুতায়িত হয়ে থাকে তবে তা মানুষের সংস্পর্শে এলে বৈদ্যুতিক শক প্রাপ্ত হয়। অর্থ্যাৎ ফেজ তারের সংস্পর্শে বা বিদ্যুতায়িত মেশিনের সংস্পর্শে যদি কোন ব্যক্তি আসে এবং তার শরীর যদি আর্থের সাথে সংযোগ প্রাপ্ত হয় তবে তিনি বৈদ্যুতিক শক প্রাপ্ত হবেন। বৈদ্যুতিক শক থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সেফটি সু পরা আবশ্যক ।
গ্যাস ওয়েল্ডিং এর চেয়ে আর্ক ওয়েল্ডিং এর সাবধানতার প্রয়োজন বেশি। কেননা এর উত্তাপ ও আলো গ্যাস ওয়েল্ডিং এর চেয়ে বেশি মারাত্মক। এটা লক্ষ করা যায় আঁধার রাতে যখন আর্ক ওয়েল্ডিং করা হয়। এ সময় এর রশ্মি বা নীল আলো সার্চ লাইটের আলোর মত পার্শ্ববর্তী এক কিলোমিটারের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। সুতরাং এই রশ্মি যদি কোন সুস্থ লোকের চোখে লাগে, তবে সে তার চোখে বেদনা অনুভব করবে। এই যন্ত্রনায় সে রাতে ঘুমাতেও পারবে না। আর সে সমস্ত দিক বিবেচনা করে একজন ওয়েল্ডারকে ওয়েল্ডিং এর সময় সৃষ্ট উত্তাপ ও মারাত্মক রশ্মির হাত থেকে রক্ষা পেতে হলে অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
আর্ক ওয়েল্ডিং করার সময় আর্ক রশ্মি হতে তাপ ও তেজস্ক্রিয় রশ্মি বিকিরণ হতে থাকে, যা মানব দেহের ক্ষতি সাধন করে। এই ক্ষতি সাধন নিম্নরূপ হয়ে থাকে।
সূর্যের প্রখর তাপে খালি পায়ে যদি কেউ যায় তবে তার চামড়া পুড়ে যায়, ঠিক তেমনি আর্ক রশ্মি হতে বের হওয়া অতি বেগুনি (Ultraviolet) রশ্মিতেও শরীরের চামড়া পুড়ে যাওয়ার মত রং ধারণ বেদনাদায়ক এবং যদি মারাত্মক হয় তবে চামড়ায় ফোসকা পড়ে। তাই শরীরের কোন অংশই যাতে সরাসরি আর্ক রশ্মি লাগতে না পারে সে জন্য শরীরে আচ্ছাদন বা উপযুক্ত পোশাক পড়া নিশ্চিত করতে হবে।
চিত্রঃ ৩.২ (ক) চামড়া পুড়ে যাওয়া
আন্ট্রাভায়লেট রশ্মি সর্বদা শরীরের সংবেদনশীল স্থানে বেশি ক্ষতি সাধন করে বা এর ক্রিয়া বেশি হয়। চোখ শরীরের অত্যন্ত সংবেদনশীল অংশ। তাই মাত্র কয়েক সেকেন্ডের জন্য কয়েক গঞ্জ দূর হতে অনাচ্ছাদিত চোখে আর্কের দিকে তাকালে চোখের মারাত্মক ক্ষতি হয়। চোখে মারাত্মক বেদনাদায়ক অবস্থার সৃষ্টি হয়। অনেক সময় এমন বেদনা দায়ক অবস্থার সৃষ্টি হয়, যার প্রভাব বেশ কিছু সময় পর্যন্ত থাকে। চোখের উপর আর্ক রশ্মির এই প্রভাবকে আর্ক আই (Arc-Eye) বা আই ফ্লাশ (Eye-Flash) বলে।
চিত্রঃ ৩.২ (খ) চোখের উপর প্রতিক্রিয়া
আর্ক আই বা আই ফ্লাশের লক্ষণঃ চোখ হতে পানি ঝরে, চোখে আলো লাগা অসহনীয় মনে হয়, চোখ খচ খচ্ করে। চোখে বালি পড়ার মতো অবস্থা, অসহ্য বেদনা, মাথা ধরে এবং সময় সময় কিছুক্ষণের জন্য দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে যায়। আর্ক আই এর লক্ষণ ৪ হতে ৮ ঘন্টার মধ্যে প্রকাশ পায় এবং চোখের কোনরূপ স্থায়ী ক্ষতি সাধন ছাড়া এ অবস্থা কাটিয়ে উঠতে ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টা সময় লাগে। আবার কোন কোন ক্ষেত্রে ৭২ ঘন্টা পর্যন্ত এর স্থায়িত্বকাল থাকে।
চিত্র : ৩.২ (গ) আই ফ্লাশ
চিকিৎসাঃ আর্ক আই এর লক্ষণ দেখা দেওয়া মাত্রই চোখকে সরাসরি আলোর সংস্পর্শ হতে দূরে রাখতে হবে। একটা পরিষ্কার কাপড় কয়েকবার পানিতে ভিজিয়ে চোখ ঢেকে দিতে হবে এবং একইভাবে কয়েক ঘন্টা পানিপট্টি দিতে হবে।
অন্য কোন জীবানুর হাত হতে চোখকে রক্ষা করার জন্য অ্যান্টিসেপটিক এবং অ্যান্ট্রিজেন্ট লোশন দ্বারা চক্ষু ধুয়ে ফেলতে হবে। এতে উন্নতি না হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হয়।
সাবধানতাঃ আর্ক আই হতে চোখকে রক্ষা করতে হলে উপযুক্ত হেলমেট বা হ্যান্ডসিন্ড ব্যবহার করা আবশ্যক । যা চক্ষুকে আর্ক রশ্মি ও আর্কের প্রচণ্ড উত্তাপ হতে রক্ষা করবে। আর্ক অবলোকন করার জন্য মান সম্পন্ন ও উপযুক্ত ফিল্টার গ্লাস ব্যবহার করতে হবে। নিয়ে ব্রিটিশ স্ট্যান্ডার্ড ৬৭৯ অনুমোদিত মেটাল আর্ক ওয়েল্ডিং ফিস্টার গ্লাস প্রদত্ত হলো।
কারেন্ট রেঞ্জ (Current Range | প্রয়োজনীয় ফিল্টারস (এস) |
১০০ পর্যন্ত | ৯/ই ডব্লিউ- ১০/ই ডব্লিউ |
১০০-৩০০ পর্যন্ত | ১০/ই ডব্লিউ- ১১/ই ডব্লিউ |
৩০০ পর্যন্ত | ১২/ই ডব্লিউ- ১৪/ই ডব্লিউ |
ওয়েন্ডারকে ওয়েন্ডিং করার সময় উত্তপ্ত ধাতব খণ্ডের দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। উত্তপ্ত ধাতব খণ্ড ব্যবহারে সাবধান না হলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ওয়েন্ডিং করার সময় অগ্নি স্ফুলিঙ্গ অথবা গলিত ধাতু কিংবা উত্তপ্ত ধাতু কণা ছিটিয়ে এদিক সেদিক পড়তে পারে। এই উত্তপ্ত ধাতু কণা শরীরে পড়লে শরীর পুড়ে যেতে পারে। জামা কাপড়ে পড়লে জামা কাপড় পুড়ে যেতে পারে কিংবা আগুন ধরে যেতে পারে। তাই উত্তপ্ত ধাতব কণা খুব সাবধানে হ্যান্ডলিং করতে হবে। উত্তপ্ত ওয়ার্ক পিস যদি নগ্ন হাতে ধরা হয় তবে হাত পুড়ে যাবে। কোন দাহ্য বস্তু যেমন শুকনো কাঠ, তৈলাক্ত পদার্থ বা অন্য কোন দাহ্য বস্তুর সংস্পর্শে আসলে আগুন ধরে যেতে পারে। এমন কি মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। উত্তপ্ত ধাতব খণ্ড কখনও খালি হাতে ধরতে নেই। এ ক্ষেত্রে টংস ও হ্যান্ড গ্লোভস ব্যবহার করা উচিত। সর্বদা নিরাপত্তামূলক সরঞ্জামাদি ব্যবহার করতে হবে। অনেক সময় অসাবধানতার কারণে অনাচ্ছাদিত শরীরের কোন অংশে উত্তপ্ত ধাতব খণ্ড লাগলে উক্ত স্থান পুড়ে যাবে।
চিত্র : ৩.৩ উত্তপ্ত ধাতব খণ্ডের সম্ভাব্য বিপদ
ধাতু ওয়েল্ডিং এবং কাটিং-এর সময় ইলেকট্রোডের আবরণ ও মূল ধাতু পুড়ে ধুয়া ও বাষ্পের সৃষ্টি হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে বিষাক্ত গ্যাসের সৃষ্টি হয়, যা শ্বাস-প্রশ্বাস এর মাধ্যমে গ্রহণের ফলে মানব দেহের ক্ষতি সাধন করে। বর্তমান সময় প্রায় সব ধাতুই ওয়েল্ডিং করা যায় এমন কী প্লাস্টিক বা প্লাস্টিক জাতীয় পদার্থও জোড় দেওয়া হয় এর ফলে নানাবিধ বিষাক্ত গ্যাসের সৃষ্টি হয়। যা শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা সৃষ্টি করে। আবার গ্যালভানাইজিং করা ধাতুসমূহ ওয়েল্ডিং করার সময়, সৃষ্ট ধুয়ায় জিঙ্ক অক্সাইড থাকে যা শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যাঘাত সৃষ্টি করে, সম্ভব হলে গ্যালভানাইজড করা ধাতু খোলা জায়গায় ওয়েল্ডিং করতে হবে অথবা ধুয়া নির্গমনের উপযুক্ত ব্যবস্থা করতে হবে। এই বিষাক্ত গ্যাস থেকে নিজেকে রক্ষার জন্য ওয়েল্ডারকে রেস্পিরেটর (Respirator) পরিধান করতে হবে।
আর্ক ওয়েন্ডিং এ যে ইলেকট্রোড ব্যবহার করা হয় উক্ত ইলেকট্রোডের আবরণ অথবা ফ্লাক্স সমূহের মধ্যে ক্লোরিনের যৌগ, সীসা, ক্যাডমিয়াম অথবা অন্য কোন বিষাক্ত পদার্থ বা বিষাক্ত গ্যাস উৎপন্ন করে, যা শ্বাস- প্রশ্বাসের ব্যাঘাত ঘটায় এবং মানব দেহের ক্ষতি সাধন করে। তাই ওয়েল্ডিং করার সময় পর্যাপ্ত বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে বায়ু নিষ্কাশন ফ্যান (Exchast Fan) শপে লাগাতে হবে ।
চিত্রঃ ৩.৪ শারীরিক বিপর্যয়
ওয়েল্ডিং বুথঃ আবদ্ধ কর্মশালায় যেখানে অনেকগুলো ওয়েল্ডিং বুথ বিদ্যমান, সেখানে পর্যাপ্ত ধুয়ার সৃষ্টি হবে। বিষাক্ত গ্যাসসমূহ স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পত্রের সীমার মধ্যে রাখার জন্য নির্গমন ব্যবস্থার প্রয়োজন। এজন্য ফিউম এক্সজাষ্টার অভ্যন্ত উপযুক্ত সাধারণ অনুমোদন অনুযায়ী একজন ওয়েল্ডারের বুঝে প্রতি মিনিটে ২০০০ ঘনফুট বিশুদ্ধ বায়ু চলাচল করতে হবে।
আর্ক ওয়েন্ডিং হচ্ছে আগুন, বিদ্যুৎ এবং অর্ধগলিত ও গলিত ধাতু নিয়ে কাজ। তিনটিই শরীরের পক্ষে বিশেষ ক্ষতিকারক। ওয়েন্ডিং করার সময় অগ্নি স্ফুলিঙ্গ অথবা গলিত ধাতু কিংবা উত্তপ্ত কণা ছড়িয়ে ছিটিয়ে এদিক সেদিক পড়ে যার জন্য দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে। কোন অবস্থাতেই ট্যাংক লরি, ব্যারেল ড্রাম, পাইপ লাইন অথবা অন্য কোন ধারক যার মধ্যে তৈল জাতীয় পদার্থ কিংবা গ্যাস বিদ্যমান, তা ওয়েল্ডিং করা যাবে না যদি না ঐ সমস্ত বিস্ফোরক পদার্থসমূহ যথাযথভাবে পরিষ্কার করা হয়। দাহ্য বাষ্প কিংবা বিষাক্ত গ্যাস উৎপাদন করে এমন পদার্থও ওয়েল্ডিং করা বিপদজনক। দাহ্য এবং বিস্ফোরক পদার্থের মধ্যে গ্যাসোলিন, হালকা তৈল, এসিডসমূহ উল্লেখযোগ্য। যা ধাতুর সাথে বিক্রিয়া ঘটিয়ে হাইড্রোজেন কিংবা নন ভলাটাইল তৈল কিংবা কঠিন পদার্থ উৎপন্ন করে। এ সকল পদার্থ উত্তপ্ত হলে ক্ষতিকারক গ্যাস নির্গত হয়। এসব রাসায়নিক পদার্থের মধ্যে ওয়েল্ডিং করা হলে মারাত্মক বিস্ফোরণও ঘটতে পারে। তাই এসব ক্ষেত্রে ওয়েল্ডিং করতে প্রচুর পানি দিয়ে কয়েকবার ভালোভাবে ধুতে হবে কিংবা রাসায়নিক দ্রবণ অথবা বাষ্প দ্বারা ধারকটি পরিষ্কার করতে হবে। পরিষ্কার করার পর চূড়ান্ত সাবধানতা হিসেবে ওয়েল্ডিং কিংবা কাটিং এর পূর্বে ধারকটিতে নির্গমন পথ অর্থাৎ ছিদ্র করে পানি দ্বারা পরিপূর্ণ করতে হবে।
- আর্ক ওয়েল্ডিংকালে সাবধান থাকতে হবে কারণ যে কোন ভুলের জন্য যে কোন মুহূর্তে বিপদ আসতে পারে। বিশেষ করে যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি সাবধানে না রাখলে উপর থেকে নিচে পড়ে হাতে, পায়ে বা শরীরের যেকোন স্থানে আঘাত পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি উপর থেকে পড়ে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। যেমন হ্যান্ড গ্রাইন্ডিং মেশিন উপর থেকে পড়ে মেশিনের ক্ষতি হতে পারে, বিশেষ করে হ্যান্ড গ্রাইন্ডার শরীরে পড়লে জীবনের ঝুঁকি এসে যায়। আর্ক ওয়েল্ডিং করার সময়, উত্তপ্ত গলিত তরল ধাতু নিচে পড়ে শরীরের যে কোন স্থানে ক্ষতের সৃষ্টি হতে পারে।
- উত্তপ্ত ওয়েল্ডেড জোড়া অসাবধানতার কারণে নিচে পড়ে শরীরের আঘাত বা ক্ষতের সৃষ্টি হতে পারে।
- ধাতু জোড়ের কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন টুলস্ উপর থেকে পড়ে টুলস্ এবং শরীরের ক্ষতি হতে পারে।
- ধাতু জোড়ের সময় অনেক ভারী বস্তু উপরে রাখা হয়। সামান্য ভুলের কারণে নিচে পড়ে মারাত্মক বিপদ হতে পারে। তাই ধাতু জোড়ের সময় যন্ত্রপাতিও সরঞ্জামাদির পতন জনিত বিপদ সমূহের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
- পড়ন্ত বস্তু সাধারণত পায়ের অগ্রভাগে পড়ে, এতে ভারী বস্তু হলে পায়ের অগ্রভাগ থেতলে যায়। এধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেতে সেফটি সু-ব্যবহার করতে হয়। সেফটি সু এর সম্মুখ ভাগ লোহার তৈরি হয়ে থাকে, যার ফলে যে কোন বস্তু পায়ের উপর পড়লে ক্ষতির পরিমাণ কম হয়।
চিত্র : ৩.৭ পড়ন্ত বস্তু জনিত বিপদ
চলন্ত বস্তু বিশেষ করে গ্রাইন্ডিং মেশিন চালনা ও এর ব্যবহারের নিয়ম-কানুন ভালোভাবে জানা দরকার। অমনোযোগী হয়ে কখনও গ্রাইন্ডিং মেশিন ব্যবহার করতে নেই, এতে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে ।
চিত্রঃ ৩.৮ গ্রাইন্ডিং মেশিন চালনা
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১। বৈদ্যুতিক শক্ (Shock) কী ? এর ক্ষয় ক্ষতি উল্লেখ কর ।
২। আই ফ্লাশ বা আর্ক আই ( Arc Eye) বলতে কী বোঝায় ? এর ক্ষতিকর দিকসমূহ ব্যক্ত কর।
৩। আর্ক ওয়েল্ডিং কালে নির্গত ধোঁয়ায় শ্বাস-প্রশ্বাসের সম্ভাব্য বিপদসমূহ উল্লেখ কর।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
৪। দাহ্য বস্তুর নিকটে আর্ক ওয়েল্ডিং কালে সম্ভাব্য বিপদসমূহ বর্ণনা কর ।
৫। আর্ক ওয়েল্ডিং কালে যন্ত্রপাতি বা সরঞ্জামাদির পতনজনিত সম্ভাব্য বিপদসমূহ উল্লেখ কর।
৬। আর্ক রশ্মি চর্মের উপর কী ক্ষতি করে, তা উল্লেখ কর।
৭। আর্ক আই হলে কী করতে হয়।
রচনামূলক প্রশ্ন
৮। চোখের উপর আর্ক রশ্মির প্রতিক্রিয়া ব্যাখ্যা কর।
৯। গ্যালভানাইজিং করা বস্তু ওয়েল্ডিং করার ক্ষেত্রে বেশি বায়ু চলাচল করে এমন স্থানের প্রয়োজন হয় কেন ?
১০। শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত শারীরিক বিপর্যয়সমূহের কারণ ব্যাখ্যা কর।
ওয়েল্ডিং করতে হলে সর্বাগ্রে প্রয়োজন ওয়েন্ডারের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা। ব্যক্তিগত নিরাপত্তার প্রয়োজনে ওয়েল্ডারকে বিশেষ ধরনের পোশাকাদি ব্যবহার করতে হয়। নিরাপদ পোশাকাদি ব্যবহারের ফলে ওয়েল্ডার নিরাপদভাবে ওয়েন্ডিং করতে পারে। নিয়ে ওয়েল্ডার এর নিরাপদ পোশাকাদি চিত্রসহ উল্লেখ করা হলো।
চিত্র : ৪.১ (ক) ওভার অল /বয়লার স্যুট
হ্যান্ড শিশু (Hand Shield) : এটি ওয়েল্ডিং এর সমর তরেন্ডারের চোখ এবং মুখমণ্ডলকে ক্ষতিকারক আর্ক রশ্মির প্রভাব হতে বাঁচায়। এটাকে হাতে ধরে কাজ করতে হয়।
চিত্র : ৪.২ (ক) হ্যান্ড শিশু
হেলমেট (Helmet)ঃ এটাকে হাতে ধরতে হয় না, মাথায় আটকে নিয়ে সুবিধাজনকভাবে ব্যবহার করা যায়। হেলমেট ও হ্যান্ডপিন্ডের মত ওয়েল্ডার এর চোখ এবং মুখমণ্ডলকে ক্ষতিকারক আর্ক রশ্মি হতে বাচায়।
চিত্র : ৪.২ (খ) হেলমেট
সেফটি সুজ (Safety Shoes) : পড়ন্ত বস্তু যাতে পায়ের ক্ষতি করতে না পারে, সে জন্য জুতার টো ক্যাপ স্টিলের তৈরি এবং তলদেশে স্টিলের যোগান থাকে। এর তলা শক্ত রাবারের তৈরি হেতু তড়িতাহত হওয়ার সম্ভাবনা কম।
চিত্র : ৪.২ (গ) সেফটি সুজ
হ্যান্ড গ্লোভস (Hand Gloves) : এটি পুরু এবং অগ্নি প্রতিরোধক পদার্থ দিয়ে তৈরি। হাতের তালু এবং আঙ্গুলগুলোকে অগ্নি এবং উত্তপ্ত ধাতু হতে রক্ষা করে।
চিত্র : ৪.২ (ঘ) হ্যান্ড প্রো
লেদার জ্যাকেট (Leather Jacket) : এটি লেদার বা চামড়ার তৈরি। পজিশনাল ওয়েন্ডিং এ বিশেষ করে ভার্টিক্যাল এবং ওভারহেড অবস্থানে ওয়েন্ডিং করার সময় গণিত স্লাগ, স্প্যাটার ইত্যাদি হতে
চিত্র: ৪.২ (৩) লেদার জ্যাকেট
স্পার্টস/বিশেষ জুতা (Spata)
উৎক্ষিপ্ত গলিত ধাতু কণা হতে পায়ের গোছাকে রক্ষা করে।
চিত্র : ৪.২ (চ) স্পটল
অ্যাপ্রন (Apren) : এটি চামড়ার তৈরি। শরীরের সম্মুখের অংশকে ওয়েন্ডিং এবং কাটিং এর সময় সম্ভাব্য বিপদ যথা উদ্ভন্ন পরম স্থাপ, স্প্যাটার, আর্ক রশ্মি ও জার্কের উত্তাপ হতে রক্ষা করে।
চিত্র: ৪.২(ম) অ্যাপ্রন
আর্থ ও রিস্ট প্রটেকটরস (Earth & Wrist protectors) এটি চামড়ার তৈরি। আর্ক রশ্মি ও আর্কের উত্তাপ হতে হাতের তালু ও আঙ্গুলসমূহ রক্ষা করে।
চিত্র : ৪.২ (জ) অর্থ ও রিস্ট প্রেটেকটরস
স্কাল ক্যাশ (Scalp Cap) : এটি চামড়ার তৈরি বিশেষ টুপি। যা ওয়েল্ডার এর মাথাকে উত্তাপ এবং অগ্নিস্ফুলিঙ্গ হতে রক্ষা করে। ওভারহেড পজিশনে ধাতু জোড়ের ক্ষেত্রে এর বিশেষ প্রয়োজন হয়।
চিত্র : ৪.২ (ঝ) স্কাল ক্যাপ
ইয়ার প্রোটেকটর বা ইয়ার মাফলার (Protector or Ear muffler)
বিরক্তিকর বা বিকট শব্দ হতে এটি ওয়েন্ডার এর কানকে রক্ষা করে।
চিত্র : ৪.২ (ঞ) ইয়ার প্রোটেকটর
রেস্পিরেটর (Respirator)ঃ বিষাক্ত গ্যাস থেকে ওয়েল্ডারকে রক্ষাকরার জন্য এটি ব্যবহৃত হয়।
চিত্র : ৪.২ (ট) রেস্পিরেটর
প্রোটেকটিভ গগলস (Protective goggles)
স্লাপ চিপিং এবং প্রাউন্ডিং করার সময় উৎক্ষিপ্ত ধাতু কণা হতে চোখকে রক্ষা করে।
চিত্র : ৪.২ (ঠ) প্রোটেকটিভ গগলস
যে কোন শিল্প কারখানার তৈরি জিনিসের মান নির্ভর করে ঐ প্রতিষ্ঠানের কার্য-পরিবেশের উপর। কার্য-পরিবেশ যদি সুন্দর হয়, তাহলে তৈরি জিনিসের মান ভালো হবে। সুন্দর পরিবেশ তৈরি করতে হলে, উৎপাদনের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি সঠিক ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া অগোছালো ময়লা জায়গা বা যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদির গায়ে ময়লা জমে থাকলে কর্মদক্ষতা অনেকাংশে কমে যায় এবং দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা অনেকাংশে বেড়ে যায়। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অনেক সময় অনেক দামি যন্ত্রপাতি বা সরঞ্জামাদি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। প্রতিটি সরঞ্জামাদির জন্য আলাদা আলাদা র্যাকের ব্যবস্থা থাকলে এবং পরিষ্কার, পরিচ্ছন্ন রাখা গেলে সরঞ্জামাদি দীর্ঘদিন কার্যক্ষম থাকে। আর্ক ওয়েল্ডিং-এর জন্য ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির মধ্যে রয়েছে (ক) ট্রান্সফরমার (খ) ডি.সি ওয়েন্ডিং এর ক্ষেত্রে জেনারেটর রেকটিফায়ার (Roctifier) |
স্যাত স্যাতে জায়গার এর ব্যবহার নিষেধ, এতে বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। কাজ শেষে ধুলাবালি ও ময়লা পরিষ্কার করে ফেলতে হবে। আর্থিংসহ সব ক্যাবল (Cable) কাজ শেষে সুন্দরভাবে গুটিয়ে রাখতে হবে।
এটি ডি.সি ওয়েন্ডিং-এর ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। এক্ষেত্রে স্যাত স্যাতে, তৈলাক্ত বা আবদ্ধ ঘরে এর ব্যবহার হলে তড়িতাহত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। প্রচুর আলো বাতাস আছে এমন স্থানে এটি স্থাপন করতে হবে। কাজের শেষে এবং সাপ্তাহিকভাবে এর রক্ষনাবেক্ষণ জরুরি, এতে এর কার্যক্ষমতা ঠিক থাকে। অন্যান্য সরঞ্জামাদির ক্ষেত্রেও রক্ষণাবেক্ষণ জরুরি। যেমন জেনির (Chisel) মাথায় যদি অধিক পরিমাণে বাবড়ি জমে থাকে তবে ভা হাতের জন্য বিপদজনক হতে পারে।
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১। আর্ক ওয়েল্ডিং-এর সময় সর্বাগ্রে কী প্রয়োজন ?
২। ওয়েল্ডিং বুথের দেয়াল কিরূপ পদার্থের হয়ে থাকে ?
৩। অগ্নি নিরোধক মহড়ার প্রয়োজন কেন ?
৪। ছেনি দিয়ে কাজ করার সময় কী লক্ষ্য রাখতে হবে ?
৫। রেকটিফায়ার কী ধরনের ওয়েল্ডিং-এর ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয় ?
৬। সেফটি সু ব্যবহার না করলে কী ক্ষতি হতে পারে ?
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
৭। রেকটিফায়ার এর রক্ষণাবেক্ষণ কৌশল লেখ ।
৮। ট্রান্সফরমার এর রক্ষণাবেক্ষণ কৌশল লেখ ।
৯। অগ্নি নিরোধক মহড়ার প্রয়োজন কেন ?
১০। আর্ক ওয়েল্ডিং-এর সময় ব্যবহৃত ৫ (পাঁচ)টি ব্যক্তিগত নিরাপদ সরঞ্জামাদির নাম উল্লেখ কর।
১১। আর্ক ওয়েল্ডিং-এর সময় ব্যবহার্য ৫ (পাঁচ)টি নিরাপত্তামূলক সরঞ্জামাদির ব্যবহার ব্যক্ত কর ।
রচনামূলক প্রশ্ন
১২। আর্ক ওয়েল্ডিং-এ ব্যবহৃত ১০ (দশ)টি নিরাপত্তা সরঞ্জামাদির নাম উল্লেখ কর।
১৩। আর্ক ওয়েল্ডিং-এ ব্যবহৃত ১০ (দশ) টি নিরাপত্তা সরঞ্জামাদির রক্ষণাবেক্ষণ উল্লেখ কর ।
১৪ । আর্ক ওয়েল্ডিং-এর সময় ব্যবহৃত ব্যক্তিগত নিরাপদ সরঞ্জামাদির প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ কর।
১৫। আর্ক ওয়েল্ডিং-এর সময় ব্যবহার্য ব্যক্তিগত নিরাপত্তা সরঞ্জামাদির ব্যবহার উল্লেখ কর।
১৬। এয়ার মাফলার (Ear muffler) ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ কর ।
১৭। আর্ক ওয়েন্ডিং কালে ব্যবহার করতে হয় এমন নিরাপদ পোশাকাদির বর্ণনা দাও।
একজন ওয়েল্ডার যে সমস্ত যন্ত্রপাতি হাতে চালনা করে সেগুলি হলো একজন ওরেন্ডারের হ্যান্ডটুলস। ওরেল্ডার ওয়েজিং কাজের পূর্বে জোড়াস্থান তৈরির জন্য স্থান চিহ্নিত করে, ধাতু কটি, ক্ষয় করে, মাপ নেয়, পিটিয়ে ধাতুর আকৃতি পরিবর্তন করে এইরূপ বিভিন্ন রকমের কাজ করে, এই কাজগুলি করার জন্য যে হ্যান্ড টুলসগুলি ব্যবহৃত হয় সেগুলি হলো :
(১) হ্যাকস (Hack Saw)
(২) ফাইল (File)
(৩) চিহ্নে (Chisel)
(৪) বলপিন হ্যামার (Ball pin Hammer)
(৫) চিপিং হ্যামার (Chipping Harmer)
(৬) সেন্টার পাঞ্চ (Centre Punch)
(৭) ড্রাইবার (Scriber)
(৮) ব্লাকস্মিথ টংস (Blacksmith Tong)
(৯) ওয়্যার ব্রাস (Wire Brush )
(১০) সি ক্ল্যাম্প (C Champ
(১১) পোর্টেবল হ্যান্ড গ্রাইন্ডার (Portable Hand Grinder)
(১২) ভাইস স্লিপ ওয়েন্ডিং ক্ল্যাম্প
(১৩) প্যারালাল ক্ল্যাম্প
চিত্র ৫.১ (ক) হ্যাকস
হ্যাকসঃ ধাতু কাটার অতি প্রয়োজনীয় এ যন্ত্রটির প্রধানত দুইটি অংশ (ক) ফ্রেম এবং (খ) ব্রেড
হ্যাকস ফ্রেস দুই প্রকার-
(১) সলিড ফ্রেম। ফ্রেমের দৈর্ঘ্য কম বেশি করা যায় না।
(২) অ্যাডজাস্ট্যাবল ফ্রেম : প্রয়োজনে ফ্রেমের দৈর্ঘ্য কম বেশি করা যায়।
ব্লেডঃ
ধাতু কাটার হ্যাকস এর মূল উপাদান হলো ব্লেড। ব্লেডের দুই প্রান্তে দুইটি ছিদ্র থাকে, এই ছিদ্র দুইটির কেন্দ্রের মধ্যবর্তী দূরত্বকে হ্যাকস ব্লেডের দৈর্ঘ্য বলে।
বাজারে প্রচলিত ব্লেডগুলির দৈর্ঘ্য ২৫০ মিলিমিটার হতে ৩০০ মিলিমিটার, চওড়া ১২ মিলিমিটার হতে ১৬ মিলিমিটার এবং পুরুত্ব ০.৬৩ মিলিমিটার হতে ০.৮০ মিলিমিটার হয়। প্রতি ইঞ্চিতে দাঁতের সংখ্যা বিভিন্ন হলেও, ওয়ার্কশপের সাধারণ কাজের জন্য প্রতি ইঞ্চিতে ১৪ দাঁতের ব্রেড ব্যবহৃত হয়। মোটা বা বেশি পুরুত্বেও ধাতু কাটার জন্য প্রতি ইঞ্চিতে অল্প দাঁত সংখ্যা বিশিষ্ট ব্লেড ব্যবহৃত হয়। কোন একটি ধাতু কাটার সময় লক্ষ করা উচিত যে স্থানটি কাটা হচ্ছে সে স্থানের উপর কমপক্ষে দুই বা তিনটি দাঁত থাকতে পারে কীনা? যদি না পারে তবে ব্লেড ভাঙার সম্ভাবনা বেশি।
হ্যাকস এর ব্যবহার
অতি প্রয়োজনীয় এ কাটার যন্ত্রটি ওয়ার্কশপে রড, ফ্লাটবার, পাইপ, অ্যাঙ্গেলবার, প্লেট ইত্যাদি অভি সহজে এবং সুবিধাজনকভাবে কাটার জন্য ব্যবহার করা হয়।
কাইল :
ওয়ার্কশপে যতগুলো হ্যান্ডটুলস ব্যবহৃত হয় ফাইল সেগুলোর মধ্যে অন্যতম। একটি ফাইলের বিভিন্ন অংশগুলোর নাম নিয়ে দেওয়া হলো।
চিত্র : ৫.২ (চ) ফাইল
একটি ফাইলের ট্যাং অংশটি বাদ দিলে যা অবশিষ্ট থাকে তা ফাইল দৈৰ্ঘ্য হিসাবে পরিচিত। এ দৈর্ঘ্য ৫০ মিলিমিটার হতে বর্ধিত হয়ে ১০০ মিলিমিটার এবং ১০০ মিলিমিটার হতে বর্ষিত হয়ে ৪৫০ মিলিমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। অর্থাৎ ২ ইঞ্চি হতে ক্রমে বৃদ্ধি পেয়ে ৪ ইঞ্চি এবং ৪ ইঞ্চি হতে ক্রমে বৃদ্ধি পেয়ে ১৮ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়।
ফাইলের ব্যবহারঃ
কোন বস্তুর উপরিভাগ বা কোন নালীর ভিতরের অংশ হতে অল্প পরিমাণ ম্যাটেরিয়াল ক্ষয় করতে এটি অত্যন্ত উপযুক্ত। আপাত দৃষ্টিতে ফাইল চালানো কাজ খুব স্বাভাবিক মনে হলেও সুন্দর করে ফাইল চালানো বা ফাইলিং শেখার জন্য অনেক সময় মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন।
একটি ফাইলের প্রতি সেন্টিমিটারে বা প্রতি ইঞ্চিতে কয়টি দাঁত রয়েছে সে সংখ্যার উপর ভিত্তি করে ফাইলের স্তর বা গ্রেড নির্ধারণ করা হয়। যে স্থানে বেশি ধাতু ক্ষয় করতে হয় তথায় প্রতি সেন্টিমিটারে অল্প দাঁতের ফাইল অর্থাৎ মোটা দাঁতের ফাইল ব্যবহার করা হয়। প্রতি সেন্টিমিটারে বা ইঞ্চিতে দাঁত সংখ্যার ভিত্তিতে ফাইল-এর গ্রেডসমূহের নাম এবং এদের ব্যবহার ছকে দেখান হলো। সঠিক কাজ পাওয়ার জন্য সঠিক গ্রেডের ফাইল নির্বাচন করা অতি প্রয়োজন।
টেবিল নং-১
ফাইলের গ্রেড | প্রতি সে.মিটারে দাঁতের সংখ্যা | প্রতি ইঞ্চি দাঁতের | কোথায় ব্যবহার করতে হবে |
---|---|---|---|
রাফ | ৮ | ২০ | খুব বেশি পরিমাণের ধাতু ক্ষয় করতে। |
বাস্টার্ড | ৮ হতে ১০ | ২০ হতে ৫০ | অপেক্ষাকৃত কম ধাতু ক্ষয় করতে পারে। |
বাস্টার্ড কার্ট | ১২ হতে ১৬ | ৩০ হতে ৪০ | সাধারণ কাজের জন্য |
স্মুথ কার্ট | ২০ হতে ২০ | ৫০ হতে ৬০ | অল্প পরিমাণ ধাতু ক্ষয় করার জন্য। |
ভেড ম্মুখ | ২৬ হতে ৪০ | ৬৫ হতে ১০০ | অতি অল্প পরিমাণ ধাতু অপসারণের জন্য এবং ফিনিসিং দেওয়ার কাজে। |
দাঁতের সংখ্যার উপর ভিত্তি করে যেমন ফাইলের থ্রেড নির্ধারণ করা যায়, তেমনি ফাইলের আকৃতির উপর ভিত্তি করে এর শ্রেণি বিভাগ করা যায়। বিভিন্ন জবের জন্য বিভিন্ন শ্রেণির ফাইলের দরকার হয়।
বিভিন্ন শ্রেণির ফাইলগুলোর নাম হলোঃ
১. ফ্ল্যাট ফাইল
আকৃতি অনুসারে ফাইলগুলোর বর্ণনাঃ
ফ্ল্যাট ফাইলঃ
ফ্ল্যাট অর্থ সমতল বা চ্যাপ্টা সুতরাং এ ফাইন্সের উপরিভাগ সমতল বা চ্যাপ্টা হবে অর্থভাগ ক্রমশ চিকন। এর দৈর্ঘ্য সাধারণত ৫ সেন্টিমিটার হতে ১৫ এবং ১৫ সেন্টিমিটার হতে ৪৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়। ভ্যাকশপের অধিকাংশ কাজ এ ফাইল যারা করা যায়। রাফ, বাস্টার্ড, সেকেন্ড কার্ট, সুখ এবং ডেড স্বর্ণ সকল গ্রেডের ফ্ল্যাট ফাইল বাজারে পাওয়া যায়।
হ্যাভ ফাইল
এর পৃষ্ঠদেশ সমতল এবং আয়তাকার, দেখতে ফ্ল্যাট ফাইলের মতো হলেও এক পার্শ্বে কোন দাঁত থাকে না, অর্থাৎ এক পাশ সমতল থাকে ফলে ১০ ডিগ্রি কোণে কোন পৃষ্ঠ ক্ষয় করার সমর একটি পার্শ্বকে অক্ষুণ্ণ রাখা প্রয়োজন হলে এ প্রকারের ফাইল এর দরকার হয় ।
পিলার ফাইলঃ
এ শ্রেণির ফাইল হ্যান্ড ফাইলের অনুরূপ শুধুমাত্র পার্থক্য যে, এর পুরুত্ব হ্যান্ড ফাইলের চেয়ে বেশি হয়। এ ফাইল ২০ সেন্টিমিটার হতে ৩০ সেন্টিমিটার (৮ ইঞ্চি হতে ১২ ইঞ্চি) পর্যন্ত লম্বা বাজারে পাওয়া যায়। কোন আয়তাকার খাচে অধিক পরিমাণ ধাতু ক্ষয় করার কাজে এ ফাইল অভি উপযুক্ত।
মিল ফাইলঃ
এ প্রকারের ফাইলেরও পৃষ্ঠদেশ চ্যাপ্টা বা সমতল তবে বিশেষত্ব এই যে, এই শ্রেণির ফাইল সিংগেল কাট বিশিষ্ট হয়। অধিক পরিমাণ ধাতু ক্ষর করতে এটি ব্যবহৃত হয়।
হাফ রাউন্ড ফাইল :
নাম হতে বুঝা যায় যে, এ ধরনের ফাইল এর উপরিভাগ অর্থ গোলাকার হবে। তবে প্রকৃত পক্ষে এটি সম্পূর্ণরূপে অর্ধ গোলাকার নয়, খানিকটা অর্থ গোলাকার এবং এর একটি পৃষ্ঠ সমতল থাকে, ফলে সমতল পৃষ্ঠটি দিয়ে অনায়াসে ফ্ল্যাট ফাইলের কাজও চালান যায় এবং বক্রপৃষ্ঠটি দিয়ে কোন পৃষ্ঠকে অবতল আকৃতি দেওয়া যায়। এ শ্রেণির ফাইলের দৈর্ঘ্য ১০ সেন্টিমিটার হতে ৪৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়।
চিত্র : ৫.২ (খ) হাফ রাউড ফাইল
রাউন্ড ফাইল
এ শ্রেণির ফাইল গোলাকার তবে টেপার আকৃতি হয় অর্থাৎ ফাইলের ব্যাস সুঘমহারে ক্রমশ কমে যায়। ছোট আকৃতির রাউন্ড ফাইলকে রাাটটেইল বলা হয়। রাউন্ড ফাইলের দৈর্ঘ্য সাধারণত ১০ সেন্টিমিটার হতে ৪৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়। কোন গোল ছিদ্রকে বড় করতে, অসম আকৃতির ছোলের আকৃতি ঠিক করতে এ শ্রেণির ফাইল অতি উপযুক্ত বলে বিবেচিত হয়।
চিত্র : ৫.২ (দ) রাউন্ড ফাইল
স্ট্যান্ডেলার ফাইল বা গ্লি ক্ষরার ফাইল
তিন কোন বিশিষ্ট এ ফাইল টেপার আকৃতি হয় অর্থাৎ ক্রমশ চিকন হয়। তিন কোণা এ ফাইলের প্রতিটি কোণের মান ৬০ ডিগ্রি। এ প্রকার ফাইল ১০ সেন্টিমিটার হতে ৪০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত দীর্ঘ হয়। এটি সিঙ্গেল কাট এবং ডবল কাট উভয় প্রকারের হয়। যে সমস্ত কৌণিক স্থানের মান ৯০ ডিগ্রি অপেক্ষা কম সে সকল স্থানে ফাইলিং করতে এ প্রকারের ফাইল অধিক উপযুক্ত। করাতের দাঁত, ট্যাপ, কাটার ইত্যাদি ধার দিতে এ ফাইল খুব উপযুক্ত।
চিত্র : ৫.২ (খ) ট্র্যাংকনার ফাইল বা থ্রি ক্ষরার ফাইল
ক্ষরার ফাইল
এ ফাইল বর্গাকার অর্থাৎ এর চারটি কোণ থাকে, প্রতিটি কোণের মান ৯০ ডিগ্রি। এটি ডবল কার্ট বিশিষ্ট হয়। কোন নালীর বা গ্রুপের তলা পরিষ্কার করতে অথবা গোল গর্তকে চৌকোণা করতে এ শ্রেণির ফাইল ব্যবহৃত হয়।
চিত্র : ৫.২ (প) চিত্তোল
হেড অংশে হাতুড়ির আঘাত দিয়ে ধাতু কাটা হয়, চিজেল টুল স্টিল নামক ভালো ইস্পাতের তৈরি হয়। বিভিন্ন রকম কাজের জন্য চিজেলের মুখের আকৃতি বিভিন্ন হয় এবং এদের নামও বিভিন্ন হয়, যেমনঃ
চিত্র ঃ ৫.২ (গ) লাইভ চিয়োল
কোন চিজেলের মাপ বলতে এর কাটিং এজের দৈর্ঘ্যকে বুঝায়। এ মাগ ০৬ মিলিমিটার হতে ৩২ মিলিমিটার পর্যন্ত হয়। ওয়ার্কশপে চিজেল নিম্নলিখিত কাজে ব্যবহৃত হয়।
(১) প্রয়োজনের অতিরিক্ত মেটাল কোন বস্তুর উপর হতে দ্রুত সরিয়ে ফেলতে।
(২) কোন অসমতল স্থান তাড়াতাড়ি মোটামুটি সমান করতে।
(৩) কোন বস্তুর উপরিভাগে নালী বা ঘাট কটিতে।
(৪) কোন মেটালকে দ্বিখণ্ডিত করতে।
(৫) রিভেটকে কেটে কোন জোড় খুলতে।
(৬) ওরেন্ড জোড়া প্রস্তুতি ।
(৭) ভরেন্ড মেটালের মাঝে আটকে পড়া ধাতুমল বা পান সরাতে।
বলপিন হ্যামার
এর হেডটি বলের মত অর্থাৎ গোল তাই এ বেশির হাতুড়ির নাম হয়েছে বলপিন হ্যামার। একটি বলপিন হ্যামারে বিভিন্ন অংশের নাম হলোঃ
(ক) ফেল
(খ) আই
(গ) হেড বা পিন
(ঘ) হাতল
বলপিন হ্যামার সাধারণত ০.১১ হতে ০.৭৫ কিলোগ্রাম ওজনের হয়। ওয়ার্কশপে বিভিন্ন ধরনের কাজে এ হ্যামার ব্যবহার করা হয়।
ব্যবহারঃ
(ক) ওয়েল্ডিং করার পর ওয়েল্ড মেটালের উপর যে সকল স্থাগের আবরণ থাকে সেগুলো পরিষ্কার করতে হাতুড়ি প্রয়োজন হয়।
(খ) স্প্যার্টার ত্রুটির কারণে ছিটকে পড়া যাতৃ কণাগুলো পরিষ্কার করতেও এটি ব্যবহৃত হয়।
(গ) যে স্থান সমতল অংশ দিয়ে পরিষ্কার হয় না অর্থাৎ ময়লা শক্তভাবে লেগে থাকে সেখানে চিজেদের মত অংশে ব্যবহৃত হয় ।
(ঘ) সমতল অংশকে সাধারণ হাতুড়ির মত ব্যবহার করে কোন কিছুকে পেটাতে সেন্টার পর্যন্ত মাথাটি হার্ডেনিং করে শক্ত করা এবং বড়ি হাত হতে যেন পিছলিয়ে না যায় ভাই নারলিং (Knurling) করা থাকে। এটি লম্বায় প্রায় ১০০ মিলিমিটার হয়।
ব্যবহার
জন মার্কিং করতে ব্যবহৃত হয়।
স্ক্রাইবারঃ
এক প্রাপ্ত সূচের মত তীক্ষ্ণ এবং বডিতে নারলিং করা। এটি টুলস্টিলের তৈরি এবং লম্বার প্রায় ২০০ মিলিমিটার হতে ৩০০ মিলিমিটার হয়। কোন কোন সময় এর এক মাথা ৯০ ডিগ্রি কোণে বাঁকানো থাকে।
ব্যবহারঃ
পেন্সিল দিয়ে যেমন কাগজের উপর দাগ টানা হয় অনুরূপভাবে ভাবের উপর দাগ দেওয়ার জন্য এটি ব্যবহৃত হয়। ওয়েল্ডিং জোড়ার পার্শ্বদেশ তৈরি করার সময় এটি ব্যবহৃত হয় ।
এটি মিডিয়াম কার্বন স্টিলের তৈরি এর হাতল অংশ গোলাকার তবে চোয়াল গোলাকার এবং চ্যাপটা উভয় রকম হয় ।
ব্যবহারঃ গরম অথকে ধরতে ও নাড়াচাড়া করতে জবকে সঠিক অবস্থানে ধরে ওয়েন্ডিং করতে এটি অস্তি প্রয়োজনীয়।
ওয়্যার ব্রাশ
কাঠের হাতলের শক্ত চিকন চিকন তার বলিয়ে এ ব্রাশ তৈরি করা হয়। চিপিং হাতুড়ির সাহায্যে জোড়া স্থানের স্লাগের আবরণ তোলার পর উক্ত স্থানকে ভালোভাবে পরিষ্কার করার জন্য এটি ব্যবহৃত হয়। তাছাড়াও বেস মেটাল বা পেরেনট মেটাল যখন অপরিষ্কার থাকে তখনও এ ব্রাশের সাহায্যে এটি পরিষ্কার করা যায়।
পোর্টেবল ইলেকট্রিক ব্যান্ড প্রাইভারঃ
এটি একস্থান হতে অন্যস্থানে বহন করা যায়। একটি বৈদ্যুতিক মটর গ্রাইন্ডিং হুইলটি চালায় এবং ওয়েল্ডার নিজ হাতে হ্যান্ড গ্রাইন্ডারটিকে ওয়েল্ডিংকৃত জবের উপর চাপিয়ে ওয়েন্ডিং জোড়াকে পরিষ্কার করতে পারে। ভারী জবকে পরিষ্কার করার জন্য এটি অতি উপযুক্ত।
ভাইস গ্রিপ ওয়েন্ডিং ক্ল্যাম্পঃ ওয়েল্ডিং ওয়ার্কশপে এটি অতি প্রয়োজনীয় একটি হ্যান্ডটুলস। এ ক্লাম্প কয়েকটি ধাতুখণ্ডকে একত্রে ধরে জবকে সঠিক অবস্থানে রাখতে অতি প্রয়োজনীয়।
সি ক্ল্যাম্পঃ
এটি দেখতে ইংরেজি সি অক্ষরের মতো। তাই এর এরূপ নাম হয়েছে। ভারী এবং হালকা উভয় ধরনের কাজে এটি ব্যবহার করা যায় ।
প্যারালাল ফ্ল্যাম্প
এ ধরনের ক্ল্যাম্পে দুইটি জ বা চোয়ালই প্যারালাল অবস্থার থাকে তাই এর নাম প্যারালাল ক্ল্যাম্প হয়েছে। জবকে সঠিক স্থানে ধরে রেখে ওয়েল্ডিং করতে একে ব্যবহার করা যায়।
যে কোন যন্ত্রপাতি কার্যক্রম ও ব্যবহার উপযোগী রাখতে হলে প্রয়োজন রক্ষণাবেক্ষণ। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে অনেক মূল্যবান যন্ত্রপাতি অতি অল্প সময়ে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। প্রতিটি টুলস, ইকুইপমেন্ট বা যন্ত্রপাতি রক্ষণাবেক্ষণের আলাদা আলাদা নিয়ম কানুন রয়েছে। একই নিয়মে সব টুলস্ রক্ষণাবেক্ষণ করা হলে টুলসু, যন্ত্রপাতি ইত্যাদি কাজের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। যেমন ধাতুকে মসৃণ করার জন্য বিভিন্ন ধরনের ফাইল রয়েছে।
আবার কাঠের কাজ মসৃণ করার জন্যও বিভিন্ন ধরনের উড ফাইল রয়েছে। তাই লৌহ জাতীয় ধাতুকে মসৃণ করার ফাইল দিয়ে যদি কাঠ মসৃণ করা হয়, তবে ফাইল ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। অগ্রুপ কাঠ মজুপ করার ফাইল দ্বারাও লৌহ জাতীয় ধাতু মসৃণ করা যায় না। কখনও ফাইলে তৈলাক্ত জাতীয় পদার্থ যেমন প্রিজ, মৰিল ইত্যাদি দিতে নেই। এতে ফাইলের কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে পড়ে। কাজের শেষে ফাইলের দাঁতের সাথে আটকানো ধাতু কণাসমূহ পরিষ্কার করে রাখা উচিত। পরিষ্কার করার জন্য ওয়্যার ব্রাশ ব্যবহার করতে হবে। কখনও এক ফাইল দ্বারা অন্য ফাইল পরিষ্কার করতে নেই। সর্বদা ফাইলে হ্যান্ডেল লাগিয়ে রাখতে হবে। ফাইবার, সেন্টার পাঞ্চ ইত্যাদি টুলসসমূহের প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে। হাত থেকে পড়ে বা অন্য কোন কারণে যেমন ড্রাইবিং পয়েন্ট নষ্ট না হয়ে যায়। হ্যান্ড গ্রাইভারের কার্বন মাঝে মাঝে খুলে পরিষ্কার করতে হবে, এতে গ্রাইন্ডিং মেশিন দীর্ঘদিন ব্যবহার করা যাবে। টুলসসমূহ স্যাঁত স্যাঁতে স্থানে না রেখে শুষ্ক স্থানে স্টোর করা হলে টুলস্ সমূহে কার্যকারিতা নষ্ট হয় না। মাঝে মাঝে টুলস্ রুম পরিষ্কার করা হলে টুলসসমূহের কার্যক্ষমতা বেড়ে যায় ও দীর্ঘদিন ব্যবহার উপযোগী থাকে।
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১। ওয়েল্ডিং-এর সময় ব্যবহার্য কয়েকটি হ্যান্ড টুলস্ এর নাম উল্লেখ কর।
২। ওয়েল্ডিং-এর সময় ব্যবহৃত কয়েকটি হ্যান্ড টুলস্ এর নাম ও এদের ব্যবহার বর্ণনা কর।
৩। ওয়েল্ডিং-এর সময় ব্যবহৃত হ্যান্ড টুলস্ সমূহের সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ বর্ণনা কর ।
৪। পোর্টেবল হ্যান্ড গ্রাইন্ডার চালনায় সাবধানতা কেন নিতে হয়? উল্লেখ কর।
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
৫। চিজেলের প্রধান প্রধান অংশগুলো ছবিসহ উল্লেখ কর।
৬। চিজেল কত প্রকার ও কী কী? উল্লেখ কর।
৭। একটি ফাইল অংঙ্কন করে এর বিভিন্ন অংশ দেখাও।
রচনামূলক প্রশ্ন
৮। ফাইল কত প্রকার ও কী কী? উল্লেখ কর।
৯। ওয়েল্ডার-এর হ্যান্ড টুলসমূহের নাম উল্লেখ কর ।
১০। হ্যাকস ফ্রেম কত প্রকার ও কী কী? উল্লেখ কর।
একজন ওয়েকার সাধারণত নিন্মলিখিত মেজারিং টুলসগুলো ব্যবহার করে -
(ক) স্টিল রুল (Steel Rule)
(খ) স্টিল টেপ (Steel Tape )
(গ) ট্রাই করার (Trisquare)
(ঘ) ক্যালিপার্স (Callipers)
(ঙ) ডিভাইডার (Divider)
স্টিল রুল
এটি উন্নতমানের সংকর ইস্পাত দিয়ে তৈরি। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটি স্টেইনলেস স্টিলের তৈরি। ফলে অনেক দিন ব্যবহারেও এতে মরিচা পড়ে না। এটি ১৫০ মিলিমিটার দীর্ঘ এবং ১২ মিলিমিটার প্রস্থ (৬ ইঞ্চি এবং হাফ ইঞ্চি) অথবা ৩০০ মিলিমিটার দীর্ঘ এবং ১২ মিলিমিটার প্রস্থ (১২ ইঞ্চি দীর্ঘ এবং হাফ ইঞ্চি গ্রন্থ) হয়। ওয়েল্ডিং জোড়া তৈরি করার পূর্বে জবের পার্শ্বদেশ প্রস্তুতির সময় মাপ নেওয়ার কাজে এটি ব্যবহৃত হয়। তাছাড়াও ওয়ার্কশপের সকল সাধারণ মাপের কাজে এটি বহুলভাবে ব্যবহৃত হয়। ইহার সাহায্যে সর্বনিম্ন ১ মি: মি: বা ০.৫ মি: মি: পর্যন্ত পরিমাপ গ্রহন করা সম্ভব।
স্টিল টেপ
ইস্পাত এর তৈরি এ ধরনের টেপ জড়িয়ে কুণ্ডলী আকারে একটি কভারের মধ্যে থাকে; ফলে সহজেই ওয়েল্ডার তার পকেটে রাখতে পারেন। যতটুকু দৈর্ঘ্য প্রয়োজন ততটুকু দৈর্ঘ্য কভারের ভিতর হতে বের করা যায়। লম্বা গ্রিল বা দরজা জানালা তৈরির সময় লম্বা স্টিল প্লেট এর মাপ নিতে এ ধরনের টেপ খুব উপযুক্ত।
দুই মাথা বিশিষ্ট আবদ্ধ প্লেট এর মাঝে মাপ নিতে বিশেষ এক ধরনের টেপ ব্যবহৃত হয়।
ট্রাইস্কয়ারঃ
বাংলায় একে মাটাম বলে, এর ২টি অংশ স্টক এবং ব্লেড। ব্লেড এবং স্টকের মাঝের কোণ ৯০ ডিগ্রি। ট্রাইকয়ারের দৈর্ঘ্য বুঝাতে এর ব্লেডের মাপকে বুঝায়। এ মাপ ২.৫ সেন্টিমিটার ক্রমে বর্ধিত হয়ে ৫ সেন্টিমিটার হতে ১৫ সেন্টিমিটার হয়। আবার কোন কোন ক্ষেত্রে ৫ সেন্টিমিটার ক্রমে বর্ধিত হয়ে ২০ সেন্টিমিটার হতে ৪০ সেন্টিমিটার হয়।
ব্যবহার
একটি তল আর একটি তলের সঙ্গে ৯০ ডিগ্রি কোণে আছে কীনা পরীক্ষা করতে এবং ওয়েল্ডিং জোড়ের পূর্ব স্থাপন (Pro Setting) কাজ পরীক্ষা করতে ব্যবহৃত হয়।
ক্যালিপার্স
এটি একটি পরোক্ষ মাপন যন্ত্র যার দুইটি লেগ বা পা থাকে। পাগুলি ক্রমশ চিকন হয়। বাহিরের কোন বন্ধ ব্যাস মাপার জন্য যে ক্যালিপার্স ব্যবহৃত হয় সেটা আউটসাইড ক্যালিপার্স। অপরপক্ষে কোন ছিদ্রের, গর্ভের বা নালীর মাপ গ্রহণ করার জন্য যে ক্যালিপার্স ব্যবহৃত হয় তা ইনসাইড ক্যালিপার্স ।
ডিভাইডার
এটি সরল গঠনের একটি পরোক্ষ যাপন যন্ত্র, দুই পায়ের সমন্বয়ে এটি গঠিত। পাগুলির শেষ প্রাপ্ত বেশ চোখা অর্থাৎ একেবারে পয়েন্ট করা থাকে। পরোক্ষ মাপন যন্ত্র হওয়ার এটি দ্বারা সরাসরি কোন মাপ গ্রহন করা যায় না, তবে ডিভাইডার এর সাহায্যে কোন মাপ নিয়ে তা স্টিল রুলে মিলিয়ে বস্তুটির মাপ কত তা বলা যায়। তাছাড়া জবের উপর বৃত্ত আঁকা এবং ধাতু কাটিং এর সময় ভাবের লে-আউট করতে এটি বেশি ব্যবহৃত হয়।
ফিলেট লেজ
ফিলেট মাপার জন্য এ গেজ ব্যবহার করা হয়। অনেক সময় এটাকে রেভিয়াস সেজও বলা হয়। এটা কতকগুলি চিকন পাতের সমন্বয়ে তৈরি। প্রত্যেক পাতে নির্দিষ্ট মাপের ফিলেট থাকে। যে পাতের সাথে ভাবের ফিলেট মিলে যায়, সে পাতের মাপ অনুসারে জবের ফিলেটের মাপ হয়। ফিলেট পেজের এক প্ৰান্ধে থাকে উত্তল (Concave) ফিলেট। দ্রুত এবং সঠিক মাপের জন্য এটি অতি সুন্দর একটি ব্যবস্থা।
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১। ওয়েল্ডারের মেজারিং টুলস্ বলতে কী বোঝায়?
২। স্টিল রুল কী কাজে ব্যবহৃত হয়?
৩। ওয়েল্ডারের প্রয়োজনীয় তিনটি মেজারিং টুলস্ এর নাম উল্লেখ কর।
৪। একটি স্টিল রুলে সবচেয়ে কত কম মাপ পাওয়া সম্ভব?
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
৫। ওয়েল্ডিং কালে ব্যবহৃত প্রয়োজনীয় কয়েকটি মেজারিং টুলস্ এর নাম উল্লেখ পূর্বক এদের ব্যবহার বর্ণনা কর।
৬। গ্রিল তৈরির সময় লম্বা কোন মাপ নিতে কোন মাপন যন্ত্র ব্যবহৃত হয়?
৭। ডিভাইডার এর কাজ কী?
৮। ট্রাইস্কয়ার কী কাজে ব্যবহৃত হয়?
রচনামূলক প্রশ্ন
৯। স্টিল রুল এবং স্টিল ট্যাপের মধ্যে পার্থক্য কী?
১০। একজন ওয়েল্ডার যে সকল মাপন যন্ত্র ব্যবহার করে সে গুলির নাম লেখ ।
ওয়েল্ডিং-এর কাজ শিখতে একজন শিক্ষানবিশ বা নবীন ওয়েল্ডারকে কতিপয় শব্দ বার বার শুনতে হয়। উক্ত শব্দগুলির পরিভাষা জানা এবং বুঝতে পারা তার জন্য অতীব প্রয়োজন। এ দিক বিবেচনা করে নিচে কতিপয় বহুল প্রচলিত ওয়েন্ডিং পরিভাষা সম্পর্কে লেখা হলো।
১। বেসমেটাল বা প্যারেন্ট মেটাল (Base Metal)
২। ফিলার মেটাল (Filler Metal )
৩। রান (Run )
৪। রুট (Root)
৫। ফিলেট ওয়েল্ড (Fillet Weld)
৬। লেগ লেংথ (Leg Length )
৭। গ্রেটি থিকনেস (Throat Thickness )
৮। রেইন ফোর্সমেন্ট (Reinforcement )
৯। ট্যাক ওয়েল্ড (Tack Weld)
১০। আর্ক (Arc)
১১। লং আর্ক (Long Are )
১২। শর্ট আর্ক (Short Arc )
১৩। হিট অ্যাফেকটেড জোন (Heat Affected Zone)
১৪। ফিউশন ওয়েল্ডিং (Fusion Welding)
১৫। নন ফিউশন ওয়েল্ডিং (Non-fusion Welding )
১৬। কার্বন আর্ক ওয়েন্ডিং (Carbon Arc Welding)
১৭। মেটাল আর্ক ওয়েল্ডিং (Metal Arc Welding)
১৮। ফ্ল্যাক্স (Flux)
১৯। ফোর্স ওয়েল্ডিং (Forge Welding)
২০। প্রিহিটিং (Pre Heating)
২১। পোস্ট হিটিং (Post Heating
২২। ইনার কোন (inner Cone)
২৩। আউটার এনভেলপ (Outer Envelope )
২৪। ফেদার (Feather)
২৫। ব্যাক ফায়ার (Back Fire )
২৬। সাসটেন ব্যাক ফায়ার (Sustain Back Fire)
২৭। ফ্লাশ ব্যাক (Flash Back)
বেস মেটাল বা প্যারেন্ট মেটাল
যে ধাতুকে ওয়েল্ডিং করা হচ্ছে বা কাটা হচ্ছে।
কিলার মেটাল
পরিপূরক ধাতু হিসেবে ওয়েল্ডিং এর সময় জোড়া স্থানে এটি প্রয়োগ করা হয়।
ইলেকট্রোড বা ক্লোপাইনকে একবার মূল ধাতুর উপর দিয়ে টেনে নেওয়ার পর, বেসমেটালের উপর যে ধাতু জমা হয় তাকে রান বলে। একে অনেক সময় বিস্তও বলা হয়।
রুটঃ ওয়েল্ডিং করার জন্য প্রস্তুতকৃত ধাতু খবরের মুখোমুধি মিলন স্থলকে রুট বলে।
ফিলেটঃ
ত্রিকোণাকৃতি এহচ্ছেন বিশিষ্ট ওয়েল্ডিংকে ফিলেট বলে।
ইলেকট্রোড এবং জবের কারেন্ট বাহিত থাকন বাম্পের একটি স্রোত।
লং আর্ক
আর্ক এর দৈর্ঘ্য বেশি হলে তাকে লং আর্ক বলে।
শর্ট আর্ক
যে আর্কের দৈর্ঘ্য কম তাকে শর্ট আর্ক বলে, এটি সাধারণত ইলেকট্রোডের কোরের ব্যাসের সমান হয়।
হিট অ্যাফেকটিভ জোন
ওয়েল্ডিং বা কাটিং কাজের সমর তাপের প্রভাবে জবের যে অংশটুকুর ধাতুর ভিতরের গঠনের পরিবর্তন হয় তাকে হিট অ্যাফেকটেড জোন বলে।
ফিউশন জোন
মূল ধাতুর যে অংশটুকু উত্তাপের প্রভাবে গলে ভরেন্ড মেটালের সাথে মিশে যায় সেই অংশটুকুকে ফিউশন জোন বলে।
ফিউশন ওয়েন্ডিং
তাপের সাহায্যে ধাতু খণ্ডকে গণিত বা অর্ধগলিত অবস্থায় এনে বিনা চাপে স্থায়ীভাবে ধাতব খণ্ডের জোড়া লাগানোর কৌশলকে ফিউশন ওয়েল্ডিং বলে।
নন ফিউশন ওয়েল্ডিং
তাপের সাহায্যে ধাতু খণ্ডকে গলিত বা অর্ধগলিত অবস্থায় এনে চাপের মাধ্যমে স্থায়ীভাবে জোড়া লাগানোর কৌশলকে নন ফিউশন ওয়েন্ডিং বা প্রেসার ওয়েল্ডিং বলে।
কার্বন আর্ক ওয়েল্ডিং
আর্ক ওয়েল্ডিং এর সমর কার্বন দণ্ড ইলেকট্রোড হিসেবে ব্যবহৃত হলে তাকে কার্বন আর্ক ওয়েল্ডিং বলে।
মেটাল আর্ক ওয়েল্ডিং
আর্ক ওয়েল্ডিং এর সমর ধাতব খণ্ড যখন ইলেকট্রোড হিসেবে ব্যবহৃত হয় তখন তাকে মেটাল আর্ক ওয়েল্ডিং বলে।
ফ্ল্যাক্সঃ
এটি এক প্রকার রাসায়নিক যৌগ পদার্থ বাহা ওয়েল্ডিং, সোল্ডারিং বা ব্রেজিং এর সময় প্রয়োগ করা হয়। ইহা জোড়া স্থানে বায়ুর অক্সিজেনের সাথে জিন্না করে অক্সাইড তৈরিতে বাধা দেয়, জোড়াকে শক্ত করে, দ্রুত গলন কাজ সমাধা করে।
ফোর্স ওয়েল্ডিং
এটি নন ফিউশন শ্রেণির একটি ওয়েল্ডিং । ধাতুকে উত্তপ্ত করে চাপের সাহায্যে অথবা হাতুড়ির আঘাতে এ পদ্ধতিতে স্থায়ীভাবে জোড়া দেওয়া হয়। কামার শালার এ প্রকারের ওয়েল্ডিং করা হয়।
প্রিহিটিং
ওয়েল্ডিং করার পূর্বে ধাতুখণ্ডে তাপ প্রয়োগ করাকে প্রিহিটিং বলে।
পোস্ট হিটিং
ওয়েল্ডিং করার পর জবে তাপ প্রয়োগ করাকে পোষ্ট হিটিং বলে।
ইনার কোন
অগ্নিশিখার মাঝে যে ছোট উজ্জ্বল কোনটি নজলের মুখে তৈরি হয় তাকে ইনার কোন বলে।
আউটার এনভেলাপ
ইনার কোন এর চারদিকে শিখার যে অংশ থাকে তাকে আউটার এনভেলাপ বলে।
ফেদার :
ফ্লেমের কোণের বাইরের পালক সাদৃশ্য অংশ যেখানে কার্বনের পরিমাণ বেশি থাকে তাকে ফেদার বলে ।
ব্যাক ফায়ার
ওয়েল্ডিং করার সময় হঠাৎ শিখা নিভে গিয়ে টিপের মাথায় তীব্রভাবে যে চিঁ চিঁ শব্দ করে তাকে ব্যাক ফায়ার বলে।
ফ্লাশ ব্যাক
শিখা নিভে টর্চের পিছন দিকে গমন করে এবং অক্সিজেন সহযোগে জ্বলতে থাকে, টিপ দিয়ে কালো ধুয়া বের হয় এবং তীব্র শব্দ হয়, তাকে ফ্লাশ ব্যাক বলে ।
মনের ভাব প্রকাশ করার জন্য ভাষার ব্যবহার হয়। এক এক অঞ্চলের ভাষার সাথে অন্য অঞ্চলের ভাষার যথেষ্ট তফাৎ রয়েছে। মনের ভাব প্রকাশ করতে হলে সে অঞ্চলের ভাষার দক্ষতা থাকতে হয় তদুপ প্রকৌশলীদেরও একটা ভাষা রয়েছে। সারা বিশ্বের সকল প্রকৌশলীদের প্রকৌশল কাজে একই ভাষা রয়েছে। আর সে ভাষা হলো ড্রয়িং। তাই বলা হয় Drawing is the Language of Engineers ড্রয়িং এর মাধ্যমে বিশ্বের এক প্রান্ত হতে অন্য প্রান্তে প্রকৌশলীগণ তাদের তথ্যের আদান প্রদান ঘটান। একজন ওয়েল্ডারকে ও ভাই এই পরিভাষা জানতে হবে এবং বুঝতে হবে। ওয়েল্ডার তার সারা জীবন এই পরিভাষা ব্যবহার করে কাজ করতে হবে। উন্নত বিশ্বের দক্ষ ওয়েল্ডার বলতে তাকেই বুঝায় যার ওয়েল্ডিং এবং ওয়েল্ডিং পরিভাষার উপর সমান দক্ষতা রয়েছে। ড্রয়িং দেখে তাকে কাজ করতে হবে, আর যদি সে পরিভাষা তার জানা না থাকে তবে উৎপাদন প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে। অনুৎপাদনশীল দেশের ওয়েন্ডারগণ এই পরিভাষার মূল্য বোঝে না, আর না বুঝার কারণে এই পরিভাষা জানার আগ্রহও তাদের মধ্যে কম। কিন্তু উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হলে আমাদের দেশের ওয়েল্ডারদেরকে এ পরিভাষাসমূহ ভালোভাবে রপ্ত করতে হবে।
আমাদের দেশে 4G, 5G, 6G, Ges 2F, 3F, 4F ওয়েল্ডার রয়েছে। এরা অনেক সুন্দর জোড় দিতে সক্ষম। দুঃখের বিষয় এদের ওয়েন্ডিং পরিভাষা সম্পর্কে তেমন কোন জ্ঞান বা দক্ষতা নেই। ফিটার এসে ওয়েল্ডিং জোড়ের ব্যবস্থা করার পরই তারা ধাতু জোড়া দেয়। ওয়েল্ডিং পরিভাষা জানা না থাকার কারণে এদের দক্ষতা প্রকাশ করতে পারে না। ফিটারদেরও একই অবস্থা তাদেরতো অবশ্যই ওয়েল্ডিং পরিভাষা জানা প্রয়োজন, কিন্তু তারা প্রকৌশলী এসে দিক নির্দেশনার পরই ফিটিং এর কাজ আরম্ভ করেন। অথচ উন্নত বিশ্বে একজন ফিটার হতে হলে তাকে অবশ্যই ওয়েল্ডিং পরিভাষায় পারদর্শী হতে হয়।
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১। ট্যাক ওয়েল্ড কী?
২। আর্ক কী?
৩। রান কী?
৪। ব্যাক ফায়ার কী?
৫। ফিলার মেটাল কী?
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
৬। ট্যাক ওয়েল্ড কেন করা হয়?
৭। ফোর্স ওয়েল্ডিং কোন শ্রেণির ওয়েল্ডিং?
৮। মেটাল আর্ক ওয়েল্ডিং এবং কার্বন আর্ক ওয়েল্ডিং এর মধ্যে মূল পার্থক্য কী?
৯। ফোর্জ ওয়েল্ডিং কোথায় করা হয়?
১০। একটি অগ্নিশিখার কোন অংশটিকে ইনার কোণ বলা হয়?
১১। ওয়েল্ড এর কোন মাপকে ছোট থিকনেস বলে ?
রচনামূলক প্রশ্ন
১২। ২০ (কুড়ি) টি ওয়েন্ডিং পরিভাষা লেখ।
১৩। ওয়েল্ডিং পরিভাষায় প্রয়োগ দেখাও।
১৪। ৫ টি 'ওয়েল্ডিং পরিভাষা সমূহের বর্ণনা দাও।
ওয়েল্ডিং এর কাজে এসি অথবা ডিসি এই উভয় প্রকারের কারেন্ট ব্যবহৃত হয়। সুতরাং ওয়েল্ডিং মেশিনগুলিকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়-
১। এসি ওয়েল্ডিং মেশিন
২। ডিসি ওয়েন্ডিং মেশিন
এসি ওয়েল্ডিং মেশিনগুলো হলো : ১. ট্রান্স ফরমার (Transformer)
ডিসি ওয়েল্ডিং মেশিনগুলো হলো :
১. ডিসি জেনারেটর (DC Generator)
২. রেক্টিফায়ার (Rectifier)
এসি ওয়েন্ডিং মেশিন : এসি ওয়েন্ডিং মেশিনটি আসলে একটি ট্রান্সফরমার। ট্রান্সফরমার এমন একটি যন্ত্র যা ভোল্টেজকে কম অথবা বেশি করতে পারে। যে শ্রেণির ট্রান্সফরমার ভোল্টেজ বেশি করে তাকে স্টেপ আপ ট্রান্সফরমার বলে, আবার যে শ্রেণির ট্রান্সফরমার ভোল্টেজ কমায় তাকে স্টেপ ডাউন ট্রান্সফরমার বলে।
ওয়েন্ডিং করার কাজে কম ভোল্টেজ এবং বেশি কারেন্ট দরকার, তাই ওয়েল্ডিং কাজে যে ট্রান্সফরমারগুলো ব্যবহার হয় এর সবগুলো স্টেপ ডাউন ট্রান্সফরমার। ট্রান্সফরমারে দুই প্রকারের কোর থাকে, যথা প্রাইমারি কোর এবং সেকেন্ডারি কোর। প্রাইমারি কোরে বিদ্যুৎ সরবরাহ দেওয়া হয়, আর সেকেন্ডারি কোর হতে ওয়েল্ডিং এর জন্য বিদ্যুৎ নেওয়া হয়। ট্রান্সফরমারের কোর উঠা নামা করে ভোল্টেজ কম বেশি করা যায়। ট্রান্সফরমারের কোরকে বায়ু অথবা তেলে ঠাণ্ডা করা হয়। ওয়েন্ডিং ট্রান্সফরমার ওপেন সার্কিট ভোল্টেজ ৭০ হতে ১০০ ভোল্ট এবং কারেন্ট ১৫০ হতে ৯০০ এম্পিয়ার সরবরাহ করতে পারে।
ডিসি জেনারেটর
এ ধরনের ওয়েল্ডিং সেট একজন ওয়েল্ডার এর কাজের জন্য বেশি উপযোগী। একটি বৈদ্যুতিক মটর একই শ্যাফটে জেনারেটর এর আর্মেচারের সাথে যুক্ত থাকে।
বৈদ্যুতিক মটরটিকে বিদ্যুৎ শক্তিতে ঘুরান হয় এবং একই শ্যাফটে থাকার কারণে জেনারেটর এর আর্মেচারও ঘোরে, ফলে তড়িৎ চালক বল উৎপন্ন হয়। কমুটেটর হলো অর্ধ বৃত্তাকার ধাতব চাকতি। এই শ্রেণির মেশিনে ওপেন সার্কিট ভোল্টেজ ৪০ হতে ৬০ ভোল্ট এবং কারেন্ট ১৫০ হতে ৯০০ অ্যাম্পিয়ার পর্যন্ত পাওয়া যায়। মেশিনের গায়ে একটি হ্যান্ডেল বা চাকা থাকে যা ঘুরিয়ে কারেন্ট কম বেশি করা যায়। যে স্থানে বৈদ্যুতিক শক্তির সরবরাহ নেই তথায় ইঞ্জিন চালিত জেনারেটর সেট ব্যবহার করা হয়।
রেক্টিফায়ার
রেক্টিফায়ারের কাজ হলো ট্রান্সফরমার হতে এসিকে কাজের জন্য সরবরাহ করার পূর্বে ডিসিতে পরিবর্তিত করা। রেক্টিফায়ার আলাদা ইউনিট হিসেবে ট্রান্সফরমারের সাথে যুক্ত থাকে, কখনও কখনও তা একই মেশিন কেসের মধ্যে থাকে।
ট্রান্সফরমার :
যেখানে বিদ্যুৎ সরবরাহ আছে সেখানে এটি ব্যবহার করা যায়। শুধু ফ্লাক্স কোটেড ইলেকট্রোড এই মেশিনে ব্যবহার করতে হয়। এ মেশিনে পোলারিটি রক্ষা করে কোন কাজ করা যায় না। তবে ক্রয়মূল্য এবং রক্ষণাবেক্ষণ খরচ কম হওয়ায় ছোট ছোট ওয়ার্কশপগুলো এই মেশিন ব্যবহার করতে পারে।
ডিসি জেনারেটর
বৈদ্যুতিক মটর অথবা ইঞ্জিনের সাহায্যে একে চালান যায় সুতরাং যেখানে বিদ্যুৎ নাই সেখানেও এই ব্যবস্থা উপযুক্ত সব ধরনের ইলেকট্রোড দিয়ে ওয়েন্ডিং করতে হলে এই মেশিন ব্যবহার করা যাবে। এই শ্রেণির মেশিনকে খুব সহজে একস্থান হতে অন্যস্থানে নিয়ে যাওয়া যায়, তাই খুব বড় জন যা মেশিনের কাছে নিয়ে যাওয়া কষ্টকর সে ধরনের কাজের জন্য মেশিনকে কাজের নিকট নিয়ে এসে ওয়েন্ডিং করতে এ মেশিন ব্যবহৃত হয়। পোলারিটি ঠিক রেখে কাজ করার প্রয়োজন হলে এ মেশিন সেখানে ব্যবহৃত হয়, কারণ এতে পোলারিটি ঠিক রাখা যার।
রেক্টিফায়ার :
পোলারিটি রক্ষা করে সুবিধাজনকভাবে ওয়েন্ডিং করতে হলে এ মেশিন ব্যবহার করতে হয়। সকল ধরনের ইলেকট্রোড ব্যবহার করে যেখানে কাজ করতে হয় সেখানে এ মেশিন ব্যবহার করা যায়। তবে এ মেশিনের জয়মূল্য বেশি হওয়ায় ছোট ছোট ওয়ার্কশপে এর ব্যবহার কম হয়।
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১। এসি ওয়েল্ডিং মেশিনগুলো কোন শ্রেণির ট্রান্সফরমার?
২। ওয়েল্ডিং ট্রান্সফরমার ওপেন সার্কিট ভোল্টেজ সাধারণত কত হয়?
৩। একটি ডিসি ওয়েল্ডিং মেশিনের ওপেন সার্কিট ভোল্টেজ কত হয়?
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
৪। কোথায় কোন শ্রেণির ওয়েল্ডিং মেশিন ব্যবহৃত হয় লেখ।
৫। একটি ডিসি ওয়েন্ডিং মেশিনের বিভিন্ন অংশের নাম লেখ।
৬। রেক্টিফায়ারের কাজ কী?
৭। যেখানে বিদ্যুৎ নেই সেখানে কোন ধরনের ওয়েল্ডিং মেশিন ব্যবহার করতে হবে?
রচনামূলক প্রশ্ন
৮। ওয়েন্ডিং ট্রান্সফরমারে কোন ধরনের ইলেকট্রোড ব্যবহার করতে হয় তা বর্ণনা কর।
৯। ওয়েল্ডিং মেশিনের কোন বৈদ্যুতিক সংযোগে মরিচা পড়লে তা কীভাবে পরিষ্কার করবে তা বর্ণনা কর।
১০। একটি এসি ওয়েল্ডিং মেশিনের রেখাচিত্র অঙ্কন করে বিভিন্ন অংশ চিহ্নিত কর।
ওয়েল্ডিং প্রতীকসমূহের ধারণা সম্পর্কে জ্ঞাত হওয়া : শিল্প কারখানায় একজন ডিজাইনার বা ইঞ্জিনিয়ার ওয়েল্ড জোড়া ডিজাইন করে, জোড়া সংক্রান্ত কতকগুলো তত্ত্ব যেমন জবটিতে কোন শ্রেণির ওয়েল্ড জোড়া হবে, জবের কোন স্থানে জোড়াটি হবে ইত্যাদি বিষয়গুলো কতকগুলো সিম্বল বা প্রতীকের মাধ্যমে ড্রয়িং এ দেখায়। একজন ওয়েন্ডারের কাজটি সঠিকভাবে করার জন্য প্রতীকগুলো জানা অতি প্রয়োজন।
নিয়ে বহুল প্রচলিত ওয়েন্ডিং সিম্বলগুলো দেখান হলো
ছকে বিভিন্ন ধরনের ওয়েন্ড এর প্রতীক জবের প্রস্থচ্ছেদ এবং ওয়েল্ড এর নাম পাশা পাশি দেখান হলোঃ
এ রেখাগুলিকে ইঞ্জিনিয়ারিং ড্রয়িং এ লিডার লাইন বলে। এ রেখা দিয়ে ওয়েল্ড স্থান নির্দেশ করা হয়।
(ক) যদি ওয়েল্ড এর প্রতীক লিডার লাইনের উপরে বসানো হয় তবে ওয়েল্ড হবে নিচে যেমনঃ
(খ) যদি ওয়েল্ড এর প্রতীক লিডার লাইনের নিচে হয়, তবে ওয়েল্ড হবে উপরে যেমনঃ প্রতীক প্রয়োগ
(গ) যদি প্রতীক লিডার লাইনের মাঝে হয়, তবে ওয়েল্ড হবে উভয় দিকে যেমন
একই ওয়েল্ড জোড়াকে মেশিনিং করে অর্থাৎ মেশিন দিয়ে কেটে, গ্রাইন্ডিং করে অথবা চিপিং করে ফিনিশিং দেওয়া হয়, এ তিন ধরনের কাজের তিনটি প্রতীক আছে। যেমনঃ
মেশিনিং হলে -M
চিপিং হলে -C
গ্রাইন্ডিং হলে -G
এই প্রতীকগুলি দেখানোর পদ্ধতি নিচে দেখানো হল :
ধাতুর দ্রব্যাদির সংযোজনে ওয়েল্ডারকে সাধারণত নকশা দেখে কাজ করতে হয়। এতে সঠিকভাবে কাঠামো নির্মাণের জন্য বিস্তারিত দেখান থাকে। ওয়েল্ডার নকশা হতে কেবলমাত্র ওয়েল্ড এর স্থানই নয় বরং জোড়ের ধরন, জোড়ের আকৃতি, কোন স্থানে জোড়া হবে, জোড়ের মাপ কত হবে, জোড়ের ফিনিশিং কীভাবে দিতে হবে এবং ডিজাইন অনুসারে জমাকৃত ধাতুর পরিমাণও বের করতে হয়। এতে আরও অনেক তথ্য সংযুক্ত থাকে যথা ওয়েল্ড তলের আকৃতি, ওয়েল্ড এর দৈর্ঘ্য কীভাবে বিডসমূহ সমাপ্ত করতে হবে তা দেওয়া থাকে। এ সমস্ত বিষয় জ্যামিতিক চিত্র সংখ্যার মান এবং সংক্ষিপ্ত শব্দাবলি দ্বারা নির্দেশিত থাকে। এ বিষয়গুলি ভালোভাবে বুঝে সঠিকভাবে কাজ করতে ওয়েল্ডারের ওয়েল্ডিং সিম্বল সংক্রান্ত জ্ঞান থাকতে হবে এবং সে জ্ঞান প্রয়োগ করে কাজটি করতে হবে।
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১। ধাতুর দ্রব্যাদির সংযোজনে ওয়েন্ডারকে সাধারণত কী দেখে কাজ করতে হয়?
২। ওয়েন্ডিং সিম্বল বলতে কী বোঝায়?
৩। মেশিনিং কাজের প্রতীক কী?
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
৪। দশটি ওয়েল্ডিং প্রতীক অঙ্কন করে ঐগুলোর পার্শ্বে ওয়েল্ডিং নাম লেখ ।
৫। ওয়েল্ডিং স্থান দেখিয়ে কীভাবে ওয়েল্ডিং সিম্বল লিখা হয়? ৫টি উদাহরণ দাও ।
৬। M.C.G দিয়ে কী বোঝান হয়?
রচনামূলক প্রশ্ন
৭। জোড়ার প্রস্থচ্ছেদ অঙ্কন করে সেগুলোর পার্শ্বে ওয়েল্ডিং সিম্বল অঙ্কন কর।
৮। ডাবল ‘ইউ” বাট ওয়েল্ড সিম্বল 'জে' বাট ওয়েল্ড সিঙ্গেল বিভেল এবং স্কয়ার বাট ওয়েল্ডিং এর সিম্বল অঙ্কন কর।
৯। প্লাগ, ডাবল ইউ, ডাবল 'ভি' এবং সিঙ্গেল ইউ েেজাড়ার প্রস্থচ্ছেদ অঙ্কন করে প্রস্থচ্ছেদের পার্শ্বে প্রতীক অঙ্কন কর।
১০। ওয়েল্ডিং জোড়ের সঠিক প্রয়োগে কী কী পদক্ষেপ নিতে হয় উলেখ কর।
১১। ১০টি ওয়েন্ডিং জোড়ের নাম ও প্রতীক অঙ্কন করে দেখাও।
১২। প্রতীক লিডার লাইনের নিচে হয়, তবে ওয়েল্ড কোথায় হবে অঙ্কন করে দেখাও ৷
১৩। প্রতীক লিডার লাইনের উপরে হয়, তবে ওয়েল্ড কোথায় হবে অঙ্কন করে দেখাও।
যে বস্তুটি ছাড়া আর্ক ওয়েল্ডিং কোনো ক্রমেই সম্ভব নয় তা হলো ইলেকট্রোড। ইলেকট্রোড একটি তার বা চিকন রড যার এক প্রান্ত হোল্ডারের সাথে যুক্ত থেকে কার্য বস্তু পর্যন্ত ওয়েল্ডিং এর জন্য প্রয়োজনীয় কারেন্ট সরবরাহ করে, আর্ক সৃষ্টি করে এবং কোন কোন সময় নিজে গলে জোড়া স্থানের জন্য পরিপুরক ধাতু সরবরাহ করে। একটি ইলেকট্রোড এর সাইজ কী হবে তা সুনির্দিষ্ট করে বলা খানিকটা কঠিন কারণ বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান তথা বিভিন্ন ইলেকট্রোড প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান তাদের নিজস্ব মাপ অনুসারে ইলেকট্রোড তৈরি করে। আই, আই, ডবিউ (ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ওয়েল্ডিং) এর নির্ধারিত মাপ অনুসারে একটি ইলেকট্রোডের দৈর্ঘ্য ২৫০ মিলিমিটার হতে ৪৫০ মিলিমিটার এবং ব্যাস ১.৭৫ মিলিমিটার হতে ৭.০০ মিলিমিটার পর্যন্ত হতে পারে ।
ওয়েল্ডিং কার্যে ব্যবহৃত ইলেকট্রোডসমূহকে নিম্নলিখিত শ্রেণিতে ভাগ করা যায়।
১। ক্ষয়িষ্ণু ইলেকট্রোড (Consumable Electrode )
(ক) খোলা বা ফ্ল্যাক্সের আবরণ বিহীন
(খ) ফ্ল্যাক্সের অল্প আবরণ যুক্ত
(গ) ফ্ল্যাক্সের মধ্যম আবরণ যুক্ত
(ঘ) ফ্ল্যাক্সের ভারী আবরণ যুক্ত
২। অক্ষয়িষ্ণু ইলেকট্রোড (Non Consumable Electrode )
(ক) কার্বন বা গ্রাফাইট ইলেকট্রোড
(খ) টাংস্টেন ইলেকট্রোড
(গ) থোরিয়াম মিশ্রিত টাংস্টেন ইলেকট্রোড
(ঘ) জির কোনিয়াম মিশ্রিত, টাংস্টেন ইলেকট্রোড
উল্লেখ্য যে, কনজুমঅ্যাবল ইলেকট্রোড নিজে গলে জোড়াস্থান তৈরি করে, এটা ক্ষয় হয় বা খরচ হয় বলে এর এমন নাম হয়েছে। অপরপক্ষে নন কনজুমঅ্যাবল ইলেকট্রোড নিজে ক্ষয় হয় না শুধু আর্ক সৃষ্টি করে, সে আর্ক এর উত্তাপে অতিরিক্ত ফিলারমেটাল গলিয়ে জোড়াস্থান তৈরি করো।
১। ওয়েল্ডিং এর সময় ফ্ল্যাক্স বহুবিধ কাজ করেঃ যেমন ফ্ল্যাক্স ওয়েল্ডিং জোড়ার চারিদিকে এমন গ্যাসীয় আবরণ সৃষ্টি করে যাতে জোড়া স্থানে বায়ুর অক্সিজেন ক্ষতিকারক অক্সাইড তৈরি করতে পারে না।
২। জব এবং ফিলার মেটালকে দ্রুত গলাতে সাহায্য করে।
৩। ধাতুমল তৈরিতে সহায়তা করে।
৪। ভালো পেনিট্রেশন অর্থাৎ জবের দুই প্রাপ্ত গলে একটির মধ্যে আর একটি প্রবেশ করাতে সহায়তা করে, যাতে জোড়ার শক্তি বেশি হয়।
৫। ফ্ল্যাক্স ওয়েল্ড করা স্থানে স্ল্যাগের আবরণ সৃষ্টি করে যা জোড়া স্থানকে ধীরে ধীরে ঠান্ডা হতে সহায়তা করে, ফলে; জোড়াস্থান নমনীয় হয় এবং এর শক্তি বেশি হয়।
৬। ফ্ল্যাক্স ব্যবহারের ফলে গলিত ধাতু জবের চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে না। তাই জোড়াস্থান সুন্দর হয়।
৭। ফ্ল্যাক্স মূল ধাতু এবং ফিলার মেটাল অর্থাৎ ওয়েল্ডিং এর জোড়া স্থানে যে মেটাল দেওয়া হয় তাকে ভালোভাবে গলিয়ে সঠিক স্থানে পৌঁছে দিতে সহায়তা করে।
ইলেকট্রোড প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের ইলেকট্রোড প্যাকেট কতগুলো কোড মার্ক ব্যবহার করে সেগুলো হতে ইলেকট্রোডের গুণাগুণসহ তার ব্যবহার কৌশল, প্রয়োগ ক্ষেত্র অর্থাৎ কোন অবস্থানে ব্যবহার করা যাবে ইত্যাদি তথ্য জানা যায়। আমেরিকান ওয়েল্ডিং সোসাইটি (AWS) পদ্ধতি অনুসারে ইলেকট্রোড শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া বুঝান হলো।
১ম এবং ২য় অংকঃ প্রথম এবং দ্বিতীয় অংক ইলেকট্রোড দিয়ে ওয়েল্ড করা ধাতুর টানা শক্তি হাজারে প্রকাশ করে যেমন ১ম এবং ২য় অংক যদি ৬০ হয় তবে এর অর্থ হয় ঐ ইলেকট্রোড দিয়ে ওয়েন্ডিং করলে ওয়েল্ড মেটালের শক্তি হবে ৬০,০০০ পাউন্ড/বর্গইঞ্চি। (যদি ৪র্থ অংকের পর আর একটি অংক কোড মার্কে থাকে তাহলে ০২টি অংকের স্থলে তিনটি অংক হবে এবং ওয়েন্ড মেটালের শক্তি পূর্বের মতই হাজারে প্রকাশ করতে হবে)।
শেষ অংকের পূর্বের অংকটিঃ এ অংকটি ওয়েন্ডিং এর পজিশন নির্দেশ করে, এটি ১, ২, এবং ৩ দ্বারা প্রকাশ করা হয়। ১ থাকলে বুঝা যাবে ইলেকট্রোডটি দিয়ে সকল পজিশনে ওয়েল্ডিং করা যাবে। ২ থাকলে বুঝা যাবে এ ইলেকট্রোড দিয়ে ফ্ল্যাট এবং হরিজেন্টাল অবস্থানে ওয়েল্ডিং করা যাবে। ৩ থাকলে বুঝা যাবে এ ইলেকট্রোড দিয়ে শুধু ফ্ল্যাট পজিশনে ওয়েন্ডিং করা যাবে।
শেষ অংকটিঃ শেষ অংকটি ০, ১, ২, ৩, ৪ ইত্যাদি হতে পারে। এ অংকগুলোর প্রত্যেকটির জন্য ভিন্ন ভিন্ন অর্থ প্রকাশ করবে, এ শেষ অংকটি হতে জানা যায় ইলেকট্রোড এর উপরের আবরণের প্রকৃতি কেমন, কোন ধরনের কারেন্ট ব্যবহার করতে হবে, পেনিট্রেশন কেমন হবে ইত্যাদি তথ্য জানা যাবে।
সর্বশেষ অংক | আবরণ | ওয়েল্ড কারেন্ট এবং পোলারিটি | শুয়েন্ডের বৈশিষ্ট্য |
---|---|---|---|
০ | সেলুলোজ সোডিয়াম | ডিসি, রিভার্স পোলারিটি | ডিপ পেনিট্রেশন, কনভেক্স বিড, ফাস্ট ফিল |
১ | সেলুলোজ সোডিয়াম | এসি/ডিসি রিভার্স পোলারিটি | ডিপ পেনিট্রেশন, কনভেক্স বিড, ফাস্ট ফিল |
২ | টাইটেনিয়া সোডিয়াম | এসি/ডিসি স্ট্রেইট পোলারিটি | মিডিয়াম পেনিট্রেশন, কনভেক্স বিড |
৩ | টাইটেনিয়া পটাশিয়াম | এসি/ডিসি রিভার্স পোলারিটি ডিসি স্ট্রেইট পোলারিটি | কম পেনিট্রেশন, কনভেক্স বিড |
৪ | টাইটেনিয়া আয়রন পাউডার | এসি/ডিসি রিভার্স পোলারিটি ডিসি স্ট্রেইট পোলারিটি | কম পেনিট্রেশন ফাস্ট ডিপোজিট |
৫ | লো-হাইড্রোজেন সোডিয়াম | ডিসি, রিভার্স পোলারিটি | মিডিয়াম পেনিট্রেশন, কনভেক্স বিড, হাই সালফার কনটেন্ট |
৬ | লো-হাইড্রোজেন পটাশিয়াম | এসি/ডিসি রিভার্স পোলারিটি | মিডিয়াম পেনিট্রেশন, কনভেক্স বিড, হাই সালফার কনটেন্ট |
৭ | আয়রন পাউডার আয়রন অক্সাইড | এসি/ডিসি রিভার্স পোলারিটি পোলারিটি | মিডিয়াম পেনিট্রেশন, ফ্লাট বিড |
৮ | আয়রন পাউডার লো- হাইড্রোজেন | এসি/ডিসি রিভার্স পোলারিটি | কম পেনিট্রেশন, কনভেক্সবিড |
E 6012 ইলেকট্রোডের ক্ষেত্রে প্রথম অক্ষর E দিয়ে বুঝায় এটি এমন ইলেকট্রোড যা ইলেকট্রিক আর্ক ওয়েল্ডিং এর জন্য ব্যবহৃত হয়। প্রথম ২টি অংক অর্থাৎ ৬০ দিয়ে বুঝা যায় ওয়েল্ড মেটালের সর্বনিম্ন টানশক্তি হবে ৬০,০০০ পাউন্ড/বর্গইঞ্চি। শেষের পূর্বে অংকটি অর্থাৎ ১ দিয়ে বুঝা যায় ইলেকট্রোড সকল অবস্থানে ওয়েল্ডিং করার জন্য উপযুক্ত। শেষ অংকটি ২ দিয়ে বুঝা যায় ইলেকট্রোডটির উপরের আবরণে টাইটেনিয়া সোডিয়াম আছে। এটি দিয়ে ওয়েল্ড করার সময় এসি বা ডিসি ব্যবহার করা যাবে, তবে ডিসি ব্যবহার করলে স্ট্রেইট পোলারিটিতে কাজ করতে হবে। এই ইলেকট্রোড ওয়েল্ড হবে মিডিয়াম পেনিটেশন ও কনভেক্স বিড।
ফ্ল্যাক্স এক ধরনের রাসায়নিক যৌগ পদার্থ যা ওয়েল্ডিং এর সময় জবে অক্সিজেনের যৌগ গঠনে বাধা প্রদান করে এবং অন্যান্য ক্ষতিকারক বিক্রিয়া হতে জবকে রক্ষা হবে। নিখুঁত এবং দ্রুত ওয়েল্ডিং এর জন্য এটি বিশেষ প্রয়োজন। বাজারে প্রচলিত বিভিন্ন প্রকারের ফ্লাক্স পাউডার, পেস্ট, কঠিন এবং তরল আকারে পাওয়া যায়। এদের কতগুলো জোড়া স্থানের ক্ষয় করে, কতকগুলি জোড়াস্থানের কম ক্ষয় করে, আবার কতকগুলি ক্ষয় করে না। এ বিচারে ফ্লাক্সগুলোকে তিনভাগে ভাগ করা যায়।
১। হাইলি করোসিভ ফ্লাক্স : এদেরকে কাজ শেষ হওয়ার পর দ্রুত জোড়া স্থান হতে পরিষ্কার করা দরকার। কারণ এরা জোড়া স্থানের ক্ষয় করে।
২। ইন্টারমিডিয়েট করোসিভ ফ্লাক্স : এরা জোড়া স্থানের কম ক্ষয় করে
৩। নন-করোসিভ ফ্লাক্স : এটি জোড়া স্থানের কোন ক্ষয় করে না।
ফ্লাক্স হিসেবে যে সকল রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহৃত হয় এদের মধ্যে কতকগুলো উল্লেখযোগ্য ফ্লাক্স হলো :
(ক) বোরাক্স
(খ) বোরিক এসিড
(গ) ম্যাগনেসিয়াম সিলিকেট
(ঘ) লাইম বা চুন ইত্যাদি ।
বিভিন্ন ধাতুর ওয়েল্ডিং কাজে বিভিন্ন রকমের ফ্লাক্স ব্যবহার করতে হয় নিচের টেবিলে কতকগুলো গুরুত্বপূর্ণ ধাতুর ওয়েল্ডিং কাজে ব্যবহৃত ফ্লাক্সের নাম দেওয়া হলো ।
ধাতুর নাম | ফ্লাক্স এর নাম |
---|---|
ভামা | ফ্লাক্স ছাড়া ওয়েল্ডিং করা যায়, তবে ভালো ফল পেতে বোরাক্স ব্যবহার করা উচিত। |
ভাষার সংকর | বোরাক্স, বোরিক এসিড, ফসফেট, (ব্রাশ, বোঞ্জ) ম্যাগনেসিয়াম, সিলিকেট, চুন ইত্যাদি। |
অ্যালুমিনিয়াম এবং অ্যালুমিনিয়াম সংকর | লিথিয়াম ক্লোরাইড, পটাশিয়াম ক্লোরাইড |
কাস্ট আয়রন | বোরেট, সোডা অ্যাস, সোডিয়াম ক্লোরাইড ইত্যাদি |
স্টেইনলেস স্টিল | বোরাক্স, বোরিক এসিড, ফ্লোরস্পার ইত্যাদি |
আবার অলৌহ জাতীয় ধাতু জোড়ের ক্ষেত্রেও আবরণযুক্ত ইলেকট্রোড ব্যবহৃত হয়। অ্যালুমিনিয়াম ইলেকট্রোড, অ্যালুমিনিয়াম জাতীয় ধাতু জোড়ের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। ফসফরাস ধাতু জোড়ের ক্ষেত্রে বিশেষ বিবেচ্য বিষয় হলো, ইলেকট্রোড নির্বাচন। সঠিক ধাতুর জন্য সঠিক ইলেকট্রোড নির্বাচন করতে না পারলে ধাতু জোড় দেওয়া সম্ভব হবে না, আবার অনেক ক্ষেত্রে জোড় দেওয়া সম্ভব হলেও তা সঠিক হবে না। তাই ধাতুর গুণাগুণ ও ইলেকট্রোডের গুণাগুণ জেনেই ধাতুজোড় দিতে হবে, তবেই মানসম্পন্ন ধাতুর জোড় পাওয়া যাবে।
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১। আই, আই, ডবিউ এর পূর্ণ অর্থ লেখ।
২। আই, আই,ডবিউ এর নির্ধারিত মাপ অনুসারে একটি ইলেকট্রোড এর মাপ কত হবে?
৩। ইলেকট্রোডের শ্রেণিবিন্যাস কর এবং বিভিন্ন শ্রেণির ইলেকট্রোডের নাম লেখ ।
৪। কনজুমাবল এবং নন কনজুমাবল ইলেকট্রোড বলতে কী বুঝায়?
৫। ফ্লাক্স কী? এটির কাজ কী?
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
৬। ফ্লাক্স হিসেবে ব্যবহৃত হয় এরূপ কয়েকটি রাসায়নিক পদার্থের নাম লেখ ।
৭। কাস্ট আয়রন ওয়েল্ডিং এর জন্য কোন কোন ফ্লাক্স ব্যবহৃত হয়?
৮। ব্রাশ এবং ব্রোঞ্জ ওয়েল্ডিং করতে যে ফ্লাক্সগুলো ব্যবহৃত হয় সেগুলোর নাম লেখ।
৯। ভিজা স্থানে ইলেকট্রোড রাখলে কী হবে।
১০। ইলেকট্রোড কিছুটা আর্দ্রতা শোষিত হলে কী করতে হবে?
রচনামূলক প্রশ্ন
১১। ফ্ল্যাক্স এর প্রকারভেদ আলোচনা কর ।
১২। ওয়েল্ডিং এর জন্য সঠিক ইলেকট্রোড নির্বাচন কৌশল লেখ।
১৩। ফ্ল্যাক্সের বহুবিধ কাজ আলোচনা কর।
ওয়েন্ডিং জোড়ের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জ্ঞাত হওয়া : যে ধাতুকে শুয়েন্ড করা হচ্ছে তার পুরুত্ব গুণাগুণ এবং কোন কাজে জোড়াটি ব্যবহৃত হবে তার উপর ভিত্তি করে জোড়া নির্বাচন করতে হয়।
ওয়েন্ডিং এর প্রধান প্রধান জোড়গুলিকে নিজের শ্রেণিতে ভাগ করা যায়।
১. জোড়া (Butt Joint)
(ক) স্কয়ার এজবাট জোড়া (Square edge butt joint)
(খ) একটি ডি সহ ৰাট জোড়া ( Single V Butt joint)
(গ) ডবল ভি সহ ৰাট জোড়া (Double V Butt joint)
(ঘ) একটি 'ইউ বাট জোড়া (Single U Butt joint)
(ঙ) ভবন ইউ সহ বাট জোড়া (Double U Butt joint)
২. ল্যাপ জোড়া (Lap joint)
(ক) একটি ফিলেটসহ ল্যাপ জোড়া (Single Fillet Lap joint)
(খ) ডবল ফিলেটসহ ল্যাপ জোড়া (Double Fillet Lap joint)
(গ) পাগ জোড়া (Plug Joint)
(ঘ) “টি” জোড়া (T Joint)
(ঙ) কর্নার জোড়া (Corner Joint)
(চ) এজ জোড়া (Bdge Joint)
(১) বাট জোড়া
(ক) স্কয়ার এজবাট জোড়া
চিত্র: ৯.১ স্কয়ার এজবাট জোড়া
১। এটি জোড়
একই সমতলে রেখে দুইটি পাত বা যন্ত্রাংশের ফেসে ওয়েন্ডিং করা হয়। পার্শ্বদেশ প্রস্তুতি অনুসারে এদের নাম বিভিন্ন হয়।
(ক) স্কয়ার বাট জোড়া কোনরূপ পার্শ্বদেশ প্রস্তুতি ছাড়া দুইটি পেটকে জোড়া দেওয়া হয়। ১.৬ মিলিমিটার পুরু হতে ৬ মিলিমিট পুরু পর্যন্ত পাতলা শিট এই পদ্ধতিতে ওয়েন্ডিং করা যায়।
চিত্রঃ ৯.১২ স্কয়ার বাট জোড়া
(খ) সিঙ্গেল ভি ৰটি ফোড়াও ৬ মিলিমিটারের বেশি কিন্তু ২০ মিলিমিটারের কম গুরুত্বের ধাতুকে ওয়েল্ডিং করতে এ জোড়া ব্যবহার উচিত। জোড়ার মাপ কেমন হবে তা চিত্রে দেখান হলো।
চিত্র: ১.১৩ সিসেল ভি ঘাট মোড়া
(গ) ডবল ডি বাট জোড়াও যে কোন ধরনের বল প্রয়োগের ক্ষেত্রে এ জোড়া তৈরি করা চলে। সাধারণত ১৯ হতে ৪৫ মিলিমিটার পুরু থাকে ওয়েন্ডিং করতে এ জোড়া খুব উপযুক্ত।
চিত্র: ৯.১৪ ডবল ভি বাট জোড়া
(খ) সিসেল ইউ বাটজোড়াঃ ১২ মিলিমিটার হতে ১৯ মিলিমিটার পর্যন্ত গুরুত্বের ধাতুকে ওয়েন্ড করতে এ জোড়া ব্যবহৃত হয়। বয়লারের পেট ওয়েল্ডিং করতে এ ধরনের জোড়া বেশি ব্যবহৃত হয়। চিত্র অনুসারে জোড়াস্থান তৈরি করতে হয়।
চিত্র: ৯.১৫ সিঙ্গেল ইউ বাট ঘোড়া
(১) ডবল 'ইউ' সহ বাট জোড়া ১৯ মিলিমিটার হতে যে কোন গুরুত্বেও ধাতু ওয়েল্ডিং করতে এ জোড়া তৈরি করা হয়। এটিও বয়লার বা প্রেসার ভেসেল ওয়েল্ডিং করতে ব্যবহৃত হয়। অর্থাৎ যেখানে জোড়াকে অধিক ফল প্রতিরোধ করতে হবে, সেখানে এই ধরনের জোড়া ব্যবহার করা যাবে। জোড়া নিচের মাপ অনুসারে তৈরি করতে হয়।
চিত্র: ১.১৬ ডবল 'ইউ' সহ বাট লোড়া
(২) ল্যাপ ঘোড়াঃ একটি পাতের উপর একটি পাত রেখে এ জোড়া তৈরি করা হয়। পার্শ্বদেশ প্রস্তুতির কোন পরিশ্রম এ জোড় ভেরির জন্য করতে হয় না।
(ক) সিসেল কিনটসহ ল্যাপ জোড়ঃ ১২ মিলিমিটার পর্যন্ত পুরুত্বের পাতকে সফলভাবে এ জোড়া দেওয়া যায়।
চিত্র: ৯.১৭ ল্যাপ গোড়া
(খ) ভবন ফিলেটসহ ন্যাপ জোড়ার সিমেল ফিলেটের চেয়ে বেশি বল বহন করতে পারে।
চিত্র ১.১৮ অল ফিলেট
(৩) টি জোড়াঃ একটি পাতের উপর আর একটি পাভ ৯০° বরাবর স্থাপন করে এ জোড় তৈরি করা হয়। ১ মিলিমিটার পুরুত্বের ধাতু অভ্যন্ত সুন্দরভাবে এ পদ্ধতিকে জোড়া দেওয়া যায়। এ ধরনের জোড়ায় শুধু একদিকে ওয়েল্ড করা হয়, তবে এ জোড়া বেজিং বা প্রতিরোধ করতে পারে না। যদি উত্তর দিক ওরেন্স করা যায় তবে সে জোড়া, শক্তিশালী হয় এবং মোচড় ও বেজিং বল প্রতিরোধ করতে পারে। ২৪ মিলিমিটার গুরুত্বেও পাতের 'টি' জোড়া তৈরি করতে হলে ভবন 'ভি' 'টি' জোড় তৈরি করতে হয়।
চিত্র: ৯.১১ 'টি' জোড়া
(৪) কর্ণার জোড়া সাধারণত পাতলা শিট মেটালকে জোড়া দিতে এ জোড়া তৈরি করা যায়। ১২ গেঞ্জি মিট পর্যন্ত কর্নার জোড়া তৈরি করার উপযুক্ত, তবে এ জোড়া ৰেন্ডিং ফল খুব কম প্রতিরোধ করতে পারে।
চিত্র: ৯.২০ ফর্মার গোড়া
(৫) এল দোয়া ও ৬ মিলিমিটার বা তার চেয়ে কম পুরুত্বেও ধাতুকে ধরেন্ডিং করতে এ মোড়া উপযুক্ত। এ জোড়ার পেনিট্রেশন খুব ভালো হয় না। তাই জোড়ার শক্তিও কম হয়।
চিত্র: ৯.২১ এজ জোড়া
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১। ডবল 'ইউ' জোড়া কখন অধিক উপযুক্ত?
২। এজজোড়া কোন পুরুত্বের ধাতুকে ওয়েল্ডিং করতে এ জোড়া উপযুক্ত?
৩। পার্শ্বদেশ প্রস্তুতির পরিশ্রম কোন জোড়ার জন্য করতে হয় না?
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
৪। দশটি ওয়েল্ডিং প্রতীক অঙ্কন করে ঐগুলোর পার্শ্বে ওয়েল্ডিং নাম লেখ।
৫। ওয়েল্ডিং স্থান দেখিয়ে কীভাবে ওয়েন্ডিং সিম্বল লেখা হয়? ৫টি উদাহরণ দাও।
৬। M.C.G দিয়ে কী বোঝান হয়?
রচনামূলক প্রশ্ন
৭। কোন কোন বিষয়ের উপর ভিত্তি করে ওয়েল্ডিং জোড় নির্বাচন করা হয়?
৮। ওয়েল্ডিং জোড়ার শ্রেণি বিভাগ কর এবং বিভিন্ন জোড়াগুলির নাম লেখ।
৯। বিভিন্ন শ্রেণির ওয়েন্ডিং জোড়াগুলোর চিত্র অঙ্কন করে নাম লেখ।
১০। স্কয়ার বাটজোড়া কোন ধরনের ওয়ার্কশপ এর জন্য উপযুক্ত এবং এ ধরনের জোড়ার সুবিধা কী?
১১। কোন ধরনের ওয়ার্ক পিসের জন্য সিঙ্গেল 'ভি' জোড়া উপযুক্ত একটি সিঙ্গেল 'ভি' জোড়ার চিত্র অঙ্কন করে এর বিভিন্ন অংশের মাপ দেখাও ।
১২। কীভাবে 'টি' জোড়া তৈরি করা হয়? মোচড় বল প্রতিরোধ করতে কীভাবে 'টি' জোড়া তৈরি করতে হয়?
১৩। কোন ধরনের ওয়ার্ক পিসের জন্য 'এজ' জোড়া অধিক উপযুক্ত?
১৪। দুইখণ্ড ধাতুর পুরুত্বঃ
১ম ক্ষেত্রে ১৪ মিলিমিটার
২য় ক্ষেত্রে ২২ মিলিমিটার
৩য় ক্ষেত্রে ৫ মিলিমিটার
৪র্থ ক্ষেত্রে ৪২ মিলিমিটার
কোন ক্ষেত্রে কোন ধরনের জোড়া তৈরি করবে?
যখন ধাতব পাতের বা জবের পুরুত্ব বৃদ্ধি পায় তখন তার পার্শ্বদেশ প্রস্তুত না করলে ভালো পেনিট্রেশন (Penitration) হয় না ১.৫ মিলিমিটার হতে ৬ মিলিমিটার পুরুত্বের ধাতুকে ওয়েল্ডিং করতে জোড়ার পার্শ্বদেশ প্রস্তুত না করলেও কাজ চলতে পারে, তবে ৬ মিলিমিটার পুরুত্বের বেশি সকল জবের পার্শ্বদেশ অবশ্যই প্রস্তুত করতে হবে। উপযুক্ত ভাবে পার্শ্বদেশ প্রস্তুত না করলে জোড়ার শক্তি সন্তোষজনক হবে না এবং জোড়া বেঁকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে ।
কোন জোড়ের পার্শ্বদেশ প্রস্তুতির পূর্বে বিবেচনা করতে হবে সেটা কোন পদার্থের তৈরি, কী প্রকারের জোড়া হবে কোন পদ্ধতির ওয়েল্ডিং করা হবে ইত্যাদি।
বিকৃতি বিহীন নিখুঁত জোড় পাওয়ার বিষয়টি পার্শ্বদেশ প্রস্তুতির উপর অনেকখানি নির্ভরশীল যখন ধাতব বা জবের গুরুত্ব বৃদ্ধি পায় তখন তা পার্শ্বদেশ প্রস্তুত না করলে ভালো পেনিট্রেশন হয় না বা জোড় প্রস্তুতিও নিখুঁত হয় না। দুই খণ্ড ধাতুকে পাশাপাশি বা মুখোমুখি রেখে ওয়েল্ডিং করা হয় তাকে বাট ওয়েল্ডিং বলে। খণ্ডদ্বয়ের জোড় হলে ওয়েল্ডিং এর পূর্বে পার্শ্বদেশ ঢালু করে নিতে হয় এবং ওয়েল্ডিং করার সময় পাতদ্বয়ের মাঝখানে নিয়ম মোতাবেক ফাঁক রাখতে হয়। তৃতীয় ধাতু (Filler Metal) ও খণ্ডদ্বয়ের প্রান্ত সামান্য গলে গিয়ে এ ঢালু এবং ফাঁক পূরণ করে নেয় এবং এভাবে ওয়েল্ডিং কাজ সম্পন্ন হয়। ১.৫ মিমি পুরু ধাতুর পার্শ্বদেশ প্রস্তুত না করলেও কাজ চলতে পারে, তবে ও ৬ মিমি পুরুত্বের ধাতুকে ওয়েল্ডিং করতে জোড়ার পার্শ্বদেশ অবশ্যই প্রস্তুত করতে হবে।
উপযুক্তভাবে পার্শ্বদেশ প্রস্তুত না করলে জোর শক্তি সন্তোষজনক হবে না এবং জোড়ার বেঁকে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। জোড়ের উদ্দেশ্য সাধনের জন্য পার্শ্বদেশ প্রস্তুতি এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এখানে উলেখ্য যে, পার্শ্বদেশ প্রস্তুতির মুখ্য কাজ হলো গ্রুভ বা খাঁজ, লেভেল, সিঙ্গেল ভি, ডাবল ভি, পিছন দিকে সামান্য চেমফারিং করা ইত্যাদি। আর জোড় স্থান প্রস্তুতির মুখ্য উদ্দেশ্য হলো- উভয় প্লেটকে সমান অথবা জোড়া রেখা (Line) রেখে ফাঁক স্থানটি রক্ষা করা। এর প্রত্যেকটি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস একটু এদিক সেদিক হলেই বিকৃতি অনিবার্য, সুতরাং প্রত্যেক পার্শ্বদেশ প্রস্তুতির উপর সতর্ক দৃষ্টি রেখে ওয়েল্ডিং কাজ সমাধান করা উচিত।
(ক) গ্রাইন্ডিং (Grinding )
(খ) ফাইলিং (Filing)
(গ) চিপিং (Chiping)
(ঘ) আর্ক কাটিং (Are Cutting )
(ঙ) গ্যাস কাটিং (Gas Cutting)
(চ) শিয়ার মেশিনে কাটিং (Shearing)
(ছ) প্লাজমা আর্ক কাটিং (Plasma Are Cutting)
(জ) গাউজিং (Gauging )
কখনও কখনও জোড়ার পার্শ্বদেশ প্রস্তুতির কাজ একাধিক পদ্ধতির সমন্বয়ে সম্পন্ন করা হয়। যেমন গ্যাস কাটিং এর পর ফাইলিং গ্রাইন্ডিং অথবা চিপিং এর পর ফাইলিং গ্রাইন্ডিং করা হয়।
(ক) গ্রাইন্ডিং করেঃ
ছোট আকৃতির জবগুলিকে হাতে ধরে গ্রাইন্ডিং মেশিনে গ্রাইন্ডিং করে নিলেই চলে। কিন্তু বড় জব অর্থাৎ যে জবকে নাড়ানো, চড়ানো অসুবিধাজনক সেখান প্রটেবল হ্যান্ড গ্রাইন্ডার ব্যবহার করে কাজ করা যাবে।
(খ) ফাইলিং করেঃ
জোড়ার পার্শ্বদেশ প্রস্তুতিতে এটি অত্যন্ত উপযুক্ত পদ্ধতি। যে জবকে ভাইসে বাঁধা সম্ভব সেটিকে ভাইসে বেঁধে ফাইল দিয়ে ধাতুক্ষয় করে পার্শ্বদেশ প্রস্তুত করা হয়।
কিন্তু ভাইসে বাধা না গেলে জবকে সুবিধাজনক অবস্থায় নিয়ে ফাইলিং করে পার্শ্বদেশ প্রস্তুত করা যায়।
(গ) চিপিং করেঃ
মোটা জব অর্থাৎ বেশ খানিকটা ধাতু যেখানে কেটে জোড়ার পার্শ্বদেশ প্রস্তুত করতে হবে সেখানে চিপিং করে পার্শ্বদেশ প্রস্তুত করতে হয়। এ পদ্ধতিতে কোল্ড চিজেলের মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে ধাতু কর্তন করতে হয়। কর্তনের পূর্বে অবশ্যই যে স্থানের মেটাল কাটতে হবে সে স্থানে ভালোভাবে মার্কিং করে নিতে হবে। চিপিং করার পর অধিকাংশ ক্ষেত্রে গ্রাইন্ডিং অথবা ফাইলিং করার প্রয়োজন হয়।
(ঘ) আর্ক কাটিং পদ্ধতিঃ
আর্ক ওয়েল্ডিং এ যেমন ধাতু জোড়া দেওয়া হয় তেমনি কাটাও যায়। এ পদ্ধতিতে কাটার সময় কারেন্টের পরিমাণ ওয়েল্ডিং করার সময়ের চেয়ে বেশি লাগে এবং কাটার কাজে ইলেকট্রোড ব্যবহৃত হয় তার ব্যাসও ৪ মিলিমিটার এর কম হওয়া উচিত নয়। ওয়েল্ডিং পদ্ধতির মত আর্ক কাটিং পদ্ধতিতেও মোটা ধাতু কাটতে বেশি ব্যাসের ইলেকটোড এবং চিকন বা অল্প গুরুত্বের ধাতু কাটতে কম কারেন্ট ও খানিকটা চিকন ইলেকট্রোড ব্যবহার করতে হয় ।
(২) অক্সি আর্ক কাটিং পদ্ধতিঃ যে সমস্ত জবের পার্শ্বদেশ সাধারণ মেটালিক আর্ক কাটিং অথবা গ্যাস কাটিং পদ্ধতিতে কাটা অসুবিধাজনক যেমন হাই ক্রোমিয়াম স্টিল, ক্রোমিয়াম নিকেল স্টিল, স্টেইনলেস স্টিল, বোঞ্জ, কপার, অ্যালুমিনিয়াম ইত্যাদি সে সকল ধাতুকে সুবিধাজনকভাবে এ পদ্ধতিতে কাটা যায়। এ পদ্ধতিতে ব্যবহৃত ইলেকট্রোডের মাঝে দিয়ে যে অক্সিজেন সরবরাহ করা হয় সে অক্সিজেনের চাপে ধাতু কাটার কাজ সম্পন্ন হয়।
(ঙ) গ্যাস কাটিং প্রক্রিয়াঃ
অক্সিজেন এবং অ্যাসিটিলিন গ্যাসের শিখার সাহায্যে মেশিনে অথবা হাতে ধাতু কর্তন করে জোড়ার পার্শ্বদেশ প্রস্তুত করা হয়। গ্যাস কাটিং এর পর অধিকাংশ ক্ষেত্রে চিপিং এবং গ্রাইন্ডিং করার প্রয়োজন হয়।
(চ) শিয়ার মেশিনে কেটেঃ অল্প পুরুত্বের ধাতুকে বেঞ্চ শিয়ার মেশিনে কেটেও জোড়া স্থানের পার্শ্বদেশ প্রস্তুত করা যায়, তবে ওয়েল্ডিং ওয়ার্কশপে জোড়ার পার্শ্বদেশ প্রস্তুতির জন্য চিপিং ফাইলিং এবং গ্রাইন্ডিং পদ্ধতি খুব বেশি ব্যবহৃত করা হয়। বিভিন্ন রকমের জোড়ার জন্য পার্শ্বদেশ কেমন আকৃতির প্রস্তুত করতে হয় তার চিত্র নিচে দেখান হয়।
ধাতুর পার্শ্বদেশ প্রস্তুতির পূর্বে সঠিকভাবে লে আউট (Layout) করে নেওয়া প্রয়োজন।
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১। ভালোভাবে জোড়ার পার্শ্বদেশ প্রস্তুত না করলে কী হবে ?
২। জোড়ার পার্শ্বদেশ প্রস্তুতির পদ্ধতিগুলোর নাম লেখ ।
৩। জোড়ার পার্শ্বদেশ প্রস্তুতির পূর্বে কোন কোন বিষয় বিবেচনা করতে হয় ?
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
৪। চিপিং করে জোড়ার পার্শ্বদেশ প্রস্তুতির বর্ননা দাও ।
৫। জোড়ার পার্শ্বদেশ প্রস্তুতির পদ্ধতিগুলোর মধ্যে কোনগুলো ওয়ার্কশপে বেশি প্রচলিত ?
৬। জোড়ার পার্শ্বদেশ প্রস্তুতির সতর্কতাগুলো লেখ।
রচনামূলক প্রশ্ন
৭। গ্রুভ অ্যাঙ্গেল ও বিভেল অ্যাঙ্গেলের পার্শ্বদেশ প্রস্তুতির চিত্র অংঙ্কন করে দেখাও।
৮। আর্ক, গ্যাস কাটিং ও চিপিংয়ের সময় নিরাপত্তাগুলো সরঞ্জামাদির ব্যবহারের কারণ উল্লেখ কর ।
ওয়েন্ডিংয়ের পুরা কাজটি পর্যালোচনা করলে দেখা যায় কতগুলো ধাপ অতিক্রম করে কাজটি শেষ হয়।
(১) কাজের প্রজাতি
কাজের উপযুক্ত পোশাক পরিধান করা।
কার্যবস্তু প্রস্তুত ও প্রয়োজনে পার্শ্বদেশ প্রস্তুত করা।
(২) ইলেকট্রোড নির্বাচন/ফিলার নির্বাচন
(৩) বৈদ্যুতিক সংযোগ/শিখা প্রজ্বলন করা
(৪) অ্যাম্পিয়ার নিরূপণ/শিখা অ্যাডজাস্টকরণ
(৫) ট্যাক ওয়েল্ড করা।
(৬) ধাতু জোড় সম্পন্ন করন :
(৭) ওয়েল্ডিং করা
(৮) জোড়াস্থান পরিষ্কার করা
প্রস্তুতি : এই পর্যায়ে ওয়েল্ডারকে কাজের উপযুক্ত পোশাক পড়তে হবে। কিন্তু আর্ক ওয়েন্ডিংয়ের জন্য হেলমেট পরতে হবে বা হ্যান্ডশিল্ড সংগ্রহ করতে হবে যা কাজের সমর হাতে ধরে চোখকে রক্ষা করা যায়। কার্য বহু প্রস্তুত করার জন্য জবের উপর হতে গ্রিজ, বা তৈল জাতীয় পদার্থ এবং মরিচা বা ধুলাবালি পক্ষিার করতে হবে। মোটা জব হলে পার্শ্বদেশ প্রস্তুত করতে হবে পুরুত্ব বিবেচনা করে, সিংগল 'ভি' বা ডাবল 'ভি' অনুরূপ সিংগল 'ইউ' বা ডাবল 'ইউ' ইত্যাদি আকৃতিতে পার্শ্বদেশ প্রস্তুত করতে হবে।
ইলেকট্রোড/কিলার রঙ নির্বাচন : জবের পুরুত্বের উপর ভিত্তি করে আর্ক ওয়েন্ডিং এর জন্য ইলেকট্রোড এবং গ্যাস ওয়েন্ডিং এর জন্য ফিলার রঙ নির্বাচন করতে হবে। মোটা জবের জন্য মোটা ইলেকট্রোড বা ফিলার রড এবং কম পুরুত্বের জবের জন্য চিকন ফিলার রঙ বা ইলেকট্রোড নির্বাচন করতে হবে। চটি দেখে এটা করা যায়।
তাড়াতাড়ি কাজ করার সময় ধাতুর পুরুত্বের সাথে ৩ মিলিমিটার যোগ করে যোগফলকে দুই দিয়ে ভাগ করেও ইলেকট্রেডের ব্যাস মোটামুটি নির্ণয় করা যায়, তবে খুব মোটা জবের ক্ষেত্রে এ নিয়ম চলে না।
কারেন্ট/শিখা নিরূপণ : আর্ক ওয়েল্ডিং এর সময় কারেন্ট নির্বাচন এবং গ্যাস ওয়েন্ডিং এর সময় শিখা নির্বাচন করতে নিচের বিষয়গুলো বিবেচনা করতে হবে।
টেবিল নং-৭
ধাতুর নাম | শিখার নাম |
---|---|
মাইল্ড স্টিল, রট আয়রন, কাস্ট আয়রন, স্টেইনলেস, অ্যালুমিনিয়াম, তামা, সীসা ইত্যাদি | নিউট্রাল শিখা |
ম্যাঙ্গানিজ স্টিল, পিতল, ব্রোঞ্জ, তামা ইত্যাদি | অক্সিডাইজিং শিখা |
নিকেল, মোনেল মেটাল, অ্যালুমিনিয়াম, ইত্যাদি | কার্বুরাইজং শিখা |
ইলেকট্রোডের ব্যাস বেশি হলে ওয়েল্ডিং এর জন্য বেশি কারেন্ট প্রয়োজন হয়, যেমনঃ
টেবিল -৮
ইলেকট্রোড ডায়া | কারেন্ট |
---|---|
১০ গেজি | ১২০ অ্যামপিয়ার |
৮ গেজি | ১৫০ অ্যামপিয়ার |
৬ গেজি | ২০০ অ্যামপিয়ার |
৪ গেজি | ২৫০ অ্যামপিয়ার |
৬ মিলিমিটার | ৩০০ অ্যামপিয়ার |
৮ মিলিমিটার | ৪০০ অ্যামপিয়ার |
৯.৫ মিলিমিটার | ৫০০ অ্যামপিয়ার |
ট্যাক ওয়েল্ড করাঃ
একে ট্যাক দেওয়া বা ট্যাকিং করাও বলা হয়। জব নড়ে গিয়ে বা ওয়েল্ডিং এর প্রচণ্ড তাপে জোড়া বেঁকে না যায় তার জন্য জবের দুই বা তিন স্থানে ছোট ছোট ওয়েল্ড করে নিতে হয়। এ ছোট ওয়েন্ডগুলোর নাম ট্যাক ওয়েল্ড। এগুলো লম্বায় ৩ মিলিমিটার হতে ৫ মিলিমিটার পর্যন্ত হতে পারে।
ওয়েল্ডিং করা
প্রস্তুতিঃ
কোন কাজের ভালো ফলাফলের প্রথম শর্ত হলো ভালো প্রস্তুতি। সুতরাং ভালো ওয়েন্ডিং এর জন্য ভালো প্রস্তুতির অতি প্রয়োজন।
ইলেকট্রোড / কিলার রঙ নির্বাচনঃ
উপযুক্ত ইলেকট্রোড এবং ফিলার রড নির্বাচন না হলে ওয়েল্ডিং ভালো হবে না, কারণ সঠিক ব্যাসের ইলেকট্রোড বা ফিলার রড দিয়ে সুন্দর ওয়েন্ডিং তৈরি করা যায় ।
কারেন্ট নিরূপণ/শিখা নির্বাচনঃ
নির্দিষ্ট পুরুত্বের ওয়ার্কপিস অথবা নির্দিষ্ট ব্যাসের ইলেকট্রোড বা ফিলার রঙ গলাতে নির্দিষ্ট পরিমাণের কারেন্ট/ শিখা নির্বাচন করতে হবে, অন্যথায় ওয়েল্ডিং ভালো হবে না।
ট্যাক ওরেড করাঃ
ট্যাক ওরেন্ড ঠিকমত না করলে সম্পূর্ণ কাজ নষ্ট হয়ে যায়। কারণ যথপোযুক্ত পোশাক পরা হোক আর সুন্দরভাবে জোড়া প্রস্তুত করা হোক, ট্যাক ওয়েল্ড করা না হলে ওয়েল্ডিং এর প্রচণ্ড তাপে বা জোড়া নড়ে গিয়ে সম্পূর্ণ ওয়েন্ড কার্যটি একেবারে পঞ্চ হয়ে যাবে।
ওয়েল্ডিং করা পূর্বের সকল প্রস্তুতিগুলো হলো ভালো ওয়েন্ডিং করার জন্য সুতরাং ওয়েন্ডিং করা ধাপটি শেষ এবং অতীব গুরুত্বপূর্ণ। ইলেকট্রোড অ্যামপিয়ার এবং মূল ধাতুর পুরুত্ব। মূল ধাতুর পুরুত্ব বলতে যে ওয়ার্কপিসকে ওয়েন্ডিং করতে হবে তার পুরুত্বকে বুঝায় ।
মূল ধাতুর পুরুত্ব যত বেশি হবে ইলেকট্রোডের ব্যাস তত বেশি লাগবে এবং বেশি ব্যাসের ইলেকট্রোডকে গলাতে বেশি অ্যামপিয়ার কারেন্ট লাগবে। এ বিষয়টি এ বইয়ের ব্যবহারিক অংশে দেখান হয়েছে।
সব অবস্থানে ধাতু জোড় দিতে হয়। উত্তম জোড় সৃষ্টিতে জোড়ের অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ। অনুপযুক্ত অবস্থানে দক্ষ ওয়েল্ডার উত্তম ইলেকট্রোড, উত্তম মেশিন ব্যবহারের পরও ভালো জোড় উৎপাদন সম্ভব হয় না। ভালো জোড়ের জন্য প্রয়োজন জোড়ের ভালো অবস্থান। অবস্থান ভেদে ওয়েল্ডিং করার পদ্ধতিও পরিবর্তন হয়। এক এক অবস্থানে জোড়কে আটকানো, ইলেকট্রোড চালনার ও বিভিন্ন হয়। অবস্থান ভেদে নিরাপত্তাও ভিন্নতর হয়। ভালো জোড় সৃষ্টিতে ওয়েল্ডারের বিভিন্ন অবস্থানে জোড় দেওয়ার সব কৌশল রপ্ত করতে হয়। বিশেষ করে পাইপ জোড়ের ক্ষেতে এর গুরুত্ব অত্যাধিক। প্লেট জোড়ের ক্ষেতে পেনিট্রেশন পরীক্ষণ ছাড়া দেখা সম্ভব হয় না। তাই প্লেট জোড় এবং পাইপ জোড়ের ওয়েল্ডারের প্রাপ্ত সনদ ভিন্ন। প্লেট জোড়ের ক্ষেত্রে ওয়েল্ডারের প্রাপ্ত সনদে তার দক্ষতার সীমাবদ্ধতা মোতাবেক 1 F2 F3 F4 F আলাদা আলাদা বা একত্রে সনদ প্রদান করা হয়ে থাকে। আবার পাইপ জোড়ের ক্ষেত্রে । G2, 3G, 5G, G বা 6 G এর আলাদা আলাদা বা একত্রে সনদ প্রদান করা হয়ে থাকে। 5 G এর সনদ পাওয়ার অর্থ 1G, 2G, 3G, 5G এর দক্ষতা মান অতিক্রম করা হয়েছে। তাই ওয়েল্ডারের জোড়ের উক্ত অবস্থানগুলো সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা থাকতে হবে। আবার 6 G প্রাপ্ত সনদ মানে ওয়েল্ডারের পাইপ জোড়ের ক্ষেত্রে সকল অবস্থানে জোড় দানের সমর্থ রয়েছে।
1-G বা ফ্ল্যাট অবস্থানঃ
এ অবস্থানকে পাইপ জোড়ের প্রাথমিক অবস্থান হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। অন্যান্য অবস্থান থেকে এ অবস্থানে পাইপ জোড় অনেকটা সহজ। কার্যবস্তুকে সমতল অবস্থানে রেখে এ জোড় দেওয়া হয়। কার্যবস্তুকে সঠিকভাবে সতল অবস্থানে রেখে, সঠিক ইলেকট্রোড, সঠিক কারেন্ট অ্যাডজাস্টমেন্ট ও সঠিক ইলেকট্রোড চালনার কোণ ও গতি ঠিক থাকলে এ অবস্থানে জোড়ের গুণগত মান ও পরিমাণ ঠিক থাকে। অন্যান্য অবস্থানের তুলনায় পাইপ জোড়ের এ অবস্থানে ধাতু জোড়ের ত্রুটি-বিচ্যুতি হ্রাস পায় ।
2-G/ হরিজন্টাল অবস্থান:
2G অবস্থানকে পাইপ জোড়ের হরিজন্টাল অবস্থান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। দুইটি পাইপের সঠিক প্রাপ্তদেশ আটকানো হয়। জোড়ের ক্ষেত্রে এ অবস্থানটি ফ্ল্যাট অবস্থান থেকে একটু কঠিন। এ অবস্থানে ইলেকট্রোডের কোণ এবং চালনার গতি ঠিক রাখতে হয়। ইলেকট্রোডের সঠিক কোণ, সঠিক আর্ক লেংথ এবং সঠিক চালনার গতি না হলে নানান ত্রুটি-বিচ্যুতি দেখা যাবে। আর্ক লেংথ অপেক্ষাকৃত ছোট রেখে সঠিক গতিতে ইলেকট্রোড চালনা করলে পেনিট্রেশন ভালো হবে। পাইপ জোড়ের ক্ষেত্রে পেনিট্রেশন জরুরি। এ অবস্থানের মূল সমস্যা গলিত ধাতু মাধ্যাকর্ষণ শক্তির দ্বারা প্রভাবিত হয়। যার ফলে ল্যাক অব পেনিট্রেশন, বার্নথ্রো, আন্ডার কাট, গ্যাস পকেট, স্লাগ ইনক্লুশান ইত্যাদি ত্রুটি-বিচ্যুতি দেখা দিতে পারে। সঠিক কার্য পদ্ধতি, অপ্রয়োজনীয় ধাতুমল ও সঠিকভাবে স্লাগ পরিষ্কার দ্বারা ত্রুটি-বিচ্যুতি হ্রাস করা সম্ভব।
3-G বা উলম্ব অবস্থান:
এ অবস্থানে পাইপ জোড়কে উলম্ব অবস্থানে আটকানো হয়। দুইটি পাইপের প্রান্তদেশ প্রস্তুতি ও ট্যাক ওয়েল্ড শেষে উলম্ব অবস্থানে আটকানো হয়। ঊর্ধ্বমুখী বা নিম্নাভিমুখী উলম্ব প্লেট জোড়ের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য রয়েছে। পাইপ জোড়ের ক্ষত্রে এর আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে। ইলেকট্রোডকে সঠিক কোণে রেখে ডানমুখী অথবা বামমুখী ইলেকট্রোড চালনা করতে হয়। উভয়ক্ষেত্রে গলিত ধাতু মাধ্যাকর্ষণ শক্তির দ্বারা প্রভাবিত হয়। উলম্ব অবস্থানে পাইপ জোড়ের প্রথম রান বা রুট রানের বিশেষ সতর্কতার প্রয়োজন। ইলেকট্রোডের কোণ, আর্ক লেংথ, ইলেকট্রোড চালনার গতি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। এর একটিও ভুল হলে নানান ত্রুটি-বিচ্যুতি দেখা দেয়। এ অবস্থানে যেহেতু মাধ্যাকর্ষণ শক্তির দ্বারা প্রভাবিত সেহেতু মূল ধাতুর প্রাপ্তদেশ দুইটি সমহারে গলার প্রতি সতর্ক থাকতে হয়। প্রতিটি রানের শেষে অপ্রয়োজনীয় ধাতুমল পরিষ্কার করতে হবে। এ অবস্থানে আন্ডার কাট, বার্নথ্রো, ল্যাক অব ফিউশান, অতিরিক্ত ধাতুমল জমা ইত্যাদি ত্রুটি-বিচ্যুতি দেখা যায় ।
4-G (ওভারহেড অবস্থান ) :
এ অবস্থানটি পাইপের সাথে প্লেট জোড় অথবা প্লেটের সাথে প্লেট জোড় হতে পারে। এ অবস্থানে পাইপের সাথে পাইপ জোড় দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ পাইপের নিচের অংশ জোড় দেওয়ার পর উপর অংশ জোড় দেওয়া যায় না। তাছাড়া পাইপ জোড়ের জন্য কঠিনতম অবস্থান হিসেবে স্বীকৃত হলো 6-G অবস্থান। আর প্লেটটের ক্ষেত্রে 4-G অবস্থান হলো ওভারহেড অবস্থান। এ অবস্থানটিও প্লেট জোড়ের কঠিনতম অবস্থান। কোন ওয়েল্ডার-এর এ অবস্থানে জোড় দেওয়ার সামর্থ মানে তার বাকি অবস্থানে জোড় দেওয়ার দক্ষতা রয়েছে। পাইপকে প্লেটের সাথে ওভারহেড অবস্থানে রেখে জোড় দিতে কার্যবস্তুকে মাথার উপর অবস্থানে স্থাপন করা হয়। এ জোড় যেহেতু মাথার উপর অবস্থানে স্থাপন করা হয়। সেহেতু জোড় দেওয়া এবং জোড়ের গুণাগুণ বজায় রাখার জন্য প্রয়োজন দক্ষতার। এ জোড়ের জন্য বিশেষ নিরাপত্তার প্রয়োজন। সঠিক ইলেকট্রোডের কোণ, আর্ক লেংথ ইলেকট্রোড চালনার গতি অত্যাবশ্যাক। সঠিক ইলেকট্রোডের কোণ বজায় না রাখলে এ অবস্থায় জোড় দেওয়া অসম্ভব। এ অবস্থায় ধাতুমল মাধ্যাকর্ষণ শক্তির দ্বারা প্রভাবিত। নিরাপত্তামূলক সরঞ্জামাদি না পরলে শরীরের বিভিন্ন স্থানে উত্তপ্ত ধাতুমল পড়ে ক্ষতের সৃষ্টি করতে পারে।
ওভার হেড জোড়ের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো:
- খুব কম কারেন্ট হলে ফ্ল্যাগ আটকা পড়ে ফাঁক সৃষ্টি করবে, আবার কখনও আর্ক সৃষ্টি করা কঠিন হবে।
- অত্যাধিক বেশি কারেন্ট হলে, আন্ডার কাট, বার্নথ্রো, ধাতুমলে এবড়ো ভাব এবং খারাপ আকৃতির জোড় সৃষ্টি হবে ।
- ইলেকট্রোডের আবরণ ধাতু গলার সাথে পুড়তে হবে।
- ইলেকট্রোড চালনার গতি অত্যধিক কম হলে জোড় স্থানে তাপ বৃদ্ধি পেয়ে জোড় স্থানে গর্ত সৃষ্টি করবে।
- ইলেকট্রোডের গতি অত্যাধিক বেশি হলে জোড় স্থানে পেনিট্রেশন হবে না ।
- জোড় স্থান ভালোভাবে পরিষ্কার করা না হলে স্ল্যাপ ইনক্লুশান দেখা যেতে পারে।
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১। এম. এস মেটাল জোড়ে কোন শিখা ব্যবহার করা হয় ?
২। 3-G অবস্থানে পাইপ জোড়কে কোন্ অবস্থানে আটকানো হয়।
৩। 4-G অবস্থানে পাইপের সাথে পাইপ জোড় দেওয়া সম্ভব নয় কেন ?
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
৪। গ্যাস ওয়েল্ডিং এর শিখাসমূহের নাম উল্লেখ কর।
৫। অত্যাধিক বেশি কারেন্ট হলে ওয়েল্ডিং জোড় কেমন হয় ?
৬। নিরাপত্তামূলক সরঞ্জামাদি না পড়লে শরীরের কিরূপ ক্ষতি হতে পারে?
রচনামূলক প্রশ্ন
৭। ওয়েন্ডিং কার্য পদ্ধতির ধাপগুলোর নাম লেখ।
৮। কাজের প্রস্তুতি ধাপে একজন ওয়েল্ডারকে কী কী কাজ করতে হয়?
৯। আর্ক ওয়েল্ডিং এর জন্য কারেন্ট এবং গ্যাস ওয়েল্ডিং এর জন্য শিখা নির্বাচন করতে একজন ওয়েল্ডারককে কোন বিষয়গুলো বিবেচনা করতে হয়?
১০। কী কী ধাতু ওয়েল্ডিং করার জন্য অক্সিডাইজিং শিখা নির্বাচন করতে হয়?
১১। দ্রুত, কাজ করার সময় কীভাবে ইলেকট্রোডের ডায়া বা ব্যাস নির্বাচন করতে হয়?
১২। ওভার হেড জোড়ের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো উল্লেখ কর।
১৩। ওভারহেড অবস্থানকে ধাতু জোড়ের কঠিন অবস্থান বলার কারণ ব্যাখ্যা কর ।
ওয়েল্ড মেটালের গঠনগত কতকগুলো অপ্রত্যাশিত ত্রুটির কারণে সঠিকভাবে জোড়া লাগে না, জোড়া অসুন্দর হয়, শক্তি কম হয়, তা ভেঙ্গে যায় বা যাওয়ার প্রবণতা থাকে একে ওয়েন্ডিং এর ত্রুটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আর্ক ওয়েল্ডিং সাধারণত নিম্নলিখিত দোষত্রুটিগুলো দেখা যায়।
(১) ফাটল (Cracks)
(২) অল্প গলন (Poor fusion)
(৩) ধাতুমলের অন্তর্ভূক্তি (Shug Inclusion)
(৪) ছিদ্রময়তা (Parosity )
(৫) স্বল্প পেনিট্রেশন (Poor penitration)
(৬) উত্তপ্ত ধাতু ছড়ানো (Spattering)
(৭) আন্ডার কাট (Under Cut)
(৮) পুড়ে যাওয়া বিকৃতি (Burn Through)
(৯) ওভার ল্যাপিং (Over Lapping)
(১০) বিকৃতি (Distortion)
ফাটল :
ওয়েল্ড মেটালে বা বেস মেটালে যে কোন ধরনের ফাটল ফাটলত্রুটি হিসেবে বিবেচিত হয়। অর্থাৎ ওয়েল্ডিং করার পর বেসমেটাল এবং ওয়েল্ড মেটালের সংযোগস্থলে, অথবা বেসমেটাল বা ওয়েল্ড মেটালে যে চিড় ধরে তাকে ফাটল বলে। যে ফাটলগুলি খালি চোখে দেখা যায়, তাদেরকে ম্যাক্রো ক্র্যাকিং এবং যে ফাটলগুলো খালি দেখা যায় না, মাইক্রোসকোপ এর সাহায্যে দেখতে হয়, সে ফাটলগুলিকে মাইক্রো ক্র্যাকিং বলে।
অল্প গলন :
মূল ধাতুর সাথে ওয়েল্ড মেটালের বা ওয়েল্ড মেটালের পুরোপুরিভাবে মিশ্রণের অভাবকে অল্প গলন বলে। কাল দাগ দ্বারা দেখান হয়েছে যে, ওয়েল্ড মেটাল মূল ধাতুর সাথে মিশেনি।
ধাতুমলের অন্তর্ভুক্তি :
গলিত ওয়েল্ড যখন জমাট বাধে তখন তার অভ্যন্তরে কোন কোন সময় ধাতুমল আটকে পড়ে একে ধাতুমলের অন্তর্ভুক্তি বলে।
ছিদ্রময়তা :
ওয়েল্ড শেষে ওয়েল্ড মেটালে অনেক সময় একাধিক ছোট ছোট ছিদ্র দেখা যায় একে ছিদ্রময়তা বলে। যখন এ ছিদ্রগুলো বড় মাপের অর্থাৎ প্রায় ২-৩ মিলিমিটার হয় তখন তাকে রোহোল বলে।
স্বল্প পেনিটেশন
ইলেকট্রোড গলে মূল ধাতুর অভ্যন্তরে যে পর্যন্ত প্রবেশ করা প্রয়োজন সে পর্যন্ত প্রবেশ না করলে তাকে স্বল্প পেনিট্রেশন বলে।
উত্তপ্ত ধাতু ছড়ানো
ওয়েন্ডিং করার সময় ইলেকট্রোড গলে জোড়ার স্থানে না পড়ে তার চারপার্শ্বে ছড়িয়ে পড়ে এটি ইংরেজিতে স্প্যাটার ত্রুটি নামে পরিচিত।
আন্ডার কটি
বেস মেটাল কিংবা ওয়েল্ড মেটালের পার্শ্বদেশ আর্কের অতিরিক্ত উত্তাপে কেটে গেলে তাকে আভারকটি বলে।
পুড়ে যাওয়া
আর্কের অতিরিক্ত উত্তাপে জোড়াস্থানে পুড়ে গর্ত হয়, ফলে গলিত ধাতু জোড়া স্থানে না জমে নিচে পড়ে যায়। এটিই পুড়ে যাওয়া ত্রুটি।
বিকৃতি
ওয়েন্ডিং এর সময় মূল ধাতুটি অসমভাবে উত্তপ্ত এবং পরবর্তীতে ঠাণ্ডা হওয়ার কারণে বেসমেটাল মোচড়ে কিংবা বেঁকে যায় একে বিকৃতি ত্রুটি বলে।
ওভার ল্যাপিং
মাত্রাতিরিক্ত ওয়েল্ড মেটাল যখন মূল ধাতুর উপর জমে থাকে তাকে ওভার ল্যাপিং বলে।
বিভিন্ন কারণে ওয়েল্ডিং এর দোষত্রুটি হতে পারে, যেমন কারেন্ট এবং ভোল্টেজ এর মান সঠিকভাবে নির্বাচন করতে না পারা, মূল ধাতু ঠিকমত পরিষ্কার না করা, জোড়ার পার্শ্বদেশ ঠিকমত তৈরি করতে না পারা, ইলেকট্রোড এবং বেস মেটালের মাঝের কোণ ঠিক না হওয়া, ইলেকট্রোড চালানোর গতি ঠিক না হওয়া, ফ্লাক্স এবং ইলেকট্রোডে ময়লা থাকা প্রিহিটিং এবং পোস্টহিটিং না করা ইত্যাদি বহুবিধ কারণে ওয়েল্ডিং ত্রুটি দেখা দেয়। নিম্নে বিভিন্ন প্রকার ত্রুটির সম্ভাব্য কারণগুলো উল্লেখ করা হলো।
ত্রুটির ধরণ | ত্রুটির কারণ |
---|---|
ফাটল | ১। জবের অংশসমূহের খুব বেশি দৃঢ়তা, অর্থাৎ জোড়াস্থান যখন খুব উত্তপ্ত ছিল তখন তা প্রসারিত হতে না পারা এবং সংকোচনের সময় সংকোচিত হতে না পারা। ২। জোড়ার পার্শ্বদেশ প্রস্তুতি ঠিকমত না হওয়া। ৩। ইলেকট্রোড চালানোর গতি বেশি হওয়া। ৪। ইলেকট্রোডে হাইড্রোজেন এর পরিমাণ বেশি থাকা ইত্যাদি। |
ধাতুমলের অন্তর্ভূক্তি | ১। বেসমেটাল ঠিকমত পরিষ্কার না থাকলে। ২। ইলেকট্রোড বা ফ্লাক্সে ময়লা থাকলে। |
ছিদ্রময়তা | ১। ইলেকট্রোড কোটিং এ আদ্রতা থাকা। ২। দ্রুত ওয়েল্ডিং করা। ৩। মূল ধাতুতে ময়লা থাকা। ৪। বেসমেটাল বা মূলধাতুতে সালফারের পরিমাণ বেশি হওয়া । ৫। আর্ক দৈর্ঘ্য অতি ছোট বা বড় হওয়া ইত্যাদি । |
উত্তপ্ত ধাতু ছড়ানো | ১। কারেন্টের পরিমাণ বেশি হওয়া। ২। আর্ক দৈর্ঘ্য বেশি হওয়া। ৩। ইলেকট্রোডের ধরার কোণ ঠিক না হওয়া। ৪। আদ্র ইলেকটট্রেড ব্যবহার করলে |
আন্ডার কাট | ১। কারেন্টের পরিমাণ বেশি। ২। ইলেকট্রোডের ব্যাস বেশি। ৩। আর্ক দৈর্ঘ্য বেশি। ৪। বেসমেটাল বা মূলধাতুতে মরিচা পড়া। ৫। দ্রুত গতিতে ওয়েন্ডিং করা ইত্যাদি। |
পুড়ে যাওয়া | ১। কারেন্ট বেশি। ২। অতি দীর্ঘ আর্ক। ৩। ইলেকট্রোড অতি ধীরে চালানো ইত্যাদি । |
বিকৃতি | ১। অল্প ব্যাসের ইলেকট্রোড । ২। বেশি রান টানা । ৩। খুব ধীর গতিতে ওয়েল্ডিং করা। ৪। জোড়া প্রস্তুতি ঠিক না হওয়া |
ওভার ল্যাপিং | ১। কারেন্ট অতি কম হলে। ২। ইলেকট্রোড এর ব্যাস বেশি হলে। ৩। ওয়েল্ডিং এর গতি মন্থর হলে। ৪। আর্ক অতি দীর্ঘ হলে ইত্যাদি। |
আর্ক ওয়েন্ডিং এর উল্লেখিত দোষ ত্রুটিগুলোর ফলাফল নিম্নে প্রদত্ত হলোঃ
ত্রুটির ধরণ | ফলাফল |
---|---|
ফাটল | ওয়েল্ড মেটাল এবং বেস মেটালে ফাটল দেখা দেয়, জোড়া দুর্বল এবং ক্ষেত্র বিশেষ অকেজো হয়। |
অল্প পলন | বিট দেখতে অসমান হবে, অসুন্দর হবে এবং জোড়ার শক্তি কম হবে। |
ধাতু মলের উপস্থিতি | জোড়া দুর্বল হয়, ক্ষেত্র বিশেষে অকেজো হয়। |
ছিদ্রময়তা | ওয়েল্ড বিড দেখতে অসুন্দর হবে, জোড়ার শক্তি কম হবে। |
স্বল্প পেনিট্রেশন | জোড়া দুর্বল হবে এবং এটি লিকপ্রুফ হবে না। |
উত্তপ্ত ধাতু ছড়ানো | জোড়া দুর্বল হয়, জবের পৃষ্ঠদেশ অতি অসুন্দর হয়। |
পুড়ে যাওয়া | গর্ত বিশিষ্ট জব হয়, লিক প্রুফ হয় না, শক্তি কম হয় এবং দেখতে অসুন্দর হয়। |
বিকৃতি | জবের আকৃতি পরিবর্তন হয় এবং বেশি বিকৃতি হলে তা ব্যবহারের অনুপযুক্ত হয়। |
ওভার ল্যাপিং | মেশিনিং খরচ বেশি হয়, মাপের সুক্ষ্মতা থাকে না এবং জোড়ার শক্তি কম হয়। |
নিম্নে আর্ক ওয়েল্ডিং এর বিভিন্ন দোষ ত্রুটিসমূহ এড়ানোর উপায়সমূহ উল্লেখ করা হলো।
বিকৃতি স্ট্রেস উপশমঃ
প্রি-সেটিং, স্টেপ ব্যাক মেথড এবং স্কিপ মেথড প্রয়োগ, জিগ ও ফিচারের সাহায্যে কাজ সমাধা করতে হবে।
• স্লাগ ইনক্লুশনঃ
ধাতু যথাযথ ও সুন্দরভাবে পরিষ্কার করতে হবে। সঠিক কোণে ইলেকট্রোড চালনা করে সঠিক কারেন্টে ওয়েল্ডিং কাজ সমাধা করতে হবে। সঠিক ইলেকট্রোড ব্যবহার করতে হবে এবং পূর্ববর্তী রানের শপ সুন্দরভাবে পরিষ্কার করতে হবে।
• আন্ডার কাটঃ
সঠিক তাপমাত্রায় কারেন্ট নিরূপণ ও সঠিক গতিতে ইলেকট্রোড চালনা করতে হবে।
অসম্পূর্ণ পেনিট্রেশনঃ
সঠিক জোড় প্রস্তুত করতে হবে, সঠিক পুরুত্বের ইলেকট্রোড ও সঠিক ধরনের ইলেকট্রোড এবং সঠিক কারেন্ট নির্বাচন করতে হবে। রুটে রানের গ্যাপ এর সাথে ইলেকট্রোডের ব্যাসের মিল থাকতে হবে। সঠিক গতিতে ইলেকট্রোডের চালনা করতে হবে এবং আর্ক লেংথ বজায় রাখতে হবে।
স্প্যার্টারঃ
সঠিক কারেন্ট নির্বাচন, সঠিক আর্ক দৈর্ঘ্য বজায় রাখা ও শুষ্ক ইলেকট্রোড ব্যবহার করতে হবে।
কম গলা :
অপেক্ষাকৃত বড় ব্যাসের ইলেকট্রোড ব্যবহার করা, সঠিক কারেন্টে ওয়েন্ডিং করা, সঠিক কোণ ও গতিতে ইলেকট্রোড চালনা করা, জোড় স্থান ভালোভাবে পরিষ্কার ও সঠিকভাবে ওয়েল্ডিং এর ধাপসমূহ বজায় রাখা ।
রোহোল :
ওয়েল্ডিং এর ধাপসমূহ ভালোভাবে পরিষ্কার করা, সঠিক কারেন্ট ও আর্ক লেংথ বজায় রাখা, শুষ্ক ইলেকট্রেড ব্যবহার করা
পুড়ে ছেদ হওয়াঃ
সঠিক কারেন্ট নিরূপণ করা, সঠিক ইলেকট্রোড নির্বাচন করা এবং সঠিক আর্ক লেংথ ও ইলেকট্রোড গতি বজায় রাখা ।
ওভার ল্যাপঃ
ঠিকমত কারেন্ট ব্যবহার করা, আর্ক লেংথ ছোট ও একই রাখা, ধাতু সুন্দরভাবে পরিষ্কার করা। সঠিক গতিতে ইলেকট্রোড চালনা করা। প্রয়োজনীয় সাইজের ইলেকট্রোড ব্যবহার করা।
অতিরিক্ত উত্তল ও অবতল আকৃতিঃ
সঠিক পরিমাণ কারেন্ট ব্যবহার করা, সঠিক কোণে ইলেকট্রোড চালনা করা, ঠিক সাইজের ইলেকট্রোডের ব্যবহার করা।
ছিদ্রময়তাঃ
কার্যবস্তু সুন্দরভাবে পরিষ্কার করা। শুষ্ক ইলেকট্রোড ব্যবহার করা, সঠিক কোণে ইলেকট্রোড চালনার গতি নিয়ন্ত্রণে রাখা, সঠিক কারেন্ট ব্যবহার করা।
ফাটলঃ
সঠিক ইলেকট্রোডের ব্যবহার, সঠিক তাপমাত্রায় কারেন্ট নিরূপণ করা, ওয়েল্ডিং এর ধাপসমূহ সঠিকভাবে বজায় রাখা। ১ম রান টানার পরে সেটা ভালোভাবে পরিষ্কার করে ২য় রান টানতে হবে। ধাতু জোড়কে সর্বদা স্ট্রেসমুক্ত রাখতে হবে। কোথাও ফাটল দেখা দিলে উক্ত স্থান কর্তন করে নতুন করে জোড় প্রস্তুত করতে হবে। মনে রাখতে হবে ফাটল মেরামত যোগ্য ত্রুটি নয়। এটি কর্তন করতে হবে।
অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১। ওয়েল্ডিং ত্রুটি বলতে কী বোঝায় ?
২। ম্যাক্রো ক্র্যাকিং কাকে বলে?
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
৩। পাঁচটি ওয়েল্ডিং ত্রুটির নাম লেখ।
৪। স্প্যাটার ত্রুটির কারণ কী?
রচনামূলক প্রশ্ন
৫। চিত্র অংকন করে আর্ক ওয়েল্ডিং এর ত্রুটিগুলো সম্পর্কে লেখ।
(ক) আন্ডার কাট
(খ) স্বল্প পেনিট্রেশন
(গ) ওভার ল্যাপিং এবং
(ঘ) ধাতুমলের অন্তর্ভুক্তি।
৬। উপরের ত্রুটিগুলোর কারণ লেখ।
৭। আর্ক ওয়েল্ডিং এর ৫টি ত্রুটির কারন ও প্রতিরোধের উপায়গুলি লিখ।
তারঃ ইনসুলেশনের আবরণ ছাড়া পরিবাহী কন্ডাক্টরকে তার বলে।
ক্যাবলঃ তারের উপর ইনসুলেশনের আবরণ দেওয়া থাকলে তাকে ক্যাবল বলে। তারের ইনসুলেশনের যত উন্নতমানের হবে, ক্যাবলও তত উন্নতমানের হবে। ওয়েন্ডিং জোড়ের ক্ষেত্রে উন্নত মানের ক্যাবল ব্যবহার করতে হবে। নিম্নমানের ক্যাবল ব্যবহারে বৈদ্যুতিক শক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
চিত্র : ১.১
বিভিন্ন কোম্পানি ভিন্ন ভিন্ন ডিজাইনের ইলেকট্রোড হোল্ডার বাজারে ছেড়েছে। কোনো হোল্ডারের ভিতরে ছিদ্র থাকে। উক্ত ছিদ্র দিয়ে ইলেকট্রোডের আবরণবিহীন অংশ ঢুকাতে হয় আবার কোনটির চোয়াল থাকে, তবে উক্ত চোয়ালে ঢুকাতে হয় ।
চিত্রঃ ১.২
ক্যাবলের যে অংশে হোন্ডার লাগানো হবে সে অংশের ইনসুলেশনের আবরণ সাবধানে অপসারণ করতে হয়। এক্ষেত্রে ইনসুলেশনের আবরণ সাবধানে করে হোল্ডারের নাট খুলে খুব মজবুত করে ক্যাবল সংযোগ দিতে হবে। মনে রাখতে হবে, বৈদ্যুতিক সংযোগ কখনও ঢিলা দেওয়া যায় না, এতে দুর্ঘটনা ঘটে। হোল্ডারের বাইরে উন্মুক্ত তার রাখা যাবে না।
চিত্রঃ ১.৩
হোল্ডারের সংযোগের ন্যায় এক্ষেত্রেও ক্যাবলের যে অংশ আর্থিং সংযোগ দেওয়া হবে সে অংশের ক্যাবলের ইনসুলেশন আবরণ অপসারণ করতে হবে। স্ক্রু ড্রাইভার দিয়ে আর্থিং এর ক্রু খুলে আর্থিং সংযোগ করতে হবে। আর্থিক সংযোগ ঢিলা থাকা চলবে না। এতে বিপদ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
চিত্র : ১.৪
টেস্টার দিয়ে কোন ফেজে বিদ্যুৎ আছে বা নেই চেক করেই ফেজ ও নিউট্রাল টার্মিনাল বের করা যায় ।
মেইন সুইচ অফ করে ট্রান্সফরমারে বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে হবে। ট্রান্সফরমারে যে দুইটি টার্মিনাল রয়েছে। একটিতে আর্থিং সংযোগ অন্যটিতে ওয়েল্ডিং ক্যাবল সংযোগ দিতে হবে। উত্তর ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে টিলা সংযোগ যেন না হয় কারণ এটা বিপজ্জনক। তবে ট্রান্সফরমার সংযোগের ক্ষেত্রে ইলেকট্রিশিয়ানের সাহা নেওয়া উচিত।
চিত্রঃ ১.৫
১। ক্যাবল এবং তারের মধ্যে পার্থক্য কী?
২। ইলেকট্রোড হোল্ডার কী?
৩। কীভাবে ইলেকট্রোড হোল্ডার নির্বাচন করতে হয় উলেখ কর।
৪। ক্যাবলের সাথে হোল্ডারের সংযোগের বিবেচ্য বিষয় উল্লেখ কর।
৫। আর্ক ক্ল্যাম্প কী?
৬। কীভাবে ক্যাবলের সাথে আর্থ ক্ল্যাম্প সংযোগ করতে হয় উল্লেখ কর ।
৭। ফেজ ও নিউট্রাল টার্মিনাল বলতে কী বোঝায়?
৮। কীভাবে ফেজ ও নিউট্রাল শনাক্ত করা হয় উলেখ কৰা।
৯। ফেজ নিউট্রাল টার্মিনাল, ইলেকট্রোড হোল্ডার ও আর্থ ক্যাবল সংযুক্তকরণ প্রক্রিয়া বর্ণনা কর।
১০। ট্রান্সফরমারের বিদ্যুৎ সংযোগ করার প্রক্রিয়া উল্লেখ কর।
৬ মিলিমিটার পুরু এবং ১৫০ মিলিমিটার লম্বা এবং ১০০ মিলিমিটার চওড়া এক খণ্ড এমএস প্লেট লও।
চিত্র : ২.১
প্লেট হতে গ্রিজ অথবা তৈল জাতীয় পদার্থ মরিচা, ময়লা ইত্যাদি উত্তমরূপে পরিষ্কার কর।
চিত্র : ২.২
কার্যর্যস্ত ক্যাম্প কর। মেশিনের (+) টার্মিনাল কার্যবস্তুর সাথে এবং (-) টার্মিনাল ইলেকট্রোড হোল্ডারের সাথে সংযোগ কর (ডিসি মেশিনের বেলায়)
চিত্রঃ ২.৪
এ.সি মেশিনের ক্ষেত্রে ইলেকট্রোড হোল্ডার এবং গ্রাউন্ড ক্যাবল যে কোন টার্মিনাল লাগান যায়।
চিত্রঃ ২.৫
সাধারণত পাতলা শিট ওয়েল্ডিং করতে রুটাইল ইলেকট্রোড যে সব ক্ষেত্রে অধিক শক্তির প্রয়োজন সেখানে বেসিক ইলেকট্রোড এবং অধিক পুরুত্বের স্টিল ওয়েন্ডিং এ আয়রন পাউডার ইলেকট্রিক ব্যবহৃত হয়।
চিত্রঃ ২.৬
শিট/প্লেটের
শিটের পুরুত্ব মিমি | ইলেকট্রোড ব্যাস মিমি | গেজ |
---|---|---|
১.৬ | ১.৬ | ১৬ |
২.০ | ২.০ | ১৪ |
২.৫ | ২.৫ | ১২ |
৩.০ | ৩.০ | ১০ |
৬.০ | ৪.০ | ৮ |
১০.০০ | ৫.০ | ৬ |
চিত্রঃ ২.৭
চিত্র : ২.৮
- আর্ক স্ট্রাইক করার জন্য ইলেকট্রোড ৭০" কোপে এবং প্লেট হতে ২০ মিমি উপরে রাখ ।
চিত্র : ২.৯
চিত্রঃ ২.১০
আর্ক লেংথ ইলেকট্রোডের কোর ব্যাসের সমান হবে।
– ইলেকট্রোড প্রতি মিনিটে ১০০ মিমি বেগে টান
– সঠিক আর্ক লেংথ
- ভালো বিড
- ভালো পেনিট্রেশন
- ভালো ওয়েন্ডিং এর নিশ্চয়তা দিবে
- ওয়েল্ডিং বিডের প্রস্থ, ইলেকট্রোড ব্যাসের ২ গুণ হবে।
ওয়েল্ড স্পিড অতি বেশি হলে গলন ব্যাহত হবে ও ধাতু অমিশ্রিতি অবস্থায় বেস মেটালে পড়ে থাকবে।
– ইলেকট্রোড এর সম্মুখ দিকে ৭০°-৮০° ঢাল এবং পার্শ্ব কোণ ৯০° রেখে ওয়েল্ডিং আরম্ভ কর।
চিত্রঃ ২.১৩
১। সারফেস প্রিপারেশনসহ ওয়ার্কপিস প্রস্তুকরণ প্রক্রিয়া উল্লেখ কর।
২। ওয়ার্কপিস সংযোগকরণ উল্লেখ কর।
৩। ইলেকট্রোড নির্বাচন বর্ণনা কর।
৪। হোল্ডারে ইলেকট্রোড আটকানোর নিয়ম উলেখ কর।
৫। ধাতুর পুরুত্বের সাথে কারেন্ট সেটকরণ ব্যক্ত কর।
৬। ইলেকট্রোডকে ওয়ার্ক পিসে স্ক্যাচিং পদ্ধতি বর্ণনা কর ।
৭। সঠিক আর্ক লেংথ ও সঠিক ওয়েন্ডিং স্পিডের প্রয়োজনীয়তা বর্ণনা কর ।
৮। ধাতু জোড়ের কালে সঠিক ইলেকট্রোড অ্যাংগেল এর গুরুত্ব উল্লেখ কর।
৬ মিলিমিটার পুরু এবং ৮০ মিলিমিটার গ্রন্থ ১৬০ মিলিমিটার লম্বা একখণ্ড মাইন্ড স্টিলের প্লেট নাও।
চিত্রঃ ৩.১
তারের ব্রাশ দিয়ে ওয়ার্কপিসের উপর হতে ধুলি, মাটি এবং তৈল বা গ্রিজ জাতীয় পদার্থ পরিষ্কার কর।
ডিসি ব্যবহার করলে ইলেকট্রোডকে নেগেটিভ প্রান্তে এবং জনকে পজেটিভ প্রান্তে যুক্ত কর। এটি স্ট্রেই পোলারিটি।
এসি ব্যবহার করলে জবকে যে কোন প্রান্তে যুক্ত করতে পার।
কারেন্ট নিরূপণের জন্য নিম্নের বিষয়গুলো বিবেচনা করতে হবে।
ইলেকট্রোড জবের সাথে ৭০° কোণে আর্ক সৃষ্টি কর এবং শর্ট আর্কে বিড টান।
১। আর্ক ওয়েল্ডিং কালে সমতন অবস্থানে সোজা ও ওভার লাপিং বিড তৈরিতে সারফেস প্রিপারেশনসহ ওয়ার্কপিস প্রস্তুত প্রণালি বর্ণনা কর।
২। সোজা ও ওভার ল্যাপিং বিদ্ধ তৈরির নিয়ম বর্ণনা কর ।
৩। ওভার ল্যাপিং বিড তৈরির সময় ও পরে ওয়েন্ডিং এর কী কী গুণাবলি পরীক্ষা করতে হয়। ব্যক্ত কর।
৪। পাওয়ার 'স' দিয়ে ভব কাটার পর ফাইলিং না করার কারণ উল্লেখ কর।
৫। ওভার ল্যাগিং বিয়ে ইলেকট্রোডের কোণ ও গতি উল্লেখ করা।
৬। আর্ক দেখে কত মিলিমিটার পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রাখতে হয় এবং কেন?
৬ মিলিমিটার পুরু এবং ৪০ মিলিমিটার ১৫০ মিলিমিটার মাপের দুইটি মাইন্ড স্টিল প্লেট লও।
ইলেকট্রোড নির্বাচনের জন্য নিচের বিষয়গুলোর বিবেচনা করতে হয়।
বেশি পুরুত্বের পাতের জন্য মোটা ইলেকট্রোড এবং কম গুরুত্বের পাতের জন্য চিকন ইলেকট্রোড নিতে হয়। এক্ষেত্রে উক্ত পুরুত্বের জন্য ১০ গেজি ইলেকট্রোড ব্যবহার করতে হবে।
ধাতু জোড়ের সেট করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারেন্ট বেশি সেট করা হলে যেমন সমস্যা সৃষ্টি হবে, তেমনি কারেন্ট কম সেট করা হলে ধাতু জোড়ে বিঘ্ন সৃষ্টি হবে। তাই কারেন্ট সেট করার ক্ষেত্রে নিম্নের বিষয়গুলো বিবেচনায় আনতে হবে।
তবে এ কাজের জন্য ৯০ হতে ১০০ অ্যাম্পিয়ার কারেন্ট মেশিনে সেট কর। নিম্নের চার্ট হতে সঠিক কারেন্ট সেট করা যেতে পারে।
কাজের পুরুত্ব (মিলিমিটারে) | ইলেকট্রোড কোর এর ব্যাস (মিলিমিটারে) | কারেন্ট (অ্যামপিয়ার) | ভোল্টেজ (ভোল্ট) |
---|---|---|---|
০.৮ | ০.৮ | ২০ | ১৫ |
১.৬ | ১.৬ | ৩৩ | ১৫ |
৩.০ | ৩.০ | ৯০ | ১৭ |
৬.০ | ৪.০ | ১১০ | ১৮ |
১০.০ | ৫.০ | ১৩০ | ১৯ |
১৫.০ | ৫.৫ | ১৬০ | ২১ |
১৯.০ | ৬.০ | ১৬৫ | ২২ |
২৫.৪ | ৬.০ | ২৯৫ | ২২ |
ইলেকট্রোডের ব্যাস নির্বাচনের জন্য মূল ধাতুর পুরুত্বের সাথে ৩ মিলিমিটার যোগ করে যোগফলকে ২ দিয়ে ভাগ করলে মোটামুটি ইলেকট্রোড-এর ব্যাস পাওয়া যাবে, কিন্তু ওয়ার্কপিসের পুরুত্ব খুব বেশি বা কম হলে এ নিয়ম চলে না।
ওয়ার্কপিস দুইটিকে ১ মিলিমিটার থেকে ১.৫ মিলিমিটার ফাক করে পাশাপাশি রাখ । জবের সাথে ইলেকট্রোডকে ৭০° হতে ৮০° কোণে ধরে জবের দুই পার্শ্বে দুইটি এবং মাঝে একটি ট্যাক ওয়েল্ড কর।
ওয়াকাপল ঠান্ডা হলে জোড়াহাদের উপর হতে চিপিং হ্যামার এবং তারের ব্রাশের সাহায্যে ানের আবরণ পরিষ্কার করা।
ব্রেকিং এর সময় তারকি সর্বোচ্চন, এতে ইলেকট্রোড চালনার গণ্ডি, আর্ক লেখে, ইলেকট্রোডের অ্যাংগেল সঠিকভাবে বজায় রেখেছে কীনা তা দেখা যায়। ধাতু মোড়ের পর অবলোকন করা হলে দেখতে হবে।
১। স্কয়ার বাট জোড়ের কার্যবস্তু প্রস্তুত প্রণালি উল্লেখ কর।
২। স্কয়ার বাট জোড়ের কার্যবস্তু ট্যাককরণ ব্যক্ত কর ।
৩। স্কয়ার বাট জোড়ের কার্যবস্তু ট্যাক করণের সময় লক্ষণীয় বিষয় উল্লেখ কর।
৪। স্কয়ার বাট জোড়ের সময় ও জোড় শেষে পরীক্ষণীয় বিষয়সমূহ বর্ণনা কর।
৫। ওয়েল্ডিং-এর সময় ও পরে জোড়ের কী কী দেখতে হয় উল্লেখ কর।
৬। ওয়ার্কপিস ট্যাক করতে লক্ষণীয় বিষয়গুলো উল্লেখ কর।
৫ মিলিমিটার পুরুত্ব এবং ১০০ মিলিমিটার ৩০০ মিলিমিটার মাপের দুই খণ্ড মাইল্ড স্টিলের প্লেট লও।
৪.২ এর নিয়ম অনুসারে এই জবের জন্য ৮ গেঞ্জি ইলেকট্রোড ব্যবহার করতে হবে। তবে ধাতুর পুরুত্বের উপর নির্ভর করেই ইলেকট্রোড নির্বাচন করতে হয়।
(৪.৫ এর নিয়ম অনুসারে) এই জবের জন্য ১৩০ হতে ১৫০ অ্যাম্পায়ার কারেন্ট মেশিনে সেট করতে পার।
১। সমতল অবস্থানে সিঙ্গেল 'ভি' বাট জোড়ের নিমিত্তে কার্যবস্তু প্রস্তুত প্রণালি উল্লেখ কর।
২। পেনিট্রেশন ছাড়া সিঙ্গেল 'ভি' বার্ট জোড়ের নিমিত্তে কারেন্ট সেটকরণ উলেখ কর।
৩। সিঙ্গেল 'ভি' বাট জোড় ট্যাককরণ পদ্ধতি ব্যক্ত কর ।
৪। ওয়েল্ডিং-এর সময় ইলেকট্রোড চালনার কৌশল বর্ণনা কর।
৫। ওয়েল্ডিং-এর সময় ও পরে পরীক্ষণীয় বিষয়সমূহ উল্লেখ কর।
(৪.২) এর নিয়ম অনুসারে এই জবের জন্য ৮ গেঞ্জি ইলেকট্রোড ব্যবহার করতে হবে। তবে ধাতুর পুরুত্বের উপর নির্ভর করেই ইলেকট্রোড নির্বাচন করতে হয়।
(৪.৫ এর নিয়ম অনুসারে) এই জবের জন্য ১৩০ হতে ১৫০ অ্যাম্পায়ার কারেন্ট মেশিনে সেট করতে পারা।
১। সমতল অবস্থানে সিঙ্গেল 'ভি' বাট জোড়ের নিমিত্তে কার্যবস্তু প্রস্তুত প্রণালি উল্লেখ কর ।
২। পেনিট্রেশন ছাড়া সিঙ্গেল 'ভি' বাট জোড়ের নিমিত্তে কারেন্ট সেটকরণ উল্লেখ কর।
৩। সিঙ্গেল 'ভি' বাট জোড় ট্যাককরণ পদ্ধতি ব্যক্ত কর।
৪। ওয়েল্ডিং-এর সময় ইলেকট্রোড চালনার কৌশল বর্ণনা কর।
৫। ওয়েন্ডিং-এর সময় ও পরে পরীক্ষণীয় বিষয়সমূহ উল্লেখ কর।
সঠিক পরিমাপের ইলেকট্রোড মান ওয়েল্ডিং এর পূর্বশর্ত। ৪.২ এর চার্ট করে ইলেকট্রোড নির্বাচন করতে পার, তবে এক্ষেত্রে ধাতুর পুরুত্ব অনুসারে ৩.২ মিনি ব্যাসের ইলেকট্রোড বেছে নাও।
প্লেটের পার্শ্বদ্বয় পরিষ্কার ও স্কাইবার ও স্টিলরুলের দাগ দেওয়ার পর একটি প্লেট অপর প্লেটের উপর এমনভাবে স্থাপন করতে হবে যাতে প্লেটের ধার অপর প্লেটের উপর সমকোণী ভাবে অবস্থান করে। উপরের প্লেটের অপর পার্শ্বে অর্থাৎ যে পার্শ্ব নিচের প্লেটের বাইরে আছে সে পার্শ্বের নিচে একটি লোহার পাত দাও, যাতে উভয় পার্শ্ব সমতলভাবে অবস্থান করে।
ডান হাতে হোল্ডার ধরে হোল্ডারের লিভারে বৃদ্ধাঙ্গুলি দিয়ে চাপ দিয়ে ফাঁক কর। ইলেকট্রোডের যে অংশ কোটিং থাকে না সে অংশ বাম হাত দিয়ে হোল্ডারের ফাঁকে ঢুকাও। এবার হোল্ডারের ক্ল্যাম্প ছেড়ে দিয়ে শক্তভাবে হোন্ডারের সাথে ইলেকট্রোড আটকাও। মনে রাখতে হবে ইলেকট্রোড যেন কোন ভাবে লুজ না থাকে। ভালোভাবে যাচাই করে সঠিকভাবে ইলেকট্রোড লাগিয়ে কার্য উপযোগী কর।
প্লেটের পুরুত্ব অনুসারে কারেন্ট সেট করতে হবে। ৪.৫ এর চার্ট হতে পুরুত্ব অনুসারে কারেন্ট নিরূপণ কর। ৬ মিমি পুরু পেটের জন্য ১১০ হতে ১৩০ অ্যাম্পিয়ার সেট করে লক্ষ কর বেসমেটাল এবং ইলেকট্রোড গলছে কীনা। যদি না গলে তবে কারেন্টের পরিমাণ আরও বাড়াও।
যে প্লেটটির উপর দাগ টানা হয়েছে ঐ দাগ বরাবর অপর প্লেটটি রাখ।
সমতল প্লেটটির সাথে ইলেকট্রোড ৪৫° কোণে ধর এবং পেট দুইটির সংযোগ স্থল হতে ৯০° কোণে ধরে রান টানতে থাক।
ওয়েন্ডিং জোড়ের সময় লক্ষণীয় বিষয়গুলো হলো
ধাতু জোড়ের পর লক্ষণীয় বিষয়গুলো হলোঃ
১। সারফেস প্রিপারেশনসহ ওয়ার্কপিস প্রস্তুতিকালের করণীয়সমূহ বর্ণনা কর।
২। ইলেকট্রোড হোল্ডারে আটকানোর নিয়ম উল্লেখ কর।
৩। ল্যাপ জোড় সম্পন্ন করার ধাপসমূহ বর্ণনা কর।
৪। ধাতু জোড়ের সময় ও পরে লক্ষণীয় বিষয়সমূহ উল্লেখ কর।
৫। ওয়ার্কপিস ট্যাককরণের ধাপসমূহ উল্লেখ কর।
৬। কারেন্ট সেট করতে লক্ষণীয় বিষয়গুলো উলেখ কর ।
৬ মিলিমিটার পুরু এবং ৫০ মিলিমিটার ১৬০ মিলিমিটার মাপের দুই খণ্ড মাইন্ড স্টিলের প্লেট লও।
তারের ব্রাশ বা এমারি রথ দিয়ে প্লেট দুইটি পরিষ্কার কর।
-প্লেট বাঁকা থাকলে অ্যানভিলের উপর রেখে হাতুড়ির আঘাতে সোজা কর।
- একটি প্লেটের মাঝে ভাইবার এক স্টিল স্কেল ব্যবহার করে দাগ টান।
-যে পাতটির মাঝখানে পাদ টানা হয়েছে, উক্ত দাগের অপর পাতটি ৯০° কোণে খাড়া করে রাখ ।
- ইলেকট্রোড নিচের পাতটির সাথে ৩০° হতে ৪৫° কোণে ধরে ট্যাক ওয়েল্ড কর।
- ট্যাক ওয়েল্ড ৮ মিলিমিটার হতে ১০ মিলিমিটার লম্বা হতে পারে।
- এরূপ ট্যাক ওয়েন্ড ২ প্রাডে দুটি এবং মাঝে একটি কর।
- ইলেকট্রোভকে নিচের পেটের সাথে ৩০°-৪০° কোণে ধর এবং জোড়ের দিকে ৭০°-৮০° কোণে ধর।
- আর্কের দৈর্ঘ্য ও ৩ মিলিমিটার রক্ষা করে অত্যন্ত সাবধানে রান টান এবং শেষ প্রান্তে ক্ষণিকের জন্য
- ইলেকট্রোড ধরে রাখ এবং আর্ক বন্ধ কর।
- ইলেকট্রোড চালনার গতি সমান রাখ।
- ইলেকট্রোডের গতি অধিক দ্রুত বা মহর যেন না হয় খেয়াল রাখ।
- ওয়েল্ডিং শেষে চিপিং হ্যামার দিয়ে জোড় স্থান হতে প্লাগের আবরণ তুলে ফেল।
- ভারের ব্রাশ দিবে উত্তম রূপে জোড় স্থান পরিষ্কার কর।
ওয়েল্ডিং এর সময় দেখতে হবে।
১। সমতল অবস্থানে একক রানের টি-জোড় তৈরিতে সারফেস প্রিপারেশনসহ ওয়ার্কপিস প্রস্তুত প্রণালি বর্ণনা কর।
২। টি-জোড়ের নিমিত্তে ট্যাক ওয়েল্ড-এর প্রণালি উল্লেখ কর।
৩। টি-জোড়ের সময় ইলেকট্রোড অ্যাংগেল, আর্ক লেংথ, ইলেকট্রোড চালনার গতি বর্ণনা কর।
৪। টি-জোড়ের সময় ও পরে পরীক্ষণ প্রক্রিয়া উল্লেখ কর।
৫। ওয়ার্কপিস ট্যাক ওয়েল্ডিং নাম উল্লেখ কর ।
৬। একক রানের টি-জোড়ের ওয়েল্ডিং-এর নিয়ম কানুন উল্লেখ কর ।
- ৬ মি মি পুরু এবং কমপক্ষে ৫০ মিমি ২০০ মিমি দুই খণ্ড এমএস প্লেট লও ।
কার্যবস্তু প্রস্তুতি
৮.১ এর অনুরূপ
ওয়েল্ডিং এর সময় ভালোভাবে তদারকি করা হলে দোষ ত্রুটি পাওয়া যায় এবং প্রতিরোধ করা যায়। ওয়েল্ডিং এর সময় লক্ষণীয়ঃ
ওয়েন্ডিং সম্পন্ন হওয়ার পরঃ
১। একাধিক রানের টি-জোড়ের ওয়ার্কপিস প্রস্তুত প্রণালি উল্লেখ কর।
২। একাধিক রানের টি-জোড়ের ওয়ার্কপিস ট্যাককরণ ব্যক্ত কর।
৩। একাধিক রানের টি-জোড়ের প্রথম বিডের অবস্থান ব্যক্ত কর।
৪। একাধিক রানের টি-জোড়ে বাকি রানসমূহের অবস্থান উল্লেখ কর।
৫। ইলেকট্রোড, অ্যাংগেল, ইলেকট্রোড চালনার গতি ও আর্ক লেংথ বর্ণনা কর।
৬। ওয়েল্ডিং সময় ও পরে ওয়েন্ডিং পরীক্ষণ উল্লেখ কর।
কথায় বলে Prevention is better than Cure অর্থাৎ প্রতিরোধ সর্বোত্তম পন্থা। তাই জোড় করার সময় যদি ভালো তদারকি করা হয়, তবে ত্রুটি বিচ্যুতি অনেক বেশি ধরা পড়ে। যা নিরাময় করা সম্ভব হয়। জোড়ের সময় দেখতে হবেঃ
১। সমতল অবস্থানে আউট সাইড কর্নার জোড়ের নিমিত্তে সারফেস প্রিপারেশনসহ কার্যবস্তু প্রস্তুত প্রণালি বর্ণনা কর।
২। আউট সাইড কর্নার জোড়ের নিমিত্তে ট্যাক ওয়েল্ডকরণ পদ্ধতি উল্লেখ কর।
৩। আউট সাইড কর্নার জোড়ের নিমিত্তে কারেন্ট সেটকরণ শনাক্ত কর ।
৪। আউট সাইড কর্নার জোড়ের সময় ইলেকট্রোড অ্যাংগেল, ইলেকট্রোড চালনার গতি, বুননের নিয়ম,আর্ক লেংথ ইত্যাদি বর্ণনা কর ।
৫। আউট সাইড কর্নার জোড়ের সময় পরীক্ষণীয় বিষয়সমূহ উল্লেখ কর।
৬। আউট সাইড কর্নার জোড় শেষে লক্ষণীয় বিষয়সমূহ উল্লেখ কর।
ওয়ার্কপিস ট্যাক ওয়েল্ড করা :
ওরেল্ড সম্পন্ন করতে পারাঃ
কথায় বলে Prevention is better than Cure অর্থাৎ প্রতিরোধ সর্বোত্তম পন্থা। তাই জোড় করার সময় যদি ভালো তদারকি করা হয়, তবে ত্রুটি বিচ্যুতি অনেক বেশি ধরা পড়ে। যা নিরাময় করা সম্ভব হয়। জোড়ের সময় দেখতে হবে -
জোড় প্রস্তুতির পর জোড় মূল্যায়নের জন্য দেখতে হবে :
১। সমতল অবস্থানে আউট সাইড কর্নার জোড়ের নিমিত্তে সারফেস প্রিপারেশনসহ কার্যবস্তু প্রস্তুত প্রণালি বৰ্ণনা কর।
২। আউট সাইড কর্নার জোড়ের নিমিত্তে ট্যাক ওয়েল্ডকরণ পদ্ধতি উল্লেখ কর।
৩। আউট সাইড কর্নার জোড়ের নিমিত্তে কারেন্ট সেটকরণ শনাক্ত কর ।
৪। আউট সাইড কর্নার জোড়ের সময় ইলেকট্রোড অ্যাংগেল, ইলেকট্রোড চালনার পতি, বুননের নিয়ম, আর্ক লেংথ ইত্যাদি বর্ণনা কর।
৫। আউট সাইড কর্নার জোড়ের সময় পরীক্ষণীয় বিষয়সমূহ উল্লেখ কর।
৬। আউট সাইড কর্নার জোড় শেষে লক্ষণীয় বিষয়সমূহ উল্লেখ কর।
আরও দেখুন...