জীবিকার্জনের জন্য মানুষ বিভিন্ন ধরণের পেশা গ্রহণ করে থাকে । সে দৃষ্টিকোণ থেকে পেশাকে প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করা যায । যেমন :
১। মজুরি ও বেতনভিত্তিক চাকরি
২। আত্মকর্মসংস্থান
৩ । ব্যবসায় বা শিল্পোদ্যোগ
নিম্নে এগুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :
১। মজুরি ও বেতনভিত্তিক পেশা : কোন প্রতিষ্ঠানে নির্দিষ্ট মজুরি বা বেতন এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক সুবিধাদির বিনিময়ে চাকরি গ্রহণ করা হলে তাকে মজুরি ও বেতনভিত্তিক কর্মসংস্থান বলে । বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাজকর্ম সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য উচ্চ, মধ্যম ও নিম্ন পর্যায়ে বহুসংখ্যক কর্মীর প্রয়োজন। ফলে চাকরি কর্মসংস্থানের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস। কাজের নিরাপত্তা, নিয়মিত আয় প্রবাহ, পদোন্নতি ও আনুষঙ্গিক সুবিধার জন্য কর্মসংস্থান হিসেবে চাকরি মানুষের কাছে আকর্ষণীয়। বাংলাদেশে বেসরকারি খাতে শিল্প ও ব্যবসা/বাণিজ্যের প্রসার না হওয়ায় বেতন ও মজুরিভিত্তিক চাকরি কর্মসংস্থান বৃদ্ধির হার তেমন আশাব্যঞ্জক নয় । তাছাড়া দেশের সকল মানুষের জন্য বেতন ও মজুরিভিত্তিক চাকরি কর্মসংস্থান সম্ভবও নয়।
২। আত্মকর্মসংস্থান : নিজে উদ্যোগী হয়ে নিজের কাজের ব্যবস্থা করাকে আত্মকর্মসংস্থান বলে । কোনো ব্যক্তি কোনো প্রতিষ্ঠানে নির্দিষ্ট বেতনের বিনিময়ে চাকরি না করে স্বীয় যোগ্যতা ও দক্ষতার বলে সেবা প্রদানের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করে জীবিকা নির্বাহ করাকে আত্মকর্মসংস্থান বলে । উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, একজন ইলেকট্রিশিয়ান ইলেকট্রিক্যালের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করলে তাকে আত্মকর্মসংস্থান পেশা হিসেবে গণ্য করা যায় ।
তাছাড়া আমাদের দেশে সরকার কর্তৃক ৬৪টি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ ৬৬ টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং বেশ কয়েকটি যুব উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপিত হয়েছে । এ সমস্ত যুব উন্নয়ন ও কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে বেসিক ট্রেড কোর্স ও কুটির শিল্পের উপর প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে । এছাড়া বেশ কিছু বেসরকারি সংস্থা (NGO) গ্রামের ছেলে-মেয়েদের নানাবিধ কারিগরি প্রশিক্ষণ দিয়ে আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করছে। যেমন-হস্ত শিল্প, মৃৎ শিল্প, কাঠের কাজ, মেরামত কাজ, হাঁস মুরগি পালন, মাছের চাষ, শাক-সবজি চাষ, ফুলের চাষ, পোশাক তৈরি ইত্যাদি । এসব কাজে বেশি মূলধনের প্রয়োজন হয় না । এজন্য প্রয়োজন সামান্য প্রশিক্ষণ ও উদ্যোগী মনোভাব ।
৩। ব্যবসা বা শিল্পোদ্যোগ : কর্মসংস্থানের উৎস হিসেবে ব্যবসা বা শিল্পোদ্যোগের গুরুত্ব পৃথিবীর প্রতিটি দেশেই স্বীকৃত । আমাদের দেশে ব্যবসার মাধ্যমে কর্মসংস্থানের অসীম সুযোগ সৃষ্টি করা সম্ভব । নিজ উদ্যোগে কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করে জীবিকা অর্জনের ব্যবস্থা করাকেই পেশা বলে আখ্যায়িত করা হয় । মালিক নিজেই তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য কর্মচারী নিয়োগ করেন ।
আরও দেখুন...