বালির ফিল্টার গলদা চিংড়ি হ্যাচারির জন্য অত্যাবশ্যক একটি অংশ। শুধু বালির ফিল্টারের সাহায্যে একটি বাণিজ্যিক চিংড়ি হ্যাচারি পরিচালনা করা সম্ভব। বালির ফিল্টারে ভাইরাস ও কয়েক প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া ছাড়া অন্যান্য সকল প্রকার রোগজীবাণু, প্রোটোজোয়া, অদ্রবণীয় ভারী বা হালকা জৈব ও অজৈব কণা, ফাইটোপ্লাংকটন, জুপ্লাংকটন, সামুদ্রিক প্রাণি বা উদ্ভিদ, এদের ডিম, লার্ভা বা অন্য যে কোনো পর্যায়, বালিকণা, কর্দমরেণু ইত্যাদি আটকে যায়। বালির ফিল্টার স্থাপনের জন্য ১.৫ মিটার উচ্চতার ট্যাংক উপযোগী।
বালির ফিল্টারে প্রধান পরিস্রাবক মাধ্যম হিসেবে চিকন বালি (১০-১৫ মাইক্রন) ও কাঠকয়লা এবং পানি সঞ্চয়ের মাধ্যম হিসেবে মোটা দানার বালি বা সিলেট স্যান্ড ও নুড়ি পাথর ব্যবহার করা যায়। একই ট্যাংকে একটির পরে একটি মাধ্যমের স্তর সাজিয়ে এ ধরনের ফিল্টার গঠন করা যেতে পারে। আবার বৃহদায়তনের হ্যাচারিতে একসাথে প্রচুর পরিশ্রুত পানি সরবরাহের উদ্দেশ্যে সারিবদ্ধ কয়েকটি ট্যাংক ব্যবহার করে বিভিন্ন মাধ্যম পর্যায়ক্রমে সাজানো যেতে পারে। পরিস্রাবক মাধ্যমের স্তর যত বেশি হয়, পানির পরিস্রাবণও তত ভালো হয়। যেভাবেই সাজানো হাকে না কেন, পর পর সাজানো পরিস্রাবক মাধ্যমের মধ্য দিয়ে অত্যন্ত ধীর গতিতে (শুধু মাধ্যাকর্ষণ শক্তির সাহায্যে) পানির প্রবাহ সৃষ্টি করে পরিস্রাবণ করাই হলো এর মূল কর্মপদ্ধতি। এ ফিল্টারে পানি পরিস্রাবণের গতি আরও ধীরে এবং পরিশ্রুত পানির মান অধিকতর নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে পরিস্রাবক মাধ্যম সমূহকে মাধ্যাকর্ষণ শক্তির বিপরীত দিক থেকে সাজিয়ে ব্যাক-ওয়াশের সাহায্যে পানি প্রবাহিত করা যেতে পারে। পরিশ্রুত পানির চাহিদার উপরে নির্ভর করে বালির ফিল্টারের আকার ছোট বা বড় করা যায়। আবার একটি মাত্র ফিল্টারের পরিবর্তে একাধিক ফিল্টার নির্মাণ করে পর্যায়ক্রমে একটির পরে একটি ব্যবহার করা যায়।
নলকূপ থেকে সংগৃহীত ভূগর্ভস্থ পানি পরিস্রাবণের জন্য বালির ফিল্টার ব্যবহারের প্রয়োজন হয় না। স্বাদু পানির উৎস হিসেবে ভূপৃষ্ঠের পানি (নদী, খাল, বিল, পুকুর ইত্যাদি) ব্যবহার করা হলে তা অবশ্যই বালির ফিল্টারের সাহায্যে পরিস্রাবণ করে ব্যবহার করতে হবে।
চিত্র-২-২: বাণির ফিল্টার এর ডায়াগ্রাম
আরও দেখুন...